Ajker Patrika

মানিকগঞ্জে মামলা দিয়ে যুবদল নেতা ও তাঁর ভাইয়ের ওপেন চাঁদাবাজি

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১: ২৭
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহীন আলম ও তাঁর ভাই শহীদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহীন আলম ও তাঁর ভাই শহীদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

বড় ভাই মামলা করেছেন। আসামি করা হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য ও সাংবাদিকসহ ১২৯ জনের নামে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে আরও শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তি। হুমকি দেওয়া হচ্ছে ওই মামলায় আরও নাম ঢুকিয়ে দেওয়ার। আর ছোট ভাই কন্ট্রাক্ট নিচ্ছেন নাম কাটানোর। বিনিময়ে দাবি করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। চাঁদাবাজির এমনই এক নয়া মডেল দাঁড় করিয়েছেন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহীন আলমের ছোট ভাই শহীদুল আলাম। মামলা দিয়ে দুই ভাইয়ের চলছে অনেকটা ওপেন চাঁদাবাজি।

সূত্র বলছে, বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও নাশকতায় একটি মামলা দায়ের করেছেন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহীন আলম। আর এই মামলাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির দোকান খুলে বসেছেন মামলার বাদী ওই যুবদল নেতার ছোট ভাই শহীদুল ইসলাম।

তিনি মামলার এজাহার থেকে নাম কাটাতে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করছেন। এই মামলার ৬২ নম্বর আসামি জাকিরের কাছে চাঁদা দাবির একটি অডিও কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে, যা রীতিমতো নেট জগতে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।

অডিও রেকর্ডের কথোপকথন হুবহু তুলে ধরা হলো—শহীদুল: আমরা ডিসি অফিসে আসছিলাম, বাবলুর সঙ্গে বসছি। এজাহার কমপ্লিট। আমরা এখন মানিকগঞ্জ কোর্টে আছি। এখান থেকে সব কমপ্লিট করে দৌলতপুর থানায় ঢুকে সবকিছু এন্ট্রি কইরা থুইয়া আসুম। ভালোমন্দ আর তো ফোন দিলা না। ফাঁকে চাকরি করতেছ, ফাঁকেই চাকরি করো। মামলার মতো মামলা থাকবেনে, বাড়ি আসার দরকার নাই। চাকরি-বাকরি কইরা খাইও। এইড্যা জানাইয়া দিলাম তোমারে।

জাকির: এখন কী করা লাগবে সেইটা কও।

শহীদুল: আমি এখান থেকে যামু থানায়। এই কয় মিনিট, সময় লাগতে পারে এক-দেড় ঘণ্টা। এর মধ্যে তুমি কিছু করলে করতে পারো, না করলে নাই, তোমার ইচ্ছা। আমি তোমাকে তেলও মারতেছি না, আর কিছুই না।

জাকির: না, না। এখন কি টাকা লাগব? কতডি লাগব?

শহীদুল: ওই দিন কইলাম না তোমারে।

জাকির: ট্যাকার আলাপ করো নাই তো। ফোন দিয়ে কইল্যা আমি অমুক জায়গায় আছি। পরে কথা কমুনি। আর তো তুমিও ফোন দেও নাই, আমিও দেই নাই।

শহীদুল: তুমি আমারে কইল্যা ভাঙ্গা মাসে চাকরিতে ঢুকছি। বেতন-টেতন পাই নাই।

জাকির: তাইল্যা কত ক্যামনে লাগব কও শুনি।

শহীদুল: ১৫ হাজার ট্যাকা দিও।

জাকির: ১৫ হাজার দেওয়া লাগব ন্যা?

শহীদুল: হ। এই দৌলতপুর থানায় রাজনীতি করতেছে আমার বড় ভাই। তুমি মনে হয় জানো। যদি শাহীন ভাইরে আল্লায় একটা পদে দেয়, তারপরে তার আপন ভাই হিসেবে কিন্তু আমি...।

জাকির: হু, ওইডাই।

শহীদুল: আর আমার সার্কেল হইলো খলিলরা, উজ্জ্বলরা, সাইফুলরা। আর ঠাণ্ডু, রাসেল-মাসেল এগুলা বালের বন্ধু। এখন আমি তোমাকে ফোন দিছি, খোলামেলা সত্যি কথা। সার্জেন্ট রাজ্জাক সকালে আমাকে ফোন দিয়ে কইতেছে, তোরে আমি এক লাখ টাকা দিমানি, তোরা আমারে ঝামেলায় ফালাইস না। আমি কইছি কাম হইবো না। আমারে কইছে, তোরা রাজনীতি করোস। যা ছোটখাটো একটি গাড়ি হোন্ডা কিন্যা দিমুনি। আমি কইছি, না কাকা হইবো না। কিছু কিছু জিনিস হইতেছে আমার জায়গা থেকে ক্ষমতার বাইরে। এই জায়গায় ট্যাকা খাইয়্যা আমি দুর্নাম করতে পারুম না। আর যেইটা ক্ষমতায় আছে, সেইটা আমি কইরা দিতে পারি। এই আমি তোমারে বলছি। তোমার নাম মনে করো এজাহারেই থাকব না। খোলামেলা কথা। খিচ খাইয়্যা থাকবা। কোনো সমস্যা হইলে তুমি আমারে জানাইবা।... এখন আমি তোরে একটা কথা কই। বিশ্বাস কইরা তুমি এই কথাডা রাইখো ভেতরে। ময়নাল-টয়নালরা আমার সঙ্গে ফাইজলামি করছে তো। ওগো কপালে শাস্তি আছে। আরও যারা কয়েকজন আছে, ওগো ওপরে আমার রাগ হইয়া গেছে। আমরা তো সিদ্ধান্ত নিছি, এই ব্যাপারে আর কারও সঙ্গে কথা বলব না। অ্যাকশন হবে থানায়, অ্যাকশন হবে প্রশাসনে। এখন তোমারে আমি দুই দিন আগে ফোন দিছিলাম। আর তোমার আত্মীয় আছে কবির, ওর সঙ্গে আমার ভালো একটা সম্পর্ক। সানোয়ার আছে। সানোয়ার আমারে কইছে, মামলায় ফালাইসনা, ট্যাকা-পয়সা মাইনষে কামায়। ২০ হাজার টাকার কথা কইছিল, ২০ হাজার টাকা না, তুমি হাজার পাঁচেক টাকা কম নিও। এইডা সানোয়ার আমারে কবিরের সামনে বইল্যা দিছে। আমি আর কোনো দাবি করি নাই।...এখন জাকির ভাই, এক কথা হইলো টাকা। কী করবা? যা করার এখন আমারে তুমি কও। এরপরে আমার হাতে আর সময় থাকব না।

জাকির: টাকার কথা ভাই মুখ দিয়ে সারা যায় না। তোমার সঙ্গে কথা কমানি আমি।

শহীদুল: জাকির, আমি একটা কথা কই ভাই।

জাকির: হু কও।

শহীদুল: আমরা এখন এজাহার লেখতেছি। পরে কইয়্যা লাভ নাই। তোমারে তো বিশ্বাস করছি। মুখ দিয়ে একটা কথা কও। তোমার নাম থাকব না। তখন তুমি তোমার কথাটা ঠিকমতো রাখবা। ব্যস।

জাকির: টাকা তো ব্যবস্থা করা লাগব নাকি? এখন আমার কাছে নাই। আমি যা পারি ব্যবস্থা কইরা একটা কিছু সিস্টেম করা যাইবনে। যেহেতু তুমি কইছাও ছোট ভাই। তোমার ভাইয়ের সঙ্গে কিন্তু আমি একসাথে লেখাপড়া করছি। শাহীনের সঙ্গে। শাহীনের সঙ্গে আসার কথা হইছে।

শহীদুল: না, না, না। ট্যাকার কথা আমরা জানি। এখানে মাথাপিছু আমাদের ইনচার্জকে ট্যাকা দিতে হয়। একেবারে খোলামেলা কথা। জাকির, তুমি বুঝছ না? তোমারে একটা খোলামেলা কথা কই। ১০ হাজার টাকা আমার ইনচার্জকে দেওয়া লাগব। এইডা তুমি কেইরে কইয়ো না। আর পাঁচ হাজার টাকা আমরা অফিস করতেছি, এখানে খরচ লাগতেছে। খরচ লাগতেছে এ জন্য তোমার কাছে আমরা দাবি করতেছি, একেবারে খোলামেলা কথা।

জাকির: না, ঠিক আছে। খোলামেলা বলাই ভালো।

শহীদুল: তুমি যদি আমারে বিশ্বাস না করো বা কিছু করবার যাও শফিকের সঙ্গে... রাজনৈতিক প্যানেলডা তো বুঝোই। শিক্ষিত মানুষরে এত বুঝান লাগে না। বুইজচ্ছ্যাও।

দুই নম্বর আসামি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম আইজুল হক ও ৫৫ নম্বর মহিদুর রহমানের কাছে অনুরূপ টাকা দাবি করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী ওই মামলার একাধিক আসামি জানান, চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত খলিল কোভিদসহ ওই চক্রটি কমপক্ষে ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে।

এ বিষয়ে নিয়ে শহীদুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওটা আমার ভয়েস না। আপনি জাকিরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার সঙ্গে আমার এ রকম কথা হয়েছে কি না, এটা আমার ভয়েস কি না যাচাই করে দেখেন। এটা একটা ভুয়া নিউজ ছড়াইছে।’

তবে অডিও রেকর্ডের ভয়েসটি ছোট ভাইয়ের শহীদুল ইসলামের কণ্ঠস্বর স্বীকার করে যুবদল নেতা শাহীন আলম বলেন, ‘শহীদুলের কোনো পদবি নেই। ও রাজনীতির বাইরে। চাকরি করে ও। আপনি যে রেকর্ডিং পেয়েছেন, সেটা ৭ আগস্টের। দুই মাস আগের রেকর্ডিংয়ের সঙ্গে মামলার কোনো সম্পর্ক নেই। শহীদুল গ্রেপ্তার হয়েছিল। ৬ আগস্টে জামিন পেয়েছে। জামিনের পর ৭ তারিখে ওকে ডেকে নিয়ে ওরা কথা বলেছে। এটা সে সময়ের রেকর্ড। রেকর্ডিংটা আমার কাছে আসেনি। ওটা শুনলে বুঝতে পারব শহীদুল কীভাবে টাকাটা চেয়েছে।’

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ না পেলে এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলতে পারব না।’

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে দৌলতপুর থানায় ১২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা করে মামলাটি দায়ের করেন যুবদল নেতা মো. শাহীন আলম। এতে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয়, দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিদুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, দৌলতপুর প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক সাংবাদিক এ বি খান বাবুসহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের আসামি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে যুবককে সাজা, ভেকু মেশিন জব্দ

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি  
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে মো. হৃদয় আহমেদ (২৬) নামের এক যুবককে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বালু তোলার কাজে ব্যবহৃত একটি এক্সকাভেটর (ভেকু মেশিন) জব্দ করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের জিলকী বটতলা এলাকায় উপজেলা প্রশাসন এই অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ত্রিশাল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান।

সাজাপ্রাপ্ত হৃদয় জিলকী বটতলা এলাকার মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

এসি ল্যান্ড মাহবুবুর রহমান বলেন, জনস্বার্থে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে, যাতে পরিবেশ ও নদী রক্ষা করা যায় এবং অবৈধ বালু উত্তোলন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

বাকৃবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে গোপনে নারী সহপাঠীদের ছবি তুলে এক সিনিয়র ছাত্রের কাছে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল মঙ্গলবার ওই ছাত্রীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে ডিনের সঙ্গে বৈঠক করেন অভিযোগকারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ছাত্রী বাকৃবি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। তিনি তাঁর নারী সহপাঠীদের ঘুমন্ত বা ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি গোপনে মোবাইল ফোনে তুলতেন। তাঁর কাছ থেকে যিনি ছবিগুলো গ্রহণ করতেন, তিনি ওই ছাত্রী যে বিভাগে পড়েন, সেই বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসেবে কর্মরত।

ওই ছাত্রী অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মজিদ। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে আসে। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে ছবি আদান-প্রদানের প্রমাণ পাই। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি স্বীকার করেন যে তিনি মেয়েদের বিভিন্ন ছবি তুলতেন এবং তা এক সিনিয়র ভাইয়ের কাছে পাঠাতেন।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মোবাইলটি সিলগালা অবস্থায় ডিন অফিসে সংরক্ষিত রয়েছে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ ও নিরোধ কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হবে।

অভিযুক্ত সিনিয়র শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি মেয়েটির সঙ্গে দীর্ঘদিন কথা বলেছি। সে যেসব ছবি পাঠিয়েছে, আমি তা সংরক্ষণ করিনি। আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না; তবে আমি আমার কাজের জন্য অনুতপ্ত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমি তা মেনে নেব।’

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের ভাষ্য, ইন্টার্নশিপ চলাকালে ওই ছাত্রীর সন্দেহজনক আচরণ লক্ষ করে তাঁরা তাঁকে নজরদারিতে রাখেন। পরে নিশ্চিত হন যে ওই ছাত্রী মেয়েদের ঘুমন্ত বা অপ্রস্তুত অবস্থার ছবি তুলতেন। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পর তাঁরা বিভাগীয় শিক্ষকদের অবহিত করেন এবং কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে কিশোরীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীতে মাসুদা পারভিন ওরফে ইভা (১৭) নামের এক কিশোরীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের মতিহার থানার মৌলভী বুধপাড়া এলাকার একটি আমবাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। তার স্বামী মো. দুর্জয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মৃত ইভা নগরের মেহেরচণ্ডী এলাকার ইকবাল হোসেনের মেয়ে। তার স্বামী দুর্জয়ের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার কানপাড়া গ্রামে। রাজশাহী নগরের দায়রাপাক এলাকায় এই দম্পতি ভাড়া থাকতেন। ইভা তিন দিন ধরে নিখোঁজ ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক জানান, দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা আমবাগানে লাশটি দেখতে পান। ইভার মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওসি বলেন, ইভার স্বামী দুর্জয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি পলাতক। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ নিয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক আহত

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি   
উপজেলার মধ্যবাজার এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার মধ্যবাজার এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় দুই শিশুর ঝগড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উপজেলার মধ্যবাজার এলাকায় এই সংঘর্ষ চলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়ইউড়ি ও বাহুবল গ্রামের দুই শিশুর মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়াকে ঘিরে বিকেল থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সন্ধ্যার পর উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মধ্যবাজার এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। গুরুতর আহত কয়েকজনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল, বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য ব্যক্তিদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে রাত ১০টার দিকে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত