Ajker Patrika

এক যুগ পর বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচন, ইভিএমে ভোট গ্রহণে ধীর গতি

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৩, ১৩: ১৬
এক যুগ পর বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচন, ইভিএমে ভোট গ্রহণে ধীর গতি

নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসেন। সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোট গ্রহণ। সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ ভোট চললেও যশোরের বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচনে সব কেন্দ্রেই ভোট গ্রহণে ধীর গতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইভিএমে ভোটাররা ভোট দেওয়ার বিষয়টি বুঝতে না পারার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সকাল ৮টায় বেনাপোল বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন নুরজাহান বেগম (৪৫)। ভোটের লাইনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তিন ঘণ্টা। ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ১০টা পার হলেও তিনি ভোট দিতে পারেননি। ক্ষোভ প্রকাশ করে নুরজাহান বলেন, ‘তাড়াতাড়ি ভোট দিয়ে চলে যাওয়ার জন্য ঘরের কাজ ফেলে সকালেই এসেছিলাম। কিন্তু তিন ঘণ্টা রোদের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ভোট দিতে পারিনি। লাইন এগোচ্ছেই না।’

শুকুর আলী নামে আরেক ভোটার বলেন, ‘জীবনে প্রথম ইভিএম মেশিনে ভোট দেওয়ার জন্য আসলাম। তবে দীর্ঘ লাইন। ভোটের লাইন কমছে না। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে আমার চোখের সামনে মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছে ভোটাররা। তাই ভোট পরে দেব বলে চলে যাচ্ছি।’ 

ভবেরবেড় এলাকা থেকে ভোটকেন্দ্রে আসা তহমিনা খাতুন বলেন, ‘ইভিএমে ভোট দিতে ঝামেলা হয়েছিল। দুই মিনিট ধরে ভোট দিয়েছি। সঠিকভাবে না বোঝার কারণে এমনটি হয়েছে। ভোট দেওয়ার পরে দেখলাম সহজ।’

এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ চলছে। তবে ভোট গ্রহণে ধীর গতি। ভোটাররা কীভাবে ভোট দিতে হয় আমরা দেখিয়ে দিচ্ছি। তারপরও গোপন কক্ষে গিয়ে তিন-চারটা মেশিন দেখে ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া গুলিয়ে ফেলছেন। প্রথম দুই ঘণ্টায় ২০০ ভোটও পড়েনি। অথচ কেন্দ্রের বাইরে শত শত মানুষ অপেক্ষমাণ।’

এক যুগ পর বেনাপোল পৌরসভায় ভোট উৎসব আজ। ইভিএম পদ্ধতিতে পৌরসভার ১২টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। সীমানা জটিলতায় দীর্ঘদিন এ পৌরসভায় নির্বাচন বন্ধ ছিল। অনেক দিন পর ভোট হওয়ায় পৌরবাসীর মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও মডেল নির্বাচন করতে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাঠে থাকছে সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও। ফলে কাউন্সিলর ও মেয়র পদে প্রভাব দেখানোর সুযোগ নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইভিএমের কারণে ভোটগ্রহণে ধীর গতি লক্ষ্য করা গেছেনির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নৌকা প্রতীক, বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন মোবাইল ফোন প্রতীক ও জগ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ফারুক হোসেন উজ্জ্বল। তবে ভোট গ্রহণের দুই দিন আগে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ফারুক হোসেন।

নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের কোনো প্রার্থী নেই। ফলে মেয়র পদে ভোটের লড়াই এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাসির উদ্দীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুর রহমানের মধ্যে। তবে কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে কেন্দ্রে মোবাইল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কোনো পোলিং এজেন্ট নেই। এই প্রার্থীর অভিযোগ নৌকার প্রতীকের কর্মী সমর্থকেরা ভোটের আগে রাতে পোলিং এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। তাই তারা কেন্দ্রে আসেনি। এ বিষয়ে বেলা ১টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন। এ ছাড়া ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৪৭ জন প্রার্থী ও সংরক্ষিত আসনে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সকাল সাড়ে ৯টায় বেনাপোল বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নাসির উদ্দিন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ভোট উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। সব কেন্দ্রেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। দীর্ঘদিন পর ভোট হওয়াতে মানুষের মধ্যে উৎসব উদ্দীপনা কাজ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণ হওয়াতে অনেকের ভোট প্রদানে সমস্যা হচ্ছে। নিয়মকানুন না জানাতে ভোট দিতে সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যায় পড়ছেন কম লেখাপড়া জানা মানুষ ও বয়স্করা। যদিও আমরা প্রচারণাকালে ভোটারদের কীভাবে ভোট দিতে হয় সেটা দেখিয়ে দিয়েছি।’ 

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আনিচুর রহমান বলেন, ৯টি বিদ্যালয়ে ১২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। ইভিএমে ভোট দিতে পেরে ভোটাররা খুশি। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সব সময় উপস্থিত রয়েছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে ৮ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য রয়েছেন। তিন প্লাটুন র‍্যাব দুই প্লাটুন বিজিবির সঙ্গে মাঠে টহল দিচ্ছে। প্রতিটি বুথে বসানো হয়েছে একাধিক সিসি ক্যামেরা। যা রিটার্নিং কার্যালয় ও নির্বাচন কমিশন পর্যবেক্ষণ করছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে পুলিশ সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা নেই।

দেশের সবচেয়ে বড় বেনাপোল বন্দরে অবস্থিত বেনাপোল পৌরসভা। বন্দর থেকে সরকারের প্রতি বছর ৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। বাণিজ্যিক ও শিল্প খাতে এ বন্দরের ভূমিকা যেমন অপরিসীম, তেমনি প্রার্থীদের কাছে লোভনীয়। ভোটাররা দাবি করছেন, প্রত্যেক ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ঘরানার একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী। সে ক্ষেত্রে কাউন্সিলররা নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে ভোটারদের কেন্দ্রে আনার চেষ্টা করছেন। বিএনপি সমর্থকেরা কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার পর মেয়র পদে কাকে ভোট দেবেন সেটার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছুই। অনেকের ভাষ্য, যদি ব্যক্তি হিসেবে ভোট দেন সে ক্ষেত্রে এক ধরনের ফল। আর প্রতীক দেখে ভোট দিলে ফল হবে আরেক ধরনের। এ ছাড়া রয়েছে নতুন ভোটার। তারাও জয়-পরাজয় নির্ধারণে ভূমিকা রাখবেন বলে বন্দর নগরী জুড়ে রয়েছে আলোচনা এখন।

২০০৬ সালে বেনাপোল ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের অংশ নিয়ে বেনাপোল পৌরসভা গঠনের পর ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। সে নির্বাচনে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ওই পরিষদের মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও আর নির্বাচন হয়নি। প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভার নির্বাচন মামলার কারণে বন্ধ ছিল। বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচনে ৩০ হাজার ৩৮৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাশ্মীরের চিকিৎসক জঙ্গি সংগঠন জইশের সদস্য, হরিয়ানায় তাঁর বাসায় মিলল ৩ টন বিস্ফোরক

দিল্লি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে হরিয়ানায় ৩ টন বিস্ফোরক উদ্ধার, কিসের ইঙ্গিত

ছিন্নভিন্ন শরীর, হাত পড়ে আছে রাস্তায়—প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় দিল্লি বিস্ফোরণের বীভৎসতা

রাজধানীর সাত এলাকায় ১২ ককটেল বিস্ফোরণ, তিন গাড়িতে আগুন

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনা জেলা পরিষদ: কর্মকর্তার কক্ষে ‘হারানো’ নথি

  • এক বছরের বেশি সময় আগে নথি গায়েব হয়।
  • প্রশাসনিক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে উদ্ধার।
  • কর্মচারীরা আলমারিতে রেখেছে, দাবি কর্মকর্তার।
খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৩
এস এম মাহাবুবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
এস এম মাহাবুবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

এক বছরের বেশি সময় আগে খুলনা জেলা পরিষদ থেকে গায়েব হয়ে যাওয়া বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মাহাবুবুর রহমানের কক্ষ থেকে ৬টি নথি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী মো. সহিদুল ইসলাম।

এর আগে এসব নথির তথ্য চেয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের জেলা পরিষদ শাখার উপসচিবের কাছে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ২১ এপ্রিল সংস্থাটির খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে ওই চিঠি পাঠানো হয়।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন নথি গায়েব হয়ে যায়। এ ঘটনায় ৯ আগস্ট জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খুলনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি ও ১৭ আগস্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বাদী হয়ে একই থানায় অজ্ঞাতনামা ২০০-২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

এজাহারে বলা হয়, জুলাই আন্দোলনের সময় ২০০-২৫০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি জেলা পরিষদের প্রধান ফটক ভেঙে হামলা চালায়। এ সময় তারা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথিসহ বিভিন্ন মালপত্র পুড়িয়ে দিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। এ ছাড়া আসামিরা ১ কোটি ৮৯ লাখ ৫ হাজার ৩৬০ টাকার মালপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। তারা জেলা পরিষদ ভবনের প্রতিটি কক্ষে থাকা জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। এর মধ্যে চেকবই, চেক রেজিস্টার, ক্যাশবই, জমি ইজারা রেজিস্টার, অডিট রেজিস্টার, খেয়াঘাট রেজিস্টার, ব্যাংক হিসাব-সংক্রান্ত নথি প্রভৃতি রয়েছে।

এদিকে গত ২১ এপ্রিল ২০১৮-১৯ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন ও চলমান রয়েছে তার তালিকা ও বরাদ্দ করা নথির তথ্য চেয়ে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের জেলা পরিষদ শাখার উপসচিবের কাছে চিঠি দেয় দুদক। কিন্তু জেলা পরিষদ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয় যে, নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, প্রকৃতপক্ষে ২৮৪টি নথি পাওয়া গেলেও গুরুত্বপূর্ণ ৬টির হদিস মেলেনি। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তারের নেতৃত্বে এসব নথির খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। একপর্যায়ে এস এম মাহাবুবুর রহমানের কক্ষ থেকে সেগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে মাহাবুবুর রহমানের দাবি, ‘কিছু ফাইল কর্মচারীরা পেয়ে আমার আলমারিতে রেখেছিল। ওটা এমন কিছু না।’ এই নথিগুলো দুদক চেয়েছিল কি? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমার স্মরণে নেই।’

তাছলিমা আক্তার বলেন, ‘যে ফাইলগুলো পাওয়া গেছে, এগুলো ২১ এপ্রিল দুদক আমাদের কাছে চেয়েছিল। ৫ আগস্টের পর আমরা যে ফাইলগুলো বা নথি উদ্ধার করেছিলাম তার মধ্যে এগুলো ছিল না। এসব নথি উদ্ধারের বিষয়টি স্থানীয় সরকার ও দুদককে জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, মাহাবুবুর রহমানকে ইতিপূর্বে দুই দফায় নেত্রকোনা ও বগুড়া জেলা পরিষদে বদলি করা হয়। এর মধ্যে নেত্রকোনায় যোগদানের দুদিন পরেই ফের বদলির আদেশ নিয়ে খুলনায় ফেরেন। আর বগুড়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে যেতেই হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাশ্মীরের চিকিৎসক জঙ্গি সংগঠন জইশের সদস্য, হরিয়ানায় তাঁর বাসায় মিলল ৩ টন বিস্ফোরক

দিল্লি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে হরিয়ানায় ৩ টন বিস্ফোরক উদ্ধার, কিসের ইঙ্গিত

ছিন্নভিন্ন শরীর, হাত পড়ে আছে রাস্তায়—প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় দিল্লি বিস্ফোরণের বীভৎসতা

রাজধানীর সাত এলাকায় ১২ ককটেল বিস্ফোরণ, তিন গাড়িতে আগুন

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিলেট-আখাউড়া রেলপথ: রেলের জমিতে ঘর-খামার, উচ্ছেদের পর ফের দখল

  • মৌলভীবাজারে ৯ স্টেশনে প্রায় হাজার কোটি টাকার জমি দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা ও খামার করা হয়েছে।
  • মাঝেমধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও কয়েক দিন পর আবার সেগুলো বেদখল হয়।
  • দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: কর্মকর্তা
মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ০৭
রেলওয়ের জায়গা দখলে নিয়ে গড়ে তোলা বিভিন্ন স্থাপনা। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর রেলস্টেশনের পাশে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রেলওয়ের জায়গা দখলে নিয়ে গড়ে তোলা বিভিন্ন স্থাপনা। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর রেলস্টেশনের পাশে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিলেট-আখাউড়া রেলপথের মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়াসহ ৯টি স্টেশনে প্রায় হাজার কোটি টাকার জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা ও কৃষি খামার। স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে থাকা এসব সম্পত্তি উদ্ধারে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ। মাঝেমধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কয়েক দিন পর এগুলো আবার বেদখল হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দখল করা এসব জায়গা উদ্ধার করা প্রয়োজন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মৌলভীবাজারে সচল ও বন্ধ প্রায় ৯টি রেলস্টেশন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে শ্রীমঙ্গল, ভানুগাছ, শমশেরনগর ও কুলাউড়া স্টেশন সচল। জনগুরুত্বপূর্ণ এই ৪টি স্টেশনে রেলওয়ের প্রায় হাজার কোটি টাকার জায়গা রয়েছে। এসব স্টেশনের কিছু জায়গা রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ থেকে লিজ নিয়ে বেশির ভাগ জায়গা দখলের পর ভোগ করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সেসব জমিতে আধা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মনু, টিলাগাঁও, ভাটেরা, লংলা ও বরমচাল রেলস্টেশন দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। এসব স্টেশনের আশপাশে রেলওয়ের জায়গা দখল হয়ে আছে যুগ যুগ ধরে।

সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল, শমশেরনগর ও কুলাউড়া রেলস্টেশনে দেখা যায়, রেলওয়ের জায়গা দখল করে কেউ দোকান, কেউ আবার ঘর বানিয়ে ভাড়া দিয়েছে। কয়েকটি এলাকায় কৃষি খামার গড়ে তোলার দৃশ্যও দেখা গেছে।

রেলওয়ে বলছে, যারা রেলের জায়গা লিজ নিয়েছে, তাদের নিয়মিত নবায়ন করতে হয়। কেউ নবায়ন না করে তাদের লিজ অবৈধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নবায়ন করতে হলে খাজনা পরিশোধ করতে হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে কোনো লিজ দেয় না। রেলের যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে জায়গা ছাড়তে বাধ্য। এ ছাড়া আধা পাকা ও কৃষিজমিতে কোনো স্থাপনা তৈরি করা যাবে না।

স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, রেলের জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন ভোগ করে আসছে প্রভাবশালীরা। যারা দখল করে আছে, তারা বলেছে, ৯৯ বছরের জন্য রেলওয়ের কাছ থেকে লিজ নেওয়া হয়েছে। শমশেরনগর, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়ায় রেলস্টেশনের পাশে প্রতি শতক জমি ২০-২৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। অথচ এসব গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে রেলওয়ের অনেক জায়গা রয়েছে। এসব জায়গার বাজারমূল্য কয়েক হাজার কোটি টাকা। যত সময় যাচ্ছে, রেলের জায়গা তত বেশি দখল হচ্ছে।

শ্রীমঙ্গল শহরের বাসিন্দা রুহেল আহমেদ বলেন, শ্রীমঙ্গল স্টেশনে রেলওয়ের প্রচুর জায়গা রয়েছে। বেশির ভাগ জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণের পর ভাড়া দেওয়া হয়েছে। মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে জমি উদ্ধার করা হলেও কয়েক দিন পর আবার দখল হয়ে যায়।

শমশেরনগর বাজারের রাজিব আহমেদ বলেন, সিলেট বিভাগের মাঝে সবচেয়ে বেশি জায়গায় দাম শমশেরনগর বাজারের। এখানে প্রতি শতক জমি ৩০-৫০ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। শমশেরনগর বাজারে রেলের অনেক জায়গা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ভোগ করে আসছে একটি মহল। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান করতেও আসে না।

রেলওয়ের জায়গায় পাকা স্থাপন নির্মাণ করেছেন এমন একাধিক ব্যক্তি নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে লিজ নিয়ে জায়গা ভোগ করছি। এ জন্য পাকা স্থাপনা তৈরি করেছি।’

কুলাউড়া রেলস্টেশন মাস্টার রুমান আহমেদ ও শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘রেলওয়ের জায়গাগুলো আমাদের ভূসম্পত্তি বিভাগ থেকে দেখা হয়। তবে দখল করা জায়গাগুলো উদ্ধার হওয়া প্রয়োজন।’

বাংলাদেশ রেলওয়ের উপপরিচালক (ভূ-সম্পত্তি) কাজী ওয়ালি-উল হক বলেন, মৌলভীবাজারে যারা রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে আছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাশ্মীরের চিকিৎসক জঙ্গি সংগঠন জইশের সদস্য, হরিয়ানায় তাঁর বাসায় মিলল ৩ টন বিস্ফোরক

দিল্লি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে হরিয়ানায় ৩ টন বিস্ফোরক উদ্ধার, কিসের ইঙ্গিত

ছিন্নভিন্ন শরীর, হাত পড়ে আছে রাস্তায়—প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় দিল্লি বিস্ফোরণের বীভৎসতা

রাজধানীর সাত এলাকায় ১২ ককটেল বিস্ফোরণ, তিন গাড়িতে আগুন

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নাটোর-১ আসন: বিএনপির মনোনয়নে ভাই- বোনের কোন্দল

  • ভাই-বোনের দ্বন্দ্বে শরিক আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী।
  • প্রতিদিন সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন।
নাইমুর রহমান, নাটোর 
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৩
ফারজানা শারমিন পুতুল ও ইয়াসির আরশাদ রাজন। ছবি: সংগৃহীত
ফারজানা শারমিন পুতুল ও ইয়াসির আরশাদ রাজন। ছবি: সংগৃহীত

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রয়াত উপদেষ্টা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের কন্যা ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুল। তবে বোনের মনোনয়নে ক্ষুব্ধ পটলপুত্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজন। তিনি এই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

পুতুলের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে ভাই-বোনের এই মনোনয়ন দ্বন্দ্বে শরিক হয়েছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু। রাজন ও টিপুর অনুসারীদের অভিন্ন উদ্দেশ্য এখন রাজপথে। প্রতিদিন সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন টিপু-রাজনের অনুসারীরা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে লালপুর। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী পুতুলের পক্ষে কাজ করতে নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকে তা মানছেন না। এ নিয়ে বিভক্তি ও উদ্বেগ কাজ করছে বিএনপির কর্মীদের মধ্যে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন পুতুল-রাজনের মা কামরুন্নাহার শিরিন। ওই নির্বাচনের পর শারীরিক অসুস্থতার জন্য নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন তিনি। এতে পরিবারের থেকে রাজনীতির হাল ধরেন পুতুল। পুতলকে নেতা মেনেই আবর্তিত হয় স্থানীয় বিএনপির রাজনীতি। ২০২২ সালে বাগাতিপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে টিপুর অনুসারী শরিফুল ইসলাম লেলিন মেয়র নির্বাচিত হন। তখন থেকে এই আসনে পুতুল ও টিপুর অনুসারীদের গ্রুপিং সামনে আসে। পরের বছর লালপুর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলে পুতুলের ভাই রাজন আহ্বায়ক হন। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর হঠাৎ পুতুল ও রাজনের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। তখন থেকে তাঁরা পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন শুরু করেন।

এদিকে পরিবার থেকে আগামী নির্বাচনে কে মনোনয়ন চাইবে, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় ভাই-বোনের মধ্যে। চলতি বছর মা কামরুন্নাহার শিরিন মেয়ে পুতুলকে এই পরিবারের বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন। এ সিদ্ধান্ত না মেনে ছেলে রাজন পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন অব্যাহত রাখেন। এক মাস ধরে ভাই-বোন পৃথকভাবে মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করলেও বিএনপি সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করে পুতুলকে ৷ এর পর থেকে মহাসড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও বিক্ষোভ শুরু করেন রাজনের অনুসারীরা।

একই দাবিতে মাঠে নামে টিপু গ্রুপও। টিপু ও রাজন অনুসারীরা প্রায় প্রতিদিনই লালপুর উপজেলার কোনো না কোনো স্থানে সড়ক অবরোধ, রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

দুই উপজেলার বিএনপি কর্মীরা জানান, বিএনপি তিন ভাগ হওয়ায় তাঁরা অস্বস্তিতে পড়েছেন। এই অস্বস্তির সুযোগ নিয়ে মাঠের অবস্থান পোক্ত করছে জামায়াতে ইসলামী। লালপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব হারুনুর রশীদ পাপ্পু বলেন, ‘দল ফারজানা শারমিন পুতুলকে মনোনয়ন দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই কর্মীদের। তবু যাঁরা এটা করছেন, তাঁরা দলের সিদ্ধান্ত মানছেন না। তাঁদের কাজ করতে হবে পুতুলের পক্ষে।’

বাগাতিপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম লেলিন বলেন, ‘এই আসনের কর্মীরা ক্ষুব্ধ। পুতুলের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার মাত্র কয়েক বছরের। কিন্তু টিপু দলের দুঃসময়ের কান্ডারি হিসেবে হামলা, মামলা, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করছেন। তিনি মনোনয়নের যোগ্য ছিলেন। আমরা চাই চূড়ান্ত মনোনয়ন টিপুকে দিয়ে দল মূল্যায়ন করবে।’

এ ব্যাপারে ইয়াসির আরশাদ রাজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে তিনি বোনের প্রার্থী পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন। তিনি লেখেন, ‘সবাই একত্রিত ও ঐক্যবদ্ধ থাকুন। ধৈর্য ধারণ করুন। আমি আপনাদের ছেড়ে কোথাও যাব না।’

তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘আমার বিশ্বাস জন্মেছে, এই আসনের মানুষ আমার সঙ্গে আছে। আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করলেও বিজয়ী হব। মনোনয়ন এখনো চূড়ান্ত হয়নি। যদি মনোনয়ন পরিবর্তন না হয়, তবে আমার কর্মীরা আমার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে ওয়ার্ক শুরু করবে।’

ফারজানা শারমিন পুতুল বলেন, ‘এই আসনে মনোনয়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়। ভাই পেলে যেমন আমি তাঁর পক্ষে কাজ করতাম, তেমনি আমি পাওয়ায় ভাইও আমার পক্ষে কাজ করবেন বলে বিশ্বাস করি। এই আসন বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে দলকে উপহার দিতে পারব।’

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘দল করতে হলে শৃঙ্খলা ও সিদ্ধান্ত মানতে হবে। দলবিরোধী কর্মকাণ্ড বেশিক্ষণ সহ্য করা হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাশ্মীরের চিকিৎসক জঙ্গি সংগঠন জইশের সদস্য, হরিয়ানায় তাঁর বাসায় মিলল ৩ টন বিস্ফোরক

দিল্লি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে হরিয়ানায় ৩ টন বিস্ফোরক উদ্ধার, কিসের ইঙ্গিত

ছিন্নভিন্ন শরীর, হাত পড়ে আছে রাস্তায়—প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় দিল্লি বিস্ফোরণের বীভৎসতা

রাজধানীর সাত এলাকায় ১২ ককটেল বিস্ফোরণ, তিন গাড়িতে আগুন

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের ভারুয়াখালী: আট স্প্যানে আটকে রয়েছে সেতুর কাজ

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৩
ধীরগতিতে চলছে খুরুশকুল-ভারুয়াখালী সেতু নির্মাণের কাজ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধীরগতিতে চলছে খুরুশকুল-ভারুয়াখালী সেতু নির্মাণের কাজ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালী ইউনিয়নের সঙ্গে জেলা শহরের দূরত্ব ৯ কিলোমিটার। কিন্তু দীর্ঘকাল এই ইউনিয়নের বাসিন্দারা ৩৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে রামু উপজেলা হয়ে জেলা শহরে যাতায়াত করেন। এ পথে তাঁদের দুই-তিনবার যানবাহন বদল করতে হয়। সময় লাগে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা।

এই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের এ ভোগান্তি লাঘবে পাঁচ বছর আগে স্থানীয় জোয়ারি খালের ওপর শুরু হয়েছিল সেতু নির্মাণকাজ। দুই দফা কাজের মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ শেষ করা যায়নি। এতে জেলা শহরে দ্রুত যাতায়াতের জন্য মুমূর্ষু রোগী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার হচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সদর উপজেলার খুরুশকুল ও ভারুয়াখালী ইউনিয়নকে আলাদা করেছে জোয়ারি খাল। জোয়ার-ভাটার এ খালের কারণে দুই ইউনিয়নের মানুষকে জেলা শহরে ৩৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হয়। সেতুটি নির্মাণ করা হলে মাত্র ৯ কিলোমিটার পথে জেলা শহরে পৌঁছানো যাবে। সময় লাগবে ২০-৩০ মিনিট।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন পায় ৩৯২ মিটার দৈর্ঘ্যের ভারুয়াখালী-খুরুশকুল সেতু নির্মাণ প্রকল্প। দুই দফা দরপত্র আহ্বানের পর কাজ পায় তমা কনস্ট্রাকশন ও এমএ জাহের লিমিটেড (জেভি)। ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারি ৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয় এলজিইডির। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের শুরু থেকেই বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কক্সবাজার কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী আলী আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সেতুর দুই পাড়ে জমি অধিগ্রহণ এখনো সম্পন্ন করা যায়নি। এ ছাড়া সেতুর ডিজাইন বদল করা হয়েছে। পাশাপাশি গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে ঠিকাদার আত্মগোপনে রয়েছেন। এসব কারণে কাজে ধীরগতি।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর দুই পাশে আটটি স্প্যান নির্মাণ করা হয়েছে। তবে খালের মাঝে এখনো স্প্যানের কাজ হয়নি। এক প্রান্তে কাজ করছেন চার-পাঁচজন শ্রমিক। নির্মাণকাজের ধীরগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আনিসুর রহমান কথা বলতে রাজি হননি।

ভারুয়াখালী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান বলেন, সেতুর ঠিকাদার কুমিল্লা-৫ আসনের সাবেক এমপি এম এ জাহের। তিনি ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে যাওয়ার পর প্রকল্পে স্থবিরতা চলছে। যেভাবে কাজ হচ্ছে, তাতে আরও কয়েক বছর লেগে যাবে।

কক্সবাজার এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আলী আহসান বলেন, এ পর্যন্ত সেতুর ৬৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ১৩টি স্প্যানের মধ্যে আটটি শেষ হয়েছে। কাজের বিপরীতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে।

এলজিইডি কক্সবাজার কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাশ্মীরের চিকিৎসক জঙ্গি সংগঠন জইশের সদস্য, হরিয়ানায় তাঁর বাসায় মিলল ৩ টন বিস্ফোরক

দিল্লি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে হরিয়ানায় ৩ টন বিস্ফোরক উদ্ধার, কিসের ইঙ্গিত

ছিন্নভিন্ন শরীর, হাত পড়ে আছে রাস্তায়—প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় দিল্লি বিস্ফোরণের বীভৎসতা

রাজধানীর সাত এলাকায় ১২ ককটেল বিস্ফোরণ, তিন গাড়িতে আগুন

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত