
আজকের পত্রিকা: এবার বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কেমন হতে পারে?
কবিরুল বাশার: আমরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকার এডিস মশা নিয়ে গবেষণা করছি। শুধু ঢাকা নয়, এর বাইরেও আমরা কাজ করছি। যেমন চট্টগ্রাম, বরিশাল, বরগুনা, কক্সবাজার, গাজীপুর, চাঁদপুর, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ। শুধু ঢাকা নয়, বাইরেও এডিস মশার ঘনত্ব বাড়ছে। মাঠপর্যায়ে ডেঙ্গুর বাহক মশার যে ঘনত্ব পাচ্ছি, অন্যান্য বছরের তুলনায় তা বেশি। অন্যদিকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এ বছর ডেঙ্গু রোগীর ও এডিস মশা বাড়ার সংখ্যা গতবারের তুলনায় বেশি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল ২০২৩ সালে। সরকারি হিসাবে, এক বছরে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। ২০০০ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই সর্বোচ্চ আক্রান্ত। কিন্তু ২০২৪ সালে এসে সেই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। আমরা বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এবং এডিস মশার ঘনত্ব—এ কয়েকটি প্যারামিটার দিয়ে মাল্টিভেরিয়েন্ট অ্যানালাইসিস করে যে ফোর কাস্টিং মডেল তৈরি করি, তাতে দেখা যাচ্ছে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হবে।
আজকের পত্রিকা: একসময় ডেঙ্গু পরিস্থিতি শুধু ঢাকা শহরেই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন সেটা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার কারণ কী?
কবিরুল বাশার: এখন গ্রামগুলো আর সেই অর্থে গ্রাম নেই। সব গ্রামই কম-বেশি নগরায়ণ হয়েছে। যখনই অপরিকল্পিত নগরায়ণ হয় এবং নিরবচ্ছিন্ন পানির সরবরাহ না থাকে, তখন মানুষ বালতিসহ বিভিন্ন জায়গায় পানি জমিয়ে রাখে আর এই জমানো পানিতে এডিস মশার প্রজনন হয়। এডিস মশা এক শহর থেকে আরেক শহর বা গ্রামে বাস, স্টিমারসহ বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেই জায়গায় যদি তারা প্রজননের পাত্র পায়, তাহলে এর বংশ বৃদ্ধি হতে থাকে।
আজকের পত্রিকা: দুই যুগের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ করা হয়নি কেন?
কবিরুল বাশার: আসলে ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গুর ভয়াবহ সংক্রমণ শুরু হলেও সেই সময় একে নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণাটা পর্যাপ্ত ছিল না। এখন গবেষণা হচ্ছে। গবেষণালব্ধ ফলাফল যদি সঠিকভাবে ব্যবহার ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আমি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের একটা কেবি মডেল প্রস্তাব করেছি। এই মডেল নিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ ও ফিচার প্রকাশিত হয়েছে। এই মডেল যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
আজকের পত্রিকা: আপনার প্রস্তাবিত মডেলের বিষয়ে জানতে চাই।
কবিরুল বাশার: পদ্ধতিটা যদি আমি সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করি তাহলে দাঁড়ায়, একজন স্বাস্থ্যকর্মী বা একজন কীটতত্ত্ববিদ যিনি মশা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন, তিনি কিছু কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেবেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন কর্মীর অধীনে ১ হাজার বাড়ি থাকবে। তিনি নিয়মিত সেসব ভিজিট করবেন। সেই বাড়িতে যদি এডিস মশা পাওয়া যায়, সেই মশার পাত্রগুলো ধ্বংস করবেন। যে পাত্রগুলো ধ্বংস করা যাবে না, সেগুলোয় কীটনাশক প্রয়োগ করবেন। এটি তিনি নিয়মিত, মানে ১৫ দিন অন্তর করবেন। তিনি প্রতি বাড়ি ভিজিট করবেন এবং এই ভিজিট রেকর্ড সিটি করপোরেশন বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। এভাবে আমরা যদি কোনো পুরো শহরে কাজ করতে পারি, তাহলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে থাকবে। কোনো বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেলে সেই বাড়িকে কেন্দ্র করে ক্রাশ প্রোগ্রাম করে উড়ন্ত মশা মেরে দেবেন, যাতে সেই বাড়ির মশা নতুনভাবে আক্রমণ করতে না পারে। মডেলটি বিস্তারিত জানতে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কবিরুল বাশারের প্রস্তাবিত মডেল দিয়ে গুগলে সার্চ করতে পারেন।
আজকের পত্রিকা: সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত কীটনাশক কতটা কার্যকর?
কবিরুল বাশার: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যে তিনটি কীটনাশক ব্যবহার করে, যেমন মেলাথিয়ন, টেমিফস ও নোভালিওরন—আমি এগুলো পরীক্ষা করে দেখেছি, এ তিনটি কীটনাশকই মশা মারার জন্য কার্যকরী। সেগুলো ল্যাবরেটরি পর্যায়ে কার্যকরী। তবে যে ফগিং বা ধোঁয়া দেওয়া হয়, সেটির ল্যাবরেটরি পর্যায়ে কার্যকারিতা থাকলেও মাঠপর্যায়ে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে কার্যকারিতা কম।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, যদি কীটনাশক কার্যকর হয়, তাহলে মশা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না কেন? এ প্রশ্নের উত্তর হলো, আপনার অস্ত্র যত ভালো থাকুক, যদি অস্ত্রটির ব্যবহার সঠিক সময়, সঠিক জায়গায় এবং সঠিক মাত্রায় না করা হয়, তাহলে সেটি ফলাফল না-ও দিতে পারে। এখন অস্ত্রটি সঠিক সময়, সঠিক জায়গায় এবং সঠিক মাত্রায় ব্যবহার হয়েছে কি না, সেটির মনিটরিং ও ইভাল্যুয়েশন হওয়া দরকার। তার রিপোর্টও থাকা দরকার। একটি প্রোগ্রামের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সেই প্রোগ্রামটি নতুন করে সাজাতে হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মূল্যায়ন প্রতিবেদন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজন হলে মশা নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল প্রণয়ন করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: কলকাতার তাপমাত্রা, জনসংখ্যা, অবকাঠামো অনেকটা ঢাকার কাছাকাছি। তারা ডেঙ্গু মোকাবিলায় সফলতা দেখাতে পারলেও আমরা পারছি না কেন?
কবিরুল বাশার: কলকাতায় আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছি। সেখানকার মশা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত অফিসার ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কলকাতার যিনি কীটতত্ত্ববিদ, তাঁর সঙ্গেও দেখা হয়েছে। তাঁরা কিন্তু উড়ন্ত মশা মারার জন্য ফগিং করে না। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সেই বাড়ির এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করেন। প্রতিটি বাড়িতে তাঁরা ১৫ দিন পর পর ভিজিট করেন। সেসব বাড়ির প্রজননস্থল ধ্বংস এবং সেখানে কোনো ডেঙ্গু রোগী থাকলে তার খোঁজখবর রাখেন, চিকিৎসা এবং হটস্পট ম্যানেজমেন্ট করেন। এ কাজটি তাঁরা পাঁচ বছর ধরে করছেন। মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিটিআই ব্যবহার করেন। এ জন্য আমাদের দেশের মতো আবহাওয়া হওয়ার কারণে তারা ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে থাকার পরেও সফল। একইভাবে সিঙ্গাপুরও এতে সফলতা দেখাতে পেরেছে।
আমি যে মডেলটি দিয়েছি, সেখানে সবকিছু বিস্তারিতভাবে দেওয়া আছে। কলকাতার মডেলেরও কিছুটা ছাপ এখানে আছে। এ মডেলটি বাস্তবায়ন করলে আমরাও সফল হতে পারি।
আজকের পত্রিকা: গত বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। আপনি কী বলবেন?
কবিরুল বাশার: সরকারের কোনো উদ্যোগ ছিল না—ব্যাপারটি সে রকম নয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনেকগুলো মিটিং করেছিল। সেই সব মিটিংয়ে আমার উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রদের এ বিষয়ে যথেষ্ট সক্রিয় থাকতে দেখেছি। তাঁরা সক্রিয় আছেন, কিন্তু এই সক্রিয়তা মাঠপর্যায়ে কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেটা আসলে দেখা দরকার। যদি এই প্রোগ্রামকে যথাযথভাবে মনিটরিং করা যায়, তাহলে আমরা ভবিষ্যতে মশা নিয়ন্ত্রণে সফলতা অর্জন করতে পারব।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ জনগণের করণীয় কী?
কবিরুল বাশার: ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণের ভূমিকা অপরিসীম। আমরা যখন মাঠপর্যায়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও গবেষণায় যাই, তখন দেখতে পাই ঢাকার অভিজাত এলাকার ভবনের বেসমেন্টে গাড়ি রাখার জায়গায় এডিস মশার ঘনত্ব অনেক। বাড়িতে টায়ার, ভাঙা কমোড, বিভিন্ন পাত্র ফেলে রাখলে সেখানে এডিস মশা পাচ্ছি। কুকুরের খাবারের সঙ্গে একটা পানির পাত্র রাখা হলে সেখানেও আমরা এডিস মশা পেয়েছি। এসব জিনিস কিন্তু আমাদের বাড়ি বা এর আশপাশে থাকে। তাই বাড়ি বা এর আশপাশে কোনো পাত্রে যেন পানি জমা না থাকে।
যদি এমন কোনো পাত্র থাকে, তাহলে সেটি উল্টে রাখতে হবে, যাতে সেখানে পানি জমে এডিস মশার প্রজনন না হতে পারে। কয়েল ও অ্যারোসলের মতো মশার লার্ভা নিধনে ব্যবহৃত ‘রেডি ফর ইউজ’ কীটনাশক সাধারণ জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে আনা দরকার। তাহলে তারা নিজেরাই কিনে এগুলো প্রয়োগ করতে পারবে।এভাবে যদি প্রতিটি বাড়ির মালিক নিশ্চিত করেন, তাহলে অর্ধেকের বেশি এডিস মশা কমে যাবে। নাগরিকদের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে রাস্তাঘাট, উন্মুক্ত স্থাপনা, সরকারি-বেসরকারি অফিস এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তাহলে সম্মিলিতভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ করা কোনো অসম্ভব ব্যাপার নয়।
আজকের পত্রিকা: এবার বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কেমন হতে পারে?
কবিরুল বাশার: আমরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকার এডিস মশা নিয়ে গবেষণা করছি। শুধু ঢাকা নয়, এর বাইরেও আমরা কাজ করছি। যেমন চট্টগ্রাম, বরিশাল, বরগুনা, কক্সবাজার, গাজীপুর, চাঁদপুর, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ। শুধু ঢাকা নয়, বাইরেও এডিস মশার ঘনত্ব বাড়ছে। মাঠপর্যায়ে ডেঙ্গুর বাহক মশার যে ঘনত্ব পাচ্ছি, অন্যান্য বছরের তুলনায় তা বেশি। অন্যদিকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এ বছর ডেঙ্গু রোগীর ও এডিস মশা বাড়ার সংখ্যা গতবারের তুলনায় বেশি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল ২০২৩ সালে। সরকারি হিসাবে, এক বছরে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। ২০০০ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই সর্বোচ্চ আক্রান্ত। কিন্তু ২০২৪ সালে এসে সেই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। আমরা বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এবং এডিস মশার ঘনত্ব—এ কয়েকটি প্যারামিটার দিয়ে মাল্টিভেরিয়েন্ট অ্যানালাইসিস করে যে ফোর কাস্টিং মডেল তৈরি করি, তাতে দেখা যাচ্ছে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হবে।
আজকের পত্রিকা: একসময় ডেঙ্গু পরিস্থিতি শুধু ঢাকা শহরেই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন সেটা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার কারণ কী?
কবিরুল বাশার: এখন গ্রামগুলো আর সেই অর্থে গ্রাম নেই। সব গ্রামই কম-বেশি নগরায়ণ হয়েছে। যখনই অপরিকল্পিত নগরায়ণ হয় এবং নিরবচ্ছিন্ন পানির সরবরাহ না থাকে, তখন মানুষ বালতিসহ বিভিন্ন জায়গায় পানি জমিয়ে রাখে আর এই জমানো পানিতে এডিস মশার প্রজনন হয়। এডিস মশা এক শহর থেকে আরেক শহর বা গ্রামে বাস, স্টিমারসহ বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেই জায়গায় যদি তারা প্রজননের পাত্র পায়, তাহলে এর বংশ বৃদ্ধি হতে থাকে।
আজকের পত্রিকা: দুই যুগের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ করা হয়নি কেন?
কবিরুল বাশার: আসলে ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গুর ভয়াবহ সংক্রমণ শুরু হলেও সেই সময় একে নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণাটা পর্যাপ্ত ছিল না। এখন গবেষণা হচ্ছে। গবেষণালব্ধ ফলাফল যদি সঠিকভাবে ব্যবহার ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আমি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের একটা কেবি মডেল প্রস্তাব করেছি। এই মডেল নিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ ও ফিচার প্রকাশিত হয়েছে। এই মডেল যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
আজকের পত্রিকা: আপনার প্রস্তাবিত মডেলের বিষয়ে জানতে চাই।
কবিরুল বাশার: পদ্ধতিটা যদি আমি সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করি তাহলে দাঁড়ায়, একজন স্বাস্থ্যকর্মী বা একজন কীটতত্ত্ববিদ যিনি মশা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন, তিনি কিছু কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেবেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন কর্মীর অধীনে ১ হাজার বাড়ি থাকবে। তিনি নিয়মিত সেসব ভিজিট করবেন। সেই বাড়িতে যদি এডিস মশা পাওয়া যায়, সেই মশার পাত্রগুলো ধ্বংস করবেন। যে পাত্রগুলো ধ্বংস করা যাবে না, সেগুলোয় কীটনাশক প্রয়োগ করবেন। এটি তিনি নিয়মিত, মানে ১৫ দিন অন্তর করবেন। তিনি প্রতি বাড়ি ভিজিট করবেন এবং এই ভিজিট রেকর্ড সিটি করপোরেশন বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। এভাবে আমরা যদি কোনো পুরো শহরে কাজ করতে পারি, তাহলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে থাকবে। কোনো বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেলে সেই বাড়িকে কেন্দ্র করে ক্রাশ প্রোগ্রাম করে উড়ন্ত মশা মেরে দেবেন, যাতে সেই বাড়ির মশা নতুনভাবে আক্রমণ করতে না পারে। মডেলটি বিস্তারিত জানতে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কবিরুল বাশারের প্রস্তাবিত মডেল দিয়ে গুগলে সার্চ করতে পারেন।
আজকের পত্রিকা: সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত কীটনাশক কতটা কার্যকর?
কবিরুল বাশার: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যে তিনটি কীটনাশক ব্যবহার করে, যেমন মেলাথিয়ন, টেমিফস ও নোভালিওরন—আমি এগুলো পরীক্ষা করে দেখেছি, এ তিনটি কীটনাশকই মশা মারার জন্য কার্যকরী। সেগুলো ল্যাবরেটরি পর্যায়ে কার্যকরী। তবে যে ফগিং বা ধোঁয়া দেওয়া হয়, সেটির ল্যাবরেটরি পর্যায়ে কার্যকারিতা থাকলেও মাঠপর্যায়ে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে কার্যকারিতা কম।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, যদি কীটনাশক কার্যকর হয়, তাহলে মশা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না কেন? এ প্রশ্নের উত্তর হলো, আপনার অস্ত্র যত ভালো থাকুক, যদি অস্ত্রটির ব্যবহার সঠিক সময়, সঠিক জায়গায় এবং সঠিক মাত্রায় না করা হয়, তাহলে সেটি ফলাফল না-ও দিতে পারে। এখন অস্ত্রটি সঠিক সময়, সঠিক জায়গায় এবং সঠিক মাত্রায় ব্যবহার হয়েছে কি না, সেটির মনিটরিং ও ইভাল্যুয়েশন হওয়া দরকার। তার রিপোর্টও থাকা দরকার। একটি প্রোগ্রামের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সেই প্রোগ্রামটি নতুন করে সাজাতে হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মূল্যায়ন প্রতিবেদন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজন হলে মশা নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল প্রণয়ন করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: কলকাতার তাপমাত্রা, জনসংখ্যা, অবকাঠামো অনেকটা ঢাকার কাছাকাছি। তারা ডেঙ্গু মোকাবিলায় সফলতা দেখাতে পারলেও আমরা পারছি না কেন?
কবিরুল বাশার: কলকাতায় আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছি। সেখানকার মশা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত অফিসার ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কলকাতার যিনি কীটতত্ত্ববিদ, তাঁর সঙ্গেও দেখা হয়েছে। তাঁরা কিন্তু উড়ন্ত মশা মারার জন্য ফগিং করে না। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সেই বাড়ির এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করেন। প্রতিটি বাড়িতে তাঁরা ১৫ দিন পর পর ভিজিট করেন। সেসব বাড়ির প্রজননস্থল ধ্বংস এবং সেখানে কোনো ডেঙ্গু রোগী থাকলে তার খোঁজখবর রাখেন, চিকিৎসা এবং হটস্পট ম্যানেজমেন্ট করেন। এ কাজটি তাঁরা পাঁচ বছর ধরে করছেন। মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিটিআই ব্যবহার করেন। এ জন্য আমাদের দেশের মতো আবহাওয়া হওয়ার কারণে তারা ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে থাকার পরেও সফল। একইভাবে সিঙ্গাপুরও এতে সফলতা দেখাতে পেরেছে।
আমি যে মডেলটি দিয়েছি, সেখানে সবকিছু বিস্তারিতভাবে দেওয়া আছে। কলকাতার মডেলেরও কিছুটা ছাপ এখানে আছে। এ মডেলটি বাস্তবায়ন করলে আমরাও সফল হতে পারি।
আজকের পত্রিকা: গত বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। আপনি কী বলবেন?
কবিরুল বাশার: সরকারের কোনো উদ্যোগ ছিল না—ব্যাপারটি সে রকম নয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনেকগুলো মিটিং করেছিল। সেই সব মিটিংয়ে আমার উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রদের এ বিষয়ে যথেষ্ট সক্রিয় থাকতে দেখেছি। তাঁরা সক্রিয় আছেন, কিন্তু এই সক্রিয়তা মাঠপর্যায়ে কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেটা আসলে দেখা দরকার। যদি এই প্রোগ্রামকে যথাযথভাবে মনিটরিং করা যায়, তাহলে আমরা ভবিষ্যতে মশা নিয়ন্ত্রণে সফলতা অর্জন করতে পারব।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ জনগণের করণীয় কী?
কবিরুল বাশার: ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণের ভূমিকা অপরিসীম। আমরা যখন মাঠপর্যায়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও গবেষণায় যাই, তখন দেখতে পাই ঢাকার অভিজাত এলাকার ভবনের বেসমেন্টে গাড়ি রাখার জায়গায় এডিস মশার ঘনত্ব অনেক। বাড়িতে টায়ার, ভাঙা কমোড, বিভিন্ন পাত্র ফেলে রাখলে সেখানে এডিস মশা পাচ্ছি। কুকুরের খাবারের সঙ্গে একটা পানির পাত্র রাখা হলে সেখানেও আমরা এডিস মশা পেয়েছি। এসব জিনিস কিন্তু আমাদের বাড়ি বা এর আশপাশে থাকে। তাই বাড়ি বা এর আশপাশে কোনো পাত্রে যেন পানি জমা না থাকে।
যদি এমন কোনো পাত্র থাকে, তাহলে সেটি উল্টে রাখতে হবে, যাতে সেখানে পানি জমে এডিস মশার প্রজনন না হতে পারে। কয়েল ও অ্যারোসলের মতো মশার লার্ভা নিধনে ব্যবহৃত ‘রেডি ফর ইউজ’ কীটনাশক সাধারণ জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে আনা দরকার। তাহলে তারা নিজেরাই কিনে এগুলো প্রয়োগ করতে পারবে।এভাবে যদি প্রতিটি বাড়ির মালিক নিশ্চিত করেন, তাহলে অর্ধেকের বেশি এডিস মশা কমে যাবে। নাগরিকদের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে রাস্তাঘাট, উন্মুক্ত স্থাপনা, সরকারি-বেসরকারি অফিস এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তাহলে সম্মিলিতভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ করা কোনো অসম্ভব ব্যাপার নয়।

আজকের পত্রিকা: এবার বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কেমন হতে পারে?
কবিরুল বাশার: আমরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকার এডিস মশা নিয়ে গবেষণা করছি। শুধু ঢাকা নয়, এর বাইরেও আমরা কাজ করছি। যেমন চট্টগ্রাম, বরিশাল, বরগুনা, কক্সবাজার, গাজীপুর, চাঁদপুর, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ। শুধু ঢাকা নয়, বাইরেও এডিস মশার ঘনত্ব বাড়ছে। মাঠপর্যায়ে ডেঙ্গুর বাহক মশার যে ঘনত্ব পাচ্ছি, অন্যান্য বছরের তুলনায় তা বেশি। অন্যদিকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এ বছর ডেঙ্গু রোগীর ও এডিস মশা বাড়ার সংখ্যা গতবারের তুলনায় বেশি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল ২০২৩ সালে। সরকারি হিসাবে, এক বছরে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। ২০০০ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই সর্বোচ্চ আক্রান্ত। কিন্তু ২০২৪ সালে এসে সেই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। আমরা বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এবং এডিস মশার ঘনত্ব—এ কয়েকটি প্যারামিটার দিয়ে মাল্টিভেরিয়েন্ট অ্যানালাইসিস করে যে ফোর কাস্টিং মডেল তৈরি করি, তাতে দেখা যাচ্ছে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হবে।
আজকের পত্রিকা: একসময় ডেঙ্গু পরিস্থিতি শুধু ঢাকা শহরেই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন সেটা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার কারণ কী?
কবিরুল বাশার: এখন গ্রামগুলো আর সেই অর্থে গ্রাম নেই। সব গ্রামই কম-বেশি নগরায়ণ হয়েছে। যখনই অপরিকল্পিত নগরায়ণ হয় এবং নিরবচ্ছিন্ন পানির সরবরাহ না থাকে, তখন মানুষ বালতিসহ বিভিন্ন জায়গায় পানি জমিয়ে রাখে আর এই জমানো পানিতে এডিস মশার প্রজনন হয়। এডিস মশা এক শহর থেকে আরেক শহর বা গ্রামে বাস, স্টিমারসহ বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেই জায়গায় যদি তারা প্রজননের পাত্র পায়, তাহলে এর বংশ বৃদ্ধি হতে থাকে।
আজকের পত্রিকা: দুই যুগের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ করা হয়নি কেন?
কবিরুল বাশার: আসলে ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গুর ভয়াবহ সংক্রমণ শুরু হলেও সেই সময় একে নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণাটা পর্যাপ্ত ছিল না। এখন গবেষণা হচ্ছে। গবেষণালব্ধ ফলাফল যদি সঠিকভাবে ব্যবহার ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আমি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের একটা কেবি মডেল প্রস্তাব করেছি। এই মডেল নিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ ও ফিচার প্রকাশিত হয়েছে। এই মডেল যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
আজকের পত্রিকা: আপনার প্রস্তাবিত মডেলের বিষয়ে জানতে চাই।
কবিরুল বাশার: পদ্ধতিটা যদি আমি সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করি তাহলে দাঁড়ায়, একজন স্বাস্থ্যকর্মী বা একজন কীটতত্ত্ববিদ যিনি মশা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন, তিনি কিছু কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেবেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন কর্মীর অধীনে ১ হাজার বাড়ি থাকবে। তিনি নিয়মিত সেসব ভিজিট করবেন। সেই বাড়িতে যদি এডিস মশা পাওয়া যায়, সেই মশার পাত্রগুলো ধ্বংস করবেন। যে পাত্রগুলো ধ্বংস করা যাবে না, সেগুলোয় কীটনাশক প্রয়োগ করবেন। এটি তিনি নিয়মিত, মানে ১৫ দিন অন্তর করবেন। তিনি প্রতি বাড়ি ভিজিট করবেন এবং এই ভিজিট রেকর্ড সিটি করপোরেশন বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। এভাবে আমরা যদি কোনো পুরো শহরে কাজ করতে পারি, তাহলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে থাকবে। কোনো বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেলে সেই বাড়িকে কেন্দ্র করে ক্রাশ প্রোগ্রাম করে উড়ন্ত মশা মেরে দেবেন, যাতে সেই বাড়ির মশা নতুনভাবে আক্রমণ করতে না পারে। মডেলটি বিস্তারিত জানতে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কবিরুল বাশারের প্রস্তাবিত মডেল দিয়ে গুগলে সার্চ করতে পারেন।
আজকের পত্রিকা: সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত কীটনাশক কতটা কার্যকর?
কবিরুল বাশার: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যে তিনটি কীটনাশক ব্যবহার করে, যেমন মেলাথিয়ন, টেমিফস ও নোভালিওরন—আমি এগুলো পরীক্ষা করে দেখেছি, এ তিনটি কীটনাশকই মশা মারার জন্য কার্যকরী। সেগুলো ল্যাবরেটরি পর্যায়ে কার্যকরী। তবে যে ফগিং বা ধোঁয়া দেওয়া হয়, সেটির ল্যাবরেটরি পর্যায়ে কার্যকারিতা থাকলেও মাঠপর্যায়ে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে কার্যকারিতা কম।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, যদি কীটনাশক কার্যকর হয়, তাহলে মশা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না কেন? এ প্রশ্নের উত্তর হলো, আপনার অস্ত্র যত ভালো থাকুক, যদি অস্ত্রটির ব্যবহার সঠিক সময়, সঠিক জায়গায় এবং সঠিক মাত্রায় না করা হয়, তাহলে সেটি ফলাফল না-ও দিতে পারে। এখন অস্ত্রটি সঠিক সময়, সঠিক জায়গায় এবং সঠিক মাত্রায় ব্যবহার হয়েছে কি না, সেটির মনিটরিং ও ইভাল্যুয়েশন হওয়া দরকার। তার রিপোর্টও থাকা দরকার। একটি প্রোগ্রামের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সেই প্রোগ্রামটি নতুন করে সাজাতে হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মূল্যায়ন প্রতিবেদন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজন হলে মশা নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল প্রণয়ন করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: কলকাতার তাপমাত্রা, জনসংখ্যা, অবকাঠামো অনেকটা ঢাকার কাছাকাছি। তারা ডেঙ্গু মোকাবিলায় সফলতা দেখাতে পারলেও আমরা পারছি না কেন?
কবিরুল বাশার: কলকাতায় আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছি। সেখানকার মশা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত অফিসার ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কলকাতার যিনি কীটতত্ত্ববিদ, তাঁর সঙ্গেও দেখা হয়েছে। তাঁরা কিন্তু উড়ন্ত মশা মারার জন্য ফগিং করে না। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সেই বাড়ির এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করেন। প্রতিটি বাড়িতে তাঁরা ১৫ দিন পর পর ভিজিট করেন। সেসব বাড়ির প্রজননস্থল ধ্বংস এবং সেখানে কোনো ডেঙ্গু রোগী থাকলে তার খোঁজখবর রাখেন, চিকিৎসা এবং হটস্পট ম্যানেজমেন্ট করেন। এ কাজটি তাঁরা পাঁচ বছর ধরে করছেন। মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিটিআই ব্যবহার করেন। এ জন্য আমাদের দেশের মতো আবহাওয়া হওয়ার কারণে তারা ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে থাকার পরেও সফল। একইভাবে সিঙ্গাপুরও এতে সফলতা দেখাতে পেরেছে।
আমি যে মডেলটি দিয়েছি, সেখানে সবকিছু বিস্তারিতভাবে দেওয়া আছে। কলকাতার মডেলেরও কিছুটা ছাপ এখানে আছে। এ মডেলটি বাস্তবায়ন করলে আমরাও সফল হতে পারি।
আজকের পত্রিকা: গত বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। আপনি কী বলবেন?
কবিরুল বাশার: সরকারের কোনো উদ্যোগ ছিল না—ব্যাপারটি সে রকম নয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনেকগুলো মিটিং করেছিল। সেই সব মিটিংয়ে আমার উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রদের এ বিষয়ে যথেষ্ট সক্রিয় থাকতে দেখেছি। তাঁরা সক্রিয় আছেন, কিন্তু এই সক্রিয়তা মাঠপর্যায়ে কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেটা আসলে দেখা দরকার। যদি এই প্রোগ্রামকে যথাযথভাবে মনিটরিং করা যায়, তাহলে আমরা ভবিষ্যতে মশা নিয়ন্ত্রণে সফলতা অর্জন করতে পারব।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ জনগণের করণীয় কী?
কবিরুল বাশার: ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণের ভূমিকা অপরিসীম। আমরা যখন মাঠপর্যায়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও গবেষণায় যাই, তখন দেখতে পাই ঢাকার অভিজাত এলাকার ভবনের বেসমেন্টে গাড়ি রাখার জায়গায় এডিস মশার ঘনত্ব অনেক। বাড়িতে টায়ার, ভাঙা কমোড, বিভিন্ন পাত্র ফেলে রাখলে সেখানে এডিস মশা পাচ্ছি। কুকুরের খাবারের সঙ্গে একটা পানির পাত্র রাখা হলে সেখানেও আমরা এডিস মশা পেয়েছি। এসব জিনিস কিন্তু আমাদের বাড়ি বা এর আশপাশে থাকে। তাই বাড়ি বা এর আশপাশে কোনো পাত্রে যেন পানি জমা না থাকে।
যদি এমন কোনো পাত্র থাকে, তাহলে সেটি উল্টে রাখতে হবে, যাতে সেখানে পানি জমে এডিস মশার প্রজনন না হতে পারে। কয়েল ও অ্যারোসলের মতো মশার লার্ভা নিধনে ব্যবহৃত ‘রেডি ফর ইউজ’ কীটনাশক সাধারণ জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে আনা দরকার। তাহলে তারা নিজেরাই কিনে এগুলো প্রয়োগ করতে পারবে।এভাবে যদি প্রতিটি বাড়ির মালিক নিশ্চিত করেন, তাহলে অর্ধেকের বেশি এডিস মশা কমে যাবে। নাগরিকদের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে রাস্তাঘাট, উন্মুক্ত স্থাপনা, সরকারি-বেসরকারি অফিস এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তাহলে সম্মিলিতভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ করা কোনো অসম্ভব ব্যাপার নয়।
আজকের পত্রিকা: এবার বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কেমন হতে পারে?
কবিরুল বাশার: আমরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকার এডিস মশা নিয়ে গবেষণা করছি। শুধু ঢাকা নয়, এর বাইরেও আমরা কাজ করছি। যেমন চট্টগ্রাম, বরিশাল, বরগুনা, কক্সবাজার, গাজীপুর, চাঁদপুর, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ। শুধু ঢাকা নয়, বাইরেও এডিস মশার ঘনত্ব বাড়ছে। মাঠপর্যায়ে ডেঙ্গুর বাহক মশার যে ঘনত্ব পাচ্ছি, অন্যান্য বছরের তুলনায় তা বেশি। অন্যদিকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এ বছর ডেঙ্গু রোগীর ও এডিস মশা বাড়ার সংখ্যা গতবারের তুলনায় বেশি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল ২০২৩ সালে। সরকারি হিসাবে, এক বছরে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। ২০০০ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই সর্বোচ্চ আক্রান্ত। কিন্তু ২০২৪ সালে এসে সেই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। আমরা বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এবং এডিস মশার ঘনত্ব—এ কয়েকটি প্যারামিটার দিয়ে মাল্টিভেরিয়েন্ট অ্যানালাইসিস করে যে ফোর কাস্টিং মডেল তৈরি করি, তাতে দেখা যাচ্ছে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হবে।
আজকের পত্রিকা: একসময় ডেঙ্গু পরিস্থিতি শুধু ঢাকা শহরেই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন সেটা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার কারণ কী?
কবিরুল বাশার: এখন গ্রামগুলো আর সেই অর্থে গ্রাম নেই। সব গ্রামই কম-বেশি নগরায়ণ হয়েছে। যখনই অপরিকল্পিত নগরায়ণ হয় এবং নিরবচ্ছিন্ন পানির সরবরাহ না থাকে, তখন মানুষ বালতিসহ বিভিন্ন জায়গায় পানি জমিয়ে রাখে আর এই জমানো পানিতে এডিস মশার প্রজনন হয়। এডিস মশা এক শহর থেকে আরেক শহর বা গ্রামে বাস, স্টিমারসহ বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেই জায়গায় যদি তারা প্রজননের পাত্র পায়, তাহলে এর বংশ বৃদ্ধি হতে থাকে।
আজকের পত্রিকা: দুই যুগের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ করা হয়নি কেন?
কবিরুল বাশার: আসলে ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গুর ভয়াবহ সংক্রমণ শুরু হলেও সেই সময় একে নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণাটা পর্যাপ্ত ছিল না। এখন গবেষণা হচ্ছে। গবেষণালব্ধ ফলাফল যদি সঠিকভাবে ব্যবহার ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আমি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের একটা কেবি মডেল প্রস্তাব করেছি। এই মডেল নিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ ও ফিচার প্রকাশিত হয়েছে। এই মডেল যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
আজকের পত্রিকা: আপনার প্রস্তাবিত মডেলের বিষয়ে জানতে চাই।
কবিরুল বাশার: পদ্ধতিটা যদি আমি সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করি তাহলে দাঁড়ায়, একজন স্বাস্থ্যকর্মী বা একজন কীটতত্ত্ববিদ যিনি মশা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন, তিনি কিছু কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেবেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন কর্মীর অধীনে ১ হাজার বাড়ি থাকবে। তিনি নিয়মিত সেসব ভিজিট করবেন। সেই বাড়িতে যদি এডিস মশা পাওয়া যায়, সেই মশার পাত্রগুলো ধ্বংস করবেন। যে পাত্রগুলো ধ্বংস করা যাবে না, সেগুলোয় কীটনাশক প্রয়োগ করবেন। এটি তিনি নিয়মিত, মানে ১৫ দিন অন্তর করবেন। তিনি প্রতি বাড়ি ভিজিট করবেন এবং এই ভিজিট রেকর্ড সিটি করপোরেশন বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। এভাবে আমরা যদি কোনো পুরো শহরে কাজ করতে পারি, তাহলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে থাকবে। কোনো বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেলে সেই বাড়িকে কেন্দ্র করে ক্রাশ প্রোগ্রাম করে উড়ন্ত মশা মেরে দেবেন, যাতে সেই বাড়ির মশা নতুনভাবে আক্রমণ করতে না পারে। মডেলটি বিস্তারিত জানতে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কবিরুল বাশারের প্রস্তাবিত মডেল দিয়ে গুগলে সার্চ করতে পারেন।
আজকের পত্রিকা: সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত কীটনাশক কতটা কার্যকর?
কবিরুল বাশার: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যে তিনটি কীটনাশক ব্যবহার করে, যেমন মেলাথিয়ন, টেমিফস ও নোভালিওরন—আমি এগুলো পরীক্ষা করে দেখেছি, এ তিনটি কীটনাশকই মশা মারার জন্য কার্যকরী। সেগুলো ল্যাবরেটরি পর্যায়ে কার্যকরী। তবে যে ফগিং বা ধোঁয়া দেওয়া হয়, সেটির ল্যাবরেটরি পর্যায়ে কার্যকারিতা থাকলেও মাঠপর্যায়ে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে কার্যকারিতা কম।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, যদি কীটনাশক কার্যকর হয়, তাহলে মশা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না কেন? এ প্রশ্নের উত্তর হলো, আপনার অস্ত্র যত ভালো থাকুক, যদি অস্ত্রটির ব্যবহার সঠিক সময়, সঠিক জায়গায় এবং সঠিক মাত্রায় না করা হয়, তাহলে সেটি ফলাফল না-ও দিতে পারে। এখন অস্ত্রটি সঠিক সময়, সঠিক জায়গায় এবং সঠিক মাত্রায় ব্যবহার হয়েছে কি না, সেটির মনিটরিং ও ইভাল্যুয়েশন হওয়া দরকার। তার রিপোর্টও থাকা দরকার। একটি প্রোগ্রামের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সেই প্রোগ্রামটি নতুন করে সাজাতে হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মূল্যায়ন প্রতিবেদন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজন হলে মশা নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল প্রণয়ন করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: কলকাতার তাপমাত্রা, জনসংখ্যা, অবকাঠামো অনেকটা ঢাকার কাছাকাছি। তারা ডেঙ্গু মোকাবিলায় সফলতা দেখাতে পারলেও আমরা পারছি না কেন?
কবিরুল বাশার: কলকাতায় আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছি। সেখানকার মশা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত অফিসার ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কলকাতার যিনি কীটতত্ত্ববিদ, তাঁর সঙ্গেও দেখা হয়েছে। তাঁরা কিন্তু উড়ন্ত মশা মারার জন্য ফগিং করে না। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সেই বাড়ির এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করেন। প্রতিটি বাড়িতে তাঁরা ১৫ দিন পর পর ভিজিট করেন। সেসব বাড়ির প্রজননস্থল ধ্বংস এবং সেখানে কোনো ডেঙ্গু রোগী থাকলে তার খোঁজখবর রাখেন, চিকিৎসা এবং হটস্পট ম্যানেজমেন্ট করেন। এ কাজটি তাঁরা পাঁচ বছর ধরে করছেন। মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিটিআই ব্যবহার করেন। এ জন্য আমাদের দেশের মতো আবহাওয়া হওয়ার কারণে তারা ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে থাকার পরেও সফল। একইভাবে সিঙ্গাপুরও এতে সফলতা দেখাতে পেরেছে।
আমি যে মডেলটি দিয়েছি, সেখানে সবকিছু বিস্তারিতভাবে দেওয়া আছে। কলকাতার মডেলেরও কিছুটা ছাপ এখানে আছে। এ মডেলটি বাস্তবায়ন করলে আমরাও সফল হতে পারি।
আজকের পত্রিকা: গত বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। আপনি কী বলবেন?
কবিরুল বাশার: সরকারের কোনো উদ্যোগ ছিল না—ব্যাপারটি সে রকম নয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনেকগুলো মিটিং করেছিল। সেই সব মিটিংয়ে আমার উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রদের এ বিষয়ে যথেষ্ট সক্রিয় থাকতে দেখেছি। তাঁরা সক্রিয় আছেন, কিন্তু এই সক্রিয়তা মাঠপর্যায়ে কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেটা আসলে দেখা দরকার। যদি এই প্রোগ্রামকে যথাযথভাবে মনিটরিং করা যায়, তাহলে আমরা ভবিষ্যতে মশা নিয়ন্ত্রণে সফলতা অর্জন করতে পারব।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ জনগণের করণীয় কী?
কবিরুল বাশার: ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণের ভূমিকা অপরিসীম। আমরা যখন মাঠপর্যায়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও গবেষণায় যাই, তখন দেখতে পাই ঢাকার অভিজাত এলাকার ভবনের বেসমেন্টে গাড়ি রাখার জায়গায় এডিস মশার ঘনত্ব অনেক। বাড়িতে টায়ার, ভাঙা কমোড, বিভিন্ন পাত্র ফেলে রাখলে সেখানে এডিস মশা পাচ্ছি। কুকুরের খাবারের সঙ্গে একটা পানির পাত্র রাখা হলে সেখানেও আমরা এডিস মশা পেয়েছি। এসব জিনিস কিন্তু আমাদের বাড়ি বা এর আশপাশে থাকে। তাই বাড়ি বা এর আশপাশে কোনো পাত্রে যেন পানি জমা না থাকে।
যদি এমন কোনো পাত্র থাকে, তাহলে সেটি উল্টে রাখতে হবে, যাতে সেখানে পানি জমে এডিস মশার প্রজনন না হতে পারে। কয়েল ও অ্যারোসলের মতো মশার লার্ভা নিধনে ব্যবহৃত ‘রেডি ফর ইউজ’ কীটনাশক সাধারণ জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে আনা দরকার। তাহলে তারা নিজেরাই কিনে এগুলো প্রয়োগ করতে পারবে।এভাবে যদি প্রতিটি বাড়ির মালিক নিশ্চিত করেন, তাহলে অর্ধেকের বেশি এডিস মশা কমে যাবে। নাগরিকদের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে রাস্তাঘাট, উন্মুক্ত স্থাপনা, সরকারি-বেসরকারি অফিস এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তাহলে সম্মিলিতভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ করা কোনো অসম্ভব ব্যাপার নয়।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বাংলাদেশের অন্যতম মশা গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক। মশা নিয়ে জাপানের কানাজাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন।
০৭ জুলাই ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বাংলাদেশের অন্যতম মশা গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক। মশা নিয়ে জাপানের কানাজাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন।
০৭ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বাংলাদেশের অন্যতম মশা গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক। মশা নিয়ে জাপানের কানাজাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন।
০৭ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বাংলাদেশের অন্যতম মশা গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক। মশা নিয়ে জাপানের কানাজাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন।
০৭ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫