Ajker Patrika

তদন্ত প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শী, সাক্ষী বলছেন ঘটনাস্থলে ছিলেনই না

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৩, ১৯: ৩১
তদন্ত প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শী, সাক্ষী বলছেন ঘটনাস্থলে ছিলেনই না

রাজশাহীতে ভাঙচুর, চাঁদা দাবি ও লুটপাটের একটি মামলায় ১৬১ ধারায় সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছেন পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে সাক্ষীর উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, যে সময়ের ঘটনা সে সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তা কীভাবে এটি দিয়েছেন তা জানেন না তিনি।

মামলাটির তদন্তে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রাজশাহীর উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন। মামলার আরও দুই সাক্ষীর সঙ্গে কথা বলে গোঁজামিল পাওয়া গেছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে তদন্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

ওই মামলার সাক্ষী রাজশাহী নগরীর দেবিশিংপাড়া মহল্লার বাসিন্দা হাসান আলী। মামলার তদন্তের সময় তদন্ত কর্মকর্তা ১৬১ ধারায় তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। তারপর লিপিবদ্ধকারী হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রের সঙ্গে সাক্ষীর জবানবন্দির একটি কপি আদালতে দাখিল করেছেন।

ওই কপিতে লেখা রয়েছে, হাসান আলী তাঁকে জানিয়েছেন যে তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। ভাঙচুর করতে দেখেছেন। মামলার আসামি দুরুল হোদাকে বাদী আবদুল বারীর কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদাও চাইতে দেখেছেন।

তবে যোগাযোগ করা হলে হাসান আলী বলেন, ‘ভোর সাড়ে ৪টার সময় ঘটনা। তখন সবাই বাড়িতে থাকে, আমিও বাড়িতে ছিলাম। ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তদন্ত কর্মকর্তা এটা কীভাবে দিয়েছেন তা জানি না।’

আহসাদ হাবিব রনি নামের আরেক সাক্ষীর জবানবন্দি হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা লিখেছেন, এই সাক্ষী বাদী আবদুল বারীর কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা চাইতে দেখেছেন।

তবে যোগাযোগ করা হলে আহসাদ হাবিব রনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি চাঁদা দাবি করতে দেখেননি, শুনেছেন।

কত টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল সে প্রশ্নে হাসান বলেন, ‘আমি সেটা জানি না।’

এদিকে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভাড়াটিয়া মিজানুর রহমানের দোকানের ৫ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেছেন আসামিরা। তবে মিজানুর তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেছেন, তিনি নিজেই তাঁর দোকান থেকে চাল বের করে নিয়ে যান। যোগাযোগ করা হলে মিজানুর বলেন, চাঁদা চাইতে তিনি দেখেননি। যা বলার আদালতে গিয়েই বলবেন।

দুরুল হোদার অভিযোগ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন প্রভাবিত হয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। দুরুল ২০২২ সালে নগরীর সপুরা আহম্মদনগর এলাকায় লাকি বেগম নামের এক নারীর কাছ থেকে প্রায় সোয়া পাঁচ কাঠা জমি কেনেন। এই জমি নিজের বলে দাবি করে আসছেন বারী। তবে লাকি বেগমের নানি সাপিনা বেগম ২০১৫ সালে যখন এ জমির মালিক ছিলেন, তখনই আদালতে প্রমাণিত হয়েছিল যে জালিয়াতি করে বারী এই জমির খাজনা-খারিজ করেছিলেন নিজের নামে।

পরে সাপিনা বেগম তাঁর নাতনি লাকিকে এ জমি দেন। তারপর লাকি বিক্রি করেন দুরুলের কাছে। দুরুল তাঁর জমিতে থাকা দোকানপাট ভেঙে ফেললে বারী মামলা করেন। যদিও এখন জমির খাজনা-খারিজ দুরুলের নামে। এই জমির কাগজপত্র জমা দিয়ে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) থেকে ভবন নির্মাণের ছাড়পত্র নিয়েছেন। একতলা বাড়ি করে পেয়েছেন বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ পেতেও জমা দিতে হয়েছিল জমির কাগজপত্র। ই-পরচা ওয়েবসাইটেও রয়েছে দুরুলের নাম।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, আবদুল বারী ২০০৬ সালে এই জমির একটি দলিল বের করেন। এই দলিলে দেখা যায়, আবদুল বারী এবং তাঁর স্ত্রী সেলিনা বারী নাজির আহমেদ নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে জমিটি কিনেছেন। নাজিরের বাবার নাম শেখ বসির আহমেদ। অথচ এই জমির আরএস খতিয়ানে দেখা গেছে, রেকর্ড অনুযায়ী মালিক সেখ হারুন ও তাঁর ভাই সেখ নাজির। দুজনের বাবার নাম সেখ মোহাম্মদ। সুতরাং, বারী ও তাঁর স্ত্রী যে নাজিরের কাছ থেকে জমি ক্রয় দেখাচ্ছেন আরএস খতিয়ানে তাঁর নামই নেই।

অথচ এ দলিল দিয়েই ২০০৭ সাল থেকে নিজের নামে জমির খাজনা দিতে শুরু করেছিলেন বারী ও তাঁর স্ত্রী। এ জন্য বারী বোয়ালিয়া ভূমি অফিসে সাকিনা বেগমের একটি প্রত্যয়নপত্র দেন। সাকিনার টিপসই দেওয়া এই প্রত্যয়নপত্রে লেখা, এই জমি নিয়ে সাকিনার কোনো দাবি নেই। এর প্রেক্ষিতে সার্ভেয়ার সায়েম আলী বারীর খাজনা নেওয়ার সুপারিশ করেন। ফলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) তখন বারী ও তাঁর স্ত্রীর খাজনা নেওয়ার অনুমতি দেন। 

 ২০১১ সালে সাকিনা বেগম খাজনা দিতে গেলে জানতে পারেন, এই জমির খাজনা নেওয়া হচ্ছে বারী ও তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে। এ নিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) আদালতে মামলা করেন। 

 ২০১৫ সালে মামলার রায়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আতাউল গণি উল্লেখ করেন, শেখ হারুন ও শেখ নাজিরের কাছ থেকে ১৯৭৫ সালে এই জমি কিনে ভোগদখল করছেন সাকিনা বেগম। সিআইডির মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সাকিনার না-দাবির ব্যাপারে তাঁর যে প্রত্যয়নপত্র বারী দিয়েছেন সেই টিপসই সাকিনার নয়। 

তাই আদালত বারী ও তাঁর স্ত্রীর খাজনা বন্ধ করে সাকিনার নামেই খাজনা নেওয়ার নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি বারীর পক্ষে মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ায় আদালত ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সার্ভেয়ারের চাকরি চলে যায়। ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আট বছর জালিয়াতির মাধ্যমে বারী ও তাঁর স্ত্রী জমির খাজনা দিলেও রায়ে সেটি অবৈধ প্রমাণিত হয়ে যায়। 

পরে লাকির কাছ থেকে জমি কিনে দুরুল বাড়ি করতে গেলে আবদুল বারী বাধা দেন। তার ওপর হামলাও হয় দুই দফা। এ নিয়ে বারী ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। দুরুল জমিটা কেনার আগে থেকেই সামনের অংশে পাঁচটি দোকানঘর ছিল। ভবন নির্মাণের জন্য দুরুল চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি দোকানগুলো ভেঙে ফেলেন। আর এই কারণে বারী এবার দুরুলসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। এ মামলার তদন্তেই পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাবান্ধা আইসিপিতে বিজিবির বাড়তি নজরদারি

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসন থেকে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সে জন্য পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবি সূত্র জানায়, সীমান্ত এলাকায় নিজস্ব গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ব্যাটালিয়ন সদর ও বিওপির নিয়মিত টহলের পাশাপাশি বিশেষ টহল দল মোতায়েন করে সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিশেষ টহলের অংশ হিসেবে সীমান্ত এলাকায় চলাচলকারী যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।

এ ছাড়া ব্যাটালিয়নের অধীন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে (আইসিপি) নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। আইসিপি দিয়ে যাতায়াতকারী যানবাহন ও যাত্রীদের নিবিড়ভাবে তল্লাশি করা হচ্ছে। পাশাপাশি কে-৯ ইউনিটের (ডগ স্কোয়াড) মাধ্যমে বিশেষ তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ কায়েস বলেন, ‘আমাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা দিয়ে কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তি যাতে পার্শ্ববর্তী দেশে পালাতে না পারে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সীমান্ত নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভূঞাপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, পাঁচজনকে জরিমানা

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
ভূঞাপুরের যমুনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভূঞাপুরের যমুনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় পাঁচজনকে জরিমানা করা হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার যমুনা নদীতে এই অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসান।

বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী দায়ের করা পাঁচটি পৃথক মামলায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে ৫০ হাজার টাকা করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সিরাজগঞ্জের অছির আলীর ছেলে ইজতেহার (৫০), নড়াইলের দাউদ মোল্লার ছেলে নুর মোহাম্মদ (৩৬), বরগুনার নাসির খানের ছেলে হাসান (২৪), ভূঞাপুরের মোকতেল হোসেনের ছেলে করিম (৩৫) ও সানু মিয়ার ছেলে জহুরুল (৩০)।

এ সময় ভূঞাপুর থানা-পুলিশ, নৌ পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব হাসান বলেন, যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে পাঁচজনকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন রোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
গতকাল বিকেলে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত
গতকাল বিকেলে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিয়েছেন। গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি বরিশালে গিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে দেখা করে দলটিতে যোগ দেন।

এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন ফরিদ, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া মনু গাজীসহ শতাধিক বিএনপির সাবেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

আব্দুর রউফ তালুকদার বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। তাঁর বাড়ি বকশীগঞ্জ পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকায়। তিনি চার মেয়াদে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। ১৭ বছর ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে। স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক জনপ্রিয় থাকায় এলাকাবাসী দলমত-নির্বিশেষে অভিভাবক মেনে প্রবীণ এই সমাজসেবককে ‘বটগাছ’ উপাধিতে ভূষিত করেন। সবার মুখে মুখে বলতে শোনা যায়, আব্দুর রউফ তালুকদার মানেই এখানকার মানুষের অভিভাবক।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-১ (বকশীগঞ্জ-দেওয়ানগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন আব্দুর রউফ তালুকদার।

ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে তাঁর যোগদানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে স্থানীয় রাজনীতিতে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রউফ তালুকদার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আব্দুর রউফ ও তাঁর সমর্থকেরা আবদুল কাইয়ুমকে জামালপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু আসনটিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতকে দলীয় প্রার্থী করা হয়েছে।

পরে গত ১৯ নভেম্বর জামালপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন আব্দুর রউফ তালুকদার। এরপর থেকে তাঁর সমর্থকেরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে হঠাৎ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগদান করেন আব্দুর রউফ তালুকদার।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বকশীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মাওনালা আবদুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বটগাছ উপাধিতে ভূষিত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদার ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তাঁর মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ফোনটি বন্ধ থাকায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১০
শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও সেটির মালিক। ছবি: র‍্যাব
শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও সেটির মালিক। ছবি: র‍্যাব

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করা হয়েছে। ওই মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে আব্দুল হান্নান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র‍্যাব।

আজ রোববার সকালে তাঁকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করেছে র‍্যাব-২।

র‍্যাব সদরদপ্তরের মুখপাত্র উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, ওসমান হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করা হয়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মোটরসাইকেলটির মালিক আব্দুল হান্নানকে আটক করা হয়েছে। পরে তাঁকে পল্টন থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

হত্যার ঘটনায় হান্নান জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানায় র‍্যাব।

র‍্যাব আরও জানায়, মোটরসাইকেলটির নম্বর ৫৪-৬৩৭৫। আটক হান্নানের বাড়ি রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তাঁর বাবার নাম মো. আবুল কাশেম।

গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে করা গুলিতে গুরুতর আহত হন রিকশায় থাকা ওসমান হাদি। তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত