শাহীন রহমান, পাবনা
পাবনায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউত উৎসবে মাছ শিকারে মেতেছিলেন শৌখিন মৎস্য শিকারিরা। পলো, জালসহ বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে দল বেঁধে বিলে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছিলেন বিভিন্ন বয়সী হাজারো মানুষ। কিন্তু এ বছর কাঙ্ক্ষিত মাছের দেখা না পেয়ে হতাশ মাছ শিকারিরা। তাদের অভিযোগ, প্রভাবশালীরা চায়না জাল আর গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে মাছ ধরে নেওয়ায় বছরে বছরে কমছে মাছের উৎপাদন। ফিকে হয়ে আসছে বাউত উৎসবের রং।
এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অবৈধ জালের বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি বাউত উৎসবে মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্যের যেন ক্ষতি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেন শৌখিন মৎস্য শিকারিদের।
ভাঙ্গুরা উপজেলার রুহুল বিলে বাউত উৎসবে এবারের পরিস্থিতি দেখতে গতকাল শনিবার ভোর ৬টায় বিলে হাজির হন এই প্রতিবেদক।
পাবনা-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কোল ঘেঁষে পাটুলিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা। সেই মাদ্রাসাসংলগ্ন চিকন পাকা রাস্তা ধরে কিছু দূর এগোলেই বাঁয়ে কাঁচা রাস্তা নেমে গেছে রহুল বিলে। দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন যানবাহনে আসতে শুরু করেছে মানুষ। আকাশ মেঘলা থাকায় তখনো সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। বিলের মুখে ঢুকতেই খাবারের দোকান সাজিয়ে বসেছেন কয়েকজন। সেখানে অল্প দামে পাওয়া গেল খিচুড়ি, রুটি, ডিম ও ডাল। অনেকে সেরে নিচ্ছেন সকালের নাশতা।
হেমন্তে সকালে মেঘ সরিয়ে ঝলমলে সূর্যের মুখ দেখার সঙ্গে সঙ্গে বিলপাড়ে হাজির নানা বয়সী হাজারো মানুষ। সবার হাতে পলো, বিভিন্ন রকম জালসহ মাছ ধরার নানান উপকরণ। বিলের ময়লা-আবর্জনায় ভরা পানি থেকে ত্বক রক্ষায় অনেকে শরীরে সরিষার তেল মালিশ করে নিচ্ছেন। কেউ আবার সকালের মিষ্টি রোদে একটু আরাম করে শরীর গরম করে নিচ্ছেন।
একপর্যায়ে হঠাৎ হইহই করে বিলের পানিতে নেমে পড়েন বাউতেরা। মৎস্য শিকারিদের আঞ্চলিক ভাষায় বাউত বলা হয়। তারপর একসঙ্গে বিলে নেমে লোকজ রীতিতে মনের আনন্দে চলে মাছ শিকার। দল বেঁধে মাছ শিকারের এই আয়োজনের নামই মূলত বাউত উৎসব—এমনটাই জানালেন মাছ শিকারে আসা ফরিদপুর উপজেলার চিথুলিয়া গ্রামের প্রবীণ মাছ শিকারি আব্দুস সালাম।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, চলনবিল অঞ্চলে এমন উৎসব চলছে প্রায় শত বছর ধরে। পাবনার রুহুল বিল, ডিকশির বিল, রামের বিলসহ বিভিন্ন বিলে চলে এই বাউত উৎসব। নভেম্বর মাসের শেষে অথবা ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে শুরু হয় মাসব্যাপী মাছ শিকারের এই উৎসব। নির্ভর করে বিলে পানি কতটুকু থাকে তার ওপর। প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে মাছ শিকার।
মাছ না পেয়ে অনেকে বিল থেকে উঠে আসেন। তখন কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থেকে আসা মৎস্যশিকারি আব্দুল মোমিন (৪৫) বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই এখানে বাউত উৎসবে আসি। কমবেশি ভালো মাছ পাই। কিন্তু এবারের অবস্থা খুব খারাপ। মাছ নাই বললেই চলে।’
চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা গ্রামে মৎস্য শিকারি আকবর আলী (৬৫) বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর ধরে মাছ ধরি। এহেনে প্রত্যেক বছরই আসি। মাছ পাওয়া না-পাওয়া ওডা সমস্যা লায়। সবাই যে একসাথে আনন্দ করি, মাছ ধরি এটাই বড় বিষয়। তবে মাছ পালি মনের ভিতর আনন্দ বেশি ঠ্যাহে।’
আরেক মাছ শিকারি নাটোর থেকে আসা ওয়াসিম উদ্দিন (৪০) বলেন, ‘আমরা খুব হতাশ, বিলে আগের মতো মাছ নাই। প্রভাবশালীরা বিল দখলে রেখে চায়না জাল ও গ্যাস ট্যাবলেট ব্যবহার করে মাছ ধরে নেয়। পানি পচে মাছ, কীটপতঙ্গ সব মরে গেছে। প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো ও বিলগুলোতে বেশি পরিমাণে মাছ ছাড়ার দাবি জানান তিনি।’
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাউত উৎসবের নামে মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্যের চরম ক্ষতি হয়। এদিকে শৌখিন মৎস্য শিকারিদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। আর মাছের উৎপাদন বাড়াতে জলা মৎস্য বিভাগ প্রতিবছরই বিলগুলোতে মাছের পোনা অবমুক্তকরণসহ নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। গ্যাস ট্যাবলেট বা অবৈধ জাল ব্যবহারের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাবনায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউত উৎসবে মাছ শিকারে মেতেছিলেন শৌখিন মৎস্য শিকারিরা। পলো, জালসহ বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে দল বেঁধে বিলে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছিলেন বিভিন্ন বয়সী হাজারো মানুষ। কিন্তু এ বছর কাঙ্ক্ষিত মাছের দেখা না পেয়ে হতাশ মাছ শিকারিরা। তাদের অভিযোগ, প্রভাবশালীরা চায়না জাল আর গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে মাছ ধরে নেওয়ায় বছরে বছরে কমছে মাছের উৎপাদন। ফিকে হয়ে আসছে বাউত উৎসবের রং।
এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অবৈধ জালের বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি বাউত উৎসবে মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্যের যেন ক্ষতি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেন শৌখিন মৎস্য শিকারিদের।
ভাঙ্গুরা উপজেলার রুহুল বিলে বাউত উৎসবে এবারের পরিস্থিতি দেখতে গতকাল শনিবার ভোর ৬টায় বিলে হাজির হন এই প্রতিবেদক।
পাবনা-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কোল ঘেঁষে পাটুলিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা। সেই মাদ্রাসাসংলগ্ন চিকন পাকা রাস্তা ধরে কিছু দূর এগোলেই বাঁয়ে কাঁচা রাস্তা নেমে গেছে রহুল বিলে। দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন যানবাহনে আসতে শুরু করেছে মানুষ। আকাশ মেঘলা থাকায় তখনো সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। বিলের মুখে ঢুকতেই খাবারের দোকান সাজিয়ে বসেছেন কয়েকজন। সেখানে অল্প দামে পাওয়া গেল খিচুড়ি, রুটি, ডিম ও ডাল। অনেকে সেরে নিচ্ছেন সকালের নাশতা।
হেমন্তে সকালে মেঘ সরিয়ে ঝলমলে সূর্যের মুখ দেখার সঙ্গে সঙ্গে বিলপাড়ে হাজির নানা বয়সী হাজারো মানুষ। সবার হাতে পলো, বিভিন্ন রকম জালসহ মাছ ধরার নানান উপকরণ। বিলের ময়লা-আবর্জনায় ভরা পানি থেকে ত্বক রক্ষায় অনেকে শরীরে সরিষার তেল মালিশ করে নিচ্ছেন। কেউ আবার সকালের মিষ্টি রোদে একটু আরাম করে শরীর গরম করে নিচ্ছেন।
একপর্যায়ে হঠাৎ হইহই করে বিলের পানিতে নেমে পড়েন বাউতেরা। মৎস্য শিকারিদের আঞ্চলিক ভাষায় বাউত বলা হয়। তারপর একসঙ্গে বিলে নেমে লোকজ রীতিতে মনের আনন্দে চলে মাছ শিকার। দল বেঁধে মাছ শিকারের এই আয়োজনের নামই মূলত বাউত উৎসব—এমনটাই জানালেন মাছ শিকারে আসা ফরিদপুর উপজেলার চিথুলিয়া গ্রামের প্রবীণ মাছ শিকারি আব্দুস সালাম।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, চলনবিল অঞ্চলে এমন উৎসব চলছে প্রায় শত বছর ধরে। পাবনার রুহুল বিল, ডিকশির বিল, রামের বিলসহ বিভিন্ন বিলে চলে এই বাউত উৎসব। নভেম্বর মাসের শেষে অথবা ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে শুরু হয় মাসব্যাপী মাছ শিকারের এই উৎসব। নির্ভর করে বিলে পানি কতটুকু থাকে তার ওপর। প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে মাছ শিকার।
মাছ না পেয়ে অনেকে বিল থেকে উঠে আসেন। তখন কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থেকে আসা মৎস্যশিকারি আব্দুল মোমিন (৪৫) বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই এখানে বাউত উৎসবে আসি। কমবেশি ভালো মাছ পাই। কিন্তু এবারের অবস্থা খুব খারাপ। মাছ নাই বললেই চলে।’
চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা গ্রামে মৎস্য শিকারি আকবর আলী (৬৫) বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর ধরে মাছ ধরি। এহেনে প্রত্যেক বছরই আসি। মাছ পাওয়া না-পাওয়া ওডা সমস্যা লায়। সবাই যে একসাথে আনন্দ করি, মাছ ধরি এটাই বড় বিষয়। তবে মাছ পালি মনের ভিতর আনন্দ বেশি ঠ্যাহে।’
আরেক মাছ শিকারি নাটোর থেকে আসা ওয়াসিম উদ্দিন (৪০) বলেন, ‘আমরা খুব হতাশ, বিলে আগের মতো মাছ নাই। প্রভাবশালীরা বিল দখলে রেখে চায়না জাল ও গ্যাস ট্যাবলেট ব্যবহার করে মাছ ধরে নেয়। পানি পচে মাছ, কীটপতঙ্গ সব মরে গেছে। প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো ও বিলগুলোতে বেশি পরিমাণে মাছ ছাড়ার দাবি জানান তিনি।’
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাউত উৎসবের নামে মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্যের চরম ক্ষতি হয়। এদিকে শৌখিন মৎস্য শিকারিদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। আর মাছের উৎপাদন বাড়াতে জলা মৎস্য বিভাগ প্রতিবছরই বিলগুলোতে মাছের পোনা অবমুক্তকরণসহ নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। গ্যাস ট্যাবলেট বা অবৈধ জাল ব্যবহারের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে নোয়াখালীর আটটি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। অব্যাহত বৃষ্টি ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ডুবে যায় জেলার বিভিন্ন সড়ক, মহল্লা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জেলার ১৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেই জলাবদ্ধতা এখনো রয়ে গেছে। এক মাসের বেশি এই জলাবদ্ধতায়
১৮ মিনিট আগেসরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে যে ঠিকাদার সর্বনিম্ন দরে মালপত্র সরবরাহ করবেন, তাকেই কাজ দেওয়ার কথা। তবে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে রাজশাহী আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারে। এখানে সর্বনিম্ন নয়, যাঁরা সর্বোচ্চ দর দিয়েছেন—তাঁদেরই কাজ দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ৯২ লাখ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে।
২৩ মিনিট আগেবিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সম্প্রতি কারাগারে যেতে হয়েছে সাবেক উপাচার্য আব্দুস সাত্তারকে। তবে এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি গত পাঁচ মাসেও কাজ
২৮ মিনিট আগেউড়োজাহাজের অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে দেশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদ শাহ সাইমের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়ার মুরাদপুর গ্রামে। এই গ্রাম, উপজেলা, এমনকি পাশের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের কাছ থেকেও তাঁরা টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন ব্যবসার নামে।
১ ঘণ্টা আগে