Ajker Patrika

রাবিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো যেভাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও রাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩, ১৭: ১৬
রাবিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো যেভাবে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দফা দফায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র‍্যাব এবং সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার সূত্রপাত এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাস কন্ডাক্টরের বাগ্‌বিতণ্ডা থেকে। বগুড়া থেকে মোহাম্মদ পরিবহনের একটি বাসে রাজশাহী আসছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন আকাশ। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়িচালক শরিফুল ও তাঁর সহযোগী রিপনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় আকাশের। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিনোদপুর বাজারে বাস থেকে নামার সময় তাঁদের মধ্যে আবারও কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় বিনোদপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী বাসচালকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তখন আকাশসহ বিনোদপুর বাজারে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া রাবির কয়েক শিক্ষার্থীর সঙ্গে গাড়ির চালক, তাঁর সহযোগী ও বাজারের ব্যবসায়ীর কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।

খবর পেয়ে সেখানে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এ সময় ব্যবসায়ীরা তাঁর মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন এবং ধাওয়া দিয়ে তাঁকেসহ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেন। এতেই ঘটনা বড় হয়ে যায়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবশিক হল থেকে বের হয়ে বিনোদপুর গেটের পাশে অবস্থান নেন। 

দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষে দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকাআর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারে। তখন এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর রাতের অন্ধকারে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তখন শত শত শিক্ষার্থীর মধ্যে পড়া ইটের আঘাতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। 

আহতদের মধ্যে ক্যাম্পাসে কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিকও আছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক দাবি করা হয়েছে। 

পরিস্থিতি সামাল দিতে সন্ধ্যার পরেই ঘটনাস্থলে যান বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য। কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কোনো চেষ্টা করেননি। রাত ৮টার দিকে বিনোদপুর গেটের পাশে থাকা পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিনোদপুর বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মুহূর্তেই বিনোদপুর বাজারে সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। 

এ সময় অন্ধকারের মধ্যে বিনোদপুর বাজার থেকে ক্যাম্পাসের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে বিনোদপুর বাজারের দিকে অসংখ্য পেট্রলবোমা উড়ে আসতে দেখা যায়। ক্যাম্পাসের আবাসিক হলগুলো থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও লাঠিসোঁটা এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায়। 

এমন পরিস্থিতিতে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারের সামনে দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিনোদপুর বাজারে আসেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এ এইচ এম খাইরুজ্জামান লিটন। তিনি দুই পক্ষকেই শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। 

দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষে দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসার পর রাত ৯টা ৫ মিনিটের দিকে প্রথম অ্যাকশন শুরু করে পুলিশ। পুলিশ লাঠিপেটা ও ধাওয়া দিয়ে বিনোদপুর বাজার থেকে ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। রাজশাহীর নগর পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম এবং র‍্যাবের সদস্যরা এই অভিযানে অংশ নেন। দাঙ্গা দমনের কাজে ব্যবহৃত পুলিশের একটি এপিসি গাড়ি দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা যায়। তার পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি এসে দোকানপাটগুলোর আগুন নিভিয়েছে। 

রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে বের হয়ে মহাসড়কে চলে আসে। তাঁরা আবারও দোকানপাটে আগুন দিতে শুরু করেন। এ সময় পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে। 

সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে এসে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরাতে সাহস পেয়েছে। এ ঘটনায় তাঁরা বিচার চান। 

দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষে দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকাঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিনোদপুর বাজার বণিক সমিতির উপদেষ্টা আবদুল আজিজ বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রথমে ইমরান নামের এক দোকানির দোকানে ঢুকিয়ে বাসের চালক ও হেলপারকে মারধর করছিলেন। তাঁদের রক্ষার চেষ্টা করায় তাঁরা ব্যবসায়ীদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। এ ঘটনার জন্য ব্যবসায়ীদের কোনো দোষ নেই বলে তিনি দাবি করেন। 

ঘটনার ব্যাপারে রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ বক্তব্য দেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত শিক্ষার্থী আহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। ঘটনার তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন এসব ব্যাখ্যা করার সময় নয়, কাজ করার সময়। আমাদের কাজ করতে দিন।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুক্রবার ঢাকা ইপিজেড ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
শুক্রবার ঢাকা ইপিজেড ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ

ঢাকা ইপিজেড, আশুলিয়া, নবীনগর ও গাজীপুরের আংশিক এলাকায় আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আশুলিয়া জোনের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খালেদ খন্দকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সেকশন-৩-এর আওতায় পাইপলাইন স্থানান্তর ও নির্মাণকাজ সম্পাদনের জন্য সাময়িক এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে শনিবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৭টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে ইপিজেডের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারসহ নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের উভয় পাশে সব এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকতে পারে।

যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না:

ঢাকা ইপিজেড, গাজীপুরের কাশিমপুর, সারদাগঞ্জ, হাজী মার্কেট, শ্রীপুর, কবিরপুর, বাড়ইপাড়া, চন্দ্রা, আশুলিয়ার নবীনগর, সাভার ক্যান্টনমেন্ট, কাঠগড়া, জিরাবো, গাজীরচট, নয়াপাড়া, দেওয়ান ইদ্রিস সড়কের উভয় পাশের এলাকা, নয়ারহাট, বলিভদ্র, পল্লীবিদ্যুৎ, ডেণ্ডাবর, ভাদাইল, লতিফপুর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকতে পারে।

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে। সাময়িক এই অসুবিধার জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং গ্রাহকদের সহযোগিতা কামনা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় দুর্বৃত্তের গুলিতে যুবক নিহত

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনার পূর্ব রূপসায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সোহেল হাওলাদার (২৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ৩ নম্বর নৈহাটি ইউনিয়নের রহিমনগর গ্রামের মানিক সরদারের বালুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল ওই গ্রামের বাসিন্দা রুস্তুম হাওলাদারের ছেলে।

রূপসা থানার এসআই নাজমুল এলাকাবাসীর বরাতে জানান, সোহেল হাওলাদার দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন। কয়েক দিন আগে প্রবাস থেকে দেশে ফেরেন। রাতে বাড়ির পাশে মাঠে অবস্থান করছিলেন। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। একটি গুলি বুকের বাম পাশে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ হেফাজতে নেয় পুলিশ। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। তবে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এসআই নাজমুল সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্ষমতায় গিয়ে আবার উল্টাপাল্টা করলে ছাড় দেব না: জামায়াত আমির

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
সিলেটে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা

ক্ষমতায় গিয়ে আবার উল্টাপাল্টা কিছু করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর জামায়াতের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শফিকুর রহমান বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তারা সরকারে যাওয়ার পরে আবার যদি সেই পুরোনো কায়দায় উল্টাপাল্টা কিছু করা হয়, প্রথমে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বলব, এগুলো ছেড়ে দেন। যদি সংশোধন হন, আমরা খুশি হব, অভিনন্দন জানাব। যদি সংশোধন না হন, তাহলে আগেও যেমন জীবন বাজি রেখে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, আগামীতেও কাউকে ছাড় দেব না।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘তারা নির্বাচিত হলে জামায়াত ছাড়া সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবে। আমরা মহান আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি, আল্লাহ যদি তাঁর মেহেরবানিতে জনগণের ভালোবাসায় আমাদের নির্বাচিত করেন, আমরা তাদেরও সঙ্গে নিয়ে দেশ গঠন করব।

‘আর যদি কোনো কারণে আল্লাহ আমাদের বিরোধী দলে বসান, তাদের আশ্বস্ত করছি, প্রতিটি মানবিক ও ভালো কাজে আমরা অবশ্যই তাদের কর্মী হয়ে কাজ করব। আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। সবাই মিলে আমরা দেশ গড়ব, এ কাজে আমরা তাদের সহযোগিতা করব।’

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের ঐতিহাসিক রাতে আমরা সকল ব্যথা ঝেড়ে ফেলেছিলাম। পায়ের নিচে ফেলে দিয়েছিলাম। মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে দায়িত্ব নিয়ে আমাদের নেতৃবৃন্দ ও নেতা-কর্মীদের বলেছিলাম, আমরা ব্যক্তিগতভাবে কারও ওপর প্রতিশোধ নেব না। প্রতিশোধ প্রতিহিংসার জন্ম দেয়, সমাজকে ধ্বংস করে।

‘আমরা পারতাম, সেই রাতে যদি শুধু বলে দিতাম, যে যার ক্ষতি করেছে, তার সঙ্গে একটু মোলাকাত করে আসুন, বাংলাদেশ একটা বধ্যভূমিতে পরিণত হয়ে যেত। আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রায় বলতেন, তাঁদের পতন হলে দলের ৫ লাখ লোককে হত্যা করা হবে। ওই রকম কিছুই হয়নি। আওয়ামী লীগ দায়িত্বজ্ঞানহীন হলেও জাতি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘জাতিকে আর দল-ধর্মের ভিত্তিতে টুকরা করা হবে না। সবাই মিলে বাংলাদেশ। মেজরিটি–মাইনরিটি না, একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। অসৎ রাজনীতিবিদেরা নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পুলিশকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করেছে।

‘সমাজের সর্বত্রই ইঁদুর বসে আছে, তারা উন্নয়নের দড়িগুলো কেটে দিচ্ছে। নির্বাচনের আগে প্রচার করে রাজনীতি ইবাদত, নির্বাচিত হওয়ার পর ইবাদতের খাজনা আদায় করা শুরু করে।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দেশে দৃশ্যমান অনেক পরিবর্তন হলেও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারেননি। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার যদি কায়েম হয়, দুর্নীতির জট কেটে যাবে।

‘কেননা, আমাদের স্বার্থের ব্যাপারে সবার আগে বাংলাদেশ। নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রবাসীদের ভোটের অধিকারের বিষয়ে অনেক বাধা ছিল। অনেক রাজনৈতিক দলও বলেছে, প্রবাসীরা আবার কিসের ভোট দেবে? আমরা বলেছি না, তারা আমাদের অঙ্গ, অংশ। আমরা দেশ গড়ার সুযোগ পেলে সংখ্যা অনুযায়ী তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে, ইনশা আল্লাহ।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে একজন থেকে ২০০ জন এমপি নির্বাচিত হলেও সরকারি সুবিধা গ্রহণ করবে না জামায়াত। সরকার গঠন করলে আমরা সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা নিব না, যেটা আমাদের জন্য অপরিহার্য। দলটির কেউ কোনো ধরনের অপকর্মে জড়াবে না। যাঁরা অপকর্মে যাবেন, তাঁদের হাত চেপে রাখা হবে।’

মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, জামায়াত নেতা প্রফেসর ফজলুর রহমান, জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, মহানগর সেক্রেটারি শাহজাহান আলী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ড. নুরুল ইসলাম বাবুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেট্রো স্টেশনের নিচে ট্রাফিক পুলিশ চায় ডিএমটিসিএল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মেট্রো স্টেশনের নিচতলায় ট্রাফিক পুলিশ চেয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। স্টেশনের নিচতলায় ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) কাছে চিঠি দিয়েছে কোম্পানিটি।

গতকাল বুধবার (৫ নভেম্বর) ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিটি ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের (ট্রাফিক) কাছে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ডিএমটিসিএল একটি ‘ক’ শ্রেণির কেপিআই তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান। ২০২৫ সালের ১ জুলাই অনুষ্ঠিত সংস্থার মাসিক নিরাপত্তা সমন্বয় সভায় মেট্রোরেল স্টেশনগুলোর নিচতলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

চিঠিতে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—স্টেশনের নিচতলায় যাত্রীদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা। যানজট নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠু পার্কিং ব্যবস্থা বজায় রাখা। নিরাপত্তা মান বৃদ্ধি ও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি প্রতিরোধ করা। যাত্রীদের নিরাপদে ওঠানামা ও জরুরি অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। অবৈধ দখল রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এমতাবস্থায় ডিএমটিসিএলের আওতাধীন মেট্রোরেল লাইন-৬-এর ১৬টি স্টেশনের নিচে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত