নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা
ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা। সুলভে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির আগারগাঁও কেন্দ্র থেকে ২ কেজি মাংস ও আধা কেজি দুধ কিনেছেন। এসব কেনার পেছনেও একটা লড়াই আছে ৷টিসিবি বা সুলভে পণ্য বিক্রি করা ট্রাকগুলোর পেছনের সেই লড়াই সবারই জানা। কিন্তু এই বৃদ্ধার লড়াইয়ের গল্পটা অন্য।
শুক্রবার বেলা তখন ১১টা বেজে ৪৫ মিনিট। বৈশাখের কড়া রোদ কেবল সর্বশক্তি নিয়ে আঁচ দিতে শুরু করেছে। এমন সময় এই নারী এলেন বিক্রয় কেন্দ্রে ৷নিজের বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই মানুষ কতটা কষ্ট করে যে এই পর্যন্ত এসেছেন, সেটা বোঝা গেল তাঁর কথা শুনে। ক্লান্তি আর দুর্বলতায় তাঁর কণ্ঠস্বর এতটাই ক্ষীণ যে, তিনবার বলার পর বোঝা গেল আসলে তিনি কী কিনতে চান।
এক সময় ক্লান্তির সঙ্গে যুদ্ধ করে পেরে উঠলেন। অর্ডারও করলেন। কিন্তু অর্ডার শেষে সরে গিয়ে যে অন্যকে জায়গা করে দেবেন, সেদিকে খেয়াল নেই। খেয়াল হতে কোনো রকম সরে দাঁড়ালেন। সময় লাগল বেশ। কিন্তু সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিলেন না। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দুই হাঁটু ফুটপাতের সঙ্গে ঠেসে ধরে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করছেন। শরীর কাঁপছে।
বয়স্ক এই মানুষের মুখের দিকে তাকালে চোখে পড়বে আত্মবিশ্বাস, যা তাঁর কোঁচকানো চামড়ার ভেতর থেকে এখনো উঁকি দিচ্ছে। আলাপ শুরুর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হলো প্রথম দফা। ‘বাড়িতে আর কেউ নেই বলে আপনি এসেছেন এসব নিতে?’ প্রশ্নের জবাবে, চোখে চোখ রেখে নির্লিপ্ত উত্তর, ‘এক ছেলে আছে।’ এর মধ্যেই তাঁর ডাক পড়ল অর্ডার করা পণ্য বুঝে নেওয়ার জন্য।
পণ্যগুলো নিয়ে এমন দুর্বল শরীরেও যতটা দ্রুত পারা যায় পণ্য নিয়ে হেঁটে এসে রাখলেন ফুটপাতের ওপর। তার পর কয়েক মিনিট এক দৃষ্টিতে সাড়ে তিন কেজি ব্যাগের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। যেন এক বিশাল বোঝা পাশে নিয়ে বসে আছেন ধু ধু প্রান্তরে।
রিকশা ডাকতে হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি আবার মুখ তুলে তাকালেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার বাড়ি কোথায়?’
এবার আর তাঁর মাঝে সেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ দেখা গেল না। লজ্জাবনত মুখে, কান্না চাপা কণ্ঠে জানালেন, ‘না, লাগবে না।’ আঙুল তুলে দেখিয়ে বললেন, ‘ওই যে ওই দিকে পানির ট্যাংক, ওখানেই আমার বাসা।’ বোঝা গেল, খুব বেশি দূরে না হওয়ায় হেঁটেই যাওয়া মনস্থির করেছেন হয়তো।
তার পর কিছুক্ষণ চুপ থেকে ডুকরে কেঁদে উঠে বললেন, ‘ছেলেটা আমার সঙ্গে থাকে না।’ এর পর আরও কিছু কথা বললেন অবশ্য। কিন্তু কান্নায় তা মিলিয়ে গেল। তাই বোঝা গেল না। ফের প্রশ্ন করে তাঁকে পীড়া দেওয়ার ইচ্ছাও হলো না। নিমেষেই চোখ মুছে, লুকিয়ে ফেললেন অবাধ্য আবেগ ও কষ্ট। হয়তো, এসব নিয়ে বহু বছর নিজের সঙ্গে নিজেই লুকোচুরি খেলছেন তিনি। ঘটনার আকস্মিকতা তো সেটাই ইঙ্গিত করে অন্তত।
কথার ফাঁকে একবার তাঁর নাম জিজ্ঞেস করলে মাথা নিচু করে চুপ করে ছিলেন। এই মাথা নুয়ে নীরবতার মানেও খুব স্পষ্ট। কান্না চেপে রাখার মতোই বিব্রতকর। তাই তাঁর বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
আলাপ এগোল না আর। ওই নারী তখন বসে আছেন সেই সদ্য কেনা পণ্যভর্তি ব্যাগের দিকে অপলক দৃষ্টি মেলে। তাঁর এই দৃষ্টি অনেকগুলো প্রশ্ন সামনে আনছে। এই আড়াই কেজির ব্যাগটার ওজন আসলে কত? এই ব্যাগে কি শুধু সদ্য কেনা আড়াই কেজি ওজনের পণ্যগুলোই রয়েছে, নাকি আছে তাঁর তাবৎ অক্ষমতা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব? এই ব্যাগের ওজন তাঁর বুকে লুকানো সব কষ্টের চেয়েও কি বেশি? না কি লুকানো সেই সব কষ্ট এসে ভর করেছে এই ব্যাগে?
ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা। সুলভে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির আগারগাঁও কেন্দ্র থেকে ২ কেজি মাংস ও আধা কেজি দুধ কিনেছেন। এসব কেনার পেছনেও একটা লড়াই আছে ৷টিসিবি বা সুলভে পণ্য বিক্রি করা ট্রাকগুলোর পেছনের সেই লড়াই সবারই জানা। কিন্তু এই বৃদ্ধার লড়াইয়ের গল্পটা অন্য।
শুক্রবার বেলা তখন ১১টা বেজে ৪৫ মিনিট। বৈশাখের কড়া রোদ কেবল সর্বশক্তি নিয়ে আঁচ দিতে শুরু করেছে। এমন সময় এই নারী এলেন বিক্রয় কেন্দ্রে ৷নিজের বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই মানুষ কতটা কষ্ট করে যে এই পর্যন্ত এসেছেন, সেটা বোঝা গেল তাঁর কথা শুনে। ক্লান্তি আর দুর্বলতায় তাঁর কণ্ঠস্বর এতটাই ক্ষীণ যে, তিনবার বলার পর বোঝা গেল আসলে তিনি কী কিনতে চান।
এক সময় ক্লান্তির সঙ্গে যুদ্ধ করে পেরে উঠলেন। অর্ডারও করলেন। কিন্তু অর্ডার শেষে সরে গিয়ে যে অন্যকে জায়গা করে দেবেন, সেদিকে খেয়াল নেই। খেয়াল হতে কোনো রকম সরে দাঁড়ালেন। সময় লাগল বেশ। কিন্তু সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিলেন না। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দুই হাঁটু ফুটপাতের সঙ্গে ঠেসে ধরে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করছেন। শরীর কাঁপছে।
বয়স্ক এই মানুষের মুখের দিকে তাকালে চোখে পড়বে আত্মবিশ্বাস, যা তাঁর কোঁচকানো চামড়ার ভেতর থেকে এখনো উঁকি দিচ্ছে। আলাপ শুরুর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হলো প্রথম দফা। ‘বাড়িতে আর কেউ নেই বলে আপনি এসেছেন এসব নিতে?’ প্রশ্নের জবাবে, চোখে চোখ রেখে নির্লিপ্ত উত্তর, ‘এক ছেলে আছে।’ এর মধ্যেই তাঁর ডাক পড়ল অর্ডার করা পণ্য বুঝে নেওয়ার জন্য।
পণ্যগুলো নিয়ে এমন দুর্বল শরীরেও যতটা দ্রুত পারা যায় পণ্য নিয়ে হেঁটে এসে রাখলেন ফুটপাতের ওপর। তার পর কয়েক মিনিট এক দৃষ্টিতে সাড়ে তিন কেজি ব্যাগের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। যেন এক বিশাল বোঝা পাশে নিয়ে বসে আছেন ধু ধু প্রান্তরে।
রিকশা ডাকতে হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি আবার মুখ তুলে তাকালেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার বাড়ি কোথায়?’
এবার আর তাঁর মাঝে সেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ দেখা গেল না। লজ্জাবনত মুখে, কান্না চাপা কণ্ঠে জানালেন, ‘না, লাগবে না।’ আঙুল তুলে দেখিয়ে বললেন, ‘ওই যে ওই দিকে পানির ট্যাংক, ওখানেই আমার বাসা।’ বোঝা গেল, খুব বেশি দূরে না হওয়ায় হেঁটেই যাওয়া মনস্থির করেছেন হয়তো।
তার পর কিছুক্ষণ চুপ থেকে ডুকরে কেঁদে উঠে বললেন, ‘ছেলেটা আমার সঙ্গে থাকে না।’ এর পর আরও কিছু কথা বললেন অবশ্য। কিন্তু কান্নায় তা মিলিয়ে গেল। তাই বোঝা গেল না। ফের প্রশ্ন করে তাঁকে পীড়া দেওয়ার ইচ্ছাও হলো না। নিমেষেই চোখ মুছে, লুকিয়ে ফেললেন অবাধ্য আবেগ ও কষ্ট। হয়তো, এসব নিয়ে বহু বছর নিজের সঙ্গে নিজেই লুকোচুরি খেলছেন তিনি। ঘটনার আকস্মিকতা তো সেটাই ইঙ্গিত করে অন্তত।
কথার ফাঁকে একবার তাঁর নাম জিজ্ঞেস করলে মাথা নিচু করে চুপ করে ছিলেন। এই মাথা নুয়ে নীরবতার মানেও খুব স্পষ্ট। কান্না চেপে রাখার মতোই বিব্রতকর। তাই তাঁর বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
আলাপ এগোল না আর। ওই নারী তখন বসে আছেন সেই সদ্য কেনা পণ্যভর্তি ব্যাগের দিকে অপলক দৃষ্টি মেলে। তাঁর এই দৃষ্টি অনেকগুলো প্রশ্ন সামনে আনছে। এই আড়াই কেজির ব্যাগটার ওজন আসলে কত? এই ব্যাগে কি শুধু সদ্য কেনা আড়াই কেজি ওজনের পণ্যগুলোই রয়েছে, নাকি আছে তাঁর তাবৎ অক্ষমতা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব? এই ব্যাগের ওজন তাঁর বুকে লুকানো সব কষ্টের চেয়েও কি বেশি? না কি লুকানো সেই সব কষ্ট এসে ভর করেছে এই ব্যাগে?
টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পদ্মা নদীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল ডুবে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের সাড়ে ৬ হাজার পরিবার। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরের নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমি ও চলাচলের রাস্তা ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে রামকৃষ্ণপুর
৬ মিনিট আগেরংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে শ্বশুর রূপলাল দাস (৪৫) ও জামাই প্রদীপ লালের (৩৫) প্রাণহানির পেছনে আইনশৃঙ্খলাহীনতাকে দুষছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা বলছেন, গত কয়েক দিনের চুরি, ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট অপরাধের কারণে স্থানীয় জনতার ভেতর মবের মনোভাব তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশও সেভাবে তৎপর নয়। এসব কারণেই শ্
১৩ মিনিট আগেশেরপুরের গারো পাহাড়ে মানুষের বিচরণ বাড়ার পাশাপাশি কমতে শুরু করেছে বন-জঙ্গল। এতে সেখানে বন্য হাতির জীবন সংকটে পড়েছে। প্রায়ই নানা ঘটনায় প্রাণ হারিয়ে গারো পাহাড় থেকে বিলুপ্তের পথে বিশালাকৃতির এই প্রাণী। এদিকে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্বে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষও। গত ৩০ বছরে শেরপুরে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্বে জেলায়
১৮ মিনিট আগে২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর একনেক সভায় পাস হয় যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের ৪৭ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প। ৪ হাজার ১৮৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার এ প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারিত হয় ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ ও মূল্য।
২২ মিনিট আগে