Ajker Patrika

রোপা আমনে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ, দুশ্চিন্তায় চাষি

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর)
ধানের খেতে ওষুধ দিচ্ছেন এক কৃষক। গাংনী উপজেলার তেরাইল মাঠ থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধানের খেতে ওষুধ দিচ্ছেন এক কৃষক। গাংনী উপজেলার তেরাইল মাঠ থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় আমন ধানে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগের আক্রমণে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। এমনিতেই সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের উচ্চমূল্যে চাষিদের নাভিশ্বাস উঠছে, তার ওপর এই নতুন সমস্যা তাদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়েছে।

সরেজমিনে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, রোপা আমনে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ। বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে, কিন্তু তেমন কোনো কাজ হচ্ছে না। যদি আমনের মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দমন করা না যায়, তাহলে আমনের ফলন নিয়েও শঙ্কায় পড়তে হবে কৃষকদের।

করমদী মাঠের আমনচাষি শওকত আলী বলেন, ‘আমনে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দেখা দিয়েছে। ধানের শিষ না আসতেই ধানের এমন রোগ দেখা দেওয়ায় হতাশ আমরা। বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করেছি, পোকার আক্রমণ কিছুটা কমলেও এখনো সম্পূর্ণভাবে সমাধান হয়নি। যদি এই রোগ দূর না করা যায়, তাহলে ধানের ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হবে।’

তেরাইল মাঠের আমনচাষি চাঁদ আলী বলেন, ‘আমনে গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ নিয়ে খুব ভোগান্তিতে আছি। এমনিতেই সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। এর মধ্যে আবার গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ। বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক প্রয়োগ করছি, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।’

বামন্দী মাঠের আমনচাষি উসমান আলী বলেন, ‘অনেক আমনচাষির ধান মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। অনেকে কীটনাশক প্রয়োগ করছে কিন্তু কাজ হচ্ছে কম। আমার ধানেও রোগ দেখা দিয়েছে, কীটনাশক দিচ্ছি, দেখি কী হয়।’

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমন ধান রোপণ করা রয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। গত বছর ছিল ১৪ হাজার ২০০ হেক্টর। রোপা আমনে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দেখা দেওয়ায় উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে আমনচাষিদের।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানান, মাজরা পোকার মথ দমনের জন্য ধানখেত থেকে ২০০-৩০০ মিটার দূরে আলোক ফাঁদ বসিয়ে পোকা মেরে ফেলা যায়। এ ছাড়া, প্রতি ১০০ মিটার জমিতে ১০-১৫টি অথবা পাঁচটি মরা শিষ পাওয়া গেলে ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি, এসিমিক্স, ফেনজেট বা বেল্ট এক্সপার্টের মতো কীটনাশক সঠিকভাবে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কৃষি অফিস কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে এবং সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত