Ajker Patrika

প্রতিবাদের মুখে শিবিরের প্রদর্শনী থেকে সরানো হলো দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ১৩
আজ মঙ্গলবার টিএসসিতে ইসলামী ছাত্রশিবির গণহত্যাকারী রাজাকারদের ছবি প্রদর্শন করে। ছবি: সংগৃহীত
আজ মঙ্গলবার টিএসসিতে ইসলামী ছাত্রশিবির গণহত্যাকারী রাজাকারদের ছবি প্রদর্শন করে। ছবি: সংগৃহীত

সাধারণ শিক্ষার্থী, কয়েকটি বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের ক্ষোভ ও দাবির মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র-টিএসসি চত্বরে আয়োজিত ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রদর্শনী থেকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিদের ছবি সরিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে ছবিগুলো সরিয়ে দেওয়া হয়।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘৩৬ জুলাই: আমরা থামব না’ শীর্ষক কর্মসূচির অংশ হিসেবে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ড’ শিরোনামের এই প্রদর্শনীতে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, শুরা সদস্য মীর কাসেম আলী, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ছবি স্থান পায়।

বিগত আওয়ামী লীগের আমলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তাঁদের মধ্যে ছয়জন মৃত্যুদণ্ডে এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। সাঈদী কারাগারে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন। অপর ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার টিএসসিতে প্রদর্শনীতে এই সাতজনের ছবি স্থান পাওয়ায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তাঁরা প্রদর্শনীর কাছে গিয়ে এসব ছবি রাখার প্রতিবাদ জানান, বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাঁরা ছবিগুলো সরানোর দাবি জানান। এ সময় ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরাও পাল্টা স্লোগান দেন। এসব ছবি রাখা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক শুরু হয়।

খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা টিএসসিতে যান। সাধারণ শিক্ষার্থী ও বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর দাবির মুখে তাঁরা বলেন, এসব ছবির বিষয়ে তাঁরা অবগত নন। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ওই সাতজনের ছবি সরিয়ে দেন।

বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে এসব ছবি স্থান দেওয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, টিএসসি চত্বরে এসব ব্যক্তির ছবি টাঙিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাসের প্রতি অবমাননা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন দ্বিমুখী নীতি নিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সামি আবদুল্লাহ বলেন, শিবির ‘৭১ বনাম জুলাই দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আনামুল হাসান অনয় বলেন, যারা ‘৭১, ’৯০ কিংবা ২০২৪-এ পরাজিত হয়েছে, তারা ফিরে আসতে চাইলে ঢাবির ছাত্রসমাজ আজকের মতোই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

তবে ছাত্রশিবির বলছে, তারা মনে করে, প্রদর্শনীতে যাঁদের ছবি ছিল, তাঁরা ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ডের শিকার’। ঢাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন খান বলেন, শাহবাগ থেকে যে ফ্যাসিবাদের উত্থান হয়েছিল, তা জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান পর্বে পরাজিত হয়েছে। যে বিচারপ্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত ছিল, তাতে যাঁরা শিকার হয়েছেন, তাঁরাও ফ্যাসিবাদের শিকার।

ছবি প্রদর্শনের প্রতিবাদে রাত ৯টার দিকে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে মিছিল করে। একই সময়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পৃথক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যোগাযোগব্যবস্থা ‘গলার কাঁটা’দিন দিন কমছে পর্যটকও

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
প্রায়ই যানজট লেগে থাকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। নষ্ট হয় অনেক মূল্যবান সময়। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ অংশে। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রায়ই যানজট লেগে থাকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। নষ্ট হয় অনেক মূল্যবান সময়। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ অংশে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজার জেলায় প্রায় ২২ লাখ মানুষের বাস। পাশাপাশি রয়েছে লাখো পর্যটকের চাপ। তবে স্থানীয় বাসিন্দা এবং এসব পর্যটকের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলার যোগাযোগব্যবস্থা। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, রেলের তীব্র টিকিট সংকট ও শমশেরনগর বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যোগাযোগব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় এ মৌসুমে পর্যটক কম এসেছে বিগত সময়ের তুলনায়।

জানা গেছে, মৌলভীবাজারের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগের মাধ্যম রয়েছে তিনটি। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সড়ক ও রেলপথ। গত এক বছর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ধীরগতির কাজ হওয়ার কারণে বেশির ভাগ সময়ে তীব্র যানজট লেগেই থাকে সড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে। ৫ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে অনেক সময় লাগে ১০-১৫ ঘণ্টা। এমন ঘটনাও আছে, তীব্র যানজটে পড়ে বিদেশযাত্রীরা বিমানের ফ্লাইট ধরতে পারেননি। অনেক সময় মুমূর্ষু রোগী দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে থেকে পথেই মারা গেছেন।

সড়ক পথে যখন তীব্র যানজট—এই অবস্থায় ট্রেনের টিকিট যেন অমাবস্যার চাঁদ। সিলেট-আখাউড়া রেলপথ ব্রিটিশ আমলের তৈরি। এই পথের অতি গুরুত্বপূর্ণ চারটি স্টেশন হলো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, ভানুগাছ ও শমশেরনগর।

স্টেশনগুলো পর্যটকের যাতায়াতের অন্যতম স্থান। জেলায় বছরে লাখো পর্যটক আসা-যাওয়া করেন এই পথে। তবে রেলস্টেশনগুলোয় ট্রেনের টিকিট সাধারণ যাত্রীরা কোনো অবস্থায় পান না। অভিযোগ রয়েছে, সব টিকিট অনলাইনে আসার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে গায়েব হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে চলছে এ সংকট। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পর্যটক ও স্থানীয়দের।

এ জেলায় শমশেরনগর বিমানবন্দর রয়েছে; যা দীর্ঘদিন ধরে নানান সমস্যার কারণে চালু করা যাচ্ছে না। এটি চালু হলে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জসহ কয়েকটি জেলার মানুষেরা সহজেই যাতায়াত করতে পারত।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক তপু আহমেদ বলেন, ‘আমরা সাতজন ট্রেনে মৌলভীবাজার যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু টিকিট পাইনি। পরে মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে এসেছি। যানজটের কারণে ১০ ঘণ্টায় মৌলভীবাজার এসেছি। ১০ হাজার টাকার ভাড়ার বদলে চালক ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কমলগঞ্জের সাবিনা আক্তার জানান, তিনি গত মাসে জটিল অপারেশন করিয়েছেন। এই মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় গিয়ে আরও একটি অপারেশন করানোর কথা। সেই অবস্থায় সড়ক পথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। যানজটে দীর্ঘ সময় আটকে থাকার পর হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে আইসিইউতে ভর্তি হতে হয়েছে।

রাজনগর উপজেলার শওকত আহমেদ নামের এক প্রবাসী বলেন, ‘ঢাকা থেকে আমার ফ্লাইট ছিল। আমি কোনোভাবেই ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারিনি। সড়ক পথে তীব্র যানজট ছিল। পরে সিলেট থেকে বিমানে ঢাকা গিয়েছি। ৪-৫ হাজার টাকার টিকিট আমাকে ১১ হাজার টাকায় কিনে নিয়ে ঢাকা যেতে হয়েছে। আমার সঙ্গের একজন সড়কপথে যানজটে আটকা পড়ে ফ্লাইট মিস করেছেন।’

কুলাউড়ার স্টেশনমাস্টার রুমান আহমেদ বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই টিকিটের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। যাত্রীর তুলনায় অতি সামান্য টিকিট রয়েছে। লাইন সংস্কার, টিকিট বৃদ্ধি করা একান্ত প্রয়োজন।’

সার্বিক বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন বলেন, ট্রেনের টিকিট বৃদ্ধি, শমশেরনগর বিমানবন্দর চালুসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি। রেলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবেন বলে জানান তিনি।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পার্থ সরকার বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ট্রেনের কোচ বৃদ্ধি করেছি। এ ছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী থাকলেও কোচ বৃদ্ধি করা হয়। টিকিটের চাহিদা বেশি থাকলে আমাদের কাছে আবেদন করলে তা দেখা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাড়তি মাশুল: শনিবার থেকে বন্দরে কোনো পরিবহন প্রবেশ না করার ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে ভারী গাড়ি প্রবেশের ফি ৫৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা করায় কনটেইনার পরিবহনের ট্রেইলার চালাচ্ছেন না মালিকেরা। ব্যক্তিমালিকানার এসব ট্রেইলার আন্তজেলা রুটে কনটেইনার পরিবহন করে। গত ১৫ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন মাশুল কার্যকরের ফলে এ অচল অবস্থা দেখা দেয় এবং এতে কিছু কিছু প্রাইম মুভার ও ট্রাক বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেয়। তবে বিভিন্ন ডিপো বা অফডকের ট্রেইলার চলছে।

চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতে জানান, কর্মবিরতি বা ধর্মঘট নয়, প্রাইম মুভার মালিকেরা ৫৭ টাকার পাস ২৩০ টাকা করায় গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন। শনিবার সকাল থেকে বন্দরে কোনো পরিবহন প্রবেশ করবে না।

কারণ, এই বাড়তি টাকা শ্রমিকেরা দেবে নাকি মালিকেরা দেবে, সিদ্ধান্ত হয়নি।

এক প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে ভারী গাড়ি (প্রাইম মুভার, ট্রেইলার, লং ভেহিক্যাল) যখন ঢাকা বা কোনো গন্তব্যে যায়, তখন আমাদের লাইন খরচ (ফি, টোল, বকশিশ) ফিক্সড করা থাকে।

তেলের দাম বাড়লে সেটি রিভাইস করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা বন্দরের পরিচালকের (নিরাপত্তা) সঙ্গে কথা বলেছি। বন্দর চেয়ারম্যান ঢাকা থেকে এলে আবার আলোচনা হবে আশা করি।’

মোহাম্মদ হোসেন জানান, ১৪ অক্টোবর রাত থেকেই তাঁদের ট্রেইলার চলাচল করছে না।  

বেসরকারি ডিপোর মালিকদের সংগঠন বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, প্রাইম মুভার মালিকদের ট্রেইলার চলে আন্তজেলা রুটে। ডিপোর ট্রেইলারগুলো বন্দর থেকে ডিপোতে কনটেইনার আনা-নেওয়া করে। এখন প্রাইম মুভার মালিকদের গাড়ি না চালানোর কারণে কিছু কিছু জায়গায় ডিপোর ট্রেইলার চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।  

এক প্রশ্নের উত্তরে রুহুল আমিন সিকদার বলেন, ‘আমরা এখনো সব ডিপোর ডেটা নিইনি। এ জন্য বলতে পারব না, কী পরিমাণ কনটেইনার জমেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমার এক হাত নাই, কৃত্রিম হাতটাও ওরা ভেঙে ফেলেছে’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ২৯
পুলিশের লাঠিপেটায় কৃত্রিম হাত ভেঙে গেল আতিকুল ইসলামের। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের লাঠিপেটায় কৃত্রিম হাত ভেঙে গেল আতিকুল ইসলামের। ছবি: সংগৃহীত

‘আমার একটা হাত নাই, এটা কৃত্রিম (আর্টিফিশিয়াল) হাত। আর সেই হাতটাই ওরা বাড়ি মেরে ভেঙে ফেলেছে। আমার কাছে কি এত টাকা আছে যে আবার নতুন হাত বানাব? এটা কি রাষ্ট্রের কাজ?’

রাগ, বেদনা আর হতাশামিশ্রিত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন আতিকুল ইসলাম। আজ শুক্রবার দুপুরে তিনি জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হন।

আতিকুলসহ কয়েক শ ব্যক্তি ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে আগের রাত থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থান নিচ্ছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, ‘জুলাই আহত বীর’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অবস্থান নেন তাঁরা। দাবি না মানলে এলাকা না ছাড়ার ঘোষণা দেন তাঁরা। পরে সকালে প্রাচীর টপকে তাঁরা মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন।

পুলিশ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা তাঁদের সরে যেতে অনুরোধ করলেও কেউ স্থান ছাড়েননি। পরে পুলিশ জোর করে তাঁদের সরিয়ে দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। দুপুরে দক্ষিণ প্লাজা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। সড়কে আগুন জ্বালানো, গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড—পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। দুই ঘণ্টা পর বৃষ্টি নামলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।

এ সংঘর্ষে পুলিশের লাঠিপেটায় বেশ কয়েকজন জুলাই যোদ্ধা আহত হন। তাঁদেরই একজন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এক হাত হারানো আতিকুল ইসলাম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আতিকুল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ডাক্তার বলেছে, হাড় ভাঙে নাই, তবে নইড়া গেছে। বিশ্রাম নিতে হবে।’ আতিকুল অভিযোগ করেন, ‘আমরা আমাদের ন্যায্য দাবির জন্য শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছিলাম। কিন্তু আগে চড়াও হয়েছে পুলিশ। এপিবিএনের সদস্যরা বাড়ি মেরে আমার হাতটাই ভেঙে ফেলেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুরিয়ার সার্ভিসে ওত পেতে ১৫ হাজার ইয়াবা জব্দ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ১২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় একটি কুরিয়ার সার্ভিসে ওত পেতে ১৫ হাজার ইয়াবা জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। আজ শুক্রবার ডিএনসির ঢাকা জেলা কার্যালয়ের একটি দল এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মাদক পাচারের জন্য ব্যবহৃত একটি হোন্ডা গাড়ি, ইয়াবা বড়িসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযানটি পরিচালনা করেছেন ঢাকা জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক উর্মি দে। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, জননী এক্সপ্রেস পার্সেল সার্ভিসের মাধ্যমে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা ঢাকায় আনা হচ্ছিল। চুনকুটিয়ায় চালান পৌঁছালে অভিযান চালিয়ে পার্সেলসহ ইয়াবা গ্রহণকারী দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন খুলনার ডুমুরিয়ার হোসেন আলী (৪১) ও ঢাকার সবুজবাগের শামীম আহমেদ (৩৪)।

উর্মি দে বলেন, পাচারকারীরা ইয়াবা পরিবহনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কিন্তু ডিএনসির নিরবচ্ছিন্ন নজরদারিতে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এই অভিযান স্থানীয় মাদক চোরাচালান চক্রের বিরুদ্ধে বড় ধাক্কা হিসেবে ধরা হচ্ছে।

ডিএনসির এই কর্মকর্তা জানান, মাদক পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। মাদক নির্মূলে তাঁরা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে জানান উর্মি দে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত