Ajker Patrika

রাজশাহী খাদ্য অফিস: ‘আশীর্বাদপুষ্ট’ কর্মকর্তা বহাল

  • সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের এলাকার লোক খাদ্য কর্মকর্তা ওমর ফারুক।
  • সাবেক মন্ত্রীর আশীর্বাদে রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পান।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহী খাদ্য অফিস: ‘আশীর্বাদপুষ্ট’ কর্মকর্তা বহাল

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বাড়ি নওগাঁয়। আর খাদ্য কর্মকর্তা ওমর ফারুকও ওই জেলার বাসিন্দা। সাবেক মন্ত্রীর আশীর্বাদে দুই বছর আট মাস আগে রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের চেয়ারে বসেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মর্যাদার কর্মকর্তা ওমর ফারুক। আওয়ামী সরকারের পতনের পর গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী। তবে এখনো একই চেয়ারে রয়েছেন ওমর ফারুক।

শুধু তা-ই নয়, মাসদুয়েক আগে একটি পদোন্নতিও পেয়েছেন তিনি। এই পদোন্নতি পাওয়ার পর ওমর ফারুক ভারপ্রাপ্ত হিসেবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের চেয়ারে বসার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। খাদ্য বিভাগের সূত্রগুলো বলছে, সব সময় ঊর্ধ্বতন সবাইকেই তুষ্ট করতে পারেন ওমর ফারুক। তাই আড়াই বছর ‘গায়ের জোরে’ ওপরের পদে বসা ফারুক এখনো বহাল।

জানতে চাইলে সাবেক খাদ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন ওমর ফারুক। বলেন, ‘মন্ত্রীর আশীর্বাদ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। যাঁরা আশীর্বাদ নিয়ে পদ পেয়েছিলেন, তাঁরা সরকার পরিবর্তনের পর সে পদে থাকতে পারেননি। তিনি দুই আমলেই বহাল তবিয়তে রয়েছেন। কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায় এবং নিজের যোগ্যতায় নিয়োগ পেয়েছেন। এখনো নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছেন বলেই টিকে আছেন।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওমর ফারুক দুই বছর আট মাস আগে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পদে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তখন তিনি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মর্যাদার একজন কর্মকর্তা ছিলেন। তার দুই গ্রেড ওপরে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পদ। এই দুই পদ টপকে তিনি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পদটি বাগিয়ে নেন। এরই মধ্যে গত বছর জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আসাদুজ্জামান খানকে সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়।

আসাদুজ্জামান খান এই আদেশ বলে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে যোগদান করেন। তবে পরদিনই তাঁর আদেশ বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে চারজন কর্মকর্তার ওই পদোন্নতি হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে শুধু আসাদুজ্জামানের আদেশটি বাতিল করা হয়। ফলে রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে ওমর ফারুকই বহাল থাকেন। আওয়ামী সরকারের পতনের এক বছর পরও তিনি বহাল রয়েছেন।

এরই মধ্যে গত জুলাইয়ে ওমর ফারুক সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। এখন তিনি এই চেয়ারে বসার বৈধতা পেয়েছেন। তবে পদোন্নতির পর সাধারণত বদলি করা হয়; কিন্তু ওমর ফারুক পদোন্নতি পেয়েও আগের জায়গায় আছেন।

জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কোনো হাত নেই। সচিব স্যার মনে করেছেন যে, রাজশাহীর জন্য এটা করার দরকার, তিনি করেছেন।’ ওমর ফারুক দাবি করেন, রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পদটি খুবই চ্যালেঞ্জিং। এ জন্য কেউ এখানে আসতে চান না। তিনিও থাকতে চান না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাঁকে ছাড়েন না। তাই থাকতে বাধ্য হন।

সম্প্রতি জেলার দুটি খাদ্যগুদামে বিপুল পরিমাণ খাওয়ার অনুপযোগী চাল পাওয়া গেছে। নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্ত মিলারদেরই নিজ দায়িত্বে ওই খারাপ চাল পাল্টে দেওয়ার কথা এবং তাঁদের বিধি মোতাবেক শাস্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা নিজেরাই এই চাল পরিবর্তনের কাজ করছেন।

অভিযোগ রয়েছে, এ কারসাজির সঙ্গে ওমর ফারুক জড়িত রয়েছেন। এসব ঘটনার জন্য আটটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এই কমিটি যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। চাল নিয়ে কেলেংকারির পর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়াকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা মো. মাইন উদ্দিন বলেন, পরিদর্শক না পাওয়ার কারণে বাচ্চু মিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারপরও দক্ষ হলেই একজন উপপরিদর্শককে পরিদর্শকের কাজে দায়িত্ব দেওয়া হয় বলে তিনি দাবি করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক নারীকে স্ত্রী দাবি করে দুই পুরুষের টানাটানি, শেষে ৩ জনই কারাগারে

১৫ শিক্ষার্থীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ ইবির এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে

ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়েও ফখরুল–আখতাররা ভিভিআইপি সুবিধা পাননি কেন—জানাল প্রেস উইং

মার্কা শাপলাই হতে হবে, না হলে নির্বাচন কীভাবে হয় দেখে নেব: সারজিস আলম

ইসির তালিকায় ‘শাপলা’ নেই, বিকল্প প্রতীক নিতে হবে এনসিপিকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত