Ajker Patrika

দিয়াবাড়ির কাশবনে নারীর লাশ: হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন দাবি পুলিশের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বীথি আক্তার বিলকিস হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন। ছবি: সংগৃহীত
বীথি আক্তার বিলকিস হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন। ছবি: সংগৃহীত

স্বামী বাবুল মিয়ার ঋণের বোঝার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্যকলহ লেগেছিল স্ত্রী বীথি আক্তার বিলকিসের সঙ্গে। সেই কলহ থেকে মুক্তি পেতে বাবুল মিয়া স্ত্রীকে হত্যা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাড়া করা তিন বন্ধুকে নিয়ে বিলকিসকে শ্বাসরোধে হত্যার পর রাজধানীর উত্তরার ১৭ নম্বর সেক্টরের কাশবনে মরদেহ ফেলে রাখেন তিনি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের ডিসি মো. মুহিদুল ইসলাম।

এর আগে, ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে উত্তরা রাজউকের ১৭ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠসংলগ্ন কাশবন থেকে বিলকিসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মো. মুহিদুল ইসলাম বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাবুল মিয়া এবং তাঁর সহযোগী সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে বাবুল এবং মিরপুর-১২-এর কালাপানি এলাকা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।

পুলিশ জানায়, ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন বীথি আক্তার। তাঁর মা মনোয়ারা বেগম ক্যান্টনমেন্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। চার দিন পর ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে উত্তরা রাজউকের ১৭ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠসংলগ্ন কাশবন থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মনোয়ারা বেগম মরদেহটি শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় তুরাগ থানায় হত্যা মামলা হয়। তদন্তে চারজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাঁদের মধ্যে দুজন এখনো পলাতক।

ডিসি মুহিদুল ইসলাম বলেন, বাবুল ও তাঁর স্ত্রী বীথির মধ্যে ছয় বছর ধরে দাম্পত্যকলহ চলছিল। বাবুল রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার একটি ওয়ার্কশপ মেকানিক হিসেবে কাজ করেন। মাসে প্রায় ৩১ হাজার টাকা বেতন পেতেন তিনি। তবে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার ঋণের সুদ শোধ করতেই তাঁর আয় চলে যেত। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।

বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মুহিদুল ইসলাম জানান, পাওনাদারদের চাপের কারণে বাবুলের স্ত্রী ঠিকমতো ঘুমাতে বা খেতে পারতেন না এবং এ নিয়ে তিনি প্রায়ই বকাঝকা করতেন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভাই বা অন্য কারও কাছে টাকা দেওয়ার সন্দেহও ছিল। এতে তাঁদের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। দু-তিন মাস আগে বাবুল স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সম্রাটসহ আরও দুজনকে ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে হত্যার কাজে ভাড়া করেন। হত্যার পর সম্রাটকে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও স্বল্প বেতনের কারণে কিস্তিতে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

পুলিশ বলছে, মামলার বাকি দুই আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত