অর্ণব সান্যাল
বিশ্বজুড়ে করোনার উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যেই জমে উঠেছে যুদ্ধ যুদ্ধ আবহ। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা লাগাতার ঢোল বাজাচ্ছে এই বলে যে, যুদ্ধ এবার বেঁধেই গেল বুঝি! ওদিকে সেই ঢোলে সংগত দিতে কাঠি করে যাচ্ছে রাশিয়া। এটুকু বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, যুদ্ধের আঁশে তারাও আছে। আর বিশ্বের অন্য প্রান্তে বসে রাশিয়াকে অন্তত মুখে প্রবল সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে চীন। তবে কি এই সংকটে ‘নেপোয় মারে দই’ প্রবাদের মতো চীনই নেপো হবে?
ইউক্রেন নিয়ে ইউরোপের সংকট অনেক দিনের। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ক্রিমিয়া সংকটের পর থেকে এটি মূলত ‘টাইম বোমা’ হয়ে আছে। যেকোনো সময় এতে বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা ছিলই। ন্যাটোকে ঘিরে এবার সেই আগুনে ঘি পড়েছে। আগুনও আঁচ দিচ্ছে বেশ। জো বাইডেনের প্রশাসন বারবার বলে যাচ্ছে যুদ্ধ লাগল বলে! ওদিকে দীর্ঘ সময় মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অবশেষে বলেছেন, দোষ যুক্তরাষ্ট্রের, তিনি যুদ্ধ চান না। এর সঙ্গে অবশ্য আছে নানা যদি, কিন্তু। তাতে ইঙ্গিত, পূর্ব ইউরোপ ও নিজের সীমান্তবর্তী কোনো দেশে পশ্চিমাদের খবরদারিও সহ্য করা হবে না। আর ঠিক সেই সময়টায় রাশিয়ার পাশে এসে দাঁড়ালেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং। এরই মধ্যে চীন-রাশিয়ার যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া ও তাস। তাতে দুই বন্ধু দেশের হৃদ্যতা এবং যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলায় যূথবদ্ধতা প্রকাশিত হয়েছে।
কিন্তু তাই বলে চীন প্রত্যক্ষভাবে রাশিয়ার পাশে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে না। অন্তত যুদ্ধ লেগে গেলে মাঠে চীনা অস্ত্র দেখার সম্ভাবনা বেশ ক্ষীণ। কারণ চীন নিজেই নানা গ্যাঁড়াকলে আছে যুক্তরাষ্ট্র তথা পুরো পশ্চিমা দুনিয়ার কারণে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমল থেকেই চীনকে বৈরী চোখে দেখে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। জো বাইডেন শুরুতে কিছুটা ‘কিন্তু কিন্তু’ করলেও, তিনিও এখন চীনের সঙ্গে শত্রুতা বজায় রাখতেই বেশি আগ্রহী। সুতরাং বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত ব্যবসায় চীনকে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রবলভাবে। ওদিকে আছে ভূরাজনৈতিক বিষয়-আশয়। তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে সি চিনপিংকে যন্ত্রণা সইতে হচ্ছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই পুরোপুরি প্রাধান্য বিস্তার করা যাচ্ছে না ওই অঞ্চলে। সেক্ষেত্রে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনা আসলে চীনের একটি ‘প্রক্সি ওয়ার’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সেই যুদ্ধে বিনিয়োগ করতে হয় কথা আর বিনিময়ে পাওয়া যায় ‘দই’।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন যতই বাগাড়ম্বর করুক না কেন, রুশ অর্থনীতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। সেখানে বিলিয়ন বিলিয়ন ইউয়ান ঢাললেও আখেরে কোনো লাভ হবে না। চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হলেও রুশ দেশের অর্থনৈতিক সংকট মেটানো সম্ভব নয়। ফলে চীন মূলত কূটনৈতিক সমর্থন দিয়েই এই বিরোধে শামিল থাকবে।
যদি ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া সুবিধাজনক অবস্থায় চলে যেতে পারে, তবে তার সুফল পেতে পারে চীন। একেবারে নিখরচায়। এটি হবে একধরনের কৌশলগত বৈধতা, যাকে ব্যবহার করে তাইওয়ানে আরও যুদ্ধবিমান ওড়াতে পারবে সি চিন পিংয়ের দেশ। আবার দক্ষিণ চীন সাগরে যুদ্ধজাহাজও চলবে দুরন্ত গতিতে। আর ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো প্রকার পিছু হটা জাপান বা তাইওয়ানের মনোবল দুর্বল করে দিতে পারে। তারই ফায়দা তুলতে পারে চীন।
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইউক্রেন সংকট ত্রিশক্তিবলয়ের পৃথিবীতে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান জানান দেওয়ার সুযোগ। মার্কিন মুলুকে বেশ কিছুদিন ধরেই একটি বিতর্ক আছে—ট্রাম্পের আমেরিকা, নাকি বাইডেনের আমেরিকা—কে বেশি শক্তিশালী? মার্কিন বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগেই এই বিতর্কের ইতি টানা বাইডেনের জন্য খুবই প্রয়োজন। আর এর অন্যতম উপায় হচ্ছে পরাশক্তি হিসেবে নিজেদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। একই খেলা রাশিয়া ও চীনেও আছে। শেষ দফায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই পুতিনের জনপ্রিয়তায় ক্রমবর্ধমান ভাটার টান দৃশ্যমান। চীনের কমিউনিস্ট পার্টিও ঠিক কমিউনিজমের ধারায় নেই অনেক দিন। ফলে ওয়ানম্যান শোর এ দুই দেশেও জনসাধারণকে ভুলিয়ে রাখার একটা চেষ্টা শাসকদের করে যেতেই হয়। আর কে না জানে, জাতীয়তাবাদের চেয়ে সুস্বাদু ললিপপ এই পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া ভার।
মনে রাখতে হবে, যে তিন শক্তি এখন বিশ্বে ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করছে, তারা সবাই পরমাণু শক্তিধর। গত ৬০ বা ৭০ বছরের ঘটনাবলি মাথায় নিলে দেখতে পাবেন, এই পরমাণু শক্তি বেশির ভাগ সময়ই হুমকি দেওয়া বা বিমা পলিসি হিসেবে কাজ করে। তা বিস্তৃত সংঘাতে গড়ায় কম। বরং নো ম্যানস ল্যান্ডে দাঁড়িয়ে পরমাণু বোমা উঁচিয়ে একে অন্যকে ‘আগে তুই আক্রমণ করে দেখা’ ঘরানার কথাবার্তায় পরমাণু শক্তিধরদের লাভ বেশি। ইউক্রেন ইস্যুতেও এমনটাই হবে কি না, তা বুঝতে আরেকটু সময় হয়তো লাগবে। তবে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁখো এরই মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করতে মস্কো গেছেন, বিশ্বের আরও গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও এই প্রচেষ্টায় শামিল হতে পারেন। এখন নিন্দুকেরা যদি পুরো ঘটনাকে ‘নাটক-সিনেমা’ আখ্যা দেন, তখন কি জোর গলায় প্রতিবাদ করা যাবে?
পুঁজিবাদের শত্রু বা মিত্র—উভয়ই একটি কথা নির্দ্বিধায় স্বীকার করবেন যে, অর্থের চেয়ে বড় অস্ত্র এই দুনিয়ায় নাই। অর্থের সখা হিসেবে এই বিশ্বে আছে তেল-গ্যাসও। যুক্তরাষ্ট্র সেই অর্থ ও বাণিজ্যসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা দিয়েই আপাতত কাজ সারতে চাইছে। সমস্যা হলো, চীন ও রাশিয়ার হাতে বাকি দুটো আছে। বাড়তি হিসেবে আছে শ্রমবাজারের উল্লেখযোগ্য অংশ। এই তিন পক্ষের শ্রেষ্ঠত্বের সংঘাত তাই শিগ্গির মেটার নয়, অন্তত কোনো পক্ষ কুপোকাত না হওয়া পর্যন্ত। সুতরাং ইউক্রেন কেবলই ঝগড়ার একটি ইস্যুমাত্র। এমন ইস্যু ভবিষ্যতেও বারবার এলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন, ফরেন পলিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, এনবিসি নিউজ ও দ্য ইকোনমিস্ট
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
বিশ্বজুড়ে করোনার উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যেই জমে উঠেছে যুদ্ধ যুদ্ধ আবহ। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা লাগাতার ঢোল বাজাচ্ছে এই বলে যে, যুদ্ধ এবার বেঁধেই গেল বুঝি! ওদিকে সেই ঢোলে সংগত দিতে কাঠি করে যাচ্ছে রাশিয়া। এটুকু বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, যুদ্ধের আঁশে তারাও আছে। আর বিশ্বের অন্য প্রান্তে বসে রাশিয়াকে অন্তত মুখে প্রবল সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে চীন। তবে কি এই সংকটে ‘নেপোয় মারে দই’ প্রবাদের মতো চীনই নেপো হবে?
ইউক্রেন নিয়ে ইউরোপের সংকট অনেক দিনের। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ক্রিমিয়া সংকটের পর থেকে এটি মূলত ‘টাইম বোমা’ হয়ে আছে। যেকোনো সময় এতে বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা ছিলই। ন্যাটোকে ঘিরে এবার সেই আগুনে ঘি পড়েছে। আগুনও আঁচ দিচ্ছে বেশ। জো বাইডেনের প্রশাসন বারবার বলে যাচ্ছে যুদ্ধ লাগল বলে! ওদিকে দীর্ঘ সময় মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অবশেষে বলেছেন, দোষ যুক্তরাষ্ট্রের, তিনি যুদ্ধ চান না। এর সঙ্গে অবশ্য আছে নানা যদি, কিন্তু। তাতে ইঙ্গিত, পূর্ব ইউরোপ ও নিজের সীমান্তবর্তী কোনো দেশে পশ্চিমাদের খবরদারিও সহ্য করা হবে না। আর ঠিক সেই সময়টায় রাশিয়ার পাশে এসে দাঁড়ালেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং। এরই মধ্যে চীন-রাশিয়ার যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া ও তাস। তাতে দুই বন্ধু দেশের হৃদ্যতা এবং যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলায় যূথবদ্ধতা প্রকাশিত হয়েছে।
কিন্তু তাই বলে চীন প্রত্যক্ষভাবে রাশিয়ার পাশে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে না। অন্তত যুদ্ধ লেগে গেলে মাঠে চীনা অস্ত্র দেখার সম্ভাবনা বেশ ক্ষীণ। কারণ চীন নিজেই নানা গ্যাঁড়াকলে আছে যুক্তরাষ্ট্র তথা পুরো পশ্চিমা দুনিয়ার কারণে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমল থেকেই চীনকে বৈরী চোখে দেখে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। জো বাইডেন শুরুতে কিছুটা ‘কিন্তু কিন্তু’ করলেও, তিনিও এখন চীনের সঙ্গে শত্রুতা বজায় রাখতেই বেশি আগ্রহী। সুতরাং বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত ব্যবসায় চীনকে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রবলভাবে। ওদিকে আছে ভূরাজনৈতিক বিষয়-আশয়। তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে সি চিনপিংকে যন্ত্রণা সইতে হচ্ছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই পুরোপুরি প্রাধান্য বিস্তার করা যাচ্ছে না ওই অঞ্চলে। সেক্ষেত্রে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনা আসলে চীনের একটি ‘প্রক্সি ওয়ার’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সেই যুদ্ধে বিনিয়োগ করতে হয় কথা আর বিনিময়ে পাওয়া যায় ‘দই’।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন যতই বাগাড়ম্বর করুক না কেন, রুশ অর্থনীতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। সেখানে বিলিয়ন বিলিয়ন ইউয়ান ঢাললেও আখেরে কোনো লাভ হবে না। চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হলেও রুশ দেশের অর্থনৈতিক সংকট মেটানো সম্ভব নয়। ফলে চীন মূলত কূটনৈতিক সমর্থন দিয়েই এই বিরোধে শামিল থাকবে।
যদি ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া সুবিধাজনক অবস্থায় চলে যেতে পারে, তবে তার সুফল পেতে পারে চীন। একেবারে নিখরচায়। এটি হবে একধরনের কৌশলগত বৈধতা, যাকে ব্যবহার করে তাইওয়ানে আরও যুদ্ধবিমান ওড়াতে পারবে সি চিন পিংয়ের দেশ। আবার দক্ষিণ চীন সাগরে যুদ্ধজাহাজও চলবে দুরন্ত গতিতে। আর ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো প্রকার পিছু হটা জাপান বা তাইওয়ানের মনোবল দুর্বল করে দিতে পারে। তারই ফায়দা তুলতে পারে চীন।
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইউক্রেন সংকট ত্রিশক্তিবলয়ের পৃথিবীতে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান জানান দেওয়ার সুযোগ। মার্কিন মুলুকে বেশ কিছুদিন ধরেই একটি বিতর্ক আছে—ট্রাম্পের আমেরিকা, নাকি বাইডেনের আমেরিকা—কে বেশি শক্তিশালী? মার্কিন বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগেই এই বিতর্কের ইতি টানা বাইডেনের জন্য খুবই প্রয়োজন। আর এর অন্যতম উপায় হচ্ছে পরাশক্তি হিসেবে নিজেদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। একই খেলা রাশিয়া ও চীনেও আছে। শেষ দফায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই পুতিনের জনপ্রিয়তায় ক্রমবর্ধমান ভাটার টান দৃশ্যমান। চীনের কমিউনিস্ট পার্টিও ঠিক কমিউনিজমের ধারায় নেই অনেক দিন। ফলে ওয়ানম্যান শোর এ দুই দেশেও জনসাধারণকে ভুলিয়ে রাখার একটা চেষ্টা শাসকদের করে যেতেই হয়। আর কে না জানে, জাতীয়তাবাদের চেয়ে সুস্বাদু ললিপপ এই পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া ভার।
মনে রাখতে হবে, যে তিন শক্তি এখন বিশ্বে ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করছে, তারা সবাই পরমাণু শক্তিধর। গত ৬০ বা ৭০ বছরের ঘটনাবলি মাথায় নিলে দেখতে পাবেন, এই পরমাণু শক্তি বেশির ভাগ সময়ই হুমকি দেওয়া বা বিমা পলিসি হিসেবে কাজ করে। তা বিস্তৃত সংঘাতে গড়ায় কম। বরং নো ম্যানস ল্যান্ডে দাঁড়িয়ে পরমাণু বোমা উঁচিয়ে একে অন্যকে ‘আগে তুই আক্রমণ করে দেখা’ ঘরানার কথাবার্তায় পরমাণু শক্তিধরদের লাভ বেশি। ইউক্রেন ইস্যুতেও এমনটাই হবে কি না, তা বুঝতে আরেকটু সময় হয়তো লাগবে। তবে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁখো এরই মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করতে মস্কো গেছেন, বিশ্বের আরও গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও এই প্রচেষ্টায় শামিল হতে পারেন। এখন নিন্দুকেরা যদি পুরো ঘটনাকে ‘নাটক-সিনেমা’ আখ্যা দেন, তখন কি জোর গলায় প্রতিবাদ করা যাবে?
পুঁজিবাদের শত্রু বা মিত্র—উভয়ই একটি কথা নির্দ্বিধায় স্বীকার করবেন যে, অর্থের চেয়ে বড় অস্ত্র এই দুনিয়ায় নাই। অর্থের সখা হিসেবে এই বিশ্বে আছে তেল-গ্যাসও। যুক্তরাষ্ট্র সেই অর্থ ও বাণিজ্যসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা দিয়েই আপাতত কাজ সারতে চাইছে। সমস্যা হলো, চীন ও রাশিয়ার হাতে বাকি দুটো আছে। বাড়তি হিসেবে আছে শ্রমবাজারের উল্লেখযোগ্য অংশ। এই তিন পক্ষের শ্রেষ্ঠত্বের সংঘাত তাই শিগ্গির মেটার নয়, অন্তত কোনো পক্ষ কুপোকাত না হওয়া পর্যন্ত। সুতরাং ইউক্রেন কেবলই ঝগড়ার একটি ইস্যুমাত্র। এমন ইস্যু ভবিষ্যতেও বারবার এলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন, ফরেন পলিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, এনবিসি নিউজ ও দ্য ইকোনমিস্ট
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বহুল আলোচিত ও প্রতীক্ষিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়াসংলগ্ন অঙ্গরাজ্য আলাস্কায় অবস্থিত যৌথ ঘাঁটি এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসনে মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন। বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয়
১ দিন আগেনিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানান, তিনি ইতিমধ্যে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন এবং নতুন কোনো শর্ত আরোপ করা হচ্ছে না। একই সময়ে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও মার্কিন পণ্যে তাদের শুল্ক স্থগিতাদেশ একই মেয়াদে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাদের পূর্বের চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে।
৩ দিন আগেবিশ্বজুড়েই ছাত্র ইউনিয়নগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগকারী গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করে। ইতিহাস বলে, এই ছাত্ররাই সরকারকে দায়বদ্ধ করে তোলে এবং তরুণদের অধিকার রক্ষা করে। বাংলাদেশে অনেক ছাত্র নেতা পরবর্তীকালে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ...
৪ দিন আগেশেখ হাসিনার পতনের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন ও বাংলাদেশের এক নতুন ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির আশায় হাজারো মানুষ গত সপ্তাহে ঢাকায় জড়ো হয়েছিলেন। বর্ষাস্নাত দিনটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নেতা, অধিকারকর্মীদের উপস্থিতিতে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ‘নয়া বাংলাদেশের’ ঘোষণাপত্র উন্মোচন করেছেন।
৫ দিন আগে