Ajker Patrika

যশোরে পাঁচ মাসে ৩৬ খুন ২২ ধর্ষণ মামলা

  • সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে এসব ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।
  • রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জাহিদ হাসান, যশোর 
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭: ৩০
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যশোর জেলায় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত গত পাঁচ মাসে ৩৬ জন খুন হয়েছেন। বিভিন্ন থানায় ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে ২২টি। সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে এসব ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশের দাবি, যে কারণেই অপরাধ হোক, পুলিশ আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে।

জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার তথ্য বলছে, গত এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চার মাসে বিভিন্ন থানায় ২৭টি হত্যা মামলা করা হয়েছে। গত আগস্ট থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আরও ৯ জন খুন হন।

আইনশৃঙ্খলা কমিটি সভার তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ে ছয়টি খুন, সাতটি ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন ২৩টি, অপহরণ ৯টি, চুরি ১২টি এবং মাদকদ্রব্য ও চোরাচালানের ৭০টি মামলা করা হয়েছে। জুনে খুনের মামলা করা হয়েছে আটটি। আর ধর্ষণ মামলা করা হয় ১০টি। এ ছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন ১৮, অপহরণ ৯, চুরি ২২, সড়ক দুর্ঘটনা ১০, মাদকদ্রব্য ও চোরাচালানের ৭৯টি মামলা করা হয়েছে। মে মাসে খুন হন সাতজন। মানব পাচার ৫, অপহরণ ১৭, চুরি ২০, সড়ক দুর্ঘটনা ১০, অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে ৪ ও চোরাচালানের ১টি মামলা করা হয়েছে। এপ্রিলে ৬টি খুনের মামলা করা হয়।

সর্বশেষ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাদক, নীরব চাঁদাবাজিসহ অপরাধ দমনে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান জেলা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতারা।

জানা গেছে, সর্বশেষ গত শনিবার রাতে মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এর দুই দিন আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মনিরামপুর পৌর শহরের সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে চায়ের দোকানে পাঁচজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। তাঁদের মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দোকান থেকে চাঁদা না পেয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। একই দিনে কেশবপুরের গৌরঘোনা এলাকায় একটি খেত থেকে তারেক সরদার নামের এক ভ্যানচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গত ১২ আগস্ট দিবাগত মধ্যরাতে যশোর সদরের দৌলতদিহি গ্রামের আওয়ামী লীগের কর্মী রেজাউল ইসলামকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে বাড়ির পাশেই কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

যশোর সরকারি এম এম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হামিদুল হক শাহীন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এক দিনে হয়নি। এটি হচ্ছে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের চরম রূপ। আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে ঢুকে পড়েছি। পাশাপাশি মানুষজন অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছে। তারা বিচার দেখতে না পেয়ে বিচারকে হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তা ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে হত্যাকাণ্ডের বীভৎসতা ছড়িয়ে পড়ছে, যা মানুষ অবচেতন মনে অনুকরণ করছে।’

যশোরের সাংস্কৃতিককর্মী অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু বলেন, গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে শহরে নীরব চাঁদাবাজি, হত্যাকাণ্ড, ছুরিকাঘাতের ঘটনা বেড়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে যশোরের মানুষ উদ্বিগ্ন। এ ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের যথাযথ ভূমিকা নেই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণে এসব ঘটনা ঘটছে। রাজনৈতিক দলগুলো কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অপরাধ এভাবে ক্রমাগত বাড়তে থাকলে যশোরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হবে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) যশোরের সভাপতি পাভেল চৌধুরী বলেন, যশোরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হলে পুলিশকে গণমুখী হতে হবে। রাজনৈতিক নেতাদেরও এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে।

যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাসার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থান থেকে যশোর অপরাধপ্রবণ এলাকা। এমনটি নয় যে, বর্তমান সময়েই হত্যাকাণ্ড, চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। আগেও ছিল, এখনো হচ্ছে। অধিকাংশ হচ্ছে পূর্বশত্রুতার জেরে। প্রতিটি ঘটনা আন্তরিকভাবে তদন্ত ও জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। পুলিশ তৎপর রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে রাজশাহীতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে রাজশাহীতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে রাজশাহীতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করি, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ করি—এই প্রতিপাদ্যে রাজশাহীতে সপ্তাহব্যাপী সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করেছে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জেলা শাখা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সোমবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সামনে লিফলেট বিতরণ ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সচেতনতার মাধ্যমেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে বাঁচতে বাড়ি ও অফিসের চারপাশে ফুলের টব, পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের প্যাকেট, পলিথিন, ফুড কনটেইনারসহ যেখানে পানি জমে থাকতে পারে, সেসব জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। এ ছাড়া নির্মাণাধীন ভবন, লিফটের গর্ত, ওয়াটার মিটারের গর্ত ও অন্যান্য স্থাপনাতেও যেন পানি জমে না থাকে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, যেকোনো পাত্রে জমে থাকা পানি তিন দিন পরপর পরিবর্তন করতে হবে। কেউ ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস ও ভাতের মাড় বেশি করে খেতে হবে। জ্বরে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। এ ছাড়া ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে রক্ষা পেতে দিন ও রাতে বিশ্রামের সময় মশারি ব্যবহারেরও আহ্বান জানান বক্তারা।

সমাবেশে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ খন্দকার মোহাম্মদ ফয়সাল আলম, ড্যাবের রাজশাহী শাখার সভাপতি ওয়াসিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার তারিক সাবুসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমেক হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান, ১০ জনের কারাদণ্ড

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন ও র‍্যাব। অভিযানে দালালি কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে ১০ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এবং জেলা প্রশাসন এই অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত। অভিযানে হাসপাতাল এলাকার দোকান, ওষুধের কাউন্টার, টেস্ট সেন্টার ও গেটের পাশ ঘিরে তল্লাশি চালানো হয়।

অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লা সদর উপজেলার কুচাইতলি এলাকার মো. সোহেল (৩০), মো. তাজুল ইসলাম, মো. নাছের (৩৬) ও মো. ইমন (২১), তেতৌয়ারা এলাকার মাহবুবুর রহমান (২৮), চরপাত্তি এলাকার মো. জাকির (৪৩), চাপাপুর গ্রামের মাহমুদ (৪০), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া এলাকার মো. আলাদিন, সদর দক্ষিণ উপজেলার রাজাপাড়া এলাকার মো. অপু (৩৪) এবং ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর আজিজ ফাজিলপুর এলাকার আব্দুল আজিজ।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্র সক্রিয় ছিল। র‍্যাবের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দালালদের কোনো স্থান নেই। এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে। জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও রোগী সুরক্ষার স্বার্থে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে নিয়মিত তদারকি করবে।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় দালাল চক্র এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্সচালক পর্যন্ত কেউ কেউ এ চক্রের প্রভাবে ছিল। রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে এসে বিভ্রান্ত হচ্ছেন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব অনিয়ম প্রতিরোধে র‍্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘রোগী ও তাঁদের স্বজনদের সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। হাসপাতাল এলাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এই অভিযান কেবল শুরু, ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযানে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কারাদণ্ড কার্যকরের জন্য কুমিল্লা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে দালালবিরোধী ব্যানার ও সচেতনতামূলক নোটিশ টানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই নিয়ে কাউকে ব্যবসা করতে দেব না: ছাত্রশিবির সভাপতি

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা এখনো লক্ষ করছি, জুলাইকে ব্যবহার করে একটা শ্রেণি তাদের নিজেদের আখের গোছানো, নিজেদের পকেট ভারী করা, নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ার নেশায় মত্ত হয়েছে। কিন্তু আমরা এই প্রজন্ম বিশ্বাস করি, আমরা বেঁচে থাকতে, আবু সাঈদের প্রজন্ম বেঁচে থাকতে কাউকে জুলাই নিয়ে ব্যবসা করতে দেব না।’

আজ সোমবার দুপুরে রংপুরের কারমাইকেল কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, ‘আবু সাঈদের যে স্বপ্ন, আবু সাঈদের পিতার যে স্বপ্ন, প্রত্যেক শহীদ পরিবারের যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন আমরাও আমাদের জীবন দিয়ে রক্ষা করব ইনশা আল্লাহ। এখনো যদি তুমি শহীদ পরিবারের কাছে যাও, তাদের কান্নাগুলো এখনো থামেনি। শহীদ পরিবারের মায়েরা এখনো কান্না করেন। এখনো তাঁদের সন্তানের জন্য তাঁরা আহাজারি করছেন।’

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা আবার আবু সাঈদেরা জেগে উঠব। আমরা প্রত্যেকেই শহীদের প্রজন্ম হিসেবে আবার জেগে উঠব, দাঁড়িয়ে যাব। কিন্তু এই সমাজে কোনো ধরনের জুলুমতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে দেব না। নতুন কোনো ফ্যাসিবাদকে আমরা এখানে কায়েম হতে দেব না।’

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস রাজনীতি নিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটা ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির জায়গা থেকে আমি ঘোষণা দিচ্ছি, কোনো হল দখলের রাজনীতি কোনো ক্যাম্পাসে চলবে না। কোনো ধরনের ফাও খাওয়া, ক্যানটিনগুলোতে ফাও খেয়ে খেয়ে অন্যদের ওপর সেটা চাপিয়ে দেওয়া, বোঝা চাপিয়ে দেওয়া—এই রাজনীতি বাংলাদেশে আর চলবে না। কাউকে গোলামতন্ত্রের মধ্য দিয়ে নিজের মিছিলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হবে—এ ধরনের রাজনীতি কোনো ক্যাম্পাসে চলবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় দিনে হুমকি, রাতে হামলা

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি 
যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্কুলের নৈশপ্রহরীর ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্কুলের নৈশপ্রহরীর ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার ঈশ্বরদীতে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্কুলের নৈশপ্রহরীর ওপর হামলা চালিয়েছে একদল বখাটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পাবনার ঈশ্বরদীতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার ছলিমপুরে মানিকনগর উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। এতে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী অংশ নেয়। বিক্ষোভ থেকে হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়। এ সময় বক্তব্য দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূর তরিকুল ইসলাম, সহকারী প্রধান শিক্ষক ওয়াসিম উদ্দিন, স্থানীয় বিএনপি নেতা আল্লেক প্রামাণিক, আলমগীর হোসেন, মোস্তাফা জামান নয়ন, বাবু মজুমদার প্রমুখ।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যাতায়াতের সময় স্থানীয় কিছু বখাটে উত্ত্যক্ত করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গত রোববার বিকেলে স্কুল ছুটির পর কয়েকজন বখাটে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে। তখন স্কুলের নৈশপ্রহরী শিহাব উদ্দিন তাদের বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়। পরে রাত ১২টার দিকে স্কুল মাঠে ডিউটিরত অবস্থায় ওই নৈশপ্রহরীর ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বখাটেরা। তাঁর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহত শিহাব উদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার পর সোমবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। দুপুরে তারা বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। এ সময় বক্তারা হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন কর্মচারী ছাত্রীদের সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন, এটা লজ্জাজনক। দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

এদিকে মানববন্ধনের খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক-অভিভাবকদের পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগপত্র পুলিশকে দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘নৈশপ্রহরীর ওপর হামলার ঘটনায় আমরা মর্মাহত। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’ এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক বিজন কুমার বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত