Ajker Patrika

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে আবার বর্ণবাদ !

বোরহান জাবেদ, ঢাকা
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১২: ১০
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে আবার বর্ণবাদ !

আবার আলোচনায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আলোচনায় বর্ণবাদ ইস্যু। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছে দলগুলো। সবার মতো সেই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করছে দক্ষিণ আফ্রিকাও। তবে হাঁটু গেঁড়ে একাত্মতা প্রকাশের রীতি চালু হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়েরা সমর্থন জানাচ্ছেন নানাভাবে।

অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা যেমন হাঁটু গেড়ে একাত্মতা জানাচ্ছেন। আবার ডেভিড মিলার, এনরিখ নর্তিয়ের মতো কেউ কেউ হাঁটু না গেড়ে কেবল মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে ধরেই সমর্থন দিচ্ছেন। হেনরিখ ক্লাসেন আবার সমর্থন জানিয়েছেন দাঁড়িয়ে থেকেই। তবে ডি কক এখানে ব্যতিক্রম ছিলেন সব সময়ই। তিনি সমর্থন জানাননি কোনোভাবেই।

পরশু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা আগে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার (সিএসএ) পক্ষ থেকে বাধ্যতামূলক হাঁটু গেঁড়ে সংহতি প্রকাশের নির্দেশনা আসে। জানানো হয়, আন্দোলনে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নেওয়াতে হয়তো অনাকাঙ্ক্ষিত ধারণা তৈরি হয়েছে। মনে হচ্ছে, আন্দোলনটা যথাযথ সমর্থন পাচ্ছে না। যে কারণে সবদিক বিবেচনা করে বিশেষত দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাস বিবেচনায় বোর্ড মনে করছে, বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্য দেশগুলো যেমনটা করছে। কিন্তু ‘বাধ্য’ করার ব্যাপারটা হয়তো মানতে পারেননি ডি কক। ম্যাচের আগ মুহূর্তে তাই সরিয়ে নেন নিজেকে।

প্রথমে ব্যক্তিগত কারণ বলা হলেও সিএসএ পরে এক বিবৃতিতে বিষয়টি পরিষ্কার করেছে। এরপর চারদিক থেকে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। যে দেশ বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় সংগ্রাম করেছে, সে দেশেরই এক খেলোয়াড়ের ‘অদ্ভুত’ আচরণে আহত হয়েছেন অনেকেই। বর্ণবাদের কারণেই একটা সময় ২২ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এই কালো অধ্যায়টা দক্ষিণ আফ্রিকা পেছনে ফেলে আসছে মনে হলেও ভেতরে-ভেতরে বর্ণবাদী আগুন এখনো জ্বলছে—এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।

এই আচরণে ডি ককের ক্যারিয়ারেরই শেষ দেখে ফেলেছেন অনেকে। তবে কেউ কেউ ব্যাপারটা ভিন্নভাবেই দেখছেন। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে এভাবে একটা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া মানতে পারেননি ২৮ বয়সী এই ব্যাটার। এই আন্দোলনের সঙ্গে কোনো বিরোধও নেই ডি ককের। তাঁদের মতে, দায় এড়াতে পারে না বোর্ডও। শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ ভাগাভাগি করতে গিয়ে উঠে আসছে ২০১৫ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একাদশে ভারনন ফিলান্ডারের অন্তর্ভুক্তির কথাও। ম্যাচের জন্য ফিট না থাকা সত্ত্বেও বোর্ডের ‘কৃষ্ণাঙ্গ কোটায়’ সে ম্যাচে খেলতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। পরে এই ঘটনা নিজেই বলেন ফিলান্ডার।

দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরশুর ম্যাচের ধারাভাষ্যকার ও সাবেক জিম্বাবুয়েন পেসার পমি এমবাঙ্গওয়াও ডি কককে দোষী বানাতে চাননি। ধারাভাষ্য বক্সে বসে পমি তাঁর মনোভাব স্পষ্ট করেছেন এভাবে, ‘এই আন্দোলনে সমর্থন না জানানোর মানে হচ্ছে দলের ভেতর অশ্বেতাঙ্গ ক্রিকেটারদের প্রতি সমর্থনের অভাব, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পুরো বিশ্বেই (অশ্বেতাঙ্গদের প্রতি) সমর্থনের অভাব। আমার কথাগুলো রাজনৈতিক মনে হলে ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু আমি তো আমার চামড়া খসিয়ে ফেলতে পারছি না।’

সে যা-ই হোক, ডি ককের এভাবে সরে দাঁড়ানো নিশ্চিতভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যকে নতুন করে উসকে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল চালুতে বাধা, রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন

ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে এবি ব্যাংক

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত