নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
অসুখ-বিসুখে গৃহকর্মীরা এক দিন কাজে যেতে না পারলেই বেতন কেটে নেওয়া হয়। অথচ তাঁদের কোনো ছুটি নেই। তাই তাঁরা সপ্তাহে অন্তত এক দিন ছুটি চান। সেই সঙ্গে গৃহকর্তার কাছ থেকে ভালো ব্যবহারও আশা করেন তাঁরা। ‘রাজশাহী নগরীর গৃহকর্মীদের অবদান, সমস্যা ও সমাধানের উপায়’ শীর্ষক এক জনসংলাপে গৃহকর্মীরা এমন কথা বলেছেন।
আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে এই জনসংলাপের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন ও গবেষণা সংস্থা বারসিক। সংলাপের শুরুতে ‘রাজশাহী নগরীর গৃহকর্মীদের অবদান, সমস্যা ও সমাধানে নীতি গবেষণা’ শীর্ষক এক গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, নগরে ৮ থেকে ১০ হাজার গৃহকর্মী কাজ করেন।
শহরবানু বিবির এক হাত ভাঙা। থাকেন পদ্মাপারের বস্তিতে। ভাঙা হাত নিয়েই গৃহকর্মীর কাজ করেন ৭০ বছরের এই নারী। জনসংলাপে তিনি বলেন, তিনি এখন একা হয়ে পড়েছেন। তাই এলাকার এক বাড়িতে কাজ করেন। সেখানে খান, মাস শেষে এক হাজার টাকা দেওয়া হয়। কোনো কাজে ভুল-ত্রুটি হলে গৃহকর্তার ‘কড়া কথা’ তাঁকে কষ্ট দেয়। মানুষমাত্রই ভুল করে। তাই এর জন্য কড়া কথা যেন বলা না হয়, এইটুকুই প্রত্যাশা করেন তিনি।
গৃহকর্মী মুনমুন বললেন, কাজ করতে করতে একদিন তিনি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে মেঝেতেই ঘুমিয়ে যান। গৃহকর্তার স্ত্রী তখন তাঁকে পা দিয়ে লাথি দিয়ে তোলেন। সেদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন বলে পরের দিনটা ছুটি চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়নি। অসুস্থ শরীরেই তাঁকে কাজ করতে হয়েছে। কাজে না গেলে তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হতো। মুনমুন বলেন, ‘আমরাও মানুষ। আমাদেরও অসুখ-বিসুখ হয়। অন্তত একটা দিন ছুটি দরকার।’
আজেমা বেগম নামের আরেক গৃহকর্মী বলেন, ‘ওরা চাকরি করে। সপ্তাহে এক দিন ছুটি পায়। আমরা সামান্য বেতনে কাজ করি। আমরা কেন ছুটি পাব না?’ গৃহকর্মী শিলা বলেন, ‘কাজ দেওয়ার সময় বলা হয় একটা কাজ। কিন্তু কাজে গেলে কাজ হয়ে যায় সাতটা। তারপরও আমরা কাজ হারানোর ভয়ে কাজ করি। অথচ অসুখ-বিসুখে একটা দিন না এলে পরের দিন দারোয়ানকে বলে রাখে যেন আর ঢুকতে না দেয়। এটা খুব কষ্ট দেয়।’
নগর দরিদ্র অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘গৃহকর্মীরা বাড়িতে ভালোমন্দ রান্না করেন। সেই খাবার দিনের পর দিন ফ্রিজে থেকে নষ্ট হয়। তারপরও বেশির ভাগ বাড়ির মালিক একটু ভালো খাবার গৃহকর্মীকে খেতে দেন না। অসুস্থ হলে তাঁরা গৃহকর্মীর বেতন কেটে নেন। এসব ক্ষেত্রে উদার দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। অবশ্য কিছু কিছু ব্যতিক্রমও আছে। তাঁরা গৃহকর্মীদের যথেষ্ট ভালোবাসেন। তাঁকেও আপন করে নেন।’
উন্নয়নকর্মী সম্রাট রায়হান বলেন, অবহেলিত উন্নয়নকর্মীদের জীবনমানের উন্নয়ন ও অধিকার আদায়ে তাঁদেরও অ্যাসোসিয়েশন থাকা প্রয়োজন। তাঁদেরও সংঘবদ্ধ থেকে ভালো বেতন ও সাপ্তাহিক ছুটি আদায় করে নিতে হবে। পাশাপাশি গৃহকর্তারও মানসিকতার উন্নয়ন দরকার।
জনসংলাপে গৃহকর্মীদের নানা পরামর্শ দেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের রাজশাহীর সহকারী পরিচালক নীলা ইয়াসমিন, শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল আমিন, কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের সুপার ফেরদৌস রাবিয়া ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আইনুল হক। সংলাপ পরিচালনা করেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম। এর আগে বারসিকের পলিসি রিসার্স অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি অফিসার আমরীন বিনতে আজাদ গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেন।
চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত শহরে পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা যায়, রাজশাহীতে এখনো ১১ শতাংশ গৃহকর্মীর বয়স ১৫ বছরের নিচে। গৃহকর্মীদের ৪০ শতাংশই নিরক্ষর। মাসে ২ হাজার টাকার কম বেতন পায় ২৫ শতাংশ গৃহকর্মী, আর ৪ হাজার টাকার বেশি বেতন পায় মাত্র ১০ শতাংশ। গবেষণা প্রতিবেদনে শিশুশ্রম বন্ধ করা, বেতন না কেটে গৃহকর্মীদের ছুটি ও স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়েছে।
অসুখ-বিসুখে গৃহকর্মীরা এক দিন কাজে যেতে না পারলেই বেতন কেটে নেওয়া হয়। অথচ তাঁদের কোনো ছুটি নেই। তাই তাঁরা সপ্তাহে অন্তত এক দিন ছুটি চান। সেই সঙ্গে গৃহকর্তার কাছ থেকে ভালো ব্যবহারও আশা করেন তাঁরা। ‘রাজশাহী নগরীর গৃহকর্মীদের অবদান, সমস্যা ও সমাধানের উপায়’ শীর্ষক এক জনসংলাপে গৃহকর্মীরা এমন কথা বলেছেন।
আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে এই জনসংলাপের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন ও গবেষণা সংস্থা বারসিক। সংলাপের শুরুতে ‘রাজশাহী নগরীর গৃহকর্মীদের অবদান, সমস্যা ও সমাধানে নীতি গবেষণা’ শীর্ষক এক গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, নগরে ৮ থেকে ১০ হাজার গৃহকর্মী কাজ করেন।
শহরবানু বিবির এক হাত ভাঙা। থাকেন পদ্মাপারের বস্তিতে। ভাঙা হাত নিয়েই গৃহকর্মীর কাজ করেন ৭০ বছরের এই নারী। জনসংলাপে তিনি বলেন, তিনি এখন একা হয়ে পড়েছেন। তাই এলাকার এক বাড়িতে কাজ করেন। সেখানে খান, মাস শেষে এক হাজার টাকা দেওয়া হয়। কোনো কাজে ভুল-ত্রুটি হলে গৃহকর্তার ‘কড়া কথা’ তাঁকে কষ্ট দেয়। মানুষমাত্রই ভুল করে। তাই এর জন্য কড়া কথা যেন বলা না হয়, এইটুকুই প্রত্যাশা করেন তিনি।
গৃহকর্মী মুনমুন বললেন, কাজ করতে করতে একদিন তিনি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে মেঝেতেই ঘুমিয়ে যান। গৃহকর্তার স্ত্রী তখন তাঁকে পা দিয়ে লাথি দিয়ে তোলেন। সেদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন বলে পরের দিনটা ছুটি চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়নি। অসুস্থ শরীরেই তাঁকে কাজ করতে হয়েছে। কাজে না গেলে তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হতো। মুনমুন বলেন, ‘আমরাও মানুষ। আমাদেরও অসুখ-বিসুখ হয়। অন্তত একটা দিন ছুটি দরকার।’
আজেমা বেগম নামের আরেক গৃহকর্মী বলেন, ‘ওরা চাকরি করে। সপ্তাহে এক দিন ছুটি পায়। আমরা সামান্য বেতনে কাজ করি। আমরা কেন ছুটি পাব না?’ গৃহকর্মী শিলা বলেন, ‘কাজ দেওয়ার সময় বলা হয় একটা কাজ। কিন্তু কাজে গেলে কাজ হয়ে যায় সাতটা। তারপরও আমরা কাজ হারানোর ভয়ে কাজ করি। অথচ অসুখ-বিসুখে একটা দিন না এলে পরের দিন দারোয়ানকে বলে রাখে যেন আর ঢুকতে না দেয়। এটা খুব কষ্ট দেয়।’
নগর দরিদ্র অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘গৃহকর্মীরা বাড়িতে ভালোমন্দ রান্না করেন। সেই খাবার দিনের পর দিন ফ্রিজে থেকে নষ্ট হয়। তারপরও বেশির ভাগ বাড়ির মালিক একটু ভালো খাবার গৃহকর্মীকে খেতে দেন না। অসুস্থ হলে তাঁরা গৃহকর্মীর বেতন কেটে নেন। এসব ক্ষেত্রে উদার দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। অবশ্য কিছু কিছু ব্যতিক্রমও আছে। তাঁরা গৃহকর্মীদের যথেষ্ট ভালোবাসেন। তাঁকেও আপন করে নেন।’
উন্নয়নকর্মী সম্রাট রায়হান বলেন, অবহেলিত উন্নয়নকর্মীদের জীবনমানের উন্নয়ন ও অধিকার আদায়ে তাঁদেরও অ্যাসোসিয়েশন থাকা প্রয়োজন। তাঁদেরও সংঘবদ্ধ থেকে ভালো বেতন ও সাপ্তাহিক ছুটি আদায় করে নিতে হবে। পাশাপাশি গৃহকর্তারও মানসিকতার উন্নয়ন দরকার।
জনসংলাপে গৃহকর্মীদের নানা পরামর্শ দেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের রাজশাহীর সহকারী পরিচালক নীলা ইয়াসমিন, শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল আমিন, কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের সুপার ফেরদৌস রাবিয়া ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আইনুল হক। সংলাপ পরিচালনা করেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম। এর আগে বারসিকের পলিসি রিসার্স অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি অফিসার আমরীন বিনতে আজাদ গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেন।
চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত শহরে পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা যায়, রাজশাহীতে এখনো ১১ শতাংশ গৃহকর্মীর বয়স ১৫ বছরের নিচে। গৃহকর্মীদের ৪০ শতাংশই নিরক্ষর। মাসে ২ হাজার টাকার কম বেতন পায় ২৫ শতাংশ গৃহকর্মী, আর ৪ হাজার টাকার বেশি বেতন পায় মাত্র ১০ শতাংশ। গবেষণা প্রতিবেদনে শিশুশ্রম বন্ধ করা, বেতন না কেটে গৃহকর্মীদের ছুটি ও স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়েছে।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শেখ সাদেক আলীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও মানহানিকর পোস্টার লাগানো ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুর ১২টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মিছিলটি শুরু হয়। কলেজ ক্যাম্পাস ও মহাসড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কলেজের প্রশাসনিক...
৩০ মিনিট আগেপটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ঋণ শাখার দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, মোটরসাইকেল ও কম্পিউটার ক্রয় ঋণের কিস্তির টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে ভুয়া স্লিপ দেখিয়ে তাঁরা এ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
৪০ মিনিট আগেপটুয়াখালীতে এক সাংবাদিককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ও শেরেবাংলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আফরোজা সীমা। হুমকির ওই ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেরোববার গভীর রাতে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মো. রাহাত খানের নেতৃত্বে পালেরহাট এলাকায় ফরিদ উদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একটি একনলা বন্দুক ও নগদ এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে ফরিদের দেওয়া তথ্যে সহযোগী নাঈমের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, গাঁজা...
২ ঘণ্টা আগে