আজকের পত্রিকা ডেস্ক
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত গড়াল চতুর্থ দিনে। দুপক্ষেই হতাহত হয়েছে বহু মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু আবাসিক ভবন ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি তেল ডিপো, গ্যাসক্ষেত্র এবং একাধিক পরমাণু কেন্দ্র। প্রতিক্রিয়ায় তেলআবিব, হাইফাসহ ইসরায়েলের বড় বড় সব শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইরান। বিশ্লেষকেরা বলছেন, তেহরানের সক্ষমতায় তেল আবিব বিস্মিত।
দুপক্ষেরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও ঠিক কোন কোন স্থাপনা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে–তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ সামরিক সংঘাতের সঙ্গে একটি তথ্য-যুদ্ধও চলছে, যার ফলে সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। একইভাবে, দুই পক্ষের অস্ত্রাগারে কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো অবশিষ্ট আছে, কিংবা ইসরায়েল ও ইরান কতদিন পর্যন্ত এই লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে, সেটিও নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় ও বিস্তীর্ণ বলে মনে করা হয়। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরানের সমরাস্ত্র ভাণ্ডারে যে পরিমাণ এবং যত ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে তা দিয়ে ইসরায়েলে টানা কয়েক সপ্তাহ আক্রমণ চালিয়ে যেতে পারবে ইরান। আর ওই ক’দিনই ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য ক্ষতিসাধনের জন্য ‘যথেষ্ট’। কারণ, এত তীব্র ও দীর্ঘ হামলার ঠেকানোর জন্য ইসরায়েল প্রস্তুত নয়। বিগত দশকগুলোতে তারা কেবল হামাস, হিজবুল্লাহ এবং হুতিদের মতো অপেক্ষকৃত ছোট ও কম শক্তির সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইরান বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা কতটা। গতকাল রোববার, প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হজ কাসেম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইরান। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি খুব সহজেই ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে নির্ভুলভাবে আঘাত হেনেছে। এ ছাড়া এই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত কতটা ভয়ংকর ও শক্তিশালী ছিল সেটিও স্পষ্ট হয়েছে প্রকাশিত হামলার ভিডিওতে।
অনেকে বলছেন, অবশ্যই, ইরানের এই উন্নতমানের ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ সীমাহীন নয়। শেষ পর্যন্ত দেশটিকে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার সীমিত করে পরিকল্পিতভাবে পরিচালনা করতে হবে। তবে এসব অত্যাধুনিক অস্ত্রের পাশাপাশি ইরানের হাতে রয়েছে প্রচলিত ধরনের অসংখ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং হাজার হাজার ড্রোন—যেগুলোর সম্মিলিত সামরিক সক্ষমতা ইসরায়েলের জন্য বাস্তব ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে। একইসঙ্গে, এটি ইসরায়েলের জন্যও একটি কৌশলগত ধাক্কাও, কারণ তারা মনে করেছিল, স্বল্পমেয়াদি সংঘাতে ইরান দীর্ঘসময় লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মতো সক্ষমতা রাখে না।
ইরান আসলে কী করবে এখন? বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রথমত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে সর্তক অবস্থানে থাকবে ইরান। শেষমেষ নিজেদের মর্যাদা বজায় রেখে যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে। জয়-পরাজয়ের হিসাবে ইরানকে যেন কোনোভাবেই পরাজিত বলা না যায়, সেটি এখন তেহরানের মূল লক্ষ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়ানো
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ চরমভাবে পরীক্ষার মুখে পড়েছে। এসব হামলা প্রতিহত করতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে সরাসরি কোনো পক্ষ নয়। পাশাপাশি কড়া হুঁশিয়ার দিয়ে রেখেছে—মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটি বা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে কোনো হামলা হলে এর পরিণাম হবে ভয়াবহ।
ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি কোনো সংঘাতে জড়াতে চায় না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানে হামলার সুযোগ করে দিলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একযোগে হামলা চালাবে। তাই যুক্তরাষ্ট্র ইস্যুতে বরাবরই সতর্ক নীতি গ্রহণ করছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। যদি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একত্রে হামলা চালায়, তাহলে ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোও ধ্বংসের ঝুঁকিতে পড়বে। পাশাপাশি, এই যৌথ হামলা এমন সব দেশে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটির ওপর নির্ভর করতে পারে—যেমন কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও তুরস্ক—যেগুলো সরাসরি ইরানের শত্রু নয়, এবং তাদের সঙ্গে ইরান সংঘাতে জড়াতে চাইবে না। বরং এসব দেশ ইরানের কাছে সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।
তবে ইরানের হাতে বিকল্পও রয়েছে। বহুবার তারা হুমকি দিয়েছে, ওমান ও ইরানের মাঝখানে অবস্থিত হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে—যা মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল পরিবহনের আন্তর্জাতিক রুট। গত শুক্রবার এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম সাময়িকভাবে ব্যারেলপ্রতি ৭৮ ডলার পর্যন্ত ছুঁয়েছিল, পরে তা কমে আসে। গতকাল রোববার আবার বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়, তবে তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ইসরায়েল ও এর মিত্রসহ মোড়ল দেশগুলোকে চাপে রাখতে ইরানের হাতে যে কৌশলগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এই হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি অন্যতম। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ইরান এই পথ বেছে নিলে খুব অবাক হওয়ার কিছু নেই বলেও মনে করেন অনেকে।
সম্ভাব্য ‘অফ-র্যাম্প’ খুঁজবে ইরান
শেষ পর্যন্ত ইরান এমন একটি ‘অফ-র্যাম্প’ বা সম্মানজনক নিষ্ক্রমণ পথ খুঁজবে, যা এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে। কারণ, পাল্টাপাল্টি হামলা চলতে থাকলে তা পরমাণু শক্তি হয়ে উঠতে চাওয়া ইরানের জন্য কম ক্ষতির হবে না। এ ছাড়া, পুরো অঞ্চলেই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে। ইরানের অর্থনীতিতেও ভয়াবহ ক্ষতি ও অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তেহরান এ-ও জানে, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের সীমাবদ্ধতা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকায় ইসরায়েলের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ পুনরায় মজুদ করা অনেক সহজ, যেটি ইরানের পক্ষে সম্ভব নয়।
তেহরান ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, যদি ইসরায়েল হামলা বন্ধ করে, তাহলে তারাও থামবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায়ও ফিরবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি গতকাল রোববার বলেন, ‘যখনই এই (ইসরায়েলি) হামলা বন্ধ হবে, আমরাও স্বাভাবিকভাবেই প্রতিক্রিয়া জানাব।’
তবে এটি অনেকটাই নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। সংঘাত থামাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ প্রয়োগের প্রয়োজন রয়েছে, এবং ট্রাম্প সেই দায়িত্ব নিতে রাজি কিনা, তা স্পষ্ট নয়। সংঘাত নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান প্রায়ই বদলাচ্ছে—একদিকে তিনি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছেন, আবার অন্যদিকে ইরানকে হুমকিও দিচ্ছেন। তেহরান জানে, ট্রাম্প এমন একজন ব্যক্তি, যার ওপর ভরসা করা যায় না।
ইরানে ইসরায়েলের হামলার পরিকল্পনার কথা আগেভাগে জানতেন বলে স্বীকার করলেও গতকাল রোববার ওমানে ইরানের সঙ্গে যথারীতি পরমাণু আলোচনা হবে বলে আশা করেছিলেন ট্রাম্প। এটিকে একপ্রকার প্রতারণা বলেই মনে করছে তেহরান।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত গড়াল চতুর্থ দিনে। দুপক্ষেই হতাহত হয়েছে বহু মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু আবাসিক ভবন ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি তেল ডিপো, গ্যাসক্ষেত্র এবং একাধিক পরমাণু কেন্দ্র। প্রতিক্রিয়ায় তেলআবিব, হাইফাসহ ইসরায়েলের বড় বড় সব শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইরান। বিশ্লেষকেরা বলছেন, তেহরানের সক্ষমতায় তেল আবিব বিস্মিত।
দুপক্ষেরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও ঠিক কোন কোন স্থাপনা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে–তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ সামরিক সংঘাতের সঙ্গে একটি তথ্য-যুদ্ধও চলছে, যার ফলে সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। একইভাবে, দুই পক্ষের অস্ত্রাগারে কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো অবশিষ্ট আছে, কিংবা ইসরায়েল ও ইরান কতদিন পর্যন্ত এই লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে, সেটিও নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় ও বিস্তীর্ণ বলে মনে করা হয়। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরানের সমরাস্ত্র ভাণ্ডারে যে পরিমাণ এবং যত ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে তা দিয়ে ইসরায়েলে টানা কয়েক সপ্তাহ আক্রমণ চালিয়ে যেতে পারবে ইরান। আর ওই ক’দিনই ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য ক্ষতিসাধনের জন্য ‘যথেষ্ট’। কারণ, এত তীব্র ও দীর্ঘ হামলার ঠেকানোর জন্য ইসরায়েল প্রস্তুত নয়। বিগত দশকগুলোতে তারা কেবল হামাস, হিজবুল্লাহ এবং হুতিদের মতো অপেক্ষকৃত ছোট ও কম শক্তির সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইরান বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা কতটা। গতকাল রোববার, প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হজ কাসেম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইরান। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি খুব সহজেই ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে নির্ভুলভাবে আঘাত হেনেছে। এ ছাড়া এই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত কতটা ভয়ংকর ও শক্তিশালী ছিল সেটিও স্পষ্ট হয়েছে প্রকাশিত হামলার ভিডিওতে।
অনেকে বলছেন, অবশ্যই, ইরানের এই উন্নতমানের ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ সীমাহীন নয়। শেষ পর্যন্ত দেশটিকে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার সীমিত করে পরিকল্পিতভাবে পরিচালনা করতে হবে। তবে এসব অত্যাধুনিক অস্ত্রের পাশাপাশি ইরানের হাতে রয়েছে প্রচলিত ধরনের অসংখ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং হাজার হাজার ড্রোন—যেগুলোর সম্মিলিত সামরিক সক্ষমতা ইসরায়েলের জন্য বাস্তব ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে। একইসঙ্গে, এটি ইসরায়েলের জন্যও একটি কৌশলগত ধাক্কাও, কারণ তারা মনে করেছিল, স্বল্পমেয়াদি সংঘাতে ইরান দীর্ঘসময় লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মতো সক্ষমতা রাখে না।
ইরান আসলে কী করবে এখন? বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রথমত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে সর্তক অবস্থানে থাকবে ইরান। শেষমেষ নিজেদের মর্যাদা বজায় রেখে যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে। জয়-পরাজয়ের হিসাবে ইরানকে যেন কোনোভাবেই পরাজিত বলা না যায়, সেটি এখন তেহরানের মূল লক্ষ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়ানো
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ চরমভাবে পরীক্ষার মুখে পড়েছে। এসব হামলা প্রতিহত করতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে সরাসরি কোনো পক্ষ নয়। পাশাপাশি কড়া হুঁশিয়ার দিয়ে রেখেছে—মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটি বা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে কোনো হামলা হলে এর পরিণাম হবে ভয়াবহ।
ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি কোনো সংঘাতে জড়াতে চায় না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানে হামলার সুযোগ করে দিলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একযোগে হামলা চালাবে। তাই যুক্তরাষ্ট্র ইস্যুতে বরাবরই সতর্ক নীতি গ্রহণ করছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। যদি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একত্রে হামলা চালায়, তাহলে ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোও ধ্বংসের ঝুঁকিতে পড়বে। পাশাপাশি, এই যৌথ হামলা এমন সব দেশে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটির ওপর নির্ভর করতে পারে—যেমন কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও তুরস্ক—যেগুলো সরাসরি ইরানের শত্রু নয়, এবং তাদের সঙ্গে ইরান সংঘাতে জড়াতে চাইবে না। বরং এসব দেশ ইরানের কাছে সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।
তবে ইরানের হাতে বিকল্পও রয়েছে। বহুবার তারা হুমকি দিয়েছে, ওমান ও ইরানের মাঝখানে অবস্থিত হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে—যা মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল পরিবহনের আন্তর্জাতিক রুট। গত শুক্রবার এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম সাময়িকভাবে ব্যারেলপ্রতি ৭৮ ডলার পর্যন্ত ছুঁয়েছিল, পরে তা কমে আসে। গতকাল রোববার আবার বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়, তবে তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ইসরায়েল ও এর মিত্রসহ মোড়ল দেশগুলোকে চাপে রাখতে ইরানের হাতে যে কৌশলগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এই হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি অন্যতম। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ইরান এই পথ বেছে নিলে খুব অবাক হওয়ার কিছু নেই বলেও মনে করেন অনেকে।
সম্ভাব্য ‘অফ-র্যাম্প’ খুঁজবে ইরান
শেষ পর্যন্ত ইরান এমন একটি ‘অফ-র্যাম্প’ বা সম্মানজনক নিষ্ক্রমণ পথ খুঁজবে, যা এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে। কারণ, পাল্টাপাল্টি হামলা চলতে থাকলে তা পরমাণু শক্তি হয়ে উঠতে চাওয়া ইরানের জন্য কম ক্ষতির হবে না। এ ছাড়া, পুরো অঞ্চলেই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে। ইরানের অর্থনীতিতেও ভয়াবহ ক্ষতি ও অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তেহরান এ-ও জানে, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের সীমাবদ্ধতা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকায় ইসরায়েলের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ পুনরায় মজুদ করা অনেক সহজ, যেটি ইরানের পক্ষে সম্ভব নয়।
তেহরান ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, যদি ইসরায়েল হামলা বন্ধ করে, তাহলে তারাও থামবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায়ও ফিরবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি গতকাল রোববার বলেন, ‘যখনই এই (ইসরায়েলি) হামলা বন্ধ হবে, আমরাও স্বাভাবিকভাবেই প্রতিক্রিয়া জানাব।’
তবে এটি অনেকটাই নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। সংঘাত থামাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ প্রয়োগের প্রয়োজন রয়েছে, এবং ট্রাম্প সেই দায়িত্ব নিতে রাজি কিনা, তা স্পষ্ট নয়। সংঘাত নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান প্রায়ই বদলাচ্ছে—একদিকে তিনি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছেন, আবার অন্যদিকে ইরানকে হুমকিও দিচ্ছেন। তেহরান জানে, ট্রাম্প এমন একজন ব্যক্তি, যার ওপর ভরসা করা যায় না।
ইরানে ইসরায়েলের হামলার পরিকল্পনার কথা আগেভাগে জানতেন বলে স্বীকার করলেও গতকাল রোববার ওমানে ইরানের সঙ্গে যথারীতি পরমাণু আলোচনা হবে বলে আশা করেছিলেন ট্রাম্প। এটিকে একপ্রকার প্রতারণা বলেই মনে করছে তেহরান।
২১শ শতকের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার মূল হাতিয়ার হচ্ছে প্রযুক্তি। আর প্রযুক্তিকে সচল রাখে রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস বা বিরল খনিজ ধাতু। ১৭টি ধাতুর এই গ্রুপ ছাড়া আধুনিক অর্থনীতি কার্যত অসম্ভব। ডিসপ্রসিয়াম ও টার্বিয়ামের মতো ভারী চুম্বক তৈরি করে বৈদ্যুতিক মোটর, সেমিকন্ডাক্টর, রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র, স্মার্টফোন...
৩ ঘণ্টা আগেলাদাখ অ্যাপেক্স বডির সমন্বয়ক জিগমাত পালজোর আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আজ লাদাখের ইতিহাসের রক্তাক্ত দিন। আমাদের তরুণদের হত্যা করা হয়েছে—যাঁরা সাধারণ মানুষ, শুধু অনশনের দাবিকে সমর্থন জানাতে রাস্তায় নেমেছিলেন।’ তিনি আরও বলেন, পাঁচ বছর ধরে সরকারের ভুয়া প্রতিশ্রুতিতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।
২ দিন আগেনেপালের শুরুটা হয়েছিল ভক্তপুর শহরে এক রাজনীতিবিদের মেয়ের বিয়েকে কেন্দ্র করে। সে সময় খবর ছড়ায়—ভিআইপি অতিথিদের জন্য শহরের প্রধান সড়ক ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ ছিল এবং এতে বড় ধরনের যানজট তৈরি হয়।
৩ দিন আগেজাতিসংঘের মঞ্চে ফিলিস্তিনকে স্বাধীনতা রাষ্ট্র হিসেবে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের স্বীকৃতি শতবর্ষী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব মুহূর্ত। তবে এটি এক ধরনের কূটনৈতিক ঝুঁকিও। কারণ, বড় ইউরোপীয় শক্তিগুলো মনে করছে—সংঘাত এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তাদের এমন নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
৩ দিন আগে