ট্রাম্প-জেলেনস্কির বৈঠক
আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তাঁদের আলোচনা যতটা প্রীতিময় ছিল, বাস্তব সমাধানের দিক থেকে ততটাই শূন্য। কূটনৈতিক ভঙ্গিমা, পোশাক-পরিচ্ছদ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আবহে বৈঠক চললেও যুদ্ধবিরতি, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও ভবিষ্যৎ শান্তিচুক্তির মতো মূল সমস্যাগুলোর কোনো সুরাহা হয়নি। বরং ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা ও পুতিনের সঙ্গে পুনরায় সাক্ষাতের ইঙ্গিত সামনে আরও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।
গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে হঠাৎ ডাকা বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের পথ নিয়ে সে বৈঠকের চম্বুক অংশ তুলে ধরেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
উষ্ণ পরিবেশ, কিন্তু অল্প ফলপ্রসূ
সাতজন ইউরোপীয় নেতা, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট, তাঁদের গাড়িবহর, ট্রাম্প প্রশাসনের ডজনখানেক কর্মী ও শতাধিক সাংবাদিক গতকাল হোয়াইট হাউসে ভিড় করেন এই হঠাৎ বৈঠকের জন্য। সবার মুখে তখন দুটি জিজ্ঞাসা—ট্রাম্প ও জেলেনস্কি কি শান্তির কোনো পথ খুঁজে বের করবেন? নাকি ফেব্রুয়ারির মতো আবারও তিক্ত বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়বেন?
দুটোর কোনোটিই ঘটেনি। ফেব্রুয়ারিতে তাঁর পোশাক ও আচার-আচরণ নিয়ে সমালোচিত হওয়া জেলেনস্কি এ দিন সেগুলোতে বদল এনেছেন। আরও আনুষ্ঠানিক পোশাক পরেছেন এবং বারবার ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে তোষামোদীর নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। ট্রাম্পও তাঁকে আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রশংসা করেছেন।
তবে ট্রাম্প একটি সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির পর ইউক্রেনের নিরাপত্তায় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলেও ভূমিবিনিময়, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বা নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি বিষয়ে কারও অবস্থান যে বদলেছে, এমন কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। বরং ট্রাম্প বৈঠকের শেষে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আবারও আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিশ্রুতি দেন, যাতে অন্য জটিল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়।
তোষামোদির নৈপুণ্য
ফেব্রুয়ারির বৈঠকে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জেলেনস্কিকে রূঢ়ভাবে বলেছিলেন, ‘আপনি একবারও কি ধন্যবাদ বলেছেন?’ কিন্তু গতকাল জেলেনস্কি এমন অভিযোগ ওঠার সমূহ সম্ভাবনা নাশ করে দিয়েছেন। ওভাল অফিসে বক্তব্য শুরু করেই তিনি আটবার ‘ধন্যবাদ’ দিয়েছেন। বেশির ভাগই ট্রাম্পের উদ্দেশে। জেলেনস্কি বলেন, ‘অত্যন্ত ধন্যবাদ, মি. প্রেসিডেন্ট...আপনার মনোযোগের জন্য ধন্যবাদ। হত্যাযজ্ঞ ও যুদ্ধ থামাতে আপনার প্রচেষ্টা, ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ।’
মার্কিন ফার্স্ট লেডিকেও ধন্যবাদ জানান জেলেনস্কি। আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের সময় ইউক্রেন থেকে অপহৃত শিশুদের বিষয়ে পুতিনকে একটি চিঠি দেন মেলানিয়া। সেই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে জেলেনস্কি বলেন, ‘এ সুযোগে আপনার স্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানাই।’
এরপর জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের চারপাশে থাকা যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি...সব অংশীদারের জন্য ধন্যবাদ। আমন্ত্রণের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’
এত ধন্যবাদের ফুলঝুরির পর ভ্যান্স এবার আর কোনো মন্তব্য করেননি, বেশির ভাগ সময় ছিলেন নীরব।
যুদ্ধক্ষেত্র ও কূটনীতির মাঝামাঝি পোশাক
বৈঠকের গুরুত্ব ছিল আকাশচুম্বী। তবে ওয়াশিংটনের কূটনীতিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘুরে বেড়ানো প্রশ্নটি ছিল অনেকটা তুচ্ছ—ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কি স্যুট পরবেন? উত্তর: একরকম।
জেলেনস্কি হোয়াইট হাউসে হাজির হন একধরনের ‘প্রায় স্যুট’ পরা অবস্থায়। কালো জ্যাকেটে ছোট ল্যাপেল ও জেট পকেট ছিল, তবে তিনি টাই পরেননি। যুদ্ধক্ষেত্র ও বোর্ডরুমের মাঝামাঝি যে সাজ—সেটাকে বলা যায় ‘কমব্যাট ফরমাল।’ এ পোশাকের বিষয়টি তুচ্ছ মনে হলেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে তা গুরুত্বপূর্ণ। ফেব্রুয়ারিতে স্যুট না পরায় ট্রাম্প বিরক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এবার জেলেনস্কি পোশাক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
ওভাল অফিসে এক সাংবাদিক জেলেনস্কিকে ‘চমৎকার’ দেখাচ্ছে বললে ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে সায় দিয়ে বলেন, ‘আমিও একই কথা বলেছি।’
যুদ্ধবিরতি নিয়ে মতভেদ
বৈঠকে সমবেত ইউরোপীয় নেতারা ও জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলেছেন। তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মন্তব্যগুলোকে অস্পষ্ট রেখে ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন।
তবে একটি মতপার্থক্য প্রকাশ্যে আসে, যখন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ বলেন, তিনি চান পুতিন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হোক। ট্রাম্পও দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধবিরতি চেয়েছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহে আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি তা থেকে সরে আসেন, যা ইউক্রেনের জন্য একপ্রকার কূটনৈতিক পরাজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখন তিনি সরাসরি শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে চান।
মার্জ বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমরা সবাই যুদ্ধবিরতি চাই। আমি কল্পনাও করতে পারছি না, আগামী বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো কথা হবে না। তাই আসুন, আমরা সেই বিষয়টিতেই কাজ করি।’ কিন্তু ট্রাম্প তখন বলে বসেন, অনেক সংঘাত তিনি যুদ্ধবিরতি ছাড়াই সমাধান করেছেন।
মার্কিন সৈন্য যুদ্ধে নামবে কি
এ শীর্ষ বৈঠককে ঘিরে বড় রহস্য ছিল—দীর্ঘ মেয়াদে রাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তি টেকসই করতে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের সহায়তা দেবে। ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেননি যে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মার্কিন সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে নামবেন কি না। উল্লেখ্য যে, পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সব সময় অনাগ্রহী।
বরং ট্রাম্প অস্ত্র বিক্রি ও ইউক্রেনে ব্যবসায়িক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু ইউক্রেনীয়দের কাছে এগুলো নিরাপত্তা নিশ্চয়তার চেয়ে কোনোভাবেই বড় নয়। তাই ইউরোপীয় দেশগুলো নিজেদের সেনা দিয়ে শান্তিরক্ষী মিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তবে ইউক্রেনে মার্কিন সেনা পাঠানো সম্ভব কি না—এমন প্রশ্নে ট্রাম্প সরাসরি না বলেননি। বরং ইঙ্গিত দেন, শিগগির ঘোষণা আসতে পারে। ট্রাম্প বলেন, ‘এটা হয়তো আজকেই জানাতে পারব।’ ইউরোপকে তিনি প্রথম প্রতিরক্ষা লাইন আখ্যা দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও জড়িত থাকবে।
এরপর কী
ট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনকে ফোন করবেন এবং ইউক্রেনকে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করবেন—সময় ও স্থান পরে ঠিক হবে। অসমর্থিত সূত্র বলছে, কিছু আপত্তি থাকলেও উপস্থিত নেতারা একে পরবর্তী যৌক্তিক পদক্ষেপ হিসেবে মেনে নেন।
তবুও সামনে পথ যতটা সহজ ট্রাম্প দেখাচ্ছেন, বাস্তবে তা নয়। কারণ, রাশিয়া অতীতে ইউক্রেনের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক এড়িয়ে গেছে বা বাধাগ্রস্ত করেছে। তাই পুতিন সত্যিই জেলেনস্কির সঙ্গে বসবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। তিনি প্রায়ই জেলেনস্কিকে অবৈধ নেতা বলে উল্লেখ করেন।
এ ছাড়া এমন বৈঠক আসলেই শান্তির জন্য কতটা অগ্রগতি আনতে পারবে—তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের অবস্থানের ফারাক বিশাল। গতকাল ক্রেমলিন জানায়, ইউক্রেনে ন্যাটো সেনার উপস্থিতি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। পাশাপাশি রাশিয়া ইউক্রেনকে বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকা বিশাল অংশের ভূমি ছাড়তে বলছে, যা ইউক্রেনের নেতারা মোটেই মানতে রাজি নন।
আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তাঁদের আলোচনা যতটা প্রীতিময় ছিল, বাস্তব সমাধানের দিক থেকে ততটাই শূন্য। কূটনৈতিক ভঙ্গিমা, পোশাক-পরিচ্ছদ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আবহে বৈঠক চললেও যুদ্ধবিরতি, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও ভবিষ্যৎ শান্তিচুক্তির মতো মূল সমস্যাগুলোর কোনো সুরাহা হয়নি। বরং ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা ও পুতিনের সঙ্গে পুনরায় সাক্ষাতের ইঙ্গিত সামনে আরও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।
গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে হঠাৎ ডাকা বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের পথ নিয়ে সে বৈঠকের চম্বুক অংশ তুলে ধরেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
উষ্ণ পরিবেশ, কিন্তু অল্প ফলপ্রসূ
সাতজন ইউরোপীয় নেতা, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট, তাঁদের গাড়িবহর, ট্রাম্প প্রশাসনের ডজনখানেক কর্মী ও শতাধিক সাংবাদিক গতকাল হোয়াইট হাউসে ভিড় করেন এই হঠাৎ বৈঠকের জন্য। সবার মুখে তখন দুটি জিজ্ঞাসা—ট্রাম্প ও জেলেনস্কি কি শান্তির কোনো পথ খুঁজে বের করবেন? নাকি ফেব্রুয়ারির মতো আবারও তিক্ত বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়বেন?
দুটোর কোনোটিই ঘটেনি। ফেব্রুয়ারিতে তাঁর পোশাক ও আচার-আচরণ নিয়ে সমালোচিত হওয়া জেলেনস্কি এ দিন সেগুলোতে বদল এনেছেন। আরও আনুষ্ঠানিক পোশাক পরেছেন এবং বারবার ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে তোষামোদীর নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। ট্রাম্পও তাঁকে আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রশংসা করেছেন।
তবে ট্রাম্প একটি সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির পর ইউক্রেনের নিরাপত্তায় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলেও ভূমিবিনিময়, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বা নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি বিষয়ে কারও অবস্থান যে বদলেছে, এমন কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। বরং ট্রাম্প বৈঠকের শেষে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আবারও আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিশ্রুতি দেন, যাতে অন্য জটিল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়।
তোষামোদির নৈপুণ্য
ফেব্রুয়ারির বৈঠকে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জেলেনস্কিকে রূঢ়ভাবে বলেছিলেন, ‘আপনি একবারও কি ধন্যবাদ বলেছেন?’ কিন্তু গতকাল জেলেনস্কি এমন অভিযোগ ওঠার সমূহ সম্ভাবনা নাশ করে দিয়েছেন। ওভাল অফিসে বক্তব্য শুরু করেই তিনি আটবার ‘ধন্যবাদ’ দিয়েছেন। বেশির ভাগই ট্রাম্পের উদ্দেশে। জেলেনস্কি বলেন, ‘অত্যন্ত ধন্যবাদ, মি. প্রেসিডেন্ট...আপনার মনোযোগের জন্য ধন্যবাদ। হত্যাযজ্ঞ ও যুদ্ধ থামাতে আপনার প্রচেষ্টা, ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ।’
মার্কিন ফার্স্ট লেডিকেও ধন্যবাদ জানান জেলেনস্কি। আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের সময় ইউক্রেন থেকে অপহৃত শিশুদের বিষয়ে পুতিনকে একটি চিঠি দেন মেলানিয়া। সেই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে জেলেনস্কি বলেন, ‘এ সুযোগে আপনার স্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানাই।’
এরপর জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের চারপাশে থাকা যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি...সব অংশীদারের জন্য ধন্যবাদ। আমন্ত্রণের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’
এত ধন্যবাদের ফুলঝুরির পর ভ্যান্স এবার আর কোনো মন্তব্য করেননি, বেশির ভাগ সময় ছিলেন নীরব।
যুদ্ধক্ষেত্র ও কূটনীতির মাঝামাঝি পোশাক
বৈঠকের গুরুত্ব ছিল আকাশচুম্বী। তবে ওয়াশিংটনের কূটনীতিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘুরে বেড়ানো প্রশ্নটি ছিল অনেকটা তুচ্ছ—ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কি স্যুট পরবেন? উত্তর: একরকম।
জেলেনস্কি হোয়াইট হাউসে হাজির হন একধরনের ‘প্রায় স্যুট’ পরা অবস্থায়। কালো জ্যাকেটে ছোট ল্যাপেল ও জেট পকেট ছিল, তবে তিনি টাই পরেননি। যুদ্ধক্ষেত্র ও বোর্ডরুমের মাঝামাঝি যে সাজ—সেটাকে বলা যায় ‘কমব্যাট ফরমাল।’ এ পোশাকের বিষয়টি তুচ্ছ মনে হলেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে তা গুরুত্বপূর্ণ। ফেব্রুয়ারিতে স্যুট না পরায় ট্রাম্প বিরক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এবার জেলেনস্কি পোশাক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
ওভাল অফিসে এক সাংবাদিক জেলেনস্কিকে ‘চমৎকার’ দেখাচ্ছে বললে ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে সায় দিয়ে বলেন, ‘আমিও একই কথা বলেছি।’
যুদ্ধবিরতি নিয়ে মতভেদ
বৈঠকে সমবেত ইউরোপীয় নেতারা ও জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলেছেন। তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মন্তব্যগুলোকে অস্পষ্ট রেখে ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন।
তবে একটি মতপার্থক্য প্রকাশ্যে আসে, যখন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ বলেন, তিনি চান পুতিন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হোক। ট্রাম্পও দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধবিরতি চেয়েছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহে আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি তা থেকে সরে আসেন, যা ইউক্রেনের জন্য একপ্রকার কূটনৈতিক পরাজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখন তিনি সরাসরি শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে চান।
মার্জ বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমরা সবাই যুদ্ধবিরতি চাই। আমি কল্পনাও করতে পারছি না, আগামী বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো কথা হবে না। তাই আসুন, আমরা সেই বিষয়টিতেই কাজ করি।’ কিন্তু ট্রাম্প তখন বলে বসেন, অনেক সংঘাত তিনি যুদ্ধবিরতি ছাড়াই সমাধান করেছেন।
মার্কিন সৈন্য যুদ্ধে নামবে কি
এ শীর্ষ বৈঠককে ঘিরে বড় রহস্য ছিল—দীর্ঘ মেয়াদে রাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তি টেকসই করতে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের সহায়তা দেবে। ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেননি যে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মার্কিন সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে নামবেন কি না। উল্লেখ্য যে, পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সব সময় অনাগ্রহী।
বরং ট্রাম্প অস্ত্র বিক্রি ও ইউক্রেনে ব্যবসায়িক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু ইউক্রেনীয়দের কাছে এগুলো নিরাপত্তা নিশ্চয়তার চেয়ে কোনোভাবেই বড় নয়। তাই ইউরোপীয় দেশগুলো নিজেদের সেনা দিয়ে শান্তিরক্ষী মিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তবে ইউক্রেনে মার্কিন সেনা পাঠানো সম্ভব কি না—এমন প্রশ্নে ট্রাম্প সরাসরি না বলেননি। বরং ইঙ্গিত দেন, শিগগির ঘোষণা আসতে পারে। ট্রাম্প বলেন, ‘এটা হয়তো আজকেই জানাতে পারব।’ ইউরোপকে তিনি প্রথম প্রতিরক্ষা লাইন আখ্যা দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও জড়িত থাকবে।
এরপর কী
ট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনকে ফোন করবেন এবং ইউক্রেনকে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করবেন—সময় ও স্থান পরে ঠিক হবে। অসমর্থিত সূত্র বলছে, কিছু আপত্তি থাকলেও উপস্থিত নেতারা একে পরবর্তী যৌক্তিক পদক্ষেপ হিসেবে মেনে নেন।
তবুও সামনে পথ যতটা সহজ ট্রাম্প দেখাচ্ছেন, বাস্তবে তা নয়। কারণ, রাশিয়া অতীতে ইউক্রেনের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক এড়িয়ে গেছে বা বাধাগ্রস্ত করেছে। তাই পুতিন সত্যিই জেলেনস্কির সঙ্গে বসবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। তিনি প্রায়ই জেলেনস্কিকে অবৈধ নেতা বলে উল্লেখ করেন।
এ ছাড়া এমন বৈঠক আসলেই শান্তির জন্য কতটা অগ্রগতি আনতে পারবে—তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের অবস্থানের ফারাক বিশাল। গতকাল ক্রেমলিন জানায়, ইউক্রেনে ন্যাটো সেনার উপস্থিতি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। পাশাপাশি রাশিয়া ইউক্রেনকে বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকা বিশাল অংশের ভূমি ছাড়তে বলছে, যা ইউক্রেনের নেতারা মোটেই মানতে রাজি নন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বশান্তির জন্য অনেক কিছু করছেন। এর জন্য তিনি নোবেল পাওয়ার যোগ্য। একই সঙ্গে ট্রাম্পকে এই পুরস্কার না দেওয়ায় তিনি নোবেল কমিটির সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেদুই বছর যুদ্ধের পর অবশেষে গাজায় কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় হামাসের হাতে থাকা ৪৮ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ২০ জন এখনো জীবিত আছেন। সোমবার পর্যন্ত জারি থাকা ৭২ ঘণ্টার সময়সীমার মধ্যে হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্
৪ ঘণ্টা আগেপ্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নিরস্ত্রীকরণ ‘অসম্ভব ও আলোচনাযোগ্য নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন হামাসের এক কর্মকর্তা। আজ শনিবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘অস্ত্র সমর্পণের প্রশ্নই আসে না, এটি কোনোভাবেই আলোচনার বিষয় নয়।’
৪ ঘণ্টা আগেঘটনাটি ঘটে শুক্রবার স্থানীয় সময় গভীর রাতে ওয়াশিংটন কাউন্টির ছোট শহর লিল্যান্ডে। লিল্যান্ডের মেয়র জন লি শনিবার সকালে দ্য গার্ডিয়ানকে টেলিফোনে জানান, আহতদের মধ্যে অন্তত ১২ জনকে আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে