Ajker Patrika

সৈয়দপুর রেল কারখানা: স্প্রিং সংকটে মেরামত হচ্ছে না ট্রেনের কোচ

  • তিন মাস পড়ে আছে ট্রেনের ৩টি কোচ
  • ২ কোটি টাকা করে ব্যয় হয়েছিল প্রতিটি কোচে
রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী) 
সৈয়দপুর রেল কারখানা: স্প্রিং সংকটে মেরামত হচ্ছে না ট্রেনের কোচ

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেল কারখানার ইয়ার্ডে প্রায় তিন মাস পড়ে আছে ট্রেনের তিনটি কোচ। স্প্রিং সংকটের কারণে কোচগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না। প্রতিটি ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ওই কোচগুলো খোলা জায়গায় থেকে নষ্ট হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমদানিনির্ভর হওয়ায় দরপত্রে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতায় এ রেল কারখানায় স্প্রিংয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। এতে শুধু ওই তিনটি কোচই নয়; মেরামতযোগ্য অন্য কোচগুলোও সময়মতো মেরামত করা যাচ্ছে না। এতে কারখানায় ক্যারেজ মেরামতের প্রতিদিনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে ব্রডগেজ লাইনের ৫০টি কোচ আমদানি করে। এগুলোর মধ্যে ছিল ওই তিনটি কোচ। কোচ তিনটি চিলাহাটি-রাজশাহী পথে চলাচলকারী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনে যুক্ত করা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় কোচগুলো খুলে মেরামতের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পাঠানো হয় প্রায় তিন মাস আগে। সেগুলো বর্তমানে কারখানার ইয়ার্ডে পড়ে আছে। এদিকে ওই তিনটি কোচ খুলে রাখায় বরেন্দ্র ট্রেনটি মাত্র ৬টি কোচ নিয়ে চলাচল করছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, কোচ তিনটি ক্যারেজ শপের ইয়ার্ডে পড়ে আছে। এগুলোতে মরিচা ধরে গেছে। আশপাশে আগাছা গজিয়েছে। কোচগুলোর ভেতরের অবস্থাও নাজুক।

রেলওয়ে কারখানার বগি শপের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী শাহিনুর আলম শাহ জানান, ট্রেনের বগিগুলো স্থাপন করা থাকে ট্রলির ওপর। এই ট্রলি স্থাপন করা হয় চাকার ফ্রেমে। এর মাঝে থাকে স্প্রিং এবং সূক্ষ্ম কিছু যন্ত্রাংশ। চারটি স্প্রিং পুরো কোচের ওজন বহন করে। চলাচল করলে বল বিয়ারিং, স্প্রিং ও চাকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আগুনেরও সূত্রপাত হয়। এগুলো নিয়মিত সার্ভিসিং করতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী ৫ বছর পরপর স্প্রিং পরিবর্তন করতে হয়।

শাহিনুর আলম শাহ বলেন, ‘বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের খুলে রাখা ওই কোচগুলোর স্প্রিংগুলো পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলো বদলাতে হবে। রেলওয়ের কোচের এসব স্প্রিং আমদানিনির্ভর। কিন্তু দরপত্রে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতায় রেল কারখানায় স্প্রিংয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে কোচগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ে কারখানার প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের ওই কোচগুলো আমদানির পর থেকে আর স্প্রিং পরিবর্তন করা হয়নি।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ স্প্রিং সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত