বৃষ্টি হলেই থিকথিকে কাদা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বয়ড়া ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামের কালিখোলা এলাকা থেকে সরকারি বিচারপতি নুরুল ইসলাম কলেজ পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা। সামান্য বৃষ্টিতে এই রাস্তার বেশ কয়েকটি স্থানে থিকথিকে কাদা । রাস্তার দেবে যাওয়া অংশে পানি জমে থাকে। এতে পা টিপে টিপে চলাচল করতে হয় কয়েক গ্রামের মানুষকে। নারী ও শিশুদের পোহাতে হয় সীমাহীন দুর্ভোগ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একখানি বৃষ্টি হলেই এ রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বৃষ্টিতে রাস্তায় কাদা-পানি জমে। কোথাও কোথাও দেখে মনে এটি রাস্তা নয়, চষা জমি। অনেকে পা পিছলে পড়ে আছাড় খান। কাদা-পানিতে মাখামাখি হন। পরে গন্তব্যে যাওয়ার বদলে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন। এ ছাড়া ধান ও পাট মাথায় অনেককে এই কাদামাখা রাস্তা ধরেই যেতে হয় স্থানীয় বাজারে। বৃষ্টির দিনে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় নারী ও শিশুদের। শিশু শিক্ষার্থীরা সময়মতো বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। গুরুতর রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না। বছরের বছর বছর ধরে এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। তাঁরা রাস্তাটি পাকা করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে বহুবার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু গ্রামীণ রাস্তাটির দিকে কেউ নজর দেননি। এর উন্নয়ন করা হয়নি।

সরকারি বিচারপতি নুরুল ইসলাম কলেজের ছাত্র হৃদয় হোসেন অন্তু আজকের পত্রিকাকে বলেন, এর রাস্তা এলাকাবাসীর গলার কাঁটা। মাত্র আধা ঘণ্টা বৃষ্টি হলে এই রাস্তার অনেক অংশে কাদা ও পানি জমে। দুই দিন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অথচ দূর-দূরান্তের কয়েক শত কলেজ শিক্ষার্থীকে এ রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। আগ্রাইল, দড়িকান্দি খলিলপুর, পুরো যাত্রাপুর গ্রাম, আন্ধারমানিক গ্রামের একাংশ, লাউতা, দিয়াপাড় রাজরাসহ ১২-১৩টি গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা ধরে নানা গন্তব্যে ও কলেজে যাতায়াত করে। এই দুর্ভোগ দূর হওয়া দরকার। রাস্তাটি শিগগির পাকা হোক।

বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মিরাজ মিয়া বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি মানুষের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এটি সংস্কারের জন্য শিগগির ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে বলব।’

সরকারি নুরুল ইসলাম কলেজের প্রভাষক মুরাদ হোসেন বলেন, ‘এই রাস্তার কারণে বৃষ্টির দিনে কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যায়। তাদের যাতায়াতে ভোগান্তি দূর করা উচিত। আর তা হতে পারে কাঁচা এই রাস্তা পাকাকরণের মধ্য দিয়ে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে সদয় দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ করছি। জনপ্রতিনিধিরা চেষ্টা করলে রাস্তাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাকা করা সম্ভব। তাহলে শুধু শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই নয়, এই এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষদের যাতায়াত সুগম হবে।’

জানতে চাইলে বয়ড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফরিদুর রহমান ফরিদ বলেন, ‘কালিখোলা থেকে সরকারি নুরুল ইসলাম কলেজ পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা করার জন্য এলাকাবাসী দাবি জানিয়ে আসছে। রাস্তাটি পাকা করার জন্য প্রকল্প প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। শিগগিরই অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। অনুমোদন পেলে রাস্তাটি পাকাকরণের কাজ শুরু করতে পারব। রাস্তাটি পাকা হলে এলাকাবাসীর যাতায়াতের এই সমস্যা আর থাকবে না।’