Ajker Patrika

ধান সংগ্রহ শূন্যের কোঠায়

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৩৩
ধান সংগ্রহ শূন্যের কোঠায়

যশোরের মনিরামপুরে সরকারি গুদামে আমন সংগ্রহের সময় আছে আর এক মাস। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে এই সময়সীমা। গত দেড় মাস আগে খাদ্য গুদামে আমন সংগ্রহ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কোনো কৃষক গুদামে ধান নিয়ে আসেননি। গুদামে আমন সংগ্রহ রয়েছে শূন্যের কোঠয়।

গত বছরের ৮ নভেম্বর আমনের ১ হাজার ৪৪৫ মেট্রিক টন ধান ও ৪৮২ টন চাল কেনার চিঠি পান মনিরামপুর উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ। প্রতিমণ ধান ১ হাজার ৮০ টাকা ও প্রতিকেজি চালের দাম ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। চিঠি পেয়ে ধান ও চাল সংগ্রহ শুরু করতে পারেননি ক্রয় কমিটি। এক মাস পর গত ৫ ডিসেম্বর ক্রয় কমিটির প্রথম সভা হয়। এর পর গুদাম কর্তৃপক্ষকে সংগ্রহ শুরু করতে বলা হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে ধান ক্রয়ের উদ্বোধন করা হয়নি।

আমন সংগ্রহের মতো আগের বোরো মৌসুমেও গুদামে ধান বিক্রি করতে অনীহা দেখিয়েছিলেন কৃষক। সে সময় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানেরা ভর্তুকি দিয়ে কিছু ধান সংগ্রহে সহায়তা করেছিলেন। এবার তেমন কিছু দেখা যায়নি। তা ছাড়া ধান ওঠার মুহূর্তে সংগ্রহ শুরু করতে ব্যর্থ হয়েছে গুদাম কর্তৃপক্ষ। ধান সংগ্রহের বিষয়ে চোখে পড়েনি কোনো প্রচার।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের দাবি, বাজারে ধানের চড়া দাম থাকায় কৃষক গুদামে ভিড়ছে না। এ কারণে এ মৌসুমে ধান সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। যদিও যাচাই করে দেখা গেছে, খোলা বাজারের চেয়ে গুদামে ধানের দাম ১০০ টাকা বেশি দিচ্ছে সরকার। তবে ধানে ব্যর্থ হলেও চালকল মালিকদের চাপ দিতে চালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে গুদাম কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে খোলা বাজারে ধানের মণ ৯৭০ টাকা। সরকারি দর এর চেয়ে ১১০ টাকা বেশি। তার পরও কৃষককে গুদামে ভিড়তে দেখা যাচ্ছে না।

মাহমুদকাটি গ্রামের চাষি নূর ইসলাম বলেন, ‘গোলায় কিছু ধান আছে। সরকারি গুদামে ধান নিয়ে গেলে নানা দোষ বের করে। ধান দিয়ে টাকা নেওয়ার জন্য ধরনা দেওয়া লাগে। আবার গুদামে নিতে গেলে বাড়তি ভাড়া দিতে হয়। এর চেয়ে গ্রামে ধান বেচা ভালো। ধান ভেজা হলেও বেচতে সমস্যা হয় না।’

এ দিকে ধান কিনতে না পারলেও চালের নির্ধারিত ৪৮২ টন সংগ্রহ করতে পেরেছে গুদাম কর্তৃপক্ষ। খোলাবাজারে পাইকারি দর আর সরকারি দর সমান হলেও জামানত হারানোর ভয়ে গুদামে চাল দিতে বাধ্য হয়েছেন উপজেলার ৪৪ চালকল মালিক।

উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বরাদ্দের ২ শতাংশ টাকা আমাদের ব্যাংকে জমা দিতে হয়। এর পর চাল দেওয়ার পর চালের দামের সঙ্গে জামানতের টাকা ফেরত পাওয়া যায়। চাল না দিলে জামানত হারাতে হয়। মিল চালাতেও সমস্যা হয়।’

আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘খোলা বাজারে মোটা চালের কেজি প্রতি পাইকারি দর ৪০ টাকা ৮০ পয়সা। সরকার দিয়েছে ৪০ টাকা করে। এ ছাড়া যাতায়াত খরচ আছে। সব মিলিয়ে লস হচ্ছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, ‘লটারির মাধ্যমে প্রকৃত আমন চাষিদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের নির্দেশনা রয়েছে। বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় উপজেলা ক্রয় কমিটির সভায় লটারি বাদে কার্ডধারী কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এখন পর্যন্ত কোনো কৃষক গুদামে না আসায় ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে এরই মধ্যে আমরা চাল সংগ্রহ সম্পন্ন করতে পেরেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

রাবির অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন নিয়ম ভঙ্গের জন্য ট্রান্স নারী শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার, জানতে চান ১৬২ নাগরিক

টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি পেছাল, পাবে ৫ কোটি শিশু-কিশোর

রাশিয়া খুবই বড় শক্তি, চুক্তি ছাড়া ইউক্রেনের কোনো গতি নেই: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত