Ajker Patrika

গবেষণার বই, বিক্রি দুটিই কম

শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
স্টলে পছন্দের বই খুঁজছে কয়েকজন কিশোর। গতকাল অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্টলে পছন্দের বই খুঁজছে কয়েকজন কিশোর। গতকাল অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: আজকের পত্রিকা

এবারের বইমেলায়ও হরেক বিষয় নিয়ে গবেষণা, পর্যালোচনাধর্মী নানা বই বের হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে গল্প ও উপন্যাসের একচেটিয়া প্রাধান্যে কিছুটা ভাগ বসিয়েছে গবেষণা, বিশ্লেষণসহ ভিন্ন স্বাদের মননশীল বই। এ ধরনের বইয়ের বিক্রি দিন দিন বাড়ছে। তবে প্রকাশক তথা বই ব্যবসায়ীদের মতে, এবার সার্বিকভাবে মেলায় বইয়ের বিক্রি বেশ কম। সংগত কারণে গবেষণাধর্মী বইয়ের কাটতিও প্রত্যাশা অনুযায়ী নয়।

মূলত নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বাংলাদেশের সমবয়সী। যুদ্ধাহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দেওয়া যুদ্ধকালীন চিকিৎসা কেন্দ্র ‘বাংলাদেশ হাসপাতাল’ থেকেই আজকের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্ম। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে সাধারণ মানুষের দ্বারে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার ধারণা ও চর্চা শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের এই সূচনা ও বিকাশ নিয়ে লেখা হয়েছে বই ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গল্প: পাবলিক হেলথের প্রথম পাঠ’। ইউপিএল প্রকাশিত বইটি লিখেছেন মোশতাক আহমদ।

লে. জে. (অব.) কামাল মতিনউদ্দীন ছিলেন একজন পাকিস্তানি জেনারেল, কূটনীতিক ও সামরিক ইতিহাসবিদ। পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিভক্তি তথা পূর্ব পাকিস্তানে (আজকের বাংলাদেশ) পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর পতনের কারণ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ও গবেষণালব্ধ তথ্য নিয়ে ‘ট্র্যাজেডি অব এররস্: পূর্ব পাকিস্তান সংকট’ নামে বই লিখেছেন তিনি। রাবেয়া বুকস বের করেছে বইটির ভাষান্তর। অনুবাদ করেছেন ড. ফারুক হোসেন।

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তীকালে দেশের অর্থনৈতিক সংস্কার কী ধরনের হতে পারে, বিরূপাক্ষ পাল তা তুলে ধরেছেন ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির সংস্কার’ নামের বইয়ে। প্রকাশ করেছে আদর্শ।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকদের সময়ে পূর্ব বাংলার শিল্প খাত নিয়ে ড. সায়ীদ ওয়াকিলের গবেষণাধর্মী বই ‘ব্রিটিশ আমলে পূর্ব-বাংলায় স্থাপিত শিল্প-কারখানা: আর্থ-সামাজিক ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা’ এনেছে দিব্য প্রকাশ। সাদিকুর রহমানের ‘মধ্যযুগে বাংলার অর্থনীতি’ বের করেছে কথাপ্রকাশ।

ঢাকার পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতি, ইতিহাস নিয়ে সাহিত্য প্রকাশ এনেছে ‘নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য’। লিখেছেন জেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি।

বইমেলার শেষ দিকে সাধারণত ভিড় ও কেনাকাটা দুটিই বাড়ে। তবে অমর একুশের আগের দিন গতকাল বৃহস্পতিবার মেলায় আশানুরূপ ভিড় হয়নি। বেশির ভাগ মানুষ দৃশ্যত নিছক বেড়াতে এসেছিলেন। তাঁদের অনেকেই ব্যস্ত ছিলেন ছবি তোলায়।

প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা জানিয়েছেন, বিক্রিতে চলছে মন্দা। সব ধরনের বইয়ের ক্ষেত্রেই। পলল প্রকাশনীর কর্ণধার খান মাহবুব বলেন, ‘অতীতের তুলনায় এবার বইয়ের বিক্রি নিম্নগামী। মেলা বাজারে পরিণত হয়েছে। হকাররা নানাভাবে ঢুকে পড়ছে মেলায়।’

সাহিত্য প্রকাশের বিক্রয় নির্বাহী রথীন দাস বললেন, ‘বাংলা একাডেমির বইমেলা শুরু হওয়ার পর থেকে সবগুলো মেলায় অংশগ্রহণ করছি। গত কয়েক দশকে বেচাকেনায় এমন মন্দা দেখিনি। কোভিডের সময়ও এমন হয়নি।’

বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, মেলায় গতকাল পর্যন্ত গবেষণাধর্মী বই বের হয়েছে ৩৮টি।

নতুন বইয়ের খোঁজে

বিভিন্ন দেশের বিচিত্র ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ-নিবন্ধের সংকলন ‘ইতিহাসের পথে পথে’। জ্ঞানকোষ প্রকাশনী থেকে বের হওয়া বইটি লিখেছেন মাহমুদুর রহমান।

কথাসাহিত্যিক আহমদ মোস্তফা কামালের একগুচ্ছ উপন্যাসের বই ‘উপন্যাস সংগ্রহ’ বের করেছে কথাপ্রকাশ।

ঐতিহ্য থেকে বের হয়েছে মোহাইমিন পাটোয়ারীর ‘শোষণ মুক্তির অর্থনীতি’। লেখক এতে গল্পের ছলে বিশ্বের নানা দেশের উত্থান-পতনের রহস্য এবং বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক কাঠামোগুলো বিশ্লেষণ করেছেন।

গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ১১২টি। শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট নতুন বইয়ের সংখ্যা ১৯০৫।

আয়োজন মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘উপন্যাস, ঔপন্যাসিক ও রশীদ করীমের

উপন্যাসবীক্ষা: কয়েকটি প্রসঙ্গ’ শীর্ষক আলোচনা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হামীম কামরুল হক। আলোচনায় অংশ নেন অনিরুদ্ধ কাহালি এবং সাখাওয়াত টিপু। সভাপতিত্ব করেন সুব্রত বড়ুয়া।

হামীম কামরুল হক বলেন, রশীদ করীম প্রথমত ও প্রধানত একজন ঔপন্যাসিক। তাঁর উপন্যাসে মধ্যবিত্ত মানসের দ্বিধান্বিত ও অন্তর্দ্বন্দ্বময় আত্মস্বরূপের উন্মোচন ঘটেছে। ঔপন্যাসিক হিসেবে তিনি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রবণতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

সভাপতির বক্তব্যে সুব্রত বড়ুয়া বলেন, রশীদ করীম আমাদের বাংলা সাহিত্যের একজন সার্থক ঔপন্যাসিক। তাঁর সাহিত্য ও সাহিত্যচিন্তা নিয়ে গভীর গবেষণা প্রয়োজন।

‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন শাহাবুদ্দীন নাগরী ও ইমরান মাহফুজ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মো. সোলায়মান চৌধুরী, লেলিনা আক্তার, শাহীন রিজভী, মো. আশরাফুল হক, তাজ ইসলাম, আলতাফ হোসাইন রানা, চঞ্চল শাহরিয়ার, জুবায়ের আন নায়েম ও আউয়াল খোন্দকার। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী এস এম শাহনুর, এম এ কুদ্দুস, কামরুন নেসা চৌধুরী ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা।

আজ শুক্রবার ভাষাশহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বইমেলা শুরু হবে সকাল ৭টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ৮টায় মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। সভাপতিত্ব করবেন কবি হাসান হাফিজ। বিকেল ৪টায় রয়েছে অমর একুশে বক্তৃতা ২০২৫। স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম। অমর একুশে বক্তব্য দেবেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত