Ajker Patrika

শোষণের বদলে ৫০ বছরে আমরা কী পেলাম: মির্জা ফখরুল 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৩, ০৯: ৪৩
শোষণের বদলে ৫০ বছরে আমরা কী পেলাম: মির্জা ফখরুল 

হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘১৯৭১ সালে যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী একসঙ্গে অংশ নিয়েছিলাম। সাম্যের বাংলাদেশ, ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ ও মানবিক বাংলাদেশ কায়েমে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু পরিশেষে আমরা কী পেলাম! শোষণের বদলে ৫০ বছরে আমরা কী পেলাম?’ 

আজ সোমবার বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ অভিযান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। 

ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্র এসেছে সমাজে বন্ধন তৈরি করতে, অশান্তি সৃষ্টি করতে নয়। তবে আমাদের দেশ তথা ভারত উপমহাদেশের লোকেরাই ধর্ম নিয়ে খুব বাড়াবাড়ি করে। বিনা কারণেই অশান্তি সৃষ্টি করে। এটা রাজনীতিবিদদের দুষ্টামি!’

মনোরঞ্জন সিংয়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব এস এন তরুণ দে, যুগ্ম মহাসচিব মিল্টন বৈদ্য, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান প্রমুখ। 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সাধারণ আয়ের মানুষের আজ নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। ধনীরা আজ ধনী হচ্ছে। গরিবেরা আরও গরিব।’

এ সময় ফখরুল হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টে যোগদানকারীদের জিজ্ঞেস করেন, ‘কী কারণে আপনারা এই সংগঠনে যোগ দেবেন?’ তখন রাণীশংকৈল উপজেলার কার্তিক চন্দ্র রায় ও সাবিত্রী রাণী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। তা থেকে মুক্তির জন্য এই সংগঠনে যোগদান করছেন।’

 ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ অভিযান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকাহিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সদস্য সংগ্রহ অভিযান অনুষ্ঠানের আগে তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে পৈতৃক বাসভবন চত্বরে আয়োজিত জেলা বিএনপির বর্ধিত সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না।’

মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘১৯৯১ সালে বলেন আর ২০০১ বলেন, বিএনপি জনগণের ভোটে, ভালোবাসায়, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা যেসব কথা বলেন, সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। তাঁরা কী করেছেন সেটা বিএনপি ভালো করে জানে। কোথা থেকে কত টাকা নিচ্ছেন, কারা কত টাকা পাচ্ছে। কীভাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঘুষ দিয়ে, সমস্ত সংস্থাগুলোকে খাম দিয়ে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে, সেটাও আমরা জানি।’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর যে সংস্কৃতি, পরস্পরের প্রতি অনাস্থা, বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব–এ অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারই সমাধানের একমাত্র পথ, যার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংকট কাটানো সম্ভব। আওয়ামী লীগ দুরভিসন্ধিমূলক, অসৎ উদ্দেশ্যে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থার কথা বলছে। সেই ’৭৫ সালে আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করেছিল। দলটি আবারও সেই পথে হাঁটছে।’

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ ঘটনার কারণে দেশের ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়েছে, পাশাপাশি সরকারের ভাবমূর্তি অনেক বেশি ক্ষুণ্ন হয়েছে। পঞ্চগড়ের ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে পূর্বপরিকল্পিতভাবে। দেশে এখন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই আন্দোলন যখন পুরোপুরিভাবে বিস্ফোরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সরকার পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটিয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায়। বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চায়। তা না হলে ঘটনার পরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কীভাবে ওটা বলে ফেললেন?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত