Ajker Patrika

লেবাননে ভগ্ন অর্থনীতিতে বিদ্যুৎ সংকট, জেনারেটরে নির্ভরতায় ক্যানসার বেড়েছে ৩০ শতাংশ: গবেষণা

লেবাননে ভগ্ন অর্থনীতিতে বিদ্যুৎ সংকট, জেনারেটরে নির্ভরতায় ক্যানসার বেড়েছে ৩০ শতাংশ: গবেষণা

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননের রাজধানী বৈরুতে গত পাঁচ বছরে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বিদ্যুৎ সংকটে বৈরুত ডিজেল জেনারেটরের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এতে সৃষ্ট বায়ুদূষণ এই ক্যানসার ঝুঁকি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে গবেষণাটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। 

আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতের (এইউবি) বিজ্ঞানীদের পরিচালিত ওই গবেষণায় দেখা গেছে, লেবাননের রাজধানী ডিজেল জেনারেটরের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় গত পাঁচ বছরে ক্যানসার আক্রান্তের ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়েছে। ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরীক্ষায় ক্যানসার ধরা পড়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। 

 ২০১৯ সালে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর থেকে লেবাননের শহরগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রায় ৮ হাজার ডিজেল জেনারেটর। এসব শহরের রাস্তায় বের হলেই কানে আসে জেনারেটরের শব্দ, পোড়া তেলের গন্ধ। এর সবচেয়ে বড় প্রভাব হলো, বাসিন্দাদের এই দূষিত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। 

লেবাননের অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় মাকাসেদ। সেখানকার বায়ু পরীক্ষা করে দেখা গেছে, বাতাসে ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি প্রতি ঘন মিটারে ৬০ মাইক্রো গ্রাম। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানের (১৫ মাইক্রোগ্রাম/ঘনমিটার) চার গুন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, এই মানের বায়ুতেও বছরে ৩–৪ দিনের বেশি শ্বাস নেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। 

বায়ুমণ্ডলীয় রসায়নবিদ ও গবেষণা দলটির প্রধান নাজাত সালিবা বলেন, ‘ফলাফল উদ্বেগজনক। এরপরও জেনারেটর–মালিক এবং জ্বালানি আমদানিকারকেরা শহরের অভ্যন্তরে ডিজেল জ্বালিয়ে মানুষের শ্বাসরোধ করে অর্থ উপার্জন করছেন।’ 

সর্বশেষ ২০১৭ সালে বৈরুতের বায়ুমণ্ডল থেকে এইউবি নানা উপাদান সংগ্রহ করেছিল। তখনকার চেয়ে এখন বায়ুমণ্ডলে কার্সিনোজেনিক (ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান) দূষণের মাত্রা বৈরুতের তিনটি এলাকায় দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে ক্যানসারের ঝুঁকি অদূর ভবিষ্যতে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে। 

নাজাত সাবিলা বলেন, ক্যানসার বৃদ্ধির সঙ্গে ডিজেল জেনারেটর ব্যবহারের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। আমরা ডিজেল জেনারেটর থেকে নিঃসরিত ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসাব করেছি। এর মধ্যে কিছু কার্সিনোজেন উপাদান ১এ ক্যাটাগরির। 

বৈরুতের ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা এখন অনুমান করছেন, ২০২০ সাল থেকে সাধারণ ক্যানসারের হার প্রতি বছর ৩০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি সাধারণ পর্যবেক্ষণে (যদিও এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট তথ্য নেই) দেখা গেছে, কমবয়সীরা ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। আর এই পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে। 

জাতীয় গ্রিডে দৈনিক লোডশেডিং থাকে। লোডশেডিংয়ের এই তিন–চার ঘণ্টা জেনারেটরগুলো চলে। উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ২০১৯ সালে। এরপর থেকে সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ খাত দ্রুতই ধসে পড়ে। সংকট মোকাবিলায় ডিজেল জেনারেটরে নির্ভরতা বাড়তে থাকে। ২০২০ সালের আগস্টে বৈরুতের বাণিজ্যিক বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে দুই শতাধিক নিহতের ঘটনার পর লেবাননের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে। 

ক্যানসার চিকিৎসা কেমোথেরাপি নেওয়ার মতো সামর্থ্যও অনেক মানুষের নেই। ক্যানসার সাপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান হানি নাসার বলেন, এখানে ক্যানসার রোগীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা টাকা। সরকারি খাতে গড় মাসিক বেতন প্রায় ১৫০ ডলার। কেমোথেরাপি নিতে চাইলে এই টাকায় কিছুই হবে না। 

 ২০২৩ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) প্রতিবেদনে দেখা যায়, লেবাননে বিদ্যুৎ সংকট রয়েছে, বেশির ভাগ মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পায় না। এরপরও লেবানন সরকার ক্রমাগত তেলনির্ভর সব নীতি গ্রহণ করেছে। যেখানে সারা বিশ্বে বহু দেশ নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকছে। 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সরকারের নীতি নির্ধারণে ডিজেল আমদানিকারকেরা প্রভাব খাটায়। ফলে সরকারের অনেক নীতিই শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখে না। এর প্রধান কারণ হলো, এসব কোম্পানিতে রাজনৈতিক নেতাদের স্বার্থ রয়েছে। 

 ২০১৭ সালে লেবানন সরকার শুধু জেনারেটরের জ্বালানি সরবরাহের জন্য প্রায় ৯০ কোটি ডলার মূল্যের ডিজেল আমদানি করে। ২০২২ সাল নাগাদ এই আমদানি ব্যয় বেড়ে ১৯০ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। 

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো রাজনৈতিক শক্তি লেবানন সরকারের নেই। ফলে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পেতে শর্ত পূরণও করতে পারছে না। এরই মধ্যে সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বাজেট স্থগিত করেছে। এর জন্য ভুগতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। 

গবেষক সালিবা বলেন, লেবানন একটি ‘বড় দুষ্ট চক্রে’ আটকা পড়েছে। আমরা এখন খুব দরিদ্র দেশ, তাই আমরা দাতাদের কাছে টাকা চাই। কিন্তু গত ১০ বছরে সরকারের সমস্ত খাতে প্রবণতা হলো—শুধু টাকা নেওয়া ও নির্দিষ্ট খাতে কিছু কাজ করার পর পরিচালনার জন্য বরাদ্দ না দিয়ে সেটি ফেলে রাখা। প্রকল্পটি চালু রাখার কোনো চেষ্টা বা ইচ্ছা আর দেখা যায় না।’ 

 ২০২০ সালে গ্রিনপিস পরিচালিত একটি সমীক্ষা দেখা যায়, ২০১৮ সালে বায়ু দূষণের কারণে লেবাননে ২ হাজার ৭০০ জন মানুষের অকাল মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, বায়ু দূষণের কারণে লেবাননে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। যা দেশটির মোট জিডিপির ২ শতাংশ। 

এদিকে লেবাননের প্রাপ্তবয়স্কদের আনুমানিক ৭০ শতাংশ মানুষ নিয়মিত ধূমপান করে এবং ৩৮ শতাংশ ধূমপান করেন প্রতিদিন। 

এইউবির সভাপতি এবং ফুসফুস–ঘাড়ের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. ফাদলো খুরি বলেন, বৈরুতে যা ঘটছে তা সামগ্রিক পরিস্থিতির ফলাফল। 

এই গবেষক আরও বলেন, ‘এইউবির গবেষণা এবং গাণিতিক মডেলিংয়ে দেখা গেছে, লেবাননের মানুষ প্রতিদিন যেসব বায়ুবাহিত কার্সিনোজেনের শিকার হয় তার সবই আসে ডিজেল জেনারেটর থেকে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এত শক্তি প্রদর্শন আপনাদের মানায় না—অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি সালাহউদ্দিনের

মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ, দোকানদার থেকে ২৫ সেকেন্ডে খেলেন ২০টি চড়

ফরিদপুরে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবক, ভিডিও ভাইরাল

বেতনের টাকায় সব গাড়ি কোম্পানি, এমনকি দেশও কিনতে পারবেন ইলন মাস্ক

মাথায় হেলমেট নেই চালকের, এক লাখের স্কুটারে জরিমানা ২১ লাখ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া: লাভরভ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। ছবি: সংগৃহীত
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। ছবি: সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস এ তথ্য জানিয়েছে।

লাভরভ বলেন, ‘৫ নভেম্বর নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পুতিন যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নের কাজ চলছে। ফলাফল সম্পর্কে জনসাধারণকে পরে জানানো হবে।’

তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, পুতিনের এই নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘোষণার পর আসে। গত সপ্তাহে ট্রাম্প হঠাৎ ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করবে।

লাভরভ আরও জানান, রাশিয়া এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ট্রাম্পের এই নির্দেশনা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা পায়নি।

গত কয়েক সপ্তাহে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক মারাত্মকভাবে খারাপ হয়েছে। নির্বাচনের আগে ট্রাম্প এক দিনে ইউক্রেন যুদ্ধ থামাবেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফলাফল না আসায় তিনি পুতিনের কর্মকাণ্ডে বারবার হতাশ হয়েছেন। এর ফলে সম্প্রতি পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত একটি বৈঠক বাতিল করেছেন এবং জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর প্রথমবারের মতো রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এত শক্তি প্রদর্শন আপনাদের মানায় না—অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি সালাহউদ্দিনের

মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ, দোকানদার থেকে ২৫ সেকেন্ডে খেলেন ২০টি চড়

ফরিদপুরে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবক, ভিডিও ভাইরাল

বেতনের টাকায় সব গাড়ি কোম্পানি, এমনকি দেশও কিনতে পারবেন ইলন মাস্ক

মাথায় হেলমেট নেই চালকের, এক লাখের স্কুটারে জরিমানা ২১ লাখ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ নির্যাতনের অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রের জি-২০ সম্মেলন বয়কট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: ইপিএ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: ইপিএ

দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও গণহত্যা চলছে। এসব বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সরকারি প্রতিনিধি দক্ষিণ আফ্রিকায় যাবেন না।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় জি-২০ সম্মেলন আয়োজন করা লজ্জাজনক। আফ্রিকানরা সেখানে বসতি স্থাপনকারী ডাচ, ফরাসি ও জার্মান বংশোদ্ভূত শ্বেতাঙ্গদের হত্যা করছে, তাদের জমি ও খামার জোর করে দখল করছে। যত দিন সেখানে এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন চলবে, তত দিন পর্যন্ত কোনো মার্কিন প্রতিনিধি সেখানে যাবে না।’

তবে দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছে। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, আফ্রিকানারদের (দক্ষিণ আফ্রিকায় বসতি স্থাপনকারী ডাচ, ফরাসি ও জার্মান বংশোদ্ভূত শ্বেতাঙ্গ) একচেটিয়া শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী হিসেবে চিত্রিত করা ইতিহাস বিকৃতি। পাশাপাশি, এই সম্প্রদায় নিপীড়নের শিকার—এমন দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার জি-২০-এ থাকা উচিত নয় এবং তিনি নিজে না গিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সকে পাঠাবেন। তবে এখন হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো কর্মকর্তাই এই সম্মেলনে অংশ নেবেন না।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শেষের দিকে জোহানেসবার্গে জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছর জি-২০ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একটি দেশ এই সম্মেলনের আয়োজক হয় এবং তারাই সম্মেলনের অ্যাজেন্ডা নির্ধারণ করে। এ বছর আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকা, পরের বছর যুক্তরাষ্ট্র।

দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার বলছে, তাদের দেশে ‘শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা’ চলছে এমন দাবি ‘ভিত্তিহীন ও অবিশ্বস্ত সূত্রনির্ভর’। দেশটির কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত শরণার্থী কর্মসূচি ঘোষণার পরও খুব অল্পসংখ্যক আফ্রিকান এই সুবিধার জন্য আবেদন করেছেন। এ থেকে বোঝা যায়, আমাদের দেশে শ্বেতাঙ্গরা নিরাপদে আছেন।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে ট্রাম্প একাধিকবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের ওপর বৈষম্য ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন। গত মে মাসে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের সময়ও একই অভিযোগ করেন।

এরপর ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানারদের ‘গণহত্যার শিকার’ আখ্যা দিয়ে শরণার্থী মর্যাদা দেয়। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউস ঘোষণা করে, যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশের সর্বোচ্চ সীমা ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে এবং শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার একটি আদালত চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্পের এই গণহত্যার দাবিকে ‘কল্পনাপ্রসূত ও প্রমাণহীন’ বলে খারিজ করে দেয়।

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে এশীয় অর্থনৈতিক সংকটের পর জি-২০ গঠিত হয়, যাতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এই গোষ্ঠীর সদস্যরা বিশ্বের মোট সম্পদের ৮৫ শতাংশেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করে। ২০০৮ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময় ‘আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্য’ নিয়ে প্রথম জি-২০ নেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে প্রতিবছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আফ্রিকান ইউনিয়ন বিশ্ব অর্থনীতি ও নানা বৈশ্বিক ইস্যুতে আলোচনা করতে এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এত শক্তি প্রদর্শন আপনাদের মানায় না—অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি সালাহউদ্দিনের

মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ, দোকানদার থেকে ২৫ সেকেন্ডে খেলেন ২০টি চড়

ফরিদপুরে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবক, ভিডিও ভাইরাল

বেতনের টাকায় সব গাড়ি কোম্পানি, এমনকি দেশও কিনতে পারবেন ইলন মাস্ক

মাথায় হেলমেট নেই চালকের, এক লাখের স্কুটারে জরিমানা ২১ লাখ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাথায় হেলমেট নেই চালকের, এক লাখের স্কুটারে জরিমানা ২১ লাখ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভাবুন তো, আপনার স্কুটারের দাম এক লাখ টাকা। কিন্তু হেলমেট ও বৈধ কাগজপত্র না থাকায় আপনাকে জরিমানা করা হলো ২৮ লাখ টাকা! কেমন হবে ব্যাপারটা? আশ্চর্যজনক মনে হলেও, এমনি এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরে। হেলমেট ও বৈধ কাগজপত্র ছাড়া রাস্তায় বের হওয়ায় এক স্কুটিচালককে জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ২১ লাখ রুপি! বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা!

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনার পরে জরিমানার চালানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, ওই চালককে জরিমানা করা হয়েছে ২০ লাখ ৭৪ হাজার রুপি। তবে পরে পুলিশ জানায়, তাদের ভুল হয়েছে। ওই ব্যক্তির প্রকৃত জরিমানার পরিমাণ ছিল চার হাজার রুপি।

গত মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগর জেলার নিউ মান্ডি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, আনমোল সিংহল নামের ওই ব্যক্তি হেলমেট ছাড়াই স্কুটার চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও ছিল না।

পথে পুলিশ তাঁর স্কুটারটি জব্দ করে এবং তাঁকে ২০ লাখ ৭৪ হাজার রুপির চালান দেয়। অস্বাভাবিক এই পরিমাণ দেখে বিস্মিত আনমোল সিংহল জরিমানার চালানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। ছবিটি ছড়িয়ে পড়তেই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এরপর পুলিশ দ্রুত চালানের পরিমাণ সংশোধন করে চার হাজার রুপিতে নামিয়ে আনে।

মুজাফফরনগরের ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ অতুল চৌবে জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টরের অসাবধানতার কারণে চালানে ভুল হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘মোটরযান আইনের ২০৭ ধারায় ৪ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়েছিল। কিন্তু সাব-ইন্সপেক্টর ২০৭-এর পর মোটরযান আইন শব্দটি লেখেননি।’

এর ফলে ২০৭ ও ৪০০০ (যা ওই ধারার অধীনে ন্যূনতম জরিমানার পরিমাণ) মিলে হয়ে যায় ২০ লাখ ৭৪ হাজার রুপি। অতুল চৌবে আরও জানান, ওই ব্যক্তির প্রকৃত আসল জরিমানা মাত্র চার হাজার রুপি।

উল্লেখ্য, ভারতে মোটরযান আইনের ২০৭ ধারা অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকলে পুলিশ জরিমানার পাশাপাশি কোনো যানবাহন জব্দ করার ক্ষমতা রাখে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এত শক্তি প্রদর্শন আপনাদের মানায় না—অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি সালাহউদ্দিনের

মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ, দোকানদার থেকে ২৫ সেকেন্ডে খেলেন ২০টি চড়

ফরিদপুরে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবক, ভিডিও ভাইরাল

বেতনের টাকায় সব গাড়ি কোম্পানি, এমনকি দেশও কিনতে পারবেন ইলন মাস্ক

মাথায় হেলমেট নেই চালকের, এক লাখের স্কুটারে জরিমানা ২১ লাখ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ, দোকানদার থেকে ২৫ সেকেন্ডে খেলেন ২০টি চড়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছবি: সংগৃহীত
দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদ শহরে ডাকাতির উদ্দেশ্যে জুয়েলারির দোকানে ঢুকেছিলেন এক নারী। তবে তাঁর উদ্দেশ্য পূরণ তো হয়ইনি; উল্টো দোকানদারের কাছ থেকে ২৫ সেকেন্ডে কমপক্ষে ২০টি চড় খেয়েছেন তিনি।

দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া দৃশ্যে দেখা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুখে ওড়না পেঁচিয়ে আহমেদাবাদের রানিপ এলাকায় সবজি বাজারের কাছে এক গয়নার দোকানে ক্রেতা সেজে প্রবেশ করেন ওই নারী। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ তিনি দোকানদারের চোখে মরিচের গুঁড়া ছুড়ে মারার চেষ্টা করেন। কিন্তু মরিচের গুঁড়া দোকানদারের চোখে লাগেনি।

পরিস্থিতি বুঝতে পেরে দোকানদার উঠে দাঁড়িয়ে ওই নারীকে একের পর এক চড় মারতে শুরু করেন—২৫ সেকেন্ডে অন্তত ২০ বার। এরপর তিনি কাউন্টার টপকে ওই নারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁকে টেনে বাইরে নিয়ে যান এবং আরও চড় মারতে থাকেন।

পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন দোকানদার। তবুও সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে ওই নারীর খোঁজে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

রানিপ থানার পুলিশ পরিদর্শক কেতন ভাস বলেন, ‘দোকানদার অভিযোগ করছেন না। তবে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আমরা ওই নারীকে শনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছি।’

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এত শক্তি প্রদর্শন আপনাদের মানায় না—অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি সালাহউদ্দিনের

মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ, দোকানদার থেকে ২৫ সেকেন্ডে খেলেন ২০টি চড়

ফরিদপুরে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবক, ভিডিও ভাইরাল

বেতনের টাকায় সব গাড়ি কোম্পানি, এমনকি দেশও কিনতে পারবেন ইলন মাস্ক

মাথায় হেলমেট নেই চালকের, এক লাখের স্কুটারে জরিমানা ২১ লাখ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত