Ajker Patrika

‘বিচারপতি খায়রুলকে হাতকড়া পরানো মানে পুরো বিচার বিভাগকে হাতকড়া পরানো’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ৩২
এ বি এম খায়রুল হক। ছবি: সংগৃহীত
এ বি এম খায়রুল হক। ছবি: সংগৃহীত

কারাগারে থাকা সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের জামিন ও মামলার কার্যক্রম বাতিল আবেদনের শুনানিতে আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার বিচারপতি জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে। পরে আদালত এই বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১৭ আগস্ট দিন ধার্য করে দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ ও ইমরান খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল উজ্জ্বল হোসেন, মুহাম্মদ সাফওয়ান ও জসিম উদ্দিন। আর খায়রুল হকের পক্ষে শুনানি করতে আদালতে হাজির হন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান, কামরুল হক সিদ্দিকী, জেড আই খান পান্না, মোহসীন রশিদ, কামরুল হক সিদ্দিকী, মনসুরুল হক চৌধুরী, এ বি এম সিদ্দিকুর রহমান, আওসাফুর রহমান বুলু, মোতাহার হোসেন সাজু, সৈয়দ মামুন মাহবুবসহ আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা।

বেলা তিনটার দিকে এম কে রহমান শুনানি করতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ বলেন, ‘এটি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অ্যাটর্নি জেনারেল এই মামলায় শুনানি করবেন।’

পরে তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলতে বাইরে যান। কিছুক্ষণ পর এসে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল এক সপ্তাহ সময় নিতে বলেছেন। এক সপ্তাহ পর এটা শুনানির জন্য রাখেন।’

আইনজীবী মোহসিন রশিদ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি আদালতকে এভাবে নির্দেশনা দিতে পারেন না। এ বি এম খায়রুল হক সাবেক প্রধান বিচারপতি। তিনি ১০–১২ বছর আগে অবসরে গেছেন। তাঁকে এক বছর আগে দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় চলতি বছরের ২৪ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দেখেছি, তাঁকে তাঁর পেছনে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে তোলা হয়েছে। কিন্তু বিচার বিভাগ তাঁর বিষয়ে নীরব। তাঁকে হাতকড়া পরানো মানে পুরো বিচার বিভাগকে হাতকড়া পরানো। আমরা বিচার বিভাগের জন্য এখানে এসেছি। বিশ্বের কোথাও এ রকম নজির নেই। হাইকোর্ট এই বিষয়ে রুল জারি করার পরে অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তি উপস্থাপন করতে পারবেন।’

তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আবারও হাইকোর্টকে এই সপ্তাহে বিষয়টি শুনানি না করার জন্য অনুরোধ করেন। আইনজীবী মোহসীন রশিদ বলেন, ‘বিচারপতি খায়রুল হককে আদালত প্রাঙ্গণে অপমান করা হয়েছে। বিচারকদের অপমান করা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘খায়রুল হক বিচার বিভাগের জন্য বাধা সৃষ্টি করছেন। তিনি বিচার বিভাগ ধ্বংস এবং প্রায় ১ হাজার ৫০০ জনকে হত্যার জন্য দায়ী।’ এ সময় খায়রুল হকের সমর্থক কয়েকজন আইনজীবী চিৎকার করে সরকারসমর্থিত আইনজীবীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা খায়রুল হকের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে যখন দেশছাড়া করা হলো, তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? খায়রুল হকের মতো গণতন্ত্র ধ্বংসকারী, কুলাঙ্গারের জামিন চাইতে এসেছেন।’

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমার বিরুদ্ধে বিগত সময়ে আটটি মামলা হয়েছে। তখন আপনারা কোথায় ছিলেন?’

একপর্যায়ে আইনজীবীদের কয়েকজন আদালতকক্ষে চিৎকার, বিশৃঙ্খলা এবং হাতাহাতি শুরু করেন। যদিও আদালত বারবার তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এরপর আদালত আইনজীবীদের নিবৃত্ত করে শুনানি মুলতবি করে আগামী রোববার ১১টায় সময় নির্ধারণ করে দেন। পরে আইনজীবীরা বের হয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফেল করায় বকা খেয়ে বাড়ি ছাড়ে বাংলাদেশি কিশোরী, ভারতে ৩ মাসে ২০০ লোকের ধর্ষণ

রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক

আগামী সপ্তাহের মধ্যে ৫ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু: গভর্নর

মৌচাকে হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেট কার থেকে উদ্ধার দুই মরদেহের পরিচয় মিলেছে

চলন্ত বাইকে বাঁধা নারীর লাশ, পুলিশের ধাওয়া

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত