Ajker Patrika

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
ডাস্টারের আঘাতে আহত রাফিউর রহমান আহাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডাস্টারের আঘাতে আহত রাফিউর রহমান আহাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর উত্তরায় ক্লাসে শিক্ষক কর্তৃক ডাস্টার নিক্ষেপের ঘটনায় রাফিউর রহমান আহাদ (১৭) নামের এক ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে।

উত্তরার ‘উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে’ রোববার (৯ নভেম্বর) বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ছাত্রটিকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে তাকে চিকিৎসাধীন দেখা যায়।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্র উত্তরা হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র। অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম (রিপ) প্রতিষ্ঠানটির পৌরনীতি বিষয়ের শিক্ষক।

আহত ছাত্র রাফিউর রহমান আহাদ আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘রফিকুল স্যার আমাদের ক্লাস নিচ্ছিলেন। ওই সময় আমার সামনের বেঞ্চে বসা এক ছেলে তার পাশের জনের সঙ্গে কথা বলছিল। তখন রফিক স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে তার হাতে থাকা ডাস্টার ছুড়ে মারে। পরে সামনের বন্ধুটি দেখতে পেয়ে সরে যায়। আর সেটি এসে আমার মাথায় লাগে।’

আহাদ আরও বলে, ‘আমি বেঞ্চ থেকে সেন্সলেস হয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম। হুঁশ ফিরলে দেখি, সামনের ব্যাগ রক্তে লাল হয়ে গেছে। মাথায় হাত দিয়ে দেখি, হাতও রক্তের ভিজে গেছে। পরে আমার শার্টসহ পরনের জামাকাপড় রক্তে একাকার হয়ে যায়। আমার বন্ধুরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করায়।’

আহত ছাত্রের বড় বোন খাদিজা রহমান হেরা বলেন, ‘আজকে আমার ছোট ভাই যথারীতি কলেজে যায়। ওর টিফিন টাইম আড়াইটায়। কিন্তু বেলা ২টায় ওর ফোন থেকে কল আসে। তারপর ওর বন্ধুরা বলে, আহাদ অনেক অসুস্থ, ওরে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছি। আপনারা আসেন। হাসপাতালে এসে দেখি, ওর সারা শরীর রক্তে মাখা। মাথায় সেলাই চলছে।’

খাদিজা রহমান হেরা বলেন, ‘পরে জানতে পারলাম, রফিকুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক অন্য ছাত্র দুষ্টুমি করার অপরাধে আমার ভাইকে মারধর করেছে।’ ভাইয়ের ওপর আক্রমণের বিচার চেয়ে খাদিজা বলেন, ‘আমরা থানায় যাচ্ছি অভিযোগ দিতে।’

অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের করা যায়নি। তার ভাই আবু বক্কর জানান, রফিক সাহেব ফোনটি বাসায় রেখে বাইরে গেছেন।

শিক্ষকের মারধরে ছাত্র রক্তাক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলেই প্রতিষ্ঠানটির সামনে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দেন, যদি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে তারাই বিচার করবে।

এ বিষয়ে উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফরিদুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষক রফিকুল এক ছাত্রকে ডাস্টার দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে। এতে ওই ছাত্র আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমিও গিয়েছিলাম।’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষককে ক্লোজড করেছি। বিষয়টি চেয়ারম্যান স্যারকে অবগত করেছি। মোটকথা তাঁকে প্রতিষ্ঠান থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...