Ajker Patrika

মোংলা সমুদ্রবন্দর: কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড

  • উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে কনটেইনার হ্যান্ডলিং
  • জাহাজ এসেছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩.৭৫% বেশি
  • নিট মুনাফা ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তিন গুণ
কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা
কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই মোংলা বন্দরে জাহাজ থেকে কনটেইনার হ্যান্ডলিং চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই মোংলা বন্দরে জাহাজ থেকে কনটেইনার হ্যান্ডলিং চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ সমুদ্রবন্দর মোংলায় কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) বন্দরে হ্যান্ডলিং করা হয়েছে ৬ হাজার ৭৬৯ টিইইউস কনটেইনার, যা পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। বন্দরের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ব্যবসায়ীদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টিইইউস। তবে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আসার লক্ষ্যমাত্রা ৮০০টি থাকলেও এসেছে ৮৩০টি। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।

বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান মুন্সি বলেন, গত অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, অর্জিত হয়েছে ৩৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এতে করে রাজস্ব আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। বন্দরের নিট মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা, অর্জিত হয়েছে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, জাহাজজট নেই, কনটেইনার খালাসের ক্ষেত্রে টার্ন অ্যারাউন্ড টাইম মাত্র ১ দশমিক ৬৬/৪০ ঘণ্টা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে গড়ে ৩ দশমিক ৩৭/৭৮ ঘণ্টা। বন্দরে ১৩৪টি আধুনিক যন্ত্রপাতি, ৭টি কনটেইনার ইয়ার্ড, ৩৮টি সহায়ক জলযান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইএসপিএস কোড অনুসরণসহ কোস্ট গার্ডের টহল ব্যবস্থা রয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, বন্দর থেকে নিরাপদে, কম খরচে সড়ক ও নৌপথে সহজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মালপত্র পরিবহনের সুবিধা রয়েছে।

এলসিএল সুবিধার মাধ্যমে ছোট ব্যবসায়ীরাও মোংলা বন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে পারছেন। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তরিকুল ইসলাম জহীর বলেন, কাস্টম হাউস খুলনা থেকে মোংলায় নিয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি কমেছে।

মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা প্রধান পণ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে খাদ্যশস্য, সার, গাড়ি, এলপি গ্যাস, সয়াবিন তেল, জ্বালানি তেল, মেশিনারি যন্ত্রপাতি, কাঠ, কয়লা, পাথর ইত্যাদি। রপ্তানির ক্ষেত্রে রয়েছে গার্মেন্টস পণ্য, পাটজাত পণ্য, চিংড়ি, শুকনা মাছ, হিমায়িত খাদ্য ইত্যাদি। বন্দরের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা জহিরুল হক জানান, সুবিধা সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বার্ষিক ৪ লাখ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব।

বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহিন রহমান বলেন, মোংলা বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনকে সহায়তা দেওয়া সহজ হবে।

কর্মকর্তারা জানান, বন্দরের নিরাপত্তা ও সুবিধা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এতে ব্যবসায়ী ও আমদানি-রপ্তানিকারকেরা আরও সুবিধা পাবেন এবং দেশের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে এগিয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত