Ajker Patrika

ফুলবাড়ীতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ফুলবাড়ীতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ ও আমদানি নির্ভরতা কটাতে পরীক্ষামূলকভাবে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন চাষিরা। তুলনামূলকভাবে সাফল্য পেয়েছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক এসব চাষিরা। ভালো দাম পাওয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তাঁরা। 

চাষিরা বলেন, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ৫০-৫৫ মণ। বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে খরচ হয় ১৫-২০ হাজার টাকা। এ হিসেবে প্রতি বিঘায় ৭৫-৮০ হাজার টাকা আয় করছেন। স্বল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় অন্য কৃষকরাও ঝুঁকছেন পেঁয়াজ চাষে। 

উপজেলা সদর ইউনিয়ন ব্র্যাক মোড় কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী রিজু মিয়া বলেন, বছরের সব সময় পেঁয়াজের চাহিদা থাকে। বাজারে হঠাৎ আমদানি কমে গেলে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। গত ৪-৫ মাস আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজের মূল্য ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি পেয়ে স্থানীয় বাজারে ১২০ টাকা পর্যন্ত দাম ওঠে। বর্তমানে স্থানীয় পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, দেশের বেশির ভাগ কৃষক শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ করেন। ফলে গ্রীষ্মকাল আসতে আসতে পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। বিদেশ থেকে আমদানির পরও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। গত কয়েক বছর ধরে এই অবস্থা চলতে থাকায় কৃষি বিভাগ গ্রীষ্মকালেও পেঁয়াজ চাষের পদক্ষেপ নিয়েছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলার শিমুলবাড়ি, তালুক শিমুলবাড়ি, ভুরিয়ারকুটি, নন্দীরকুটি, করুক মন্ডল ফুলমতি, কুরুষাফেরুষাসহ বিভিন্ন এলাকার প্রান্তিক চাষিদের মাধ্যমে ৭০ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে নাসিক এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজের চাষ করা হয়েছে। এ জাতের পেঁয়াজ চাষে আশাতীত ফলন পাওয়া গেছে। এতে চাষিরা লাভের মুখ দেখছেন। 
 
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক চাষি পেঁয়াজের পরিচর্যা করছেন। আবার অনেকের পেঁয়াজ পরিপক্ব হওয়ার খেত থেকে তুলে খেতেই পাইকারি বিক্রি করছেন। 

উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের ভুরিয়ারকুটি গ্রামের পেঁয়াজ চাষি, ধনেশ্বর, নাজির হোসেন জানান, এবার তারা পরীক্ষামূলকভাবে দুই বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে পেঁয়াজ চাষ করবেন। 

ফুলবাড়ীতে জমিতে রোপণ করা আগাম জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ। ছবি: আজকের পত্রিকাতালুক শিমুলবাড়ি গ্রামের পেঁয়াজ চাষি রহিম উদ্দিন ও তাঁরা মিয়া জানান, গত বছর ২০ শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে ভালো ফলাফল পেয়েছেন। এ বছর ২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে ১ লাখ ২০ হাজার আয় করেন। 

ফুলমতি গ্রামের শ্রমিক নবীন কুমার বলেন, ‘পেঁয়াজ খেতে অনেক দিন ধরে দিনমজুরি করি। এবার পেঁয়াজের ফলন ভালো হওয়ায় চাষিরা লাভবান হবেন।’ 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, এবারই প্রথম উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। পেঁয়াজ চাষে কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন। পেঁয়াজের চাহিদা পূরণে সারা বছর পেঁয়াজ চাষের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার সামনে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ভারত: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে

পুরোনো রাউটার ফেলে না দিয়ে যে কাজে ব্যবহার করতে পারেন

পোশাকের পর অস্ত্র প্রশিক্ষণও পাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত এডিরা

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির পেছনের কূটনীতি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত