Ajker Patrika

রাজশাহীর দুর্গাপুর

পানির নিচে ৫০০ বিঘা জমি

  • প্রভাবশালীদের পুকুর খননে নালার মুখ বন্ধ।
  • বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও সড়কে জলাবদ্ধতা।
  • বছরে চার থেকে ছয় মাস পর্যন্ত থাকে জলাবদ্ধতা, ৭ বছর ধরে এমন হলেও মিলছে না সমাধান।
মিজান মাহী, দুর্গাপুর (রাজশাহী)  
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ১১
পুকুর খননে বন্ধ বিলের মুখ। ফলে ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুকুর খননে বন্ধ বিলের মুখ। ফলে ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ৫০০ বিঘার অধিক ফসলি জমি। তার মধ্যে অনেক জমিতে ছিল আমন ধান। এ ছাড়া বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও কাঁচা-পাকা রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অবৈধভাবে অপরিকল্পিত পুকুর খননের ফলে খালের মুখ বন্ধ হয়ে পড়ায় এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। এদিকে পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছে স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের ডাহার বিলে পুকুর খনন করে বিলের পানি নিষ্কাশনের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে দেবীপুর বিএম স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠসহ আশপাশের প্রায় ৩০০ বিঘা আমন ধানের জমি তলিয়ে গেছে। বছরের চার থেকে ছয় মাস পর্যন্ত এ জলাবদ্ধতা থাকে। ৭ বছর ধরে এমন সমস্যা চললেও মিলছে না কোনো সমাধান। এ ছাড়া পৌর এলাকার বহরমপুর, সিংগা, দেবীপুর, পারিলা, তেলিবা, কিমসত বগুড়া, শালঘরিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় আরও ২০০ থেকে ২৫০ বিঘা ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। অনেক স্থানে বসতবাড়ির রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, এলাকার প্রভাবশালীরা অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করে বিলের নালার মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কলেজ মাঠে পানি জমে থাকে। এই স্কুল ও কলেজে আড়াই শ শিক্ষার্থী রয়েছে। মাঠে জলাবদ্ধ থাকায় ঠিকমতো ক্লাস করতে পারে না শিক্ষার্থীরা। বন্ধ রয়েছে খেলাধুলাও।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, কলেজের মাঠ পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে আছে। বিঘা বিঘা কৃষিজমি পানির নিচে; যেখানে ধানসহ নানা ফসল উৎপাদিত হতো। ২০১৮ সালের পর থেকে এই মৌসুমে কোনো আবাদই করতে পারছেন না কৃষকেরা।

জানতে চাইলে দেবীপুর বিএম স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বলেন, কলেজ খুললেও মাঠজুড়ে পানি। মাঠ অতিক্রম করে ক্লাস যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। শুধু কলেজই নয়, আশপাশের ২৫০ থেকে ৩০০ বিঘা ফসলি জমি পানির

নিচে তলিয়ে আছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চরম বিপাকে রয়েছেন কৃষকেরা।

তেবিলা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সাংবাদিক বাবর মাহমুদ বলেন, ‘তিন গ্রাম মিলে একটা বড় বিল রয়েছে। ভারী বর্ষণে এখন পুরো বিল তলিয়ে আছে। সেখানে ২০০ থেকে ২৫০ বিঘা জমিতে আমন ধান হওয়ার কথা। অনেকে রোপণও করেছিলেন। কৃষকেরা পানি নামার অপেক্ষায় আছে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।’

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহারা শারমিন লাবণী বলেন, কয়েক দিনের টানা বর্ষণে অনেক জায়গায় আমনের জমিতে পানি জমেছে। পানি নেমে গেলে ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। ভারী বর্ষণে উপজেলায় কত হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে, জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই মুহূর্তে হিসাব নাই, পরে আপনাকে জানাতে পারব।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্কুল-কলেজে জলাবদ্ধতা দেখা দিলে পাঠদান বিঘ্নিত হতে পারে। এ ব্যাপারে ওই কলেজের সভাপতি ও অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া আমন ধান রক্ষায় কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতে পোশাকের অর্ডার স্থগিত করছে মার্কিন ক্রেতারা, বাংলাদেশ-ভিয়েতনামে কারখানা স্থানান্তরের পরামর্শ

মোবাইল-টাকা ছিনতাইয়ের পর দুই তরুণীকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

১১ বছর বয়সেই যৌন সম্পর্ক, ১৩-তে ছয় নারীর শয্যাসঙ্গী হন এই ব্রিটিশ রাজপুত্র

যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রক্রয় চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর ‘দমন-পীড়নে’ ২০২ শিক্ষকের উদ্বেগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত