Ajker Patrika

অর্থনৈতিক ধসের পর ক্যাসিনো ব্যবসায় মন দিয়েছে শ্রীলঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে প্রথম সমন্বিত ক্যাসিনো রিসোর্ট তৈরি হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে প্রথম সমন্বিত ক্যাসিনো রিসোর্ট তৈরি হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

অর্থনৈতিক ধসের পর নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে এক ভিন্নধর্মী কৌশল নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিক মুক্তির উপায় হিসেবে দেশটি ক্যাসিনো শিল্পে জোর দিচ্ছে। বলা যায়—একসময় সমুদ্রসৈকত ও ঐতিহাসিক স্থানের জন্য বিখ্যাত এই দ্বীপরাষ্ট্র এখন বাজি ধরেছে পর্যটন নির্ভর বিনিয়োগে। আর এই জন্য দেশটির প্রথম মার্ক্সবাদী প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েকে ভারত ও চীনের ধনী পর্যটকদের আকর্ষণ করতে ক্যাসিনো শিল্পকে কেন্দ্র করে নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ২০২২ ও ২০২৩ সালের ভয়াবহ অর্থনৈতিক ধস কাটিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন অনুরা। ক্ষমতার এক বছর পূর্তির প্রাক্কালে তিনি উদ্বোধন করেছেন ‘সিটি অব ড্রিমজ’। এটি মূলত রাজধানী কলম্বোর সমুদ্রতটে অবস্থিত বিশাল এক রিসোর্ট।

ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

১.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই রিসোর্টে আছে ৮০০ কক্ষ, বিলাসবহুল শপিং মল ও সম্মেলন কেন্দ্র। এটি যৌথভাবে নির্মাণ করেছে শ্রীলঙ্কার জন কিলস হোল্ডিংস ও ম্যাকাওভিত্তিক মেলকো রিসোর্টস। দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে এটাই প্রথম সমন্বিত ক্যাসিনো রিসোর্ট। এটির উদ্বোধনীতে বলিউড তারকা হৃতিক রোশনও উপস্থিত ছিলেন।

শ্রীলঙ্কার সরকারি হিসাব অনুযায়ী—এই বছর পর্যটক আগমন ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৩০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। এতে গত বছরের ৩.৭ বিলিয়ন ডলার আয় বেড়ে হতে পারে ৫ বিলিয়ন ডলার।

দেশটির পর্যটনমন্ত্রী রুয়ান রানাসিংহে বলেছেন, স্বল্পমেয়াদে বেশি পর্যটক আনার চেষ্টা চলছে। তবে উচ্চমানের ও টেকসই পর্যটনই দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য। এই ক্ষেত্রে ক্যাসিনো খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার জিডিপির ৪ শতাংশ জোগায় পর্যটন। সরকার আশা করছে, এটি ১০ শতাংশে পৌঁছাবে।

দেশটির অর্থনীতি ২০২৩ সালে আবার প্রবৃদ্ধিতে ফিরেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি বছর প্রবৃদ্ধি ৪.৫ শতাংশ হবে, যা বিশ্বব্যাংকের অনুমানের চেয়ে বেশি। তবে ২০২৮ সাল থেকে ঋণ শোধ শুরু করতে হবে শ্রীলঙ্কাকে। ২০২২ সালে তারা বৈদেশিক ঋণে খেলাপি হয়েছিল।

‘সিটি অব ড্রিমজ’ নিয়ে আশাবাদী বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, এটি নতুন বাজার উন্মোচন করবে। এটির নির্মাণে অংশ নেওয়া ম্যাকাওভিত্তিক মেলকো রিসোর্টসের চেয়ারম্যান লরেন্স হো বলেছেন, ‘আমরা এখানে পর্যটন ও ক্যাসিনো খাতের যে সম্ভাবনা, তার সামান্যই স্পর্শ করতে পেরেছি।’

ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

সরকারের আশা, আগামী এক দশক ভারতীয় পর্যটকই হবে তাদের মূল ভরসা। গত বছর শ্রীলঙ্কায় আসা ২০ লাখ পর্যটকের এক-চতুর্থাংশ ছিলেন ভারতীয়, আর ৭ শতাংশ ছিলেন চীনা। দুই দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসামুক্ত সুবিধাও রয়েছে।

এদিকে ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংসদে পাস হয়েছে ‘গ্যাম্বলিং রেগুলেটরি অথোরিটি’ আইন। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এতে অর্থমন্ত্রীর হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রীয় লটারি তদারকির বাইরে রাখা হয়েছে এবং শাস্তির পরিমাণও খুবই কম। সরকার অবশ্য বলছে, এই আইন শিল্পকে শৃঙ্খলায় রাখতে ও কর্মসংস্থান বাড়াতে সহায়ক হবে।

পর্যটন শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক আয়ের তৃতীয় বৃহৎ উৎস। এবার ক্যাসিনো শিল্প সেই আয়ে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ বার কল দিয়েছেন ট্রাম্প, ধরেননি মোদি

জিন সম্পাদনায় নতুন সাফল্য, ডায়াবেটিস রোগীদের আর ইনসুলিন নিতে হবে না

প্রায় ৭ লাখ টাকার ধার শোধ না করায় এসপি থেকে অতিরিক্ত এসপি হলেন নিহার রঞ্জন হাওলাদার

অবৈধ মোবাইল দিয়ে বন্দীরা আমাকে কল করেন, এটা বিস্ময়কর: কারা মহাপরিদর্শক

ন্যূনতম কর একটা কালাকানুন: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত