ইয়াসিন আরাফাত
ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে বাজছে যুদ্ধের দামামা। এই যুদ্ধ থামাতে একের পর এক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন রুশ ও মার্কিন কূটনীতিকেরা। আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। যুক্তরাষ্ট্র বলেই দিয়েছে, যে কোনো সময় হামলা চালাবে রাশিয়া। যদিও মস্কো এই দাবি উড়িয়ে দিচ্ছে। তবে যুদ্ধের কথা অস্বীকার করলেও ইউক্রেনকে ঘিরে ফেলছে রাশিয়া, ফেলছে ফাঁদে। বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলছেন, রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বেসরকারি মার্কিন কোম্পানি স্যাটেলাইট ম্যাক্সার টেকনোলজিস যেসব ছবি প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গেছে ইউক্রেনের কাছেই বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ১ লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। এ থেকে বলা যায়, সংকট কমাতে কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যেই মস্কো ইউক্রেন সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। তবে এটি এখনো স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না যে ইউক্রেনে কোন দিক দিয়ে হামলা চালাবে রাশিয়া।
মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ইউক্রেনকে তিন দিক দিয়ে চেপে ধরেছে। এ সব স্থানগুলো হলো-পূর্ব ইউক্রেন, ক্রিমিয়া ও বেলারুশ। এ ছাড়া কিছুদিন আগে ইউক্রেন দাবি করেছে, রাশিয়া তাদের সমুদ্রপথেও আটকে দিয়েছে।
পূর্ব ইউক্রেনের ডোনেটস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে ২০১৪ সাল থেকেই ইউক্রেনের বাহিনীর সঙ্গে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লড়াই চলছে। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, মস্কো এই অঞ্চলে সামরিক শক্তি বাড়িয়ে যুদ্ধের রাস্তাকে সহজ করতে চাইবে।
মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএন স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবির বরাত দিয়ে জানায়, রাশিয়ার ইয়েলনিয়া শহর থেকে ট্যাংক, অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে পূর্ব ইউক্রেনের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের শেষের দিকেই প্রায় ৭০০ ট্যাংক, যুদ্ধযান ও ব্যালিস্টিক মিসাইল লঞ্চার এই ইয়েলনিয়া শহরের ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিওতে দেখা গেছে, ইউক্রেনের কাছাকাছি ব্রায়ানস্ক অঞ্চলের ট্রেন এবং রাস্তাগুলোতে রয়েছে ট্যাংক ও অস্ত্রশস্ত্র। এ নিয়ে ম্যাক্সারের সিনিয়র ডিরেক্টর স্টিফেন উড সিএনএনকে বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, রাশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ঘাঁটি থেকে প্রচুর ট্যাংক, অস্ত্রশস্ত্র চলে গেছে। এ ছাড়া রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ঘাঁটি থেকে অতিরিক্ত সাঁজোয়া যানও ইউক্রেন সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে।’
অন্যদিকে উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী ক্রুস্ক ও বেলগোরড ওব্লাস্টেও রুশ সেনাদের ক্রমবর্ধমান তৎপরতা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। স্বাধীন প্রতিরক্ষা পরামর্শক সংস্থা রোচন কনসালটিংয়ের বিশেষজ্ঞ কনরাড মুজিকা একটি টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমরা ক্রুস্কে যানবাহন ও সেনাদের ব্যাপক তৎপরতা দেখতে পাচ্ছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা পটোম্যাক ফাউন্ডেশনের গবেষক ফিলিপ কার্বার রুশ সেনাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি সিএনএনকে বলছেন, রাশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ফার্স্ট গার্ডস ট্যাংক আর্মি সাধারণত মস্কো এলাকায় অবস্থান করে। এই দলটিকে দক্ষিণে ৪০০ কিলোমিটার সরানো হয়েছে। যাতে ইউক্রেনের ক্রুস্ক-কিয়েভ আক্রমণ দ্রুত আক্রমণ করা যায়।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি বেলারুশের সঙ্গে ১০ দিনব্যাপী বিশাল সামরিক মহড়া আরম্ভ করেছে রাশিয়া। এই দেশটিও ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা চালানোর অন্যতম পথ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।
ন্যাটোর বরাত দিয়ে জার্মানিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঠান্ডা যুদ্ধের পর বেলারুশে কখনো এত বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়নি। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল বেলারুশ। এখন তারা রাশিয়ার বন্ধু দেশ। এই মহড়ায় যুদ্ধবিমানও অংশ নিয়েছে।
অবশ্য বেলারুশে রাশিয়ার সামরিক মহড়ার পর ইউক্রেনও সামরিক মহড়া শুরু করে দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের মহড়া চলবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেলারুশ দিয়ে হামলা করা রাশিয়ার জন্য সহজ হবে না। কারণ এ জন্য তাদের পিনস্ক জলাভূমিকেও সামলাতে হবে। পিনস্ক ইউরোপের বৃহত্তম জলাভূমি। এটি বেলারুশ ও ইউক্রেনের মধ্যে সীমানা ঘেঁষে আছে। এ জলাভূমির আয়তন ১ লাখ ৪০ হাজার বর্গ মাইল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর জার্মানির হামলার সময় এই পিনস্ক জলাভূমিকে নাৎসি বাহিনীর জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ারের মতে, যান্ত্রিক শক্তির জন্য ভেজা পরিবেশ অতিক্রম করা কঠিন হতে পারে। কিছু জায়গায় সম্ভবত অসম্ভবও।
রাশিয়ার ইউক্রেন হামলা করার আরেকটি পথ হতে পারে ক্রিমিয়া। ২০১৪ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে রাশিয়া। ম্যাক্সার টেকনোলজিসের তথ্য অনুযায়ী, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের রাজধানী সিম্ফেরোপলে ৫৫০টি সেনা তাঁবু স্থাপন করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে শত শত সেনা যানও সেখানে পৌঁছেছে। এ ছাড়া ক্রিমিয়ার উপকূলীয় শহর স্লাভনের কাছেও নতুন করে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে সমুদ্রে বড় ধরনের নৌ মহড়া করছে রাশিয়া। রুশ সংবাদ সংস্থা আরআইএর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, রুশ ব্ল্যাক সি নৌবহরের ৩০টির বেশি জাহাজ এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।
ইউক্রেনকে সমুদ্রপথে আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। এ নিয়ে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেন, আজভ সাগর সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ এবং কৃষ্ণ সাগর প্রায় সম্পূর্ণ রুশ বাহিনীর দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, ইউক্রেনের উত্তর-পশ্চিমে একটি বন্দর শহর ওডেসা। এটি ক্রিমিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। ওডেসা একটি জনবহুল শহর এবং শহুরে যুদ্ধে যারা পারদর্শী তারাই এটির দখল নিতে পারবে। ওডেসার বন্দরের মাধ্যমে সরাসরি শহরে যেতে পারবে রুশ সেনারা। তবে এই অপারেশন উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণও। কারণ ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও মোকাবিলা করতে হবে রাশিয়াকে।
যে কোনো মুহূর্তে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করে বসতে পারে—পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলো থেকে এমন হুঁশিয়ারি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২টির বেশি দেশ তাদের নাগরিকদের এরই মধ্যে ইউক্রেন ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে। নাগরিকদের ফিরে আসতে বলা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি আছে। যদিও আক্রমণের ইচ্ছে থাকার কথা অস্বীকার করছে মস্কো। হামলা না হলেও রাশিয়া যেভাবে চেপে ধরেছে, তাতে ইউক্রেন ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো যে দীর্ঘসময়ের জন্য অস্বস্তির মধ্যে থাকবে—তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
রাশিয়া ইউক্রেন সংকট সম্পর্কিত খবর আরও পড়ুন:
ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে বাজছে যুদ্ধের দামামা। এই যুদ্ধ থামাতে একের পর এক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন রুশ ও মার্কিন কূটনীতিকেরা। আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। যুক্তরাষ্ট্র বলেই দিয়েছে, যে কোনো সময় হামলা চালাবে রাশিয়া। যদিও মস্কো এই দাবি উড়িয়ে দিচ্ছে। তবে যুদ্ধের কথা অস্বীকার করলেও ইউক্রেনকে ঘিরে ফেলছে রাশিয়া, ফেলছে ফাঁদে। বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলছেন, রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বেসরকারি মার্কিন কোম্পানি স্যাটেলাইট ম্যাক্সার টেকনোলজিস যেসব ছবি প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গেছে ইউক্রেনের কাছেই বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ১ লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। এ থেকে বলা যায়, সংকট কমাতে কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যেই মস্কো ইউক্রেন সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। তবে এটি এখনো স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না যে ইউক্রেনে কোন দিক দিয়ে হামলা চালাবে রাশিয়া।
মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ইউক্রেনকে তিন দিক দিয়ে চেপে ধরেছে। এ সব স্থানগুলো হলো-পূর্ব ইউক্রেন, ক্রিমিয়া ও বেলারুশ। এ ছাড়া কিছুদিন আগে ইউক্রেন দাবি করেছে, রাশিয়া তাদের সমুদ্রপথেও আটকে দিয়েছে।
পূর্ব ইউক্রেনের ডোনেটস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে ২০১৪ সাল থেকেই ইউক্রেনের বাহিনীর সঙ্গে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লড়াই চলছে। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, মস্কো এই অঞ্চলে সামরিক শক্তি বাড়িয়ে যুদ্ধের রাস্তাকে সহজ করতে চাইবে।
মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএন স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবির বরাত দিয়ে জানায়, রাশিয়ার ইয়েলনিয়া শহর থেকে ট্যাংক, অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে পূর্ব ইউক্রেনের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের শেষের দিকেই প্রায় ৭০০ ট্যাংক, যুদ্ধযান ও ব্যালিস্টিক মিসাইল লঞ্চার এই ইয়েলনিয়া শহরের ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিওতে দেখা গেছে, ইউক্রেনের কাছাকাছি ব্রায়ানস্ক অঞ্চলের ট্রেন এবং রাস্তাগুলোতে রয়েছে ট্যাংক ও অস্ত্রশস্ত্র। এ নিয়ে ম্যাক্সারের সিনিয়র ডিরেক্টর স্টিফেন উড সিএনএনকে বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, রাশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ঘাঁটি থেকে প্রচুর ট্যাংক, অস্ত্রশস্ত্র চলে গেছে। এ ছাড়া রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ঘাঁটি থেকে অতিরিক্ত সাঁজোয়া যানও ইউক্রেন সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে।’
অন্যদিকে উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী ক্রুস্ক ও বেলগোরড ওব্লাস্টেও রুশ সেনাদের ক্রমবর্ধমান তৎপরতা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। স্বাধীন প্রতিরক্ষা পরামর্শক সংস্থা রোচন কনসালটিংয়ের বিশেষজ্ঞ কনরাড মুজিকা একটি টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমরা ক্রুস্কে যানবাহন ও সেনাদের ব্যাপক তৎপরতা দেখতে পাচ্ছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা পটোম্যাক ফাউন্ডেশনের গবেষক ফিলিপ কার্বার রুশ সেনাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি সিএনএনকে বলছেন, রাশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ফার্স্ট গার্ডস ট্যাংক আর্মি সাধারণত মস্কো এলাকায় অবস্থান করে। এই দলটিকে দক্ষিণে ৪০০ কিলোমিটার সরানো হয়েছে। যাতে ইউক্রেনের ক্রুস্ক-কিয়েভ আক্রমণ দ্রুত আক্রমণ করা যায়।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি বেলারুশের সঙ্গে ১০ দিনব্যাপী বিশাল সামরিক মহড়া আরম্ভ করেছে রাশিয়া। এই দেশটিও ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা চালানোর অন্যতম পথ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।
ন্যাটোর বরাত দিয়ে জার্মানিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঠান্ডা যুদ্ধের পর বেলারুশে কখনো এত বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়নি। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল বেলারুশ। এখন তারা রাশিয়ার বন্ধু দেশ। এই মহড়ায় যুদ্ধবিমানও অংশ নিয়েছে।
অবশ্য বেলারুশে রাশিয়ার সামরিক মহড়ার পর ইউক্রেনও সামরিক মহড়া শুরু করে দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের মহড়া চলবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেলারুশ দিয়ে হামলা করা রাশিয়ার জন্য সহজ হবে না। কারণ এ জন্য তাদের পিনস্ক জলাভূমিকেও সামলাতে হবে। পিনস্ক ইউরোপের বৃহত্তম জলাভূমি। এটি বেলারুশ ও ইউক্রেনের মধ্যে সীমানা ঘেঁষে আছে। এ জলাভূমির আয়তন ১ লাখ ৪০ হাজার বর্গ মাইল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর জার্মানির হামলার সময় এই পিনস্ক জলাভূমিকে নাৎসি বাহিনীর জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ারের মতে, যান্ত্রিক শক্তির জন্য ভেজা পরিবেশ অতিক্রম করা কঠিন হতে পারে। কিছু জায়গায় সম্ভবত অসম্ভবও।
রাশিয়ার ইউক্রেন হামলা করার আরেকটি পথ হতে পারে ক্রিমিয়া। ২০১৪ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে রাশিয়া। ম্যাক্সার টেকনোলজিসের তথ্য অনুযায়ী, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের রাজধানী সিম্ফেরোপলে ৫৫০টি সেনা তাঁবু স্থাপন করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে শত শত সেনা যানও সেখানে পৌঁছেছে। এ ছাড়া ক্রিমিয়ার উপকূলীয় শহর স্লাভনের কাছেও নতুন করে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে সমুদ্রে বড় ধরনের নৌ মহড়া করছে রাশিয়া। রুশ সংবাদ সংস্থা আরআইএর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, রুশ ব্ল্যাক সি নৌবহরের ৩০টির বেশি জাহাজ এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।
ইউক্রেনকে সমুদ্রপথে আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। এ নিয়ে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেন, আজভ সাগর সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ এবং কৃষ্ণ সাগর প্রায় সম্পূর্ণ রুশ বাহিনীর দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, ইউক্রেনের উত্তর-পশ্চিমে একটি বন্দর শহর ওডেসা। এটি ক্রিমিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। ওডেসা একটি জনবহুল শহর এবং শহুরে যুদ্ধে যারা পারদর্শী তারাই এটির দখল নিতে পারবে। ওডেসার বন্দরের মাধ্যমে সরাসরি শহরে যেতে পারবে রুশ সেনারা। তবে এই অপারেশন উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণও। কারণ ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও মোকাবিলা করতে হবে রাশিয়াকে।
যে কোনো মুহূর্তে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করে বসতে পারে—পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলো থেকে এমন হুঁশিয়ারি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২টির বেশি দেশ তাদের নাগরিকদের এরই মধ্যে ইউক্রেন ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে। নাগরিকদের ফিরে আসতে বলা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি আছে। যদিও আক্রমণের ইচ্ছে থাকার কথা অস্বীকার করছে মস্কো। হামলা না হলেও রাশিয়া যেভাবে চেপে ধরেছে, তাতে ইউক্রেন ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো যে দীর্ঘসময়ের জন্য অস্বস্তির মধ্যে থাকবে—তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
রাশিয়া ইউক্রেন সংকট সম্পর্কিত খবর আরও পড়ুন:
সাহারা মরুভূমির প্রান্তবর্তী ইউরেনিয়ামে সমৃদ্ধ দেশ নাইজারে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়তে চায় রাশিয়া। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরইমধ্যে এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে একটি চুক্তিও হয়েছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থা রোসাটম এবং নাইজার কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তি অনুযায়ী...
১ ঘণ্টা আগেকিন্তু আরাকান আর্মি এখনো সেই অর্থে সিতওয়ে ও কায়াকফিউতে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ চালায়নি। কিন্তু কেন? এর পেছনে রয়েছে তিনটি কৌশলগত কারণ—কায়াকফিউতে চীনের বড় বিনিয়োগ, সিতওয়েতে ভারতের বিনিয়োগ এবং স্থানীয় জনগণের কাছে রাজনৈতিক বৈধতা ও শাসন কাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এএ–এর অগ্রাধিকার।
২ দিন আগেআগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালের এপ্রিল-মে মাসে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগেই নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোতে নীরবে বড়সড় পরিবর্তন এনেছেন। আগের তুলনায় বিজেপির নির্বাচনী রণনীতি এবার অনেকটাই ভিন্ন।
২ দিন আগেআন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পশ্চিমা বিশ্বে লবিস্ট নিয়োগের ঘটনা নতুন নয়। বিশেষ করে বিশ্বের অন্য দেশগুলো নিজ স্বার্থ উদ্ধারে মার্কিন প্রশাসনকে প্রভাবিত করতে প্রায়ই লবিং ফার্ম নিয়োগ দেয়। সাম্প্রতিক সময়ে খবর এসেছে, বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশী মিয়ানমার ও ভারত ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের প্রচেষ্টায় বিপুল...
২ দিন আগে