Ajker Patrika

স্কুলে শিশুদের ওপর পড়ল যুদ্ধবিমান

  • ছুটির পর বের হচ্ছিল শিক্ষার্থীরা।
  • অপেক্ষায় ছিলেন অভিভাবকেরা।
  • তখনই আছড়ে পড়ে যুদ্ধবিমান।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

হৃদয়বিদারক, মর্মান্তিক, মর্মস্পর্শী। এমনই এক দুর্ঘটনা ঘটেছে গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে। বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনা শোকবিহ্বল করেছে পুরো দেশকে।

দুপুরে ওই যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন বৈমানিকসহ অন্তত ২০ জন। আহত ও দগ্ধ হয়েছে দেড় শতাধিক। এদের বেশির ভাগই মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে আছেন শিক্ষক ও অভিভাবকও। আইএসপিআর বলেছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। কারণ উদ্‌ঘাটনে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি করেছে বিমানবাহিনী।

নিহত বৈমানিকের নাম ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম। নিহতদের মধ্যে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১২ জন, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২ জন, উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে ২ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ১ জনের মরদেহ রয়েছে। দগ্ধ হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে নিহত অন্যদের পরিচয় জানা যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিমানটি বেলা ১টা ১৮ মিনিটে দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী একাডেমিক ভবনের ওপর পড়ে বিধ্বস্ত হয়।

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার এক দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদ, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানিয়েছে, এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে আজ দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। পাশাপাশি সব সরকারি, বেসরকারি ভবন ও বিদেশে বাংলাদেশি মিশনেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। হতাহতদের জন্য দেশের সব মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

আরেক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বলেছে, পরিচয় শনাক্ত হওয়া মরদেহ দ্রুত পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। যাদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যাবে না, তাদের মরদেহ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করে পরে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

আহতদের ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গতকাল জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহতদের ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গতকাল জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সন্ধ্যায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ ২০ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনার কারণ উদ্‌ঘাটনে বিমানবাহিনীর একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, বিমানবাহিনীর ‘এফ-৭ বিজিআই’ বিমানটি বেলা ১টা ৬ মিনিটে প্রশিক্ষণের জন্য ঢাকার কুর্মিটোলার এ কে খন্দকার বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরে বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়।

জানা যায়, বিধ্বস্ত এফ-৭ বিজিআই বিমানটি চীনের তৈরি চেংদু জে-৭ সিরিজের একটি যুদ্ধবিমান। বাংলাদেশে এই মডেলের বিমানের তৃতীয় দুর্ঘটনা এটি। এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরের রসুলপুরে ফায়ারিং রেঞ্জে মহড়ার সময় বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ দিপু নিহত হন। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় এফ-৭ এমবি। এতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদ নিহত হন।

গতকালের দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাইলস্টোন স্কুলের হায়দার আলী একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে আছড়ে পড়ে বিমানটি। সঙ্গে সঙ্গে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। অনেক দূর থেকেও ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। জ্বলন্ত বিমানটির আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখান থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করেন। দগ্ধ অর্ধশতাধিক মানুষকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। আরও অনেককে উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল, লুবনা হাসপাতালসহ উত্তরার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহতদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। তাদের অনেকের পুরো শরীর পুড়ে গেছে।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান বলেন, আহতদের প্রায় সবাই স্কুলের শিক্ষার্থী। সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল বলেন, বিমানটি প্রথমে ভবনে আছড়ে পড়ে। পরে ছেঁচড়ে ভবনে গিয়ে ধাক্কা খায়। সঙ্গে সঙ্গে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে অনেককে স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। আহতদের একটি অংশকে প্রাথমিকভাবে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল, কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। দগ্ধদের অধিকাংশকে পাঠানো হয় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে।

উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালের প্রশাসন শাখার পরিচালক নাজমুল ইসলাম বলেন, যাদের ৩০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে, তাদের বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়েছে। অল্প আঘাত নিয়ে আসা কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আকাশ বলেন, আহতদের বেশির ভাগের শরীরের ৬০-৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের অনেকের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।

রাত পৌনে নয়টার দিকে বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ ভ্যানে তুলে নিয়ে উদ্ধারকাজের আপাতত সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, হায়দার আলী ভবনটি দোতলা এবং পশ্চিমমুখী। ভবনটির মাঝখানে প্রধান ফটক ও দোতলায় ওঠার সিঁড়ি। বিমানটি সোজা ফটকে আছড়ে পড়লে ভবনটি এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ও সেনাসদস্যরা বিভিন্ন যন্ত্র দিয়ে বিমানটির বিভিন্ন অংশ কেটে বের করেন।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই ভবনে দুটি তলা মিলিয়ে মোট ১৬টি শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকদের চারটি কক্ষ রয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শ্রেণিকক্ষের সামনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, ভবনটিতে ছুটির পর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কোচিং করত।

জানতে চাইলে মাইলস্টোন কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বলেন, হায়দার আলী ভবনে ইংরেজি মাধ্যমের তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস হতো। স্কুল ছুটির ঠিক আগে হওয়ায় বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় অনেক অভিভাবক ভবনের সামনে ছিলেন।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়েম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেলা ১টা ১০ মিনিটের দিকে বিকট শব্দ শুনতে পাই। দৌড়ে বাইরে এসে দেখি, আগুন জ্বলছে হায়দার আলী ভবনে। কিছু শিক্ষার্থী গায়ে আগুন নিয়ে বের হয়ে আসে। কিছু শিক্ষার্থী ক্লাসরুমে আটকা পড়ে।’ তিনি বলেন, প্রধান ফটকের ভেতর বিমানটি ঢুকে যাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী সেখানে আটকা পড়ে। ভবনের কক্ষের জানালায় লোহার গ্রিল থাকায় অনেকে বের হতে পারেনি। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভানোর পর গ্রিল কেটে এবং ছাদে মই দিয়ে উঠে অনেক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে।

বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ওই এলাকা পরিদর্শনে যান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দোতলা ভবনটির প্রথম তলায় ছিল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শ্রেণিকক্ষ। দ্বিতীয় তলায় ছিল দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শ্রেণিকক্ষ। সঙ্গে ছিল অধ্যক্ষের অফিস মিটিং রুম। একটি কোচিংয়ের ক্লাস চলমান ছিল। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সময় স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছিল এবং ওই সময় শিক্ষকদের কক্ষের সংলগ্ন যে জায়গায় বিমানটি পড়েছিল, ওই জায়গায় বাচ্চারা জড়ো হয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে হয়তো কিছুসংখ্যক অভিভাবকও ছিলেন।

বিকেলে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন দগ্ধদের খোঁজখবর নিতে যান অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাও বার্ন ইনস্টিটিউটে যান। পরে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চিকিৎসার প্রয়োজনে যত কিছু দরকার, তারা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তারপরও যদি প্রয়োজন হয়, বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষকদের সচিবলায়ে ঢোকার চেষ্টা, জলকামান ও সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ পুলিশের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দুপুরের দিকে সচিবালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুপুরের দিকে সচিবালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি নিয়ে শিক্ষকেরা সচিবলায়ে ঢোকার চেষ্টা করলে জলকামান ও সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ করে সরিয়ে দিয়েছে। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের অবস্থান নিয়ে দুপুর দেড়টার পরে মিছিল নিয়ে সচিবলায়ের অভিমুখে যাত্রা করেন তাঁরা। ২টার দিকে সচিবালয়ের গেটের প্রবেশমুখে ঢোকার চেষ্টা করেন তাঁরা। প্রায় ৩০ মিনিট ধাক্কাধাক্কির পর পুলিশ জলকামানা ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হন।

লালমনিরহাট হাতিবান্ধা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে সচিবলায়ে যাচ্ছিলাম, আমরা সেখানে যাব এবং আমাদের দাবি নিয়ে কথা বলব। কিন্তু পুলিশ বাধা দিয়েছে। আমাদের সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে, এটা দুঃখজনক। আমাদের কানে মুখে জলকামান নিক্ষেপ করেছে। এটা কেমন দেশ যে শিক্ষকদের ওপর হামলা করা হয়! মৃত্যু হলেও আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

জয়পুরহাট থেকে আসা শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, আমরা জাতীয়করণ চাই। সরকার দিতে চাইলেও তারা আটকে রাখে। অথচ সরকার ঘোষণা দিয়েছিল আমাদের দাবি মেনে নেবে। কিন্তু সরকার তালবাহানা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভিসা দেওয়ার নামে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র, গ্রেপ্তার ৩

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

অনলাইনে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় তিন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ‎গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের হামুরহাট এলাকার বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম (২২), কাচারীবাজার এলাকার বাসিন্দা তুহিন ইসলাম (২৫) ও তাঁর সহযোগী শামিম ইসলাম (২০)। ‎

ভুক্তভোগী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পাবনা জেলার বাসিন্দা শামিম ইসলাম ফেসবুকে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তাঁকে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি। পরে কাগজপত্র যাচাই করে সেগুলো ভুয়া প্রমাণিত হলে তিনি থানায় মামলা করেন।

ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকান ভেঙে খাদে পড়ল মাইক্রোবাস

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
রাস্তার পাশে চায়ের দোকান ভেঙে খাদে পড়ে যায় মাইক্রোবাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাস্তার পাশে চায়ের দোকান ভেঙে খাদে পড়ে যায় মাইক্রোবাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের চায়ের দোকান ভেঙে খাদে পড়েছে। এই ঘটনায় অন্তত আটজন আহত হয়েছে। আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের দপদপিয়া জিরো পয়েন্ট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বরিশাল থেকে পটুয়াখালীগামী একটি মাইক্রোবাস দপদপিয়া জিরো পয়েন্ট এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এ সময় সড়কের পাশে দোকানে চা পানরত কয়েকজনকে চাপা দিয়ে মাইক্রোবাসটি খাদে পড়ে যায়। এতে দোকানের ক্রেতা ও মাইক্রোবাসের যাত্রীসহ আটজন আহত হন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় তিনজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন ভরতকাঠি এলাকার মজিদ হাওলাদার (৬০), মনির হাওলাদার (৪৫) ও হারুন (৬০)। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাইক্রোবাসের চালক সম্ভবত ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, যার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুস ছালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গুরুতর আহত তিনজনকে উদ্ধার করে বরিশালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। মাইক্রোবাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাস্তার পাশে পড়ে ছিল প্রবাসীর লাশ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় সিরাজুল মণ্ডল (২৫) নামের এক প্রবাসীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের পূর্ব চরকৈজুরী এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

সিরাজুল উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মৃত শাহাদৎ মণ্ডলের ছেলে।

মৃত ব্যক্তির ভাই আজিজুল মণ্ডল জানান, সিরাজুল দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফেরেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর কেউ একজন তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর ফেরেননি। আজ সকালে ফজরের নামাজে যাওয়ার পথে স্থানীয় মুসল্লিরা রাস্তার পাশে তাঁর লাশ দেখতে পান।

শাহজাদপুর থানার ডিউটি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত