Ajker Patrika

ভাঙনের ঝুঁকিতে সড়ক ও বাঁধ

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ১৬
ভাঙনের ঝুঁকিতে সড়ক ও বাঁধ

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে বালু উত্তোলনের অনেক অবৈধ পয়েন্ট গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নদীর তীর রক্ষা বাঁধ, রাস্তা, আবাসিক এলাকা, এমনকি বিদ্যালয়ের মাঠে বিশাল স্তূপ করে রাখা হচ্ছে বালু। এ কারণে মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ট্রাকে বালু পরিবহনেও নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। এতে সড়ক ও নদীর তীর রক্ষা বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সরকারিভাবে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে কাজীপুর উপজেলার মেঘাই গ্রামের আব্দুল আওয়াল ২৩টি বালুর পয়েন্টের নাম উল্লেখ করে বালুমহাল ইজারা নেন। বালু উত্তোলনের পর নির্ধারিত মোকাম থেকে বালু বিক্রির নির্দেশনা আছে ইজারার শর্তাবলিতে। শর্ত মোতাবেক নদীতীরের প্রায় ৫০০ ফুটের মধ্যে কোনো বালু রাখা এবং বিতরণ করা যাবে না।

তবে এলাকাবাসী বলছেন, ইজারার শর্ত কিছু ব্যবসায়ী মানছেন না। উপজেলার উত্তরে ঢেকুরিয়া থেকে দক্ষিণে শুভগাছা পর্যন্ত তিনটি ইউনিয়ন মিলে বালু উত্তোলন এবং বিতরণের কাজ করছেন ইজারাদারের লোকজন। আব্দুল আওয়াল বালুমহাল ইজারা নিয়ে কমপক্ষে ৪০ জনকে সাবলিজ দিয়েছেন। শর্ত ভেঙে তাঁরা আরও ২৫টি পয়েন্ট খুলে ব্যবসা করছেন। এমনকি ঢেকুরিয়া ইকোপার্ক থেকে মেঘাই থানা পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার বাঁধের খাদ পুরোপুরি বালু ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। নদীর তীর সংরক্ষণকাজের ব্লকের ওপর দিয়ে ট্রাকে করে বালু পরিবহন করায় ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে তীর সংরক্ষণ এলাকা।

গত অক্টোবর মাসে দুই দফায় ঢেকুরিয়ায় তীর সংরক্ষণকাজের বেলমাউথে ধস নামে। এ ছাড়া ঢেকুরিয়া থেকে নদী রক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে ট্রাকে করে এই বালু পরিবহনের কারণে ইতিমধ্যে পিচ ও খোয়া উঠে গেছে। উপজেলার মেঘাই থেকে সোনামুখী, ঢেকরিয়া থেকে ধুনট, সীমান্তবাজার থেকে সিরাজগঞ্জ এবং মেঘাই থেকে উপজেলা হয়ে সিরাজগঞ্জে বালু সরবরাহ করা হয়। এর ফলে মেঘাই থানা থেকে সোনামুখী পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার পাকা রাস্তার পিচ, খোয়া, পাথর উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত বালুর ট্রাক চলাচলের কারণে শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কাজীপুরের পাকা রাস্তাগুলো একেবারে বেহাল হয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকেরা জানান, বালুবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের আসা ও যাওয়ায় অনেক সমস্যা হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী হায়দার আলী বলেন, ‘অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন এবং পরিবহনের কারণে প্রকল্প এলাকার তীর সংরক্ষণের রাস্তাসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা ইউএনও মহোদয়কে বিষয়টি জানিয়েছি এবং সামনের বছর যেন ইজারা না দেওয়া হয়, এ জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।’

কাজীপুর বালুমহালের ইজারাদার আব্দুল আওয়ালের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি মোবাইল ফোন ধরেননি।

জেলা প্রশাসক ফারুক আহম্মদ জানান, এখান থেকে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে। ইজারাদারেরা শর্ত মেনে বালু উত্তোলন ও পরিবহন করবেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হবে। শর্ত ভঙ্গের কারণে ইজারা বাতিলও করা হতে পারে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত