Ajker Patrika

মজুত আলুতে বিপুল লোকসান

তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা
আপডেট : ২২ মে ২০২২, ১৭: ২৮
মজুত আলুতে বিপুল লোকসান

পীরগাছায় বাড়িতে সংরক্ষণ করে রাখা আলুতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন কয়েক শ চাষি। আলুর উৎপাদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ধারণক্ষমতার হিমাগার না থাকায় তাঁরা বাড়িতে এগুলো মজুত করে রেখেছিলেন। এখন দাম না পেয়ে তাঁদের দিন কাটছে হতাশায়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পীরগাছায় এবার ৯ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ৪২৪ মেট্রিক টন।

উৎপাদিত আলুর মধ্যে উপজেলার সাতটি হিমাগারে সংরক্ষণ করা গেছে ৬২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে কামরুন্নাহার কোল্ডস্টোরেজে ১১ হাজার, হোমল্যান্ড কোল্ডস্টোরেজে ১০ হাজার ২০০, অপু মুনশি কোল্ডস্টোরেজে ১২ হাজার ২০০, সুপ্রিম সিড কোল্ডস্টোরেজে ১২ হাজার, কোহিনুর কোল্ডস্টোরেজে ৪ হাজার, শাহ আমানত কোল্ডস্টোরেজে সাড়ে ১০ হাজার ও করিম উদ্দিন ভরসা কোল্ডস্টোরেজে আড়াই হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করা আছে।

এ ছাড়া কিছু আলু জেলার বাইরের হিমাগারে রাখা হয়েছে। কিছু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫ হাজার মেট্রিক টন আলু বিদেশে রপ্তানি করা গেছে। সিংহভাগ আলু রয়ে গেছে কৃষকদের বাড়িতে। এখন বাজারে দাম কম থাকায় বাড়িতে রাখা আলু পচে বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে চরম লোকসানে পড়েছেন কৃষকেরা।

উপজেলার গুঞ্জর খাঁ গ্রামের আলুচাষি বোরহান কবির বলেন, ‘কোল্ডস্টোরেজের ভাড়া বেশি। কিছু আলু স্টোরে রেখে বাকিগুলো বাড়িতে রাখা হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল দাম বৃদ্ধি পেলে বিক্রি করা হবে। এখন এ আলু গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দাম না থাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে না। বাড়িতে থেকে দিন দিন পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। লাভের ধন এখন পোকায় খাচ্ছে।’

অনন্তরাম গ্রামের কৃষক সাজ্জাদ হোসেন জানান, পীরগাছার হিমাগারগুলোতে জায়গা নেই। বাইরে নিতে গেলে খরচ বেশি পড়ে। তাই বাড়িতে আলু রেখে এখন মহাবিপদে পড়েছেন। মৌসুমের শুরুতেই যে দাম ছিল এখন তার চেয়ে অনেক কম। এ ছাড়া আলুতে পচন ধরায় লোকসান বেশি হচ্ছে।

আলু সংরক্ষণের বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বলেন, মাচা পদ্ধতিতে বাড়িতে কিছুদিনের জন্য আলু রাখা গেলেও দীর্ঘদিন রাখা ঠিক নয়। অতিরিক্ত গরম ও বৃষ্টির কারণে আলুতে পচন ধরে। মৌসুমের শুরুতে আলু বিক্রি বা হিমাগারে সংরক্ষণ করা উত্তম।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম বলেন, সঠিক নিয়মে আলু রাখলে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত রাখা যায়। ভরা মৌসুমে সবাই কমবেশি আলু বিক্রি করে দিয়েছেন। কৃষকদের বাড়িতে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ আলু থাকতে পারে। তবে প্রতিদিনেই তা বিক্রি করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত