মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে এর বিস্তার মূলত নগরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও গত পাঁচ বছরে কম-বেশি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী গণপরিসরে কার্যকর প্রতিষেধক না থাকায় রোগী ও মৃত্যুহার কমানোর একমাত্র উপায় কার্যকর প্রতিরোধ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা। কিন্তু রোগটি জনস্বাস্থ্যে গুরুতর উদ্বেগের কারণ হলেও এর প্রতিরোধে সরকার এখনো গতানুগতিক ব্যবস্থার বাইরে যেতে পারেনি।
ডেঙ্গু ভাইরাস রোগ বহুদিন ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে বিদ্যমান। বিশ্বের প্রথম ডেঙ্গু মহামারি রেকর্ড করা হয় ১৭৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায়। ১৯৫০-এর দশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনে এর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ১৯৬৩ সালে ভারতের কলকাতায় এবং ১৯৬৪ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। সে সময় রোগটিকে স্থানীয়ভাবে ‘ঢাকা ফিভার’ নামে অভিহিত করা হয়েছিল। বাংলাদেশে ২০০০ সাল থেকে সরকারিভাবে ডেঙ্গু-সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ শুরু হয়। এতে রোগটি দেশে রোগতাত্ত্বিকভাবে বিশেষ গুরুত্ব পেতে থাকে। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়েও ডেঙ্গু মোকাবিলায় দক্ষ ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি।
সরকারের তথ্য বলছে, দেশে বিভিন্ন সময় ডেঙ্গু সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যুর সংখ্যা ওঠানামা হয়েছে। প্রথম দিকে মূলত ঢাকা মহানগরে সীমিত থাকলেও ২০১৯ সালে অন্যান্য শহর ও গ্রামেও এটি ছড়িয়ে পড়ে। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে দেশে সাড়ে ১৯ হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং ২২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধীরে ধীরে একটা পর্যায়ে ডেঙ্গু রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সোয়া ১ লাখ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ২৩১ জনের মৃত্যু হয়। ২০২৩ সালে দেশে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখা দেয়। সে বছর সোয়া ৩ লাখ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ১ হাজার ৭০৫ জন মারা যায়। ২০২৪ সালে ১ লাখের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরের শুরু থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮২ জন মারা গেছে। এ সময়ে সারা দেশে ৪৩ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত আড়াই দশকে দেশে ডেঙ্গুতে অন্তত ৩ হাজার ৩২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে ডেঙ্গুর যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট কয়েকটি হাসপাতালের তথ্যের ওপর নির্ভরশীল। ফলে যেসব রোগী বাসাতেই চিকিৎসা নেয় বা ডেঙ্গু হওয়ার কথা আদৌ জানেও না, তাদের সংখ্যা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে ১০ গুণ বেশি হতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেঙ্গু সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ায় জাতীয়ভাবেই তা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে কোনো দেশে একটি রোগে মৃত্যুর হার না কমার অর্থ হচ্ছে রোগী ও রোগ ব্যবস্থাপনার ঘাটতি রয়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণ ডেঙ্গু মোকাবিলা কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশার জীবনচক্র বোঝা ছাড়া কেবল ফগিং করে মশা তাড়ানো কার্যকর হচ্ছে না। মশা যেখানে ডিম পাড়ে, সে স্থানেই কীটনাশক প্রয়োগ এবং পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম ছারোয়ার এ বিষয়ে বলেন, মশা মারার আগে তার জীবনচক্র, প্রজনন ও অবস্থান বোঝা দরকার। স্যানিটেশন ও পানি ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকায় মশার ডিম পাড়ার স্থান বাড়ছে। শুধু ফগিং করে মশা তাড়ালে তা কার্যকর হবে না। আবার দীর্ঘদিন একই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলে মশা তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ওষুধ প্রয়োগের পর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ না করলে তার কার্যকারিতা বোঝা যায় না।
কীটতত্ত্ববিদ মো. গোলাম ছারোয়ার বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে রোগী ও তার অবস্থান শনাক্ত করে (কন্ট্রাক ট্রেসিং) সেই এলাকার মশা নির্মূলের ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এটি মশা নির্মূলের সঙ্গে সমন্বিত না হওয়ায় রোগী যেখানে আক্রান্ত, সেখানে মশা বেঁচে থেকে বংশবিস্তার করে। এটি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণকে আরও জটিল করে তোলে।
পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেকট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, শুরু থেকেই সমন্বিত উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের হলেও তাদের কার্যক্রম মূলত ফগিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। রোগীর ওপর কার্যকর নজরদারি হয় না। রোগী বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে। তাই রোগীর সংখ্যা কমাতে সমন্বিত চেষ্টা নিতে হবে। জনগণের সচেতনতা ও সম্পৃক্ততা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
সরকারকে ডেঙ্গু জনস্বাস্থ্যের জরুরি সমস্যা হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সরকার এখনো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গতানুগতিক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জরুরি সমস্যা হিসেবে ঘোষণা করা হলে দায় এড়ানোর প্রবণতা থাকবে না এবং সমন্বিতভাবে কাজ করা সম্ভব হবে। আমাদের সামনে কোভিড মডেল রয়েছে। এতে অর্থ বরাদ্দেও সমস্যা হবে না।’
ডা. মুশতাক বলেন, পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে কাজে লাগানো জরুরি। পর্যবেক্ষণযোগ্য রোগীদের মাধ্যমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেখে তাদের মধ্য থেকে সংকটাপন্নদের দ্রুত তৃতীয় পর্যায়ে পাঠাতে হবে। রোগী, এডিস লার্ভা এবং কীটনাশকের সার্ভিল্যান্স সমন্বিতভাবে হচ্ছে না। অঞ্চলভিত্তিক রোগতাত্ত্বিক নজরদারিও নেই। বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার এখন বিশ্বের মধ্যে বেশি। যেসব দেশ মৃত্যুহার কমাতে পেরেছে, তারা রোগতত্ত্বকেই গুরুত্ব দিয়েছে।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে এর বিস্তার মূলত নগরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও গত পাঁচ বছরে কম-বেশি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী গণপরিসরে কার্যকর প্রতিষেধক না থাকায় রোগী ও মৃত্যুহার কমানোর একমাত্র উপায় কার্যকর প্রতিরোধ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা। কিন্তু রোগটি জনস্বাস্থ্যে গুরুতর উদ্বেগের কারণ হলেও এর প্রতিরোধে সরকার এখনো গতানুগতিক ব্যবস্থার বাইরে যেতে পারেনি।
ডেঙ্গু ভাইরাস রোগ বহুদিন ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে বিদ্যমান। বিশ্বের প্রথম ডেঙ্গু মহামারি রেকর্ড করা হয় ১৭৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায়। ১৯৫০-এর দশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনে এর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ১৯৬৩ সালে ভারতের কলকাতায় এবং ১৯৬৪ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। সে সময় রোগটিকে স্থানীয়ভাবে ‘ঢাকা ফিভার’ নামে অভিহিত করা হয়েছিল। বাংলাদেশে ২০০০ সাল থেকে সরকারিভাবে ডেঙ্গু-সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ শুরু হয়। এতে রোগটি দেশে রোগতাত্ত্বিকভাবে বিশেষ গুরুত্ব পেতে থাকে। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়েও ডেঙ্গু মোকাবিলায় দক্ষ ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি।
সরকারের তথ্য বলছে, দেশে বিভিন্ন সময় ডেঙ্গু সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যুর সংখ্যা ওঠানামা হয়েছে। প্রথম দিকে মূলত ঢাকা মহানগরে সীমিত থাকলেও ২০১৯ সালে অন্যান্য শহর ও গ্রামেও এটি ছড়িয়ে পড়ে। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে দেশে সাড়ে ১৯ হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং ২২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধীরে ধীরে একটা পর্যায়ে ডেঙ্গু রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সোয়া ১ লাখ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ২৩১ জনের মৃত্যু হয়। ২০২৩ সালে দেশে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখা দেয়। সে বছর সোয়া ৩ লাখ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ১ হাজার ৭০৫ জন মারা যায়। ২০২৪ সালে ১ লাখের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরের শুরু থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮২ জন মারা গেছে। এ সময়ে সারা দেশে ৪৩ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত আড়াই দশকে দেশে ডেঙ্গুতে অন্তত ৩ হাজার ৩২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে ডেঙ্গুর যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট কয়েকটি হাসপাতালের তথ্যের ওপর নির্ভরশীল। ফলে যেসব রোগী বাসাতেই চিকিৎসা নেয় বা ডেঙ্গু হওয়ার কথা আদৌ জানেও না, তাদের সংখ্যা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে ১০ গুণ বেশি হতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেঙ্গু সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ায় জাতীয়ভাবেই তা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে কোনো দেশে একটি রোগে মৃত্যুর হার না কমার অর্থ হচ্ছে রোগী ও রোগ ব্যবস্থাপনার ঘাটতি রয়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণ ডেঙ্গু মোকাবিলা কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশার জীবনচক্র বোঝা ছাড়া কেবল ফগিং করে মশা তাড়ানো কার্যকর হচ্ছে না। মশা যেখানে ডিম পাড়ে, সে স্থানেই কীটনাশক প্রয়োগ এবং পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম ছারোয়ার এ বিষয়ে বলেন, মশা মারার আগে তার জীবনচক্র, প্রজনন ও অবস্থান বোঝা দরকার। স্যানিটেশন ও পানি ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকায় মশার ডিম পাড়ার স্থান বাড়ছে। শুধু ফগিং করে মশা তাড়ালে তা কার্যকর হবে না। আবার দীর্ঘদিন একই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলে মশা তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ওষুধ প্রয়োগের পর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ না করলে তার কার্যকারিতা বোঝা যায় না।
কীটতত্ত্ববিদ মো. গোলাম ছারোয়ার বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে রোগী ও তার অবস্থান শনাক্ত করে (কন্ট্রাক ট্রেসিং) সেই এলাকার মশা নির্মূলের ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এটি মশা নির্মূলের সঙ্গে সমন্বিত না হওয়ায় রোগী যেখানে আক্রান্ত, সেখানে মশা বেঁচে থেকে বংশবিস্তার করে। এটি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণকে আরও জটিল করে তোলে।
পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেকট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, শুরু থেকেই সমন্বিত উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের হলেও তাদের কার্যক্রম মূলত ফগিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। রোগীর ওপর কার্যকর নজরদারি হয় না। রোগী বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে। তাই রোগীর সংখ্যা কমাতে সমন্বিত চেষ্টা নিতে হবে। জনগণের সচেতনতা ও সম্পৃক্ততা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
সরকারকে ডেঙ্গু জনস্বাস্থ্যের জরুরি সমস্যা হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সরকার এখনো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গতানুগতিক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জরুরি সমস্যা হিসেবে ঘোষণা করা হলে দায় এড়ানোর প্রবণতা থাকবে না এবং সমন্বিতভাবে কাজ করা সম্ভব হবে। আমাদের সামনে কোভিড মডেল রয়েছে। এতে অর্থ বরাদ্দেও সমস্যা হবে না।’
ডা. মুশতাক বলেন, পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে কাজে লাগানো জরুরি। পর্যবেক্ষণযোগ্য রোগীদের মাধ্যমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেখে তাদের মধ্য থেকে সংকটাপন্নদের দ্রুত তৃতীয় পর্যায়ে পাঠাতে হবে। রোগী, এডিস লার্ভা এবং কীটনাশকের সার্ভিল্যান্স সমন্বিতভাবে হচ্ছে না। অঞ্চলভিত্তিক রোগতাত্ত্বিক নজরদারিও নেই। বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার এখন বিশ্বের মধ্যে বেশি। যেসব দেশ মৃত্যুহার কমাতে পেরেছে, তারা রোগতত্ত্বকেই গুরুত্ব দিয়েছে।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে এর বিস্তার মূলত নগরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও গত পাঁচ বছরে কম-বেশি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী গণপরিসরে কার্যকর প্রতিষেধক না থাকায় রোগী ও মৃত্যুহার কমানোর একমাত্র উপায় কার্যকর প্রতিরোধ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা। কিন্তু রোগটি জনস্বাস্থ্যে গুরুতর উদ্বেগের কারণ হলেও এর প্রতিরোধে সরকার এখনো গতানুগতিক ব্যবস্থার বাইরে যেতে পারেনি।
ডেঙ্গু ভাইরাস রোগ বহুদিন ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে বিদ্যমান। বিশ্বের প্রথম ডেঙ্গু মহামারি রেকর্ড করা হয় ১৭৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায়। ১৯৫০-এর দশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনে এর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ১৯৬৩ সালে ভারতের কলকাতায় এবং ১৯৬৪ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। সে সময় রোগটিকে স্থানীয়ভাবে ‘ঢাকা ফিভার’ নামে অভিহিত করা হয়েছিল। বাংলাদেশে ২০০০ সাল থেকে সরকারিভাবে ডেঙ্গু-সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ শুরু হয়। এতে রোগটি দেশে রোগতাত্ত্বিকভাবে বিশেষ গুরুত্ব পেতে থাকে। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়েও ডেঙ্গু মোকাবিলায় দক্ষ ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি।
সরকারের তথ্য বলছে, দেশে বিভিন্ন সময় ডেঙ্গু সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যুর সংখ্যা ওঠানামা হয়েছে। প্রথম দিকে মূলত ঢাকা মহানগরে সীমিত থাকলেও ২০১৯ সালে অন্যান্য শহর ও গ্রামেও এটি ছড়িয়ে পড়ে। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে দেশে সাড়ে ১৯ হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং ২২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধীরে ধীরে একটা পর্যায়ে ডেঙ্গু রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সোয়া ১ লাখ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ২৩১ জনের মৃত্যু হয়। ২০২৩ সালে দেশে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখা দেয়। সে বছর সোয়া ৩ লাখ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ১ হাজার ৭০৫ জন মারা যায়। ২০২৪ সালে ১ লাখের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরের শুরু থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮২ জন মারা গেছে। এ সময়ে সারা দেশে ৪৩ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত আড়াই দশকে দেশে ডেঙ্গুতে অন্তত ৩ হাজার ৩২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে ডেঙ্গুর যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট কয়েকটি হাসপাতালের তথ্যের ওপর নির্ভরশীল। ফলে যেসব রোগী বাসাতেই চিকিৎসা নেয় বা ডেঙ্গু হওয়ার কথা আদৌ জানেও না, তাদের সংখ্যা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে ১০ গুণ বেশি হতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেঙ্গু সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ায় জাতীয়ভাবেই তা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে কোনো দেশে একটি রোগে মৃত্যুর হার না কমার অর্থ হচ্ছে রোগী ও রোগ ব্যবস্থাপনার ঘাটতি রয়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণ ডেঙ্গু মোকাবিলা কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশার জীবনচক্র বোঝা ছাড়া কেবল ফগিং করে মশা তাড়ানো কার্যকর হচ্ছে না। মশা যেখানে ডিম পাড়ে, সে স্থানেই কীটনাশক প্রয়োগ এবং পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম ছারোয়ার এ বিষয়ে বলেন, মশা মারার আগে তার জীবনচক্র, প্রজনন ও অবস্থান বোঝা দরকার। স্যানিটেশন ও পানি ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকায় মশার ডিম পাড়ার স্থান বাড়ছে। শুধু ফগিং করে মশা তাড়ালে তা কার্যকর হবে না। আবার দীর্ঘদিন একই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলে মশা তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ওষুধ প্রয়োগের পর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ না করলে তার কার্যকারিতা বোঝা যায় না।
কীটতত্ত্ববিদ মো. গোলাম ছারোয়ার বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে রোগী ও তার অবস্থান শনাক্ত করে (কন্ট্রাক ট্রেসিং) সেই এলাকার মশা নির্মূলের ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এটি মশা নির্মূলের সঙ্গে সমন্বিত না হওয়ায় রোগী যেখানে আক্রান্ত, সেখানে মশা বেঁচে থেকে বংশবিস্তার করে। এটি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণকে আরও জটিল করে তোলে।
পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেকট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, শুরু থেকেই সমন্বিত উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের হলেও তাদের কার্যক্রম মূলত ফগিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। রোগীর ওপর কার্যকর নজরদারি হয় না। রোগী বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে। তাই রোগীর সংখ্যা কমাতে সমন্বিত চেষ্টা নিতে হবে। জনগণের সচেতনতা ও সম্পৃক্ততা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
সরকারকে ডেঙ্গু জনস্বাস্থ্যের জরুরি সমস্যা হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সরকার এখনো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গতানুগতিক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জরুরি সমস্যা হিসেবে ঘোষণা করা হলে দায় এড়ানোর প্রবণতা থাকবে না এবং সমন্বিতভাবে কাজ করা সম্ভব হবে। আমাদের সামনে কোভিড মডেল রয়েছে। এতে অর্থ বরাদ্দেও সমস্যা হবে না।’
ডা. মুশতাক বলেন, পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে কাজে লাগানো জরুরি। পর্যবেক্ষণযোগ্য রোগীদের মাধ্যমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেখে তাদের মধ্য থেকে সংকটাপন্নদের দ্রুত তৃতীয় পর্যায়ে পাঠাতে হবে। রোগী, এডিস লার্ভা এবং কীটনাশকের সার্ভিল্যান্স সমন্বিতভাবে হচ্ছে না। অঞ্চলভিত্তিক রোগতাত্ত্বিক নজরদারিও নেই। বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার এখন বিশ্বের মধ্যে বেশি। যেসব দেশ মৃত্যুহার কমাতে পেরেছে, তারা রোগতত্ত্বকেই গুরুত্ব দিয়েছে।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে এর বিস্তার মূলত নগরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও গত পাঁচ বছরে কম-বেশি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী গণপরিসরে কার্যকর প্রতিষেধক না থাকায় রোগী ও মৃত্যুহার কমানোর একমাত্র উপায় কার্যকর প্রতিরোধ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা। কিন্তু রোগটি জনস্বাস্থ্যে গুরুতর উদ্বেগের কারণ হলেও এর প্রতিরোধে সরকার এখনো গতানুগতিক ব্যবস্থার বাইরে যেতে পারেনি।
ডেঙ্গু ভাইরাস রোগ বহুদিন ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে বিদ্যমান। বিশ্বের প্রথম ডেঙ্গু মহামারি রেকর্ড করা হয় ১৭৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায়। ১৯৫০-এর দশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনে এর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ১৯৬৩ সালে ভারতের কলকাতায় এবং ১৯৬৪ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। সে সময় রোগটিকে স্থানীয়ভাবে ‘ঢাকা ফিভার’ নামে অভিহিত করা হয়েছিল। বাংলাদেশে ২০০০ সাল থেকে সরকারিভাবে ডেঙ্গু-সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ শুরু হয়। এতে রোগটি দেশে রোগতাত্ত্বিকভাবে বিশেষ গুরুত্ব পেতে থাকে। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়েও ডেঙ্গু মোকাবিলায় দক্ষ ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি।
সরকারের তথ্য বলছে, দেশে বিভিন্ন সময় ডেঙ্গু সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যুর সংখ্যা ওঠানামা হয়েছে। প্রথম দিকে মূলত ঢাকা মহানগরে সীমিত থাকলেও ২০১৯ সালে অন্যান্য শহর ও গ্রামেও এটি ছড়িয়ে পড়ে। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে দেশে সাড়ে ১৯ হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং ২২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধীরে ধীরে একটা পর্যায়ে ডেঙ্গু রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সোয়া ১ লাখ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ২৩১ জনের মৃত্যু হয়। ২০২৩ সালে দেশে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখা দেয়। সে বছর সোয়া ৩ লাখ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ১ হাজার ৭০৫ জন মারা যায়। ২০২৪ সালে ১ লাখের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরের শুরু থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮২ জন মারা গেছে। এ সময়ে সারা দেশে ৪৩ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত আড়াই দশকে দেশে ডেঙ্গুতে অন্তত ৩ হাজার ৩২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে ডেঙ্গুর যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট কয়েকটি হাসপাতালের তথ্যের ওপর নির্ভরশীল। ফলে যেসব রোগী বাসাতেই চিকিৎসা নেয় বা ডেঙ্গু হওয়ার কথা আদৌ জানেও না, তাদের সংখ্যা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে ১০ গুণ বেশি হতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেঙ্গু সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ায় জাতীয়ভাবেই তা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে কোনো দেশে একটি রোগে মৃত্যুর হার না কমার অর্থ হচ্ছে রোগী ও রোগ ব্যবস্থাপনার ঘাটতি রয়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণ ডেঙ্গু মোকাবিলা কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশার জীবনচক্র বোঝা ছাড়া কেবল ফগিং করে মশা তাড়ানো কার্যকর হচ্ছে না। মশা যেখানে ডিম পাড়ে, সে স্থানেই কীটনাশক প্রয়োগ এবং পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম ছারোয়ার এ বিষয়ে বলেন, মশা মারার আগে তার জীবনচক্র, প্রজনন ও অবস্থান বোঝা দরকার। স্যানিটেশন ও পানি ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকায় মশার ডিম পাড়ার স্থান বাড়ছে। শুধু ফগিং করে মশা তাড়ালে তা কার্যকর হবে না। আবার দীর্ঘদিন একই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলে মশা তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ওষুধ প্রয়োগের পর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ না করলে তার কার্যকারিতা বোঝা যায় না।
কীটতত্ত্ববিদ মো. গোলাম ছারোয়ার বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে রোগী ও তার অবস্থান শনাক্ত করে (কন্ট্রাক ট্রেসিং) সেই এলাকার মশা নির্মূলের ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এটি মশা নির্মূলের সঙ্গে সমন্বিত না হওয়ায় রোগী যেখানে আক্রান্ত, সেখানে মশা বেঁচে থেকে বংশবিস্তার করে। এটি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণকে আরও জটিল করে তোলে।
পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেকট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, শুরু থেকেই সমন্বিত উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের হলেও তাদের কার্যক্রম মূলত ফগিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। রোগীর ওপর কার্যকর নজরদারি হয় না। রোগী বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে। তাই রোগীর সংখ্যা কমাতে সমন্বিত চেষ্টা নিতে হবে। জনগণের সচেতনতা ও সম্পৃক্ততা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
সরকারকে ডেঙ্গু জনস্বাস্থ্যের জরুরি সমস্যা হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সরকার এখনো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গতানুগতিক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জরুরি সমস্যা হিসেবে ঘোষণা করা হলে দায় এড়ানোর প্রবণতা থাকবে না এবং সমন্বিতভাবে কাজ করা সম্ভব হবে। আমাদের সামনে কোভিড মডেল রয়েছে। এতে অর্থ বরাদ্দেও সমস্যা হবে না।’
ডা. মুশতাক বলেন, পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে কাজে লাগানো জরুরি। পর্যবেক্ষণযোগ্য রোগীদের মাধ্যমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেখে তাদের মধ্য থেকে সংকটাপন্নদের দ্রুত তৃতীয় পর্যায়ে পাঠাতে হবে। রোগী, এডিস লার্ভা এবং কীটনাশকের সার্ভিল্যান্স সমন্বিতভাবে হচ্ছে না। অঞ্চলভিত্তিক রোগতাত্ত্বিক নজরদারিও নেই। বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার এখন বিশ্বের মধ্যে বেশি। যেসব দেশ মৃত্যুহার কমাতে পেরেছে, তারা রোগতত্ত্বকেই গুরুত্ব দিয়েছে।

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১ ঘণ্টা আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
২ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
২ ঘণ্টা আগে
ঠান্ডার সময় ব্যায়াম শুরুর আগে অনেকে তা নিষেধ করেন। কারণ, ঠান্ডা আবহাওয়া হাঁপানি উদ্রেককারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া বায়ুদূষণের কারণেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। তবে কিছু সতর্কতা মেনে ব্যায়াম করা যেতে পারে।
২ ঘণ্টা আগেআলমগীর আলম

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
তৈরি করবেন যেভাবে
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
সেবনবিধি ও সতর্কতা
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
তৈরি করবেন যেভাবে
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
সেবনবিধি ও সতর্কতা
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে এর বিস্তার মূলত নগরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও গত পাঁচ বছরে কম-বেশি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী গণপরিসরে কার্যকর প্রতিষেধক না থাকায় রোগী ও মৃত্যুহার কমানোর...
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
২ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
২ ঘণ্টা আগে
ঠান্ডার সময় ব্যায়াম শুরুর আগে অনেকে তা নিষেধ করেন। কারণ, ঠান্ডা আবহাওয়া হাঁপানি উদ্রেককারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া বায়ুদূষণের কারণেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। তবে কিছু সতর্কতা মেনে ব্যায়াম করা যেতে পারে।
২ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে এর বিস্তার মূলত নগরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও গত পাঁচ বছরে কম-বেশি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী গণপরিসরে কার্যকর প্রতিষেধক না থাকায় রোগী ও মৃত্যুহার কমানোর...
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
২ ঘণ্টা আগে
ঠান্ডার সময় ব্যায়াম শুরুর আগে অনেকে তা নিষেধ করেন। কারণ, ঠান্ডা আবহাওয়া হাঁপানি উদ্রেককারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া বায়ুদূষণের কারণেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। তবে কিছু সতর্কতা মেনে ব্যায়াম করা যেতে পারে।
২ ঘণ্টা আগেডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী

দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। কাশি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট এবং চিকিৎসাযোগ্য ছয়টি কারণ থাকে।
কফ ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা
অ্যাজমার একটি বিশেষ ধরন এটি। এতে সাধারণ অ্যাজমার মতো শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ বা সাঁ সাঁ শব্দ না-ও থাকতে পারে; বরং অবিরাম শুকনো কাশিই এর প্রধান এবং অন্যতম উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। এই ধরনের কাশি সাধারণত রাতে বেশি হয় এবং ধুলাবালি, ঠান্ডা বাতাস, ঘরবাড়ির অ্যালার্জেন, এমনকি ঋতু পরিবর্তনের সময় শীতের শুরুতেও উপসর্গ তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
উপসর্গ বারবার দেখা দিলে চিকিৎসক শ্বাসক্রিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করতে পারেন। স্পাইরোমেট্রি ফুসফুসের ক্ষমতা এবং বায়ুপ্রবাহ পরিমাপ করে, যা হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) মতো অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজন হলে রোগ নিয়ন্ত্রণে উপযোগী ইনহেলার সাময়িক ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে এ রোগ শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দীর্ঘ মেয়াদে জটিলতার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
পোস্টন্যাসাল ড্রিপ
নাক কিংবা সাইনাসে অতিরিক্ত মিউকাস তৈরি হলে তা ধীরে ধীরে গলার পেছন দিকে গড়িয়ে যায়। এই মিউকাস গলার সংবেদনশীল নার্ভগুলো উত্তেজিত করে। ফলে শুকনো ও বিরক্তিকর কাশি হয়। শোয়ার সময় মিউকাস গলায় জমে বলে এটি রাত ও ভোরে বেশি হয়। তবে ঘুম থেকে ওঠার পরও কাশি দেখা যায়। অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-সর্দি, সাইনোসাইটিস, নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার সমস্যা, নাক বন্ধ বা ধুলাবালিতে সংবেদনশীলতা যাঁদের আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশির অন্যতম প্রচলিত উৎস এই পোস্টন্যাসাল ড্রিপ।
জিইআরডি
পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপরের দিকে উঠে এলে টক ঢেকুর, বুকজ্বালা, গলায় জ্বালাপোড়া এবং সঙ্গে ধারাবাহিক কাশি দেখা দিতে পারে। মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া, চকলেট, কফি, টক খাবার—এসব জিইআরডি বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও ঝুঁকির মাত্রা বাড়ায়। জিইআরডি নিয়ন্ত্রণে আনলে অনেক ক্ষেত্রে কাশি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
ভাইরাল সংক্রমণের পর দীর্ঘস্থায়ী কাশি
অনেক সময় সর্দি-জ্বরের উপসর্গ সেরে গেলেও শ্বাসনালি কিছুদিন অতি সংবেদনশীল থাকে। এর ফলে কাশি স্থায়ী হতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাধারণত বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই ধীরে ধীরে এর উপসর্গ কমে আসে। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা এবং আদা, লেবু, মধু, লবঙ্গ বা দারুচিনিযুক্ত গরম চা উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এসিই ইনহিবিটর শ্রেণির ওষুধ অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুকনো কাশির কারণ হতে পারে। নিয়মিত কাশির কারণ খুঁজেনা পেলে ওষুধের ইতিহাস পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসক বিকল্প ওষুধ বেছে নেন।
ধূমপান
দীর্ঘদিন ধূমপান, বিশেষত প্রতিদিন ২০টি সিগারেট বা ২০ বছর অথবা তার বেশি সময় ধরে ধূমপান ক্রনিক ব্রংকাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এতে বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্রনিক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়।
দীর্ঘস্থায়ী বা অবিরাম কাশি সব সময় গুরুতর রোগের লক্ষণ না হলেও উপেক্ষা করা উচিত নয়। উপসর্গ যদি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে কারণ নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সহকারী অধ্যাপক (ইএনটি), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। কাশি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট এবং চিকিৎসাযোগ্য ছয়টি কারণ থাকে।
কফ ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা
অ্যাজমার একটি বিশেষ ধরন এটি। এতে সাধারণ অ্যাজমার মতো শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ বা সাঁ সাঁ শব্দ না-ও থাকতে পারে; বরং অবিরাম শুকনো কাশিই এর প্রধান এবং অন্যতম উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। এই ধরনের কাশি সাধারণত রাতে বেশি হয় এবং ধুলাবালি, ঠান্ডা বাতাস, ঘরবাড়ির অ্যালার্জেন, এমনকি ঋতু পরিবর্তনের সময় শীতের শুরুতেও উপসর্গ তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
উপসর্গ বারবার দেখা দিলে চিকিৎসক শ্বাসক্রিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করতে পারেন। স্পাইরোমেট্রি ফুসফুসের ক্ষমতা এবং বায়ুপ্রবাহ পরিমাপ করে, যা হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) মতো অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজন হলে রোগ নিয়ন্ত্রণে উপযোগী ইনহেলার সাময়িক ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে এ রোগ শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দীর্ঘ মেয়াদে জটিলতার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
পোস্টন্যাসাল ড্রিপ
নাক কিংবা সাইনাসে অতিরিক্ত মিউকাস তৈরি হলে তা ধীরে ধীরে গলার পেছন দিকে গড়িয়ে যায়। এই মিউকাস গলার সংবেদনশীল নার্ভগুলো উত্তেজিত করে। ফলে শুকনো ও বিরক্তিকর কাশি হয়। শোয়ার সময় মিউকাস গলায় জমে বলে এটি রাত ও ভোরে বেশি হয়। তবে ঘুম থেকে ওঠার পরও কাশি দেখা যায়। অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-সর্দি, সাইনোসাইটিস, নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার সমস্যা, নাক বন্ধ বা ধুলাবালিতে সংবেদনশীলতা যাঁদের আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশির অন্যতম প্রচলিত উৎস এই পোস্টন্যাসাল ড্রিপ।
জিইআরডি
পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপরের দিকে উঠে এলে টক ঢেকুর, বুকজ্বালা, গলায় জ্বালাপোড়া এবং সঙ্গে ধারাবাহিক কাশি দেখা দিতে পারে। মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া, চকলেট, কফি, টক খাবার—এসব জিইআরডি বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও ঝুঁকির মাত্রা বাড়ায়। জিইআরডি নিয়ন্ত্রণে আনলে অনেক ক্ষেত্রে কাশি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
ভাইরাল সংক্রমণের পর দীর্ঘস্থায়ী কাশি
অনেক সময় সর্দি-জ্বরের উপসর্গ সেরে গেলেও শ্বাসনালি কিছুদিন অতি সংবেদনশীল থাকে। এর ফলে কাশি স্থায়ী হতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাধারণত বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই ধীরে ধীরে এর উপসর্গ কমে আসে। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা এবং আদা, লেবু, মধু, লবঙ্গ বা দারুচিনিযুক্ত গরম চা উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এসিই ইনহিবিটর শ্রেণির ওষুধ অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুকনো কাশির কারণ হতে পারে। নিয়মিত কাশির কারণ খুঁজেনা পেলে ওষুধের ইতিহাস পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসক বিকল্প ওষুধ বেছে নেন।
ধূমপান
দীর্ঘদিন ধূমপান, বিশেষত প্রতিদিন ২০টি সিগারেট বা ২০ বছর অথবা তার বেশি সময় ধরে ধূমপান ক্রনিক ব্রংকাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এতে বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্রনিক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়।
দীর্ঘস্থায়ী বা অবিরাম কাশি সব সময় গুরুতর রোগের লক্ষণ না হলেও উপেক্ষা করা উচিত নয়। উপসর্গ যদি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে কারণ নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সহকারী অধ্যাপক (ইএনটি), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে এর বিস্তার মূলত নগরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও গত পাঁচ বছরে কম-বেশি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী গণপরিসরে কার্যকর প্রতিষেধক না থাকায় রোগী ও মৃত্যুহার কমানোর...
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১ ঘণ্টা আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
২ ঘণ্টা আগে
ঠান্ডার সময় ব্যায়াম শুরুর আগে অনেকে তা নিষেধ করেন। কারণ, ঠান্ডা আবহাওয়া হাঁপানি উদ্রেককারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া বায়ুদূষণের কারণেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। তবে কিছু সতর্কতা মেনে ব্যায়াম করা যেতে পারে।
২ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

ঠান্ডার সময় ব্যায়াম শুরুর আগে অনেকে তা নিষেধ করেন। কারণ, ঠান্ডা আবহাওয়া হাঁপানি উদ্রেককারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে।
এ ছাড়া বায়ুদূষণের কারণেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। তবে কিছু সতর্কতা মেনে ব্যায়াম করা যেতে পারে। সেগুলো হলো—
মোটা পোশাক পরে বাইরে যেতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, বেশি মোটা পোশাক পরা যাবে না। এতে ব্যায়াম করতে অসুবিধা হয় এবং তা শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এ ছাড়া খুব গরম পোশাক পরলে প্রচুর ঘাম হয়। যখন ঠান্ডা বাতাস এসে শরীরে লাগে, তখন ঘাম দ্রুত শুকিয়ে যায়; ফলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
গুরুতর হাঁপানির ক্ষেত্রে প্রস্তুতি
হাঁপানির চিকিৎসা নির্ভর করে লক্ষণগুলো কতটা গুরুতর, তার ওপর। গুরুতর হাঁপানির সংক্রমণে নিয়মিত চিকিৎসা উপকারে আসে না। তাই জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। গুরুতর হাঁপানির রোগীরা রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ জানতে পালস অক্সিমিটার সঙ্গে রাখতে পারেন। তবে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ার আগে অবশ্যই তাকে হাসপাতালে যেতে হবে অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।

ঠান্ডার সময় ব্যায়াম শুরুর আগে অনেকে তা নিষেধ করেন। কারণ, ঠান্ডা আবহাওয়া হাঁপানি উদ্রেককারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে।
এ ছাড়া বায়ুদূষণের কারণেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। তবে কিছু সতর্কতা মেনে ব্যায়াম করা যেতে পারে। সেগুলো হলো—
মোটা পোশাক পরে বাইরে যেতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, বেশি মোটা পোশাক পরা যাবে না। এতে ব্যায়াম করতে অসুবিধা হয় এবং তা শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এ ছাড়া খুব গরম পোশাক পরলে প্রচুর ঘাম হয়। যখন ঠান্ডা বাতাস এসে শরীরে লাগে, তখন ঘাম দ্রুত শুকিয়ে যায়; ফলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
গুরুতর হাঁপানির ক্ষেত্রে প্রস্তুতি
হাঁপানির চিকিৎসা নির্ভর করে লক্ষণগুলো কতটা গুরুতর, তার ওপর। গুরুতর হাঁপানির সংক্রমণে নিয়মিত চিকিৎসা উপকারে আসে না। তাই জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। গুরুতর হাঁপানির রোগীরা রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ জানতে পালস অক্সিমিটার সঙ্গে রাখতে পারেন। তবে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ার আগে অবশ্যই তাকে হাসপাতালে যেতে হবে অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে এর বিস্তার মূলত নগরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও গত পাঁচ বছরে কম-বেশি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী গণপরিসরে কার্যকর প্রতিষেধক না থাকায় রোগী ও মৃত্যুহার কমানোর...
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১ ঘণ্টা আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
২ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
২ ঘণ্টা আগে