Ajker Patrika

শেখ হাসিনা সেতু রক্ষা বাঁধের ৪০ মিটার ধস, ভাঙনের ঝুঁকিতে সড়ক

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৪, ১৯: ১৮
শেখ হাসিনা সেতু রক্ষা বাঁধের ৪০ মিটার ধস, ভাঙনের ঝুঁকিতে সড়ক

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রংপুরের গঙ্গাচড়া তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত গঙ্গাচড়া মহিপুর শেখ হাসিনা সেতুর পশ্চিম পাশের সেতু রক্ষা বাঁধ ধসে গেছে। ৯০০ মিটার বাঁধের প্রায় ৪০ মিটার জায়গার ব্লক ধসে গিয়ে স্থানটিতে প্রায় ৫০ ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে লালমনিরহাটের কাকিনা ও রংপুর অঞ্চলের যোগাযোগ সড়কসহ বাঁধের ধারে বসবাস করা তিন গ্রামের প্রায় ১৫০০ পরিবার। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু রক্ষা বাঁধটি গত বারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ। তাই এবারে নদীতে পানি আসা মাত্রই সেতু রক্ষা বাঁধের প্রায় ৪০ মিটার জায়গার ব্লক ধসে স্থানটিতে প্রায় ৫০ ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে তিন গ্রামের ১ হাজার ৫০০ পরিবারসহ ক্ষতি হতে পারে সেতুটিও। 

আজ বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীর পানি কমে গেলেও তীব্র স্রোত সরাসরি এসে আঘাত হানছে বাঁধে গায়ে। এতে নিচের অংশের মাটি ভেসে গিয়ে ধসে পরছে ব্লকগুলো। প্রতিনিয়ত একটু একটু করে নিচে নেমে যাচ্ছে বাকি ব্লকগুলোও। বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ে সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন এলজিইডির রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী। তবে এটি সংস্কার কাজ কবে শুরু করবে সে বিষয় তিনি কিছু বলেননি। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের সঙ্গে লালমনিরহাটের যোগাযোগ সহজ করতে ২০১৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুটি, যা তিস্তার ওপর দ্বিতীয় সেতু। 

তিস্তার তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা মোন্নাফ মিয়ার বলেন, ‘এর আগে গত বছর যখন বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আমরা এখানকার স্থানীয় প্রতিনিধিদের বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এবার যেভাবে পানি এসে বাঁধাটিতে সরাসরি আঘাত হানতেছে তাতে করে উজানে আর একটু বৃষ্টি হলে এই বাঁধ ভেঙে যাবে।’ 

তিনি আরও বলেন, বাঁধ ভেঙে গেলে পানি এসে সরাসরি আঘাত হানবে লালমনিরহাট-রংপুর সড়কে। এতে সড়কটি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা শতভাগ। আর যদি সড়কটি ভেঙে যায় তাহলে লালমনিরহাটের প্রায় ৩০ লাখ মানুষের সঙ্গে রংপুর শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে এবং বাঁধের পাশে থাকা শংকরদাহসহ তিনটি গ্রামের প্রায় ১ হাজার ৫০০ পরিবার ভাঙন হুমকিতে পরবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেতু ও সড়কটি রক্ষার জন্য দ্রুত বাঁধ সংস্কারের কাজ করতে হবে। 

এ সময় মহিপুর এলাকার আর এক বাসিন্দা মনু মিয়া বলেন, ‘আমরা বাঁধ ধসে যাওয়ার বিষয় গতবারই বলেছিলাম, কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা গায়ে লাগায়নি। আজকে রংপুর থেকে ইঞ্জিনিয়ার এসে দেখে বলে গেল তাদের নাকি আরও কেউ দেখতে আসবে তারপর ব্যবস্থা নেবে। তত দিনে এখানকার লোকজন-রাস্তাঘাট ক্ষতি হয়ে যাবে।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শেখ হাসিনা সেতুটির পশ্চিম অংশের বাঁধটি পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনও নতুন করে শুরু হয়েছে। আমরা ভাঙনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি তারা দ্রুত ধসে যাওয়া রোধে কাজ শুরু করবে।’ 

এ বিষয় রংপুর বিভাগের এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী লুৎফর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এখানকার সেতু রক্ষা বাঁধ ধসে যাওয়ার বিষয়টি গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকৌশলীকে বলেছি রংপুর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিতভাবে জানাতে, তারপর সেটা ঢাকায় পাঠাবে। সেখান থেকে এক্সপার্টরা এসে ডিজাইন করে কাজ করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফকিরহাটে বাসের চাপায় পথচারী শিশু নিহত

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাটে রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী বাসের চাপায় মো. সামিরুল ইসলাম (১১) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। খুলনা-মোংলা মহাসড়কের কাটাখালী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সামিরুল ইসলাম কুমিল্লার হোমনা এলাকার মো. সাইফুল ইসলামের ছেলে। সে তার বাবার সঙ্গে কাটাখালীতে একটি ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপে কাজ করত। সেই সুবাদে তারা কাটাখালী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, রোববার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সামিরুল ইসলাম বাসা থেকে কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। কাটাখালী এলাকায় এসে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী সেতু পরিবহন নামের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উত্তম পাল জানান, শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। 

কাটাখালী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাফর আহম্মেদ বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক ও সহযোগী পালিয়ে গেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাগরে বিকল ট্রলার নিয়ে ভাসছিলেন ১৩ জেলে, উদ্ধার করল নৌবাহিনী

কক্সবাজার প্রতিনিধি
উদ্ধার করা ১৩ জেলে। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার করা ১৩ জেলে। ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলে বিকল হয়ে ভাসতে থাকা একটি ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী। আজ রোববার সকালে নৌবাহিনীর এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল শনিবার বিকেলে বঙ্গোপসাগরে টহলের সময় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা শহীদ মহিবুল্লাহ’ একটি মাছ ধরার ট্রলার ভাসতে দেখে উদ্ধারে নামে। কুতুবদিয়া দ্বীপের লাইট হাউস থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরে গভীর সমুদ্রে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়। ট্রলারে থাকা জেলেরা নৌবাহিনীর জাহাজ দেখতে পেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আলো ও হাত দিয়ে সংকেত প্রদর্শন করেন। এ সময় নৌবাহিনীর জাহাজটি সংকেত দেখে বিপদগ্রস্ত জেলে ও ট্রলারের কাছে ছুটে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে নৌবাহিনীর সদস্যরা ট্রলারসহ জেলেদের উদ্ধার করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উদ্ধারের পরপরই জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি দেওয়া হয়। পরে জেলেদের ও ট্রলারটি নিরাপদে তীরে এনে পরিবার ও মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জেলেরা জানিয়েছেন, ৬ নভেম্বর থেকে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে মাঝসমুদ্রে ভাসতে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাটোরে পদ্মার চরে বিশেষ অভিযানে আটক ২০, বিপুল দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

নাটোর প্রতিনিধি 
আটক ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চল—চর জাজিরা, চর লালপুর এবং চর দিয়ার বাহাদুরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

শনিবার দিবাগত রাত থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ, র‍্যাব, ডিবি এবং এপিবিএনের চার শতাধিক সদস্য যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেন।

আটক ২০ জনের মধ্যে দুজন হ্যাকার, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং ছয়টি ওয়ারেন্টের আসামি রয়েছেন। এ ছাড়াও আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হত্যা মামলার আসামি এবং দুজন চিহ্নিত মাদক কারবারি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানান, চর দিয়ার বাহাদুরপুরের বালুমহালের ছাউনি থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র (দেশীয় তৈরি ওয়ান-শুটারগান ও একটি রিভলবার) উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়াও উদ্ধার হওয়া দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ছয়টি বড় ড্যাগার, ২২টি হাঁসুয়া, চারটি চাকু ও ছোরা, দুটি চাপাতি।

উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

অভিযানস্থল থেকে একটি টিউবওয়েল এবং অনেকগুলো বালু বিক্রির রসিদ জব্দ করা হয়।

নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, লালপুর উপজেলার চরাঞ্চলে এবং পদ্মা নদীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশের এই বিশেষ অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎বিআরটি প্রকল্পের সেতুর নিচে যুবকের মরদেহ

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের টঙ্গীতে উড়ালসেতুর নিচে অজ্ঞাতনামা (৩০) এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ‎রোববার সকাল ৯টার দিকে বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালসেতুর টঙ্গী স্টেশন রোড অংশের নিচে মরদেহটির সন্ধান মেলে।

‎থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন।

‎স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রোববার সকালে স্থানীয় লোকজন বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসেতুর ৬৮ নম্বর পিলারের পাশে ওই যুবকের মরদেহটি দেখতে পায়। পুলিশকে খবর পাঠালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এই যুবককে দুর্বৃত্তরা অন্য কোথাও হত্যা করে মরদেহটি সেতুর নিচে ফেলে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

‎টঙ্গী পশ্চিম থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদের ভাষ্য, যুবকের পরিচয় শনাক্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যদের খবর পাঠানো হয়েছে। আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত