Ajker Patrika

বেশি লাভের আশায় শীতকালীন আগাম সবজি চাষ, কৃষকের মুখে হাসি

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আগাম সবজিখেত পরিচর্যায় ব্যস্ত আলাদীপুর ইউনিয়নের ছোট ভিমলপুর গ্রামের কৃষক হামিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগাম সবজিখেত পরিচর্যায় ব্যস্ত আলাদীপুর ইউনিয়নের ছোট ভিমলপুর গ্রামের কৃষক হামিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাধারণত নভেম্বর থেকে জানুয়ারিতে শীতকালীন সবজি বাজারে আসে। সে সময় আমদানি বেশি থাকায় কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পান না। কিন্তু বর্ষার শেষ দিকে বাজারে সবজির দাম ও চাহিদা দুটোই বেশি থাকে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দিনাজপুরের শস্যভান্ডার খ্যাত ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষকেরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ঝুঁকেছেন। এতে তাঁরা ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন।

সরেজমিনে উপজেলার শিবনগর, আলাদীপুর, খয়েরবাড়ী, দৌলতপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, আগাম শীতকালীন সবজির চাষ শুরু হয়েছে। এসব জমিতে এখন শিম, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, করলা, লাউ, লালশাকসহ বিভিন্ন সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। কিছু কিছু আগাম সবজি বাজারেও উঠতে শুরু করেছে। তবে সরবরাহ কম থাকায় দাম অনেক চড়া।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে আলাদীপুর ইউনিয়নের ছোট ভিমলপুর গ্রামের কৃষক হামিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, এবার ৩৫ শতক জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করেছেন। ইতিমধ্যেই প্রায় ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং বাজারজাত করতে মোট খরচ হবে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। হামিদুল আশা করছেন, ২০-২৫ দিনের মধ্যে তিনি বাজারে কপি তুলতে পারবেন।

তিনি বলেন, ‘গত বছর এই জমিতেই ২ লাখ ২০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করেছিলাম। এবারও ভালো কিছু আশা করছি।’ তিনি আরও জানান, কপির পাশাপাশি তিনি শিম ও শসা চাষ করেছেন।

পৌর এলাকার উত্তর কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক মশিউর ৩০ শতক জমিতে কপি আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, ‘২৫ দিনের মধ্যেই বাজারে তুলতে পারব। মৌসুমের শুরুতে সবজির দাম সব সময় বেশি থাকে, এতে ভালো লাভ হয়।’

আলাদীপুর ইউনিয়নের সবজিচাষি আলামিন হোসেন জানান, তিনি এবার ৮০ শতক জমিতে ফুলকপির চারা রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যেকোনো সবজি যদি মৌসুমের শুরুতে বাজারে তোলা যায়, তাহলে দাম বেশি পাওয়া যায়। এরই মধ্যে আগাম জাতের শিম, মুলা, লালশাক, পুঁইশাক, করলা, পালংশাক ও টমেটো বাজারে উঠছে এবং আমরা ভালো দাম পাচ্ছি।’

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের সবজির লক্ষ্যমাত্রা ৬৫০ হেক্টর। এ ছাড়া, এবার ১ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানুর রহমান বলেন, ‘আগাম সবজি চাষ লাভজনক। তাই অনেক চাষি এই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। এখানকার সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়।’ তিনি আরও জানান, কৃষি বিভাগ আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও রোগবালাই দমনে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত