Ajker Patrika

কচুরিপানা বাড়াচ্ছে ভাঙনের শঙ্কা

রাজশাহী প্রতিনিধি
কচুরিপানা বাড়াচ্ছে ভাঙনের শঙ্কা

পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। উজান থেকে এক সপ্তাহ ধরে নদীতে পানি আসছে। নতুন পানিতে ভেসে আসছে কচুরিপানা। তা দেখে নদীভাঙনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, ভাঙন ঠেকাতে তাদের প্রস্তুতি আছে। ভাঙন দেখা দিলে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

রাজশাহী শহরের জন্য পদ্মার পানির বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। সর্বশেষ ২০১৩ সালে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। গত বছর ভরা মৌসুমে পানির উচ্চতা হয়েছিল ১৭ দশমিক ৭১ মিটার। এতেই শহরের পদ্মাপাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। জেলার গোদাগাড়ী, পবা, চারঘাট ও বাঘার চরাঞ্চলে পানি ঢুকেছিল। অনেকের ঘরবাড়ি নদীতে হারিয়ে গেছে।

রাজশাহী পাউবোর গেজ রিডার এনামুল হক শহরের টি-বাঁধ এলাকায় পদ্মার পানির উচ্চতা পরিমাপ করেছেন। তিনি জানান, এবার শুষ্ক মৌসুমে পদ্মার টি-বাঁধ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ৮ দশমিক ৭৩ মিটার। চলতি মাসেরই ১৩ ও ১৪ তারিখে ছিল এই উচ্চতা। এরপর ১৭ মে থেকে পানি একটু একটু করে বাড়তে শুরু করেছে।

১৭ মে সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ৮ দশমিক ৭৫ মিটার। এরপর ১৮ মে ৮ দশমিক ৮২ মিটার, ১৯ মে ৯, ২০ মে ৯ দশমিক ১৫, ২১ মে ৯ দশমিক ২৪, ২২ মে ৯ দশমিক ২৬, ২৩ মে ৯ দশমিক ২৯, ২৪ মে ৯ দশমিক ৩৮ এবং ২৫ মে ৯ দশমিক ৪৪ মিটার হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা স্থিতিশীল ছিল। 
এনামুল হক বলেন, গত কয়েক বছরের হিসাব অনুযায়ী মে মাসের শেষ ভাগ থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত পানির উচ্চতা এ রকমই থাকবে। নদীতে পানি এখন একটু বাড়বে, একটু কমবে—এভাবেই এই সময়টা যাবে। জুনের ২০ তারিখের পর পানি বাড়তে শুরু করবে।

নদীতে পানি বাড়তে থাকায় আতঙ্ক বাড়ছে ভাঙনপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। রাজশাহীর চারঘাট থেকে ভাটিতে বাঘা উপজেলার চার কিলোমিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকায় সেখানে এখন তীর সংরক্ষণের কাজ চলছে। কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় কাজ চলছে ঢিমেতালে। দ্রুত কাজ সমাপ্ত না করলে পানির তোড়ে তীর নদীতে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া গোদাগাড়ী উপজেলার নিমতলা, খারিজাগাতি, আলীপুর ও মোল্লাপাড়া এলাকায় গত বছর ব্যাপক নদীভাঙন হয়। এবারও সেখানে নদীভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাই ওই এলাকায় স্থায়ীভাবে নদীতীর সংরক্ষণে প্রকল্প গ্রহণের জন্য সম্প্রতি স্থানীয়রা পদ্মাপাড়েই দীর্ঘ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

ওই এলাকার বাসিন্দা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী জেলার সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল বলেন, ‘আমাদের এই এলাকায় পদ্মাপাড়ে দীর্ঘ সময় ধরে মানুষ বসবাস করছেন। নদীপাড়ের জমিতে সবজি চাষ, আমবাগান ও গবাদিপশু পালন করে তাঁরা জীবিকা নির্বাহ করেন। এই এলাকাটি গত বছর থেকে ভাঙছে বলে সবাই উদ্বিগ্ন। এলাকাটি ভেঙে গেলে মানুষের জীবিকা বন্ধ হয়ে যাবে। মানুষগুলো জমি কিনে অন্য জায়গায় আর বাড়ি করতে পারবে না। তারা ভিক্ষুকে পরিণত হবে। তাই আমরা তীর রক্ষায় দ্রুত প্রকল্প চাচ্ছি।’

জানতে চাইলে পাউবোর রাজশাহী উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সারওয়ার-ই জাহান বলেন, ‘গোদাগাড়ীর নদীতীর সংরক্ষণে নিয়মিত কোনো প্রকল্প নেই। প্রকল্প গ্রহণের জন্য আমরা বোর্ডে আবেদন জানিয়েছি। এই প্রকল্প অনুমোদনের আগে এবার যদি ভাঙন দেখা দেয়, তাহলে সেখানে যেন জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানো যায়, সে প্রস্তুতি আছে।’

বাঘা-চারঘাটের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে জানিয়ে সারওয়ার-ই জাহান বলেন, অসমাপ্ত কাজের মাঝে যদি ভাঙন দেখা দেয়, তাহলে সেখানেও জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত