Ajker Patrika

ইন্টারনেট বন্ধের মূল হোতাদের দিয়েই তদন্ত কমিটি, মুঠোফোন গ্রাহক সমিতির অভিযোগ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৪, ২১: ২৪
ইন্টারনেট বন্ধের মূল হোতাদের দিয়েই তদন্ত কমিটি, মুঠোফোন গ্রাহক সমিতির অভিযোগ 

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের নিয়েই এ বিষয়ক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘ইন্টারনেট বন্ধের কারণ ও বিটিআরসি দুর্নীতি-অনিয়ম’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সাব মেরিন কেবলের চেয়ারম্যান, টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ও কমিশনারেরা। অথচ সচিবের পরামর্শে অতিরিক্ত সচিবের সমন্বয়ে ইন্টারনেট বন্ধের কারণ খুঁজতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে যেসব ব্যক্তি বিশেষ করে জুনাইদ আহমেদ পলক, মেজর জেনারেল জিয়াউল হাসান এবং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যারা এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের প্রত্যেককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিটিআরসিতে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-সামিট গ্রুপের শেয়ার ট্রান্সফারের নামে ৫ শতাংশ হারে প্রায় ১০ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় রাজস্ব বঞ্চিত করেছে বিটিআরসির চেয়ারম্যান। কিন্তু অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঠিকই রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। এসও (সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল) ফান্ডের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। 

বিটিআরসিতে এখনো প্রায় ২৪ জন দুর্নীতিবাজ এবং সিণ্ডিকেটের কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত আছেন। চেয়ারম্যান, কমিশনার এবং এসব কর্মকর্তাদের দ্রুত অপসারণ করে শাস্তির আওতায় না আনলে বিটিআরসি সংস্কার হবে না। আইসিটি মন্ত্রণালয়ে ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়ম তদন্তে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি করা জরুরী বলে মনে করে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, হযবরল কমিটি দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে জাতির সঙ্গে পরিহাস করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইন্টারনেট বন্ধের মূল তদন্ত করতে জাতীয় পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন জরুরি এবং যারাই এর সঙ্গে যুক্ত তাদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘ইন্টারনেট বন্ধের ফলে গুজব আরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন্টারনেট আমাদের মৌলিক অধিকার। যা বন্ধ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে সরকার।’ ভবিষ্যতে যাতে আর ইন্টারনেট বন্ধ না হয় তিনি এই আহ্বান জানান।

প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান খালিদ আবু নাসের বলেন, ওটিটি ব্যবসাকে বন্ধ করে আকাশ এবং সেট টপ ব্যবসা শত শত কোটি টাকা লুটপাট করেছে। যা সম্পূর্ণভাবে প্রতিযোগিতা কমিশন আইনের লঙ্ঘন। তিনি এ ব্যাপারে প্রতিযোগিতা কমিশনকে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভির হাসান জোহা বলেন, গুজব যেমন আগেও হয়েছে এখনো হচ্ছে। বর্তমান সরকারের উচিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফ্যাক্ট চেক করা। যাতে করে প্রকৃত তথ্য জানা এবং বোঝা যায়। সাইবার নিরাপত্তার চরম হুমকিতে আছে বাংলাদেশ। তাই দ্রুত সাইবার নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সংগঠনের প্রযুক্তিবিদ প্রকৌশলী আবু সালেহ আহমেদ বলেন, আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠানের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে। দলীয়করণের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সাইবার সিকিউরিটি আইন বাতিল করা, বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং কমিশনারদের আইনের আওতায় আনা, বিটিআরসিকে স্বাধীন সার্বভৌম প্রতিষ্ঠা হিসেবে কাজ করতে দেওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

পাকিস্তানে হামলায় ‘লোইটারিং মিউনিশনস’ ব্যবহারের দাবি ভারতের, এটি কীভাবে কাজ করে

নিজ কার্যালয়ে র‍্যাব কর্মকর্তার গুলিবিদ্ধ লাশ, পাশে চিরকুট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত