Ajker Patrika

অন্তর্বর্তী সংবিধান গ্রহণ করল সিরিয়া, গণপরিষদ নির্বাচন শিগগির

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা। ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়া একটি অন্তর্বর্তী সংবিধান গ্রহণ করেছে। দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা গতকাল বৃহস্পতিবার এক অস্থায়ী সংবিধানে স্বাক্ষর করেন। এই সংবিধান আগামী পাঁচ বছর দেশটির গণতান্ত্রিক রূপান্তরকালীন সময়ের জন্য কার্যকর হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

অন্তর্বর্তী সংবিধানে স্বাক্ষরের সময় আল-শারা বলেন, ‘আমি আশা করি, এই সাংবিধানিক ঘোষণা সিরিয়ার জন্য এক নতুন ইতিহাসের সূচনা করবে, যেখানে আমরা নিপীড়নের পরিবর্তে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করব।’

সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য আবদুলহামিদ আল-আওয়াক জানান, অস্থায়ী সংবিধান পূর্ববর্তী সংবিধানের কিছু দিক অক্ষুণ্ন রেখেছে, যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপ্রধানকে অবশ্যই মুসলিম হতে হবে এবং ইসলামি আইনকে বিচারব্যবস্থার মূল উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।

দামেস্ক থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক রাসুল সরদার জানান, নেতৃত্বের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে বিধান সংযোজন করা হবে কি না, তা একটি ‘বিতর্কিত বিষয়’ ছিল। তিনি বলেন, ‘এটি সংবিধানের ধারাগুলোর মধ্যে থাকবে কি না, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। কিন্তু এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, রাষ্ট্রপ্রধানকে অবশ্যই মুসলিম হতে হবে।’

অস্থায়ী সংবিধানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং নারীদের ‘সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার’ নিশ্চিত করার বিধান অন্তর্ভুক্ত আছে বলে জানান আল-আওয়াক। তিনি বলেন, ‘এটি সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্য আনবে।’

এই সংবিধানে অন্তর্বর্তী সময়ে বিচারব্যবস্থার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, বাশার আল-আসাদ সরকারের আমলে সংঘটিত অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করার ব্যাপারে জোরারোপ করা হয়েছে এতে। সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাহী ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতে কেন্দ্রীভূত থাকবে বলে জানান আল-আওয়াক। তিনি বলেন, ‘যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন আছে।’

এই সংবিধানের আওতায় একটি গণপরিষদ গঠন করা হবে, যার এক-তৃতীয়াংশ সদস্য নিয়োগ করবেন প্রেসিডেন্ট। এই পরিষদ ‘নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত’ আইন প্রণয়নের দায়িত্ব পালন করবে। প্রেসিডেন্ট শারার মতে, নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চার থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

রাসুল সরদার বলেন, ‘এই গণপরিষদ প্রেসিডেন্টকে অপসারণের ক্ষমতাও রাখবে। তাই তাত্ত্বিকভাবে এটি সম্ভব, তবে বাস্তবে এটি অত্যন্ত কঠিন হবে, কারণ পরিষদের অনেক সদস্য সরাসরি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন।’ তিনি জানান, নতুন সংবিধানের আওতায় একটি নতুন কমিটি গঠন করা হবে, যারা একটি স্থায়ী সংবিধান প্রণয়ন করবে। তবে এটি সিরিয়ার রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিত্ব কতটুকু নিশ্চিত করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

এর আগে, গত সোমবার আল-শারা সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে পৌঁছান। যার মধ্যে অস্ত্রবিরতি ও এসডিএফ বাহিনীকে কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত এসডিএফ প্রশাসন এই সাংবিধানিক ঘোষণার সমালোচনা করে বলেছে, এটি ‘সিরিয়ার বাস্তবতা ও বৈচিত্র্যের পরিপন্থী।’ তারা জানায়, খসড়া সংবিধানটি ‘সিরিয়ার জনগণের চেতনা এবং কুর্দি, আরব, সিরিয়াক, আসিরিয়ানসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব’ করে না।

আল-শারার দল হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গত ডিসেম্বরে আসাদ সরকারকে উৎখাতের পর থেকে সিরিয়ার বিভিন্ন অংশে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। গত মাসে অনুষ্ঠিত আল-শারার জাতীয় সংলাপ সম্মেলনে সংবিধানের দাবি এবং অন্তর্বর্তী গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিবিসির বিরুদ্ধে ১০০ কোটি ডলারের মানহানি মামলা করতে পারেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে বিলিয়ন ডলারের মানহানি মামলা করার কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে বিলিয়ন ডলারের মানহানি মামলা করার কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে ১০০ কোটি ডলারের মানহানি মামলা করার হুমকি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন সূত্রগুলো। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবনে হামলার আগমুহূর্তে ট্রাম্প সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছিলেন—এমন ভুল ধারণা তৈরি করার মতো করে তাঁর ভাষণ সম্পাদনা করায় বিবিসি গতকাল সোমবার ক্ষমা চাওয়ার পর এই বিষয়টি সামনে এল।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছে—ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে ১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন। ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হওয়ায় গত রোববার বিবিসির শীর্ষ দুই কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, ব্রিটিশ এই সম্প্রচার সংস্থাকে শুক্রবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে ২০২৪ সালের ওই ডকুমেন্টারি প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাওয়ার জন্য। এটি প্রচারিত হয়েছিল ২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এর আগে মার্কিন গণমাধ্যমকে চুপ করাতে মামলা করার অভিযোগ উঠেছিল। তবে সাম্প্রতিক এই বিতর্ক আবারও আলোচনায় এনেছে বিবিসিকে। দীর্ঘদিন ধরে এই সংবাদমাধ্যমটিকে অনেকেই ভালোবাসেন, আবার অনেকেই পক্ষপাতের অভিযোগেও অভিযুক্ত করেন।

ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী দলের মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, বিবিসিকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘বিবিসি ইচ্ছাকৃতভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য বিকৃত করেছে, যাতে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা যায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাদের জবাবদিহির আওতায় আনবেন, যারা মিথ্যা, প্রতারণা ও ভুয়া খবর ছড়ায়।’

এই বিষয়ে বিবিসির এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা চিঠিটি পর্যালোচনা করব এবং যথাসময়ে সরাসরি জবাব দেব।’

এদিকে, বিবিসির চেয়ারম্যান সামির শাহ ব্রিটিশ এমপিদের উদ্দেশে পাঠানো এক চিঠিতে স্বীকার করেছেন, ট্রাম্পের বক্তব্যের সম্পাদনা এমন ধারণা সৃষ্টি করেছে যেন—তিনি সরাসরি সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বিবিসি এই ভুল সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষমা চায়।’ এ সময় তিনি এবং প্রতিশ্রুতি দেন, পুরো বিষয়টিকে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ তদারকি ব্যবস্থায় সংস্কার আনা হবে।

রোববার তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি ও নিউজ বিভাগের প্রধান ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেন। ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিবিসির সাংবাদিকদের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ ও ‘অসৎ’ বলে আখ্যা দেন। তার প্রেস সচিব বিবিসিকে বলেন, ‘শতভাগ ভুয়া খবর প্রচারকারী।’

তবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভুয়া তথ্যের যুগে বিবিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বাস ধরে রাখতে হলে বিবিসির দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি এবং ভুল হলে তা সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিল্লি গাড়ি বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িতরা রেহাই পাবে না, মোদির কড়া হুঁশিয়ারি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ২০
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত

নয়াদিল্লির লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এই ঘটনার ষড়যন্ত্রকারীরা রেহাই পাবে না। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার ওই বিস্ফোরণে ৯ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন। মোদি বলেন, ‘আমাদের সংস্থাগুলো এই ষড়যন্ত্রের মূলে পৌঁছাবে। যারা এর সঙ্গে জড়িত, কেউই রেহাই পাবে না। সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, আজ মঙ্গলবার ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে বক্তব্য দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদি এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, ‘আজ আমি দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে এখানে হাজির হয়েছি। গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লিতে যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে, তা পুরো দেশকে মর্মাহত করেছে। নিহতদের পরিবারের শোক আমি বুঝতে পারছি। পুরো দেশ আজ তাদের পাশে।’

এর আগে গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে এক ট্রাফিক সিগন্যালে একটি ধীরগতির গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। সাদা রঙের হুন্দাই আই-২০ গাড়িটিতে বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। এতে ৯ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন। আশপাশের বেশ কয়েকটি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এলাকা ছিল রাজধানীর ব্যস্ততম জায়গাগুলোর একটি।

সূত্র জানায়, গাড়িটির মালিক ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা উমর মোহাম্মদ। তিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। উমর পেশায় চিকিৎসক। তবে তিনি টেলিগ্রাম অ্যাপে সক্রিয় ‘এক উগ্রপন্থী চিকিৎসক দলের’ সদস্য ছিলেন। ওই দলটির সঙ্গে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের যোগাযোগ রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের দাবি।

বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে প্রতিবেশী রাজ্য হরিয়ানার ফরিদাবাদ পুলিশ এক কাশ্মীরি চিকিৎসকের ভাড়া করা দুটি ঘর থেকে ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক ও দাহ্য পদার্থ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, ওই চিকিৎসকের নাম মুজাম্মিল শাকিল। তাঁর সঙ্গে আরেক কাশ্মীরি চিকিৎসক আদিল আহমদ রাথারসহ মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, তারা জইশ-ই-মোহাম্মদ ও আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের সঙ্গে যুক্ত একটি ‘হোয়াইট-কলার টেরর মডিউলের’ সদস্য। এই নেটওয়ার্কের কার্যক্রম ছিল কাশ্মীর, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশজুড়ে।

উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকগুলোর মধ্যে ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, পটাশিয়াম নাইট্রেট ও সালফার। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, দিল্লির লাল কেল্লা সংলগ্ন বিস্ফোরণের সঙ্গেও এই ‘হোয়াইট-কলার মডিউলের’ যোগ পাওয়া গেছে। উমরও ওই নেটওয়ার্কের সদস্য ছিলেন বলে ধারণা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর।

এর আগে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর মোদি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। হামলার দুই দিন পর বিহারে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বের কাছে বলতে চাই—ভারত প্রতিটি জঙ্গি, তাদের সহযোগী ও মদদদাতাকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেবে।’

মোদি আরও বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত তাদের তাড়া করব। ভারতের মনোবল ভাঙা যাবে না। সন্ত্রাসবাদের কোনো পরিণতি ছাড়া যাবে না। বিচার নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। গোটা দেশ এই অঙ্গীকারে একতাবদ্ধ, আর মানবতার পক্ষের সবাই আমাদের সঙ্গে আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্ষেপণাস্ত্রসহ মিগ–৩১ যুদ্ধবিমান চুরির চেষ্টা করেছিল ইউক্রেন–যুক্তরাজ্য, দাবি রাশিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কিনঝাল ক্ষেপণাস্ত্রসহ রাশিয়ার মিগ–৩১ যুদ্ধবিমান চুরি করতে চেয়েছিল যুক্তরাজ্য ও ইউক্রেন। ছবি: সংগৃহীত
কিনঝাল ক্ষেপণাস্ত্রসহ রাশিয়ার মিগ–৩১ যুদ্ধবিমান চুরি করতে চেয়েছিল যুক্তরাজ্য ও ইউক্রেন। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) জানিয়েছে, ইউক্রেন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের এক পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছে তারা। ওই পরিকল্পনায় রুশ এক পাইলটকে ৩০ লাখ ডলারের প্রলোভন দেখিয়ে কিনঝাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রযুক্ত মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান চুরি করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মঙ্গলবার এই তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রুশ বার্তা সংস্থা রিয়া নাভোস্তি জানিয়েছে, এফএসবি বলেছে—চুরি করা ওই যুদ্ধবিমানটি রোমানিয়ার কনস্টান্টা শহরের একটি ন্যাটো ঘাঁটির দিকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে যুদ্ধবিমানটিকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে গুলি করে নামিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল।

সোভিয়েত আমলের ডাকসাইটে গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির উত্তরসূরি এফএসবি জানিয়েছে, ইউক্রেন ও ব্রিটেন ওই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে বড় ধরনের ‘উসকানিমূলক অভিযান’ চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। ইউক্রেনীয় সামরিক গোয়েন্দারা রুশ পাইলটদের ৩০ লাখ ডলার ঘুষ দিয়ে বিমান চুরির চেষ্টা চালিয়েছিল বলেও সংস্থাটি দাবি করে।

রিয়া নাভোস্তির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এফএসবির গৃহীত পদক্ষেপে ইউক্রেন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার বড় ধরনের উসকানিমূলক পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।’

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে কিছু বার্তা ও রেকর্ডিং দেখানো হয়। যেখানে দেখা যায় এক ব্যক্তি ইউক্রেন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের হয়ে কাজ করছিল। সে একজন রুশ পাইলটকে ৩০ লাখ ডলার প্রস্তাব দেয় মিগ যুদ্ধবিমানটি ইউরোপে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ওই পাইলটকে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। তবে রয়টার্স এই ঘটনার স্বাধীনভাবে সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

রাশিয়ার কিনঝাল হলো আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। মস্কো দাবি করে এটি হাইপারসনিক অস্ত্র, যার গতি অত্যন্ত বেশি এবং এটি এমনভাবে উড়ে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে শনাক্ত বা আটকানো কঠিন।

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিটেনকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখে আসছে। মস্কোর অভিযোগ, ইউক্রেন যুদ্ধকে উসকে দিতে ব্রিটেন ভূমিকা রাখছে এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দারা ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে নানা অভিযান চালাতে সহায়তা করছে। অন্যদিকে, ব্রিটেন রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণকে সাম্রাজ্যবাদী ভূমি দখলের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখে। লন্ডনের দাবি, রুশ গোয়েন্দারা ইচ্ছে করে ব্রিটেন ও ইউরোপজুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, যাতে গণতন্ত্র দুর্বল হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হোয়াইট হাউসে আল–শারার ঐতিহাসিক সফর, সিরিয়াকে সফল করার প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪১
হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আহমেদ আল–শারা। ছবি: এএফপি
হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আহমেদ আল–শারা। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার জানিয়েছেন, সিরিয়াকে সফল রাষ্ট্রে পরিণত করতে তিনি সব ধরনের পদক্ষেপ নেবেন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকের পর এ কথা বলেন ট্রাম্প।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শারার ওয়াশিংটন সফর তাঁর জন্য অসাধারণ এক সফল বছর শেষের প্রতীক। বিদ্রোহী থেকে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে ওঠা শারা গত বছর দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই তিনি বিশ্ব সফরে গিয়ে নিজেকে মধ্যপন্থী নেতা হিসেবে পরিচয় করানোর চেষ্টা করছেন। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে চান এবং আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা দূর করতে চান।

ওয়াশিংটনে শারার প্রধান লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া। বৈঠকের সময়ে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, সিজার অ্যাক্ট-এর আওতায় থাকা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার স্থগিতাদেশ আরও ১৮০ দিনের জন্য বাড়ানো হয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের।

শারার ওয়াশিংটন সফর ছিল কোনো সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর। ছয় মাস আগে সৌদি আরবে ট্রাম্প ও শারার প্রথম সাক্ষাৎ হয়। সেখানেই ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলার ইঙ্গিত দেন। কয়েক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, শারা আর ‘বিশ্বব্যাপী বিশেষভাবে চিহ্নিত সন্ত্রাসী’ নন।

হোয়াইট হাউসে শারাকে স্বাগত জানানোর পরিবেশ ছিল অস্বাভাবিকভাবে নীরব। একসময় যার মাথার দাম ছিল যুক্তরাষ্ট্রে ১ কোটি ডলার, তিনি প্রবেশ করেন পাশের দরজা দিয়ে। অর্থাৎ, হোয়াইট হাউসের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করেননি তিনি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, শারা একজন ‘শক্তিশালী নেতা’। তিনি শারার প্রতি আস্থা রাখেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যা কিছু পারি, তা করব, যাতে সিরিয়া সফল হয়।’ তবে শারার অতীত প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন, ‘আমাদের সবারই কঠিন অতীত আছে।’

শারা গত বছর ক্ষমতায় আসেন। এরপর সিরিয়া দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। আসাদের পুরোনো মিত্র ইরান ও রাশিয়ার দিক থেকে দেশটি সরে এসেছে। নতুনভাবে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে তুরস্ক, উপসাগরীয় দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে।

নিরাপত্তা আলোচনাও বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার নাজুক রাজনৈতিক পরিবর্তনে সহায়তা করতে চায়। দেশটি ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ‘গ্লোবাল কোয়ালিশন টু ডিফিট আইএস’-এর সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দামেস্কের এক বিমানঘাঁটিতে সামরিক উপস্থিতি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত