সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
‘আগে নদীতে জাল ফেললেই মাছ উঠত। এখন দিনের পর দিন কষ্ট করেও ঘরে ফিরতে হয় খালি হাতে।’ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জেলে শামসুল হক (৬৫) বলছিলেন কথাগুলো। জানালেন, জীবনের প্রায় অর্ধেকটা সময় পার করেছেন মাছ ধরে। এখন পেট চালানোই দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলায় একসময় প্রচুর দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। এখন বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে ৯১ প্রজাতির দেশীয় মাছ। জেলার মৎস্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশীয় প্রজাতির ২৬০টি মাছের মধ্যে—৯টি অতি বিপন্ন, ৩০টি বিপন্ন, ২৫টি শঙ্কাগ্রস্ত, ২৭টি প্রায় হুমকির মুখে। কেবল ১২২ প্রজাতির মাছ এখন শঙ্কামুক্ত।
জেলার মৎস্য বিভাগ বলছে, এই ধ্বংসের পেছনে মূলত জলবায়ু পরিবর্তন, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, খরা, চায়না দুয়ারির অবাধ ব্যবহার ও অপরিকল্পিত কৃষিকাজে ব্যবহৃত কীটনাশক দায়ী। বিশেষ করে, চায়না দুয়ারি এতটাই সুক্ষ্ম যে, ছোট পোনা মাছও আটকায়, যার ফলে মাছের প্রজনন হারও মারাত্মকভাবে কমে গেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরাফাত উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশীয় মাছ সাধারণত এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ডিম ছাড়ে। এই সময়ে যদি পর্যাপ্ত ও নিয়মিত বৃষ্টি না হয়, তাহলে তারা ডিম ছাড়তে পারে না। আবার, অনেক খাল-বিল এখন শুকিয়ে যাচ্ছে, নদীতে চর পড়ছে। এতে মাছের প্রাকৃতিক প্রজননব্যবস্থাই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জলাশয়গুলোতে রাবার ড্যাম ও স্লুইসগেট তৈরি করে সারা বছর পানি ধরে রাখা এবং সেখানে দেশীয় পোনার অভয়াশ্রম তৈরি করা গেলে এই মাছগুলো রক্ষা করা সম্ভব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৯ হাজার ৬২৯ জন। এর অনেকেই এখন মাছ ধরার কাজ ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। কেউ গার্মেন্টসে পাড়ি জমাচ্ছেন, কেউবা দিনমজুরের কাজ করছেন।
সদর উপজেলার আকবর আলী (৪৮) বলেন, ‘আগে চার ভাই মিলে নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাতাম। এখন সবাই আলাদা আলাদা পেশায়। আমি এখন রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করি। মাছ ধরি শুধু শখে, জীবিকার জন্য না।’
হরিপুর উপজেলার জেলে রুহুল আমিন বলেন, ‘জাল আছে, নৌকা আছে, নদীও আছে, কিন্তু মাছ নেই। আগে যেখানে দিনে ৪-৫ কেজি মাছ ধরতাম, এখন তা পেতেও চার দিন লাগে। সংসারে তিন মেয়ে, বউ। চাল-ডাল জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হয়।’
মৎস্য বিভাগ জানায়, জেলায় ৯টি সরকারিভাবে ঘোষিত মৎস্য অভয়াশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে দেশীয় মাছের পোনা ছাড়া ও সংরক্ষণে কাজ হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত বাজেট, নজরদারি ও সচেতনতা ছাড়া এই কাজ স্থায়িত্ব পাবে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
জেলার মোট মাছের চাহিদা ৩৬ হাজার ৩৯১ দশমিক ৬৬ টন মাছ। তবে উৎপাদন হচ্ছে ৩৭ হাজার ৫০৫ দশমিক ২০ টন। পরিমাণগত ঘাটতি নেই, তবু দেশীয় মাছের অংশ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। ঠাকুরগাঁওয়ে নদী আছে ২৬টি, খাল-বিল ১০টি।
ঠাকুরগাঁও পরিবেশবিষয়ক সংগঠন সৃজনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দেশীয় মাছ আমাদের সংস্কৃতি ও স্বাস্থ্যের অংশ। এগুলো হারিয়ে গেলে শুধু পুষ্টির ঘাটতি নয়, হারাবে আমাদের জলজ পরিচিতির একটি বড় অংশ।’
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মনোতোষ কুমার দে বলেন, পরিকল্পিত নদী ব্যবস্থাপনা, চায়না জাল নিষিদ্ধকরণ, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান ও দেশীয় মাছের পোনা সংরক্ষণের মাধ্যমে বিলুপ্তির হাত থেকে অন্তত কিছু প্রজাতিকে রক্ষা করা সম্ভব।
‘আগে নদীতে জাল ফেললেই মাছ উঠত। এখন দিনের পর দিন কষ্ট করেও ঘরে ফিরতে হয় খালি হাতে।’ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জেলে শামসুল হক (৬৫) বলছিলেন কথাগুলো। জানালেন, জীবনের প্রায় অর্ধেকটা সময় পার করেছেন মাছ ধরে। এখন পেট চালানোই দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলায় একসময় প্রচুর দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। এখন বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে ৯১ প্রজাতির দেশীয় মাছ। জেলার মৎস্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশীয় প্রজাতির ২৬০টি মাছের মধ্যে—৯টি অতি বিপন্ন, ৩০টি বিপন্ন, ২৫টি শঙ্কাগ্রস্ত, ২৭টি প্রায় হুমকির মুখে। কেবল ১২২ প্রজাতির মাছ এখন শঙ্কামুক্ত।
জেলার মৎস্য বিভাগ বলছে, এই ধ্বংসের পেছনে মূলত জলবায়ু পরিবর্তন, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, খরা, চায়না দুয়ারির অবাধ ব্যবহার ও অপরিকল্পিত কৃষিকাজে ব্যবহৃত কীটনাশক দায়ী। বিশেষ করে, চায়না দুয়ারি এতটাই সুক্ষ্ম যে, ছোট পোনা মাছও আটকায়, যার ফলে মাছের প্রজনন হারও মারাত্মকভাবে কমে গেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরাফাত উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশীয় মাছ সাধারণত এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ডিম ছাড়ে। এই সময়ে যদি পর্যাপ্ত ও নিয়মিত বৃষ্টি না হয়, তাহলে তারা ডিম ছাড়তে পারে না। আবার, অনেক খাল-বিল এখন শুকিয়ে যাচ্ছে, নদীতে চর পড়ছে। এতে মাছের প্রাকৃতিক প্রজননব্যবস্থাই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জলাশয়গুলোতে রাবার ড্যাম ও স্লুইসগেট তৈরি করে সারা বছর পানি ধরে রাখা এবং সেখানে দেশীয় পোনার অভয়াশ্রম তৈরি করা গেলে এই মাছগুলো রক্ষা করা সম্ভব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৯ হাজার ৬২৯ জন। এর অনেকেই এখন মাছ ধরার কাজ ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। কেউ গার্মেন্টসে পাড়ি জমাচ্ছেন, কেউবা দিনমজুরের কাজ করছেন।
সদর উপজেলার আকবর আলী (৪৮) বলেন, ‘আগে চার ভাই মিলে নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাতাম। এখন সবাই আলাদা আলাদা পেশায়। আমি এখন রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করি। মাছ ধরি শুধু শখে, জীবিকার জন্য না।’
হরিপুর উপজেলার জেলে রুহুল আমিন বলেন, ‘জাল আছে, নৌকা আছে, নদীও আছে, কিন্তু মাছ নেই। আগে যেখানে দিনে ৪-৫ কেজি মাছ ধরতাম, এখন তা পেতেও চার দিন লাগে। সংসারে তিন মেয়ে, বউ। চাল-ডাল জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হয়।’
মৎস্য বিভাগ জানায়, জেলায় ৯টি সরকারিভাবে ঘোষিত মৎস্য অভয়াশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে দেশীয় মাছের পোনা ছাড়া ও সংরক্ষণে কাজ হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত বাজেট, নজরদারি ও সচেতনতা ছাড়া এই কাজ স্থায়িত্ব পাবে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
জেলার মোট মাছের চাহিদা ৩৬ হাজার ৩৯১ দশমিক ৬৬ টন মাছ। তবে উৎপাদন হচ্ছে ৩৭ হাজার ৫০৫ দশমিক ২০ টন। পরিমাণগত ঘাটতি নেই, তবু দেশীয় মাছের অংশ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। ঠাকুরগাঁওয়ে নদী আছে ২৬টি, খাল-বিল ১০টি।
ঠাকুরগাঁও পরিবেশবিষয়ক সংগঠন সৃজনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দেশীয় মাছ আমাদের সংস্কৃতি ও স্বাস্থ্যের অংশ। এগুলো হারিয়ে গেলে শুধু পুষ্টির ঘাটতি নয়, হারাবে আমাদের জলজ পরিচিতির একটি বড় অংশ।’
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মনোতোষ কুমার দে বলেন, পরিকল্পিত নদী ব্যবস্থাপনা, চায়না জাল নিষিদ্ধকরণ, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান ও দেশীয় মাছের পোনা সংরক্ষণের মাধ্যমে বিলুপ্তির হাত থেকে অন্তত কিছু প্রজাতিকে রক্ষা করা সম্ভব।
নাটোর চিনিকলে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ঘটেছে। রাতভর কারখানার নিরাপত্তা প্রহরীদের হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ লুট করেছে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি ডাকাতদল। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে ভোর পর্যন্ত এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। চিনিকলের নিরাপত্তা প্রহরীদের বরাত দিয়ে নাটোর সদর থানার ভারপ্র
৬ মিনিট আগেগাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মেরেছে এক স্বামী। স্ত্রীকে ঘরের ভেতর রেখে বাইরে তালাবদ্ধ করে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় ঘাতক স্বামী। স্থানীয়রা বসতবাড়িতে আগুন দেখতে পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। ততক্ষণে পুড়ে অঙ্গার গার্মেন্টস কর্মী গৃহবধূর শরীর। গতকাল শনিবার দিবাগ
৩৬ মিনিট আগেপিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় মোসা. আইমিন (২৮) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বিন্না গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত আইমিন একই গ্রামের ফাইজুল হক ও আখতারুননাহারের মেয়ে। তিনি মো. রাজু মাঝির স্ত্রী।
১ ঘণ্টা আগেপ্রতিষ্ঠার পরের বছর থেকে (২০২২ সাল) একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়। তবে তা নিজস্ব ক্যাম্পাসে নয়, কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ১০ তলা ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায়। কথা ছিল নির্দিষ্ট সময় পর নিজস্ব ক্যাম্পাসে চলে যাবে, কিন্তু তা হয়নি।
৭ ঘণ্টা আগে