Ajker Patrika

বোরো বীজতলায় শীতের হানা

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী ও আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)
বোরো বীজতলায় শীতের হানা

ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে বোরো বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত উত্তরাঞ্চলের কৃষকেরা। দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকায় ধানের চারাগুলো ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে। কোল্ড ইনজুরিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এগুলো হলুদ হয়ে পড়ছে।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বীজতলা কোথাও হলুদ, কোথাও লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। অনেক জায়গায় গাছ বিবর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত বীজতলা সেরে উঠবে।

উপজেলার পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের কৃষক ছোবেদ আলী বলেন, কয়েক দিনের তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় অনেক চারার গোড়ায় পচন ধরে শুকিয়ে যাচ্ছে।

নওদাবশ গ্রামের এক কৃষক জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে বীজতলায় ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। পূর্ব চন্দ্রখানা গ্রামের হেলাল উদ্দিন বলেন, নিয়ম মেনে বীজতলায় সন্ধ্যায় বাড়তি পানি দিয়ে সকালে বের করে দিচ্ছেন। এতেও ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। আর কয়েক দিন শীত ও কুয়াশার তীব্রতা অপরিবর্তিত থাকলে অধিকাংশ বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে। এতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেক কৃষক।

এবার উপজেলায় ১০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখন পর্যন্ত ৫৪০ হেক্টর জমিতে বীজ বপন করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, ‘কিছু বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে। বীজতলা রক্ষার্থে আমাদের কর্মীরা কৃষকদের ছত্রাকনাশক স্প্রে বা পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দেওয়াসহ কিছু ভিটামিন স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছেন। আশা করি বপন করা বীজতলা দিয়েই চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।’

নীলফামারী সদরের দিঘলডাঙ্গী গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন জানান, এবার অতিরিক্ত শীতে বোরো বীজতলা হুমকির মুখে রয়েছে। তবে কৃষি অফিসের লোকজন বীজতলায় আসছেন এবং তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী পরিচর্যা করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি দপ্তরের সূত্রমতে, এবার নীলফামারীতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষকেরা ৪ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা করেছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হোমায়ারা মণ্ডল জানান, শীতের হাত থেকে বোরো ধানের চারা রক্ষায় বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে বলা হচ্ছে। এ ছাড়া জিপসাম প্রয়োগ ও প্রতিদিন পুরোনো পানি অপসারণ করে নতুন পানি দেওয়াসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

হোমায়ারা মণ্ডলের দাবি, কয়েক দিন ধরে কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও বীজতলার তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে শীত ও কুয়াশার তীব্রতা বাড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বাসায় নিয়ে গায়েব করেন উপদেষ্টা— আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের মেয়রের অভিযোগ

চীনা যুদ্ধবিমান থেকে এলএস-৬ বোমা ফেলে কেন নিজ দেশে ‘হত্যাযজ্ঞ’ চালাল পাকিস্তান

ফিলিস্তিনকে আজই রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেবে আরও ৬ দেশ, বিরোধিতা ইসরায়েল–যুক্তরাষ্ট্রের

ভবদহের দুঃখ ঘোচাতে আসছে সেনাবাহিনী, খনন করবে ৫ নদ-নদীর ৮১.৫ কিমি

ধর্ষণের শিকার শিশুর স্বজনকে মারতে উদ্যত হওয়া সেই চিকিৎসক বরখাস্ত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত