Ajker Patrika

বাংলাদেশকে কাবু করতে ভারত পানিকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে: মির্জা ফখরুল 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ২২: ৪০
বাংলাদেশকে কাবু করতে ভারত পানিকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে: মির্জা ফখরুল 

বাংলাদেশকে কাবু করতে ভারত পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মূল সমস্যা হচ্ছে আমরা ভাটির দেশ। উজান থেকে যে পানি আসে তার বেশির ভাগই ভারত থেকে আসে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকার পানি সমস্যা সমাধানের বিষয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো আজ পর্যন্ত পানির সমস্যার সমাধান হয়নি। সুতরাং, এটা একধরনের ‘অস্ত্র’, যেকোনো সময় এটা দিয়ে বাংলাদেশকে কাবু করে রাখা যায়।’

আজ রোববার সিলেট নগরীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা এসব নিয়ে বারবার কথা বলেছি। আপনারা জানেন, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে আমরা কথা বলেছিলাম। সিলেট থেকে এই পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। এম ইলিয়াস আলী নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে তাকে গুম করা হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে দেশের একটি অংশ ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। গত ১৫ বছরে এমন আকস্মিক বন্যা আমরা দেখিনি। ভারত তাদের বাঁধ খুলে দেওয়ায় এই ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। তারা বাঁধ খুলে দেওয়ার আগে কোনো পূর্বাভাসও দেয়নি।’

আগামীতে বিএনপি-জামায়াত একসঙ্গে না আলাদা নির্বাচন করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো অ্যালায়েন্স আছে? না থাকলে বাদ। যখন নির্বাচন আসবে তখন বোঝা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি ইতিমধ্যে কিছু কিছু সংগঠন, হয়তো সরকারি কিছু সংগঠন, গ্রাম পুলিশ, শিক্ষকদের অনেকে হঠাৎ করে তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ছে। এত দিন তারা কোথায় ছিলেন? এই একটা সরকার আসছে, তারা কাজ করার চেষ্টা করছে। তাদের সেই সুযোগ না দিয়েই তারা রাস্তায় নেমে গেছেন দাবিদাওয়া নিয়ে। এটাকে আমার কাছে কিছুটা স্বার্থপরতা মনে হচ্ছে।

‘অবশ্যই দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলবেন। সেই দাবিদাওয়া পূরণও করবে সরকার। একটা নির্বাচন হোক। এই নির্বাচন পরে একটা নির্বাচিত সরকার আসুক। আসলে তারা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলবেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারকে জঞ্জাল পরিষ্কার করার সুযোগ দেন। আমি এই কথা বারবার আপনাদের মাধ্যমেও বলতে চাই। এই ধরনের দাবিদাওয়াগুলো এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তুলে ধরা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত না।’

তিনি বলেন, ‘প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার যখন দেশকে একটি স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে, দেশ যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন ভারতে বসে শেখ হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছেন। এটি সফল হবে না।

‘অতীতের সব জঞ্জালে পরিষ্কার করে সত্যিকারার্থে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হবে। এ জন্য রাষ্ট্রের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চাই, তবে এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়। বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার মাত্র তিন মাসে জঞ্জাল দূর করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছিলেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭২ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত তারা জনসমর্থন হীনভাবে ক্ষমতায় ছিল, যার ফলে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা শুরু করেছিল। এবারও তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছিল। কিন্তু দেশের সাধারণ ছাত্র–জনতার প্রতিরোধেরমুখে তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

‘মানুষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়ে মুখ খুলে কথা বলতে পারত না। সাংবাদিকেরা ও গণমাধ্যমে এই আইনে দমন করা হতো। এখন মানুষ বাক্‌স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাতিল করে দেব।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র–জনতার এই বিপ্লবে সিলেট সাংবাদিক আবু তুরাবসহ অসংখ্য মানুষ পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেছেন। আমরা তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

‘২০১২ সাল থেকে আমরা এই সংগ্রাম করছি। সেই থেকে আমাদের প্রায় প্রায় ৭০০ জন গুম করা হয়েছে, প্রায় ২ হাজার নেতা–কর্মী শহীদ হয়েছেন। প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে, এসব মামলায় বিএনপির ৬০ লাখ নেতা–কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হয়েছেন, তিনি কখনো মাথানত করেননি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা আইনিভাবে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি। আমরা এম ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া সকলকে নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন, জাতিসংঘের একটি তদন্ত দলও এসেছে। আমরা এখন আশাবাদী সঠিক তথ্য পাব। সরকারও সুনির্দিষ্টভাবে এখনো কিছু বলেনি। আমরা তাদের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানতে চাই।’

এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদির লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী ও আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ্ সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১০ বছরে বাবাকে হারাল, ১৭ বছরে নিজেই না ফেরার দেশে

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি      
বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে ইয়ামিনের জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে ইয়ামিনের জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাল রাজশাহীর বাঘায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কলেজশিক্ষার্থী মোস্তাকিন আহমেদ ইয়ামিন (১৭)। আজ বৃহস্পতিবার বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

নিহত ইয়ামিনের দাদা আব্দুর রহমান এছার ইমামতিতে জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, বন্ধু-বান্ধবসহ নানা শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ অংশ নেয়। এ সময় জানাজায় দাঁড়িয়ে স্বজনদের সঙ্গে অনেককে কাঁদতে দেখা যায়।

এর আগে গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোস্তাকিন আহমেদ ইয়ামিনের মৃত্যু হয়।

বাঘা ইসলামি একাডেমি উচ্চবিদ্যালয়, কারিগরি ও কৃষি কলেজের শিক্ষার্থী ইয়ামিন পৌরসভার (জিরো পয়েন্ট) মিলিকবাঘা গ্রামের মৃত ইউসুফ বিন মুসার ছেলে এবং বিএনপি নেতা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুনের ভাতিজা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর বাঘা-আড়ানী সড়ক হয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে ফিরছিলেন ইয়ামিন। উপজেলার আমোদপুর জামে মসজিদের উত্তর বাঁকের সামনে পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক (খুলনা মেট্রো-ড, ১১-০৩৮৮) পাশ কাটিয়ে বের হওয়ার সময় ধাক্কা লেগে ছিটকে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয় ইয়ামিন।

আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল সিডিএমএ (আইসিইউসি) ভর্তি করা হয়। তিন দিন পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

জানতে চাইলে মুসার বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সাত বছর আগে ইউসুফ বিন মুসা এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে ৩৫ বছর বয়সে হৃদ্‌রোগে মারা যান। তখন ইয়ামিনের বয়স হয়েছিল ১০ বছর।

দুর্ঘটনার বিষয়ে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান জানান, ঘটনার পর ট্রাক রেখে চালক-হেলপার পালিয়ে যান। পরে ট্রাকটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আইনিপ্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টুঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত
মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় মেহেদী হাসান নামের এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার গিমাডাঙ্গা পৌর এলাকার বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মেহেদীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর।

স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানান, মেহেদী হাসান দৈনিক কালবেলা টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল নবধারার সম্পাদক ও প্রকাশক। এ ছাড়া তিনি এর আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন।

ওসি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের পাকুড়তিয়া বাজারে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ মশাল মিছিল বের করা হয়। এ সময় নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা, লোহার রড দিয়ে দোকানপাট ভাঙচুর ও রাস্তার পাশে থাকা পরিত্যক্ত টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই ঘটনায় মেহেদী হাসানের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন বাদী হয়ে ৫১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির কর্মী হাকিম হত্যার পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪, নেপথ্যে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত
আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার মদুনাঘাট সেতু এলাকায় রাউজানের ব্যবসায়ী ও বিএনপির কর্মী আবদুল হাকিম হত্যা (৬৫) মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মদুনাঘাটে গত ৭ অক্টোবর আবদুল হাকিম হত্যা মামলার সূত্র উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ। যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সময় চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে ল্যাংড়া খোকন, মো. মারুফ, সাকলাইন হোসেন ও জিয়াউর রহমান। সাকলাইন হোসেনকে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৩১ অক্টোবর রাউজান থেকে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে ল্যাংড়া খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হাকিম হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে ২ নভেম্বর রাউজানের চৌধুরীহাট থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. মারুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেন, যা সাকলাইন হোসেনের হেফাজতে ছিল। ৪ নভেম্বর রাউজানের নোয়াপাড়ায় সাকলাইন হোসেনের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এর আগে হত্যার এ ঘটনায় এর মধ্যে জিয়াউর রহমানসহ চার আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১০-১২ জন আসামির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর বিকেলে ব্যবসায়ী হাকিম নিজের গাড়িতে করে চট্টগ্রাম শহরে ফিরছিলেন। মদুনাঘাট সেতুর পশ্চিম পাশে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা অস্ত্রধারীরা তাঁর গাড়ির সামনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও হাটহাজারী থানা যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে। হাকিম পাঁচখাইন এলাকার বাসিন্দা এবং রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মো. রাসেল বলেন, রাউজান এলাকার বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এই হত্যাকাণ্ডসহ জেলার অন্যান্য অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি নোয়াপাড়া, চৌধুরীহাট ও আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট, টহল ও রাত্রিকালীন তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান শুরু, অবরুদ্ধ কর্মকর্তারা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুরে শতাধিক অবৈধ ইটভাটায় অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রামগতি উপজেলার চর আফজাল এলাকা থেকে শুরু হয় এই অভিযান। দুপুর পর্যন্ত আমানত ইটভাটা, জেসমিন সারোয়ার, আবদুল ওয়াহাবসহ তিনটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

পাঁচটি ভেকু মেশিনের সাহায্যে ভাটার চুল্লি, চিমনি ও কাঁচা ইট বিনষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এরপর অন্য ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার সময় চৌধুরী বাজার এলাকায় রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা।

এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকেন তাঁরা।

অভিযানে অংশ নেন রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক জমির উদ্দিন, ঢাকা কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান, লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান, রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেনসহ পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।

রামগতি থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লক্ষ্মীপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন, রামগতি ও কমলনগরে ৫১টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৪৯টি ভাটা অবৈধ। জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এসব ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। টানা সাত দিন অভিযান চলবে। অবৈধ ভাটা ভেঙে দেওয়ার পরেও যাতে চালু করতে না পারে, সে জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি জেলায় শতাধিক ইটভাটার কোনো কাগজপত্র নেই। এগুলো পুরোপুরি অবৈধ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, শুধু লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ৫১টি ইটভাটার মধ্যে ৪৯টি ইটভাটার কোনো কাগজপত্র নেই। এগুলো পুরোপুরি অবৈধ। তাই এসব অবৈধ ইটভাটা কোনোভাবে চলতে দেওয়া হবে না। এগুলো সব বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনো শক্তির কাছে মাথা নত করা হবে না।

ইউএনও মো. আমজাদ হোসেন বলেন, সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে অবৈধ তিনটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুপুরের পর অন্য ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার সময় শ্রমিকেরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত