অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বজুড়েই ছাত্র ইউনিয়নগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগকারী গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করে। ইতিহাস বলে, এই ছাত্ররাই সরকারকে দায়বদ্ধ করে তোলে এবং তরুণদের অধিকার রক্ষা করে। বাংলাদেশে অনেক ছাত্র নেতা পরবর্তীকালে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে রাজনীতিতে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। কিন্তু এর দুঃখজনক পরিণতি হলো, এই ছাত্ররাজনীতি একপর্যায়ে কার্যত তাদের আদর্শলগ্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এমনকি নির্লজ্জ লেজুড়বৃত্তি এবং ওই রাজনৈতিক দলের স্বার্থ রক্ষায় সহিংসতায় জড়িয়ে গেছে। সেই সঙ্গে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্যেও ছাত্রনেতাদের নাম এসেছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে নতুন ছাত্ররাজনীতির প্রত্যাশা বেগবান হয়েছে। পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে কেউ কেউ আবার ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবিও তুলছে। এই দ্বান্দ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে দেশের প্রধান কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজনীয়তা কতখানি, এই ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতার ভূমিকা ও অবদান কী, পরবর্তীতে তথাকথিত মুরব্বি সংগঠনের লেজুড়বৃত্তিই কি ছাত্ররাজনীতির অনিবার্য পরিণতি?
এসব প্রশ্নের জবাব পেতে আমরা ভারতের অভিজ্ঞতা স্মরণ করতে পারি। ভারতের ছাত্ররাজনীতির ঐতিহাসিক পটভূমি, বর্তমান অবস্থা, প্রেশার গ্রুপ হিসেবে ভূমিকা এবং বিশ্বব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা—বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বুঝতেও সহায়তা করবে।
ভারতে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে তরুণ-যুবকেরা ছিলেন মূল শক্তি। ১৯১৯ সালের রাউলাট অ্যাক্টের বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধীর আন্দোলনে ছাত্ররা ব্যাপকভাবে অংশ নেয়। অসহযোগ আন্দোলনে গান্ধী ছাত্রদের স্কুল-কলেজ বয়কট করার আহ্বান জানান। তাঁরা রাস্তায় নেমে জাতীয় নেতাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ১৯২০ সালে প্রথম অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকেই ১৯৩৬ সালে অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এআইএসএফ)-এর জন্ম হয়। স্বদেশি আন্দোলনে ছাত্ররা ব্রিটিশ পণ্য বয়কট করে ভারতীয় পণ্যের প্রচার করে। ১৯৪২ সালের ভারত ছাড় আন্দোলনে ছাত্ররা গণ-সমাবেশ এবং প্রতিবাদ সংগঠিত করে। অনেক ছাত্রনেতা কারাবন্দী হন অথবা শহীদ হন।
স্বাধীনতার পর, ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় থাকলেও, একটি একক ও চূড়ান্ত লক্ষ্যের অভাব দেখা যায়। ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র ইউনিয়নগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ে। এমনকি বামপন্থী সংগঠনগুলো যেমন এআইএসএফ কট্টর কমিউনিস্ট এবং গান্ধীবাদী সমাজতান্ত্রিক—এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়। ১৯৭০-এর দশকে একটি বড় আদর্শগত পরিবর্তন ঘটে। ১৯৬২,১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের তিনটি যুদ্ধ, অর্থনৈতিক দুর্বলতা এবং কংগ্রেস সরকারের সমাজতান্ত্রিক নীতির কারণে অসন্তোষ বাড়ে। ১৯৭৪ সালে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, দুর্নীতি এবং সরকারি অপশাসনের বিরুদ্ধে বিহার এবং গুজরাটে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় ছাত্ররা। জয়প্রকাশ নারায়ণের ‘টোটাল রেভল্যুশন’ এই আন্দোলনকে শক্তি জোগায়। এই সময়ে আরএসএস-সমর্থিত অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) উত্থান ঘটে। তারা দ্রুতই নিজেদের কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
এই আন্দোলন থেকে উঠে আসা ছাত্র নেতারা যেমন অরুণ জেটলি, লালু প্রসাদ যাদব এবং রাম বিলাস পাসোয়ান পরবর্তীকালে মূলধারার রাজনীতিতে প্রভাবশালী হন। জেটলি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (ডিইউএসইউ)-এর সভাপতি ছিলেন এবং ইন্দিরার জরুরি অবস্থার (ইমার্জেন্সি) সময় কারাবন্দী হন। পরে তিনি বিজেপি সরকারের অর্থ, প্রতিরক্ষা এবং আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
ভারতের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেমন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ), যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররাজনীতির জন্য বিখ্যাত। এখানে কংগ্রেস-সমর্থিত ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া (এনএসইউআই), আরএসএস-সমর্থিত এবিভিপি, বামপন্থী অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আইসা) এবং নতুন গোষ্ঠী যেমন আম আদমি পার্টি-সমর্থিত ছাত্র যুব সংঘর্ষ সমিতি (সিওয়াইএসএস) এবং স্বাধীন ও স্বতন্ত্র ইউনিয়ন যেমন বিরসা আম্বেদকর ফুলে স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (বাপসা) সক্রিয়।
এখন প্রশ্ন হলো: ছাত্ররাজনীতি কি কেবল জাতীয় বা রাজ্য-স্তরের রাজনীতির প্রতিফলন, নাকি সরকারের বিরুদ্ধে সত্যিকারের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে?
সাধারণত দেখা যায়, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র শাখা বেশি অর্থ এবং সংস্থান পায়। এই প্রবণতা বিরোধী ইউনিয়নগুলোকে দুর্বল করে দেয়। যেমন বামফ্রন্টের দুর্বলতার কারণে আইসা এবং স্টুডেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (এসএফআই) কমজোর হয়েছে।
তবে বিজেপির এই সময় এসে ব্যাপারটা অতো সরলও থাকেনি। ভারতে ক্যাম্পাসগুলোতে সরকার-বিরোধী ছাত্র নেতাদের ‘দেশদ্রোহী’ বা ‘অ্যান্টি-ন্যাশনাল’ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। সরকারের এই কূটচাল রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে জাতীয়তাবাদী বনাম বিশ্বাসঘাতকতার ফ্রেমে বন্দী করছে। এই কৌশল কার্যত প্রতিরোধকে দুর্বল করে দেয় এবং মতামতের বৈচিত্র্যকে অস্বীকার করে, সমাজে বিতর্কের পরিবেশ সংকুচিত করে।
পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে অনেকে ছাত্ররাজনীতিকে প্রায়শই হিংসাত্মক এবং নোংরা বলে চিহ্নিত করেন। বিভিন্ন ইস্যুতে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার কারণে বলা হয়, ছাত্ররাজনীতি শিক্ষাকে প্রভাবিত করে। এই রাজনীতি ছাত্রদের কর্মজীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে। যেমন, কোনো কোম্পানি ‘অ্যান্টি-ন্যাশনাল’ হিসেবে চিহ্নিত ছাত্রকে নিয়োগ করতে চাইবে না।
অন্যদিকে, ইউনিয়ন-বিহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে। ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে না পারা একটি বড় দৃষ্টান্ত। তবে ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কিত হিংসা ও সংঘাত এবং নির্বাচনী অশান্তি এড়ানোর জন্য অনেক শিক্ষার্থী ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকাকে স্বাগত জানায়। ফলে, ছাত্ররা ক্রমেই ‘অরাজনৈতিক’ হয়ে ওঠে। এতে জাতীয় রাজনীতির প্রতি পুরো প্রজন্মের সচেতনতা ক্রমেই কমতে থাকে। যেমন বাংলাদেশে রাজনীতি পছন্দ না করা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রায় ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।
ভারতে ২০১৯ সাল ছিল ছাত্র অ্যাকটিভিজমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেএনইউ-এর ছাত্ররা উঠে দাঁড়ায়। পুলিশি নির্যাতনের পর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি আইআইটি এবং আইআইএম-এর মতো অরাজনৈতিক ক্যাম্পাসেও সংহতি দেখা যায়।
বিশ্বজুড়ে ছাত্ররা বারবার বিভিন্ন আন্দোলনের মুখ হয়েছে। সম্প্রতি হংকং-এ প্রো-ডেমোক্রেসি আন্দোলনে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্গে পরিণত করে পুলিশি নির্যাতনের মুখোমুখি হয়। চিলিতে পিনোচেটের পতনের পর থেকে ছাত্ররা অসমতা, বেসরকারিকরণ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদ করে। ছাত্ররা আগ্নেয়াস্ত্র আইন সংশোধন, এলজিবিটিকিউ+ অধিকার, শিক্ষা সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। এতে স্পষ্ট যে রাজনীতি শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্র নয়; তরুণেরাও নীতি-নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
এ ছাড়া ছাত্ররা কিন্তু সবচেয়ে কার্যকর প্রেশার গ্রুপ হয়ে উঠতে পারে। যেমন, ভারতে প্রেশার গ্রুপগুলোর মধ্যে রয়েছে—ব্যবসায়ী গোষ্ঠী (যেমন সিআইআই, ফিক্কি), ট্রেড ইউনিয়ন (যেমন এআইটিইউসি, আইএনটিইউসি), কৃষক গোষ্ঠী (যেমন অল ইন্ডিয়া কিষান সভা), ছাত্র সংগঠন, শিক্ষক সমিতি এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক সংগঠন (যেমন কাস্ট ফেডারেশন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ)। ছাত্র সংগঠনগুলো স্বাধীনতার আগে থেকেই সক্রিয়, যেমন ১৯২৮ সালের অল বেঙ্গল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং ১৯৩৬ সালের এআইএসএফ। স্বাধীনতার পর, এগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়: যেমন—এনএসইউআই জাতীয় কংগ্রেসে, এসএফআই সিপিআই-এ, এবিভিপি বিজেপিতে ভিড়ে যায়। তারা শিক্ষা-সম্পর্কিত ইস্যু ছাড়াও জাতীয় বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করে।
সবদিক বিবেচনায় বলা যেতে পারে, ছাত্র সংগঠনগুলোতে শেষ পর্যন্ত অবধারিতভাবে জাতীয় রাজনীতির প্রতিফলন ঘটলেও প্রতিরোধের সম্ভাবনাও যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। তবে হিংসা, দলীয় নিয়ন্ত্রণ এবং দমনমূলক কৌশল ছাত্রসংগঠনের এই সম্ভাবনাকে নষ্ট করে, সংগঠনগুলোর কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ইউনিয়ন-বিহীন ক্যাম্পাসগুলো ছাত্রদের অধিকারহীন করে ফেলতে পারে। অথচ ছাত্র ইউনিয়ন সক্রিয় আছে এমন ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সচেতনতা বাড়ে।
সুতরাং বলা যেতে পারে, ছাত্ররাজনীতি একটি দেশের গণতান্ত্রিক চর্চার অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ছাত্রসংগঠনগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বলতে গেলে তারা রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছে। পরবর্তীতেও ক্যাম্পাসেরসহ নানা জাতীয় ইস্যুতে তারা সোচ্চার থেকেছে এবং দাবি আদায় করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো জাতীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত থেকেই ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিন ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছে। বলতে গেলে, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের ফলেই ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ বিশ্বব্যাপী ঐকমত্য তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। ফলে সরকারগুলোও এখন বেশ চাপে পড়েছে।
বিশ্বব্যাপী এসব উদাহরণ থেকে শিক্ষা নিয়ে, বাংলাদেশের তরুণদেরও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আরও অংশগ্রহণ ইতিবাচক ফল দিতে পারে। প্রেশার গ্রুপ হিসেবে, ছাত্র সংগঠনগুলো যদি স্বাধীন এবং ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে তারা সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে পারে। অন্যথায়, এটি কেবল মূলধারার রাজনীতির ছায়া হয়ে থাকবে। তরুণেরা জনসংখ্যার একটি বড় অংশ—তাদের কণ্ঠস্বরকে উপেক্ষা করা মানে দেশের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকিতে ফেলা।
লেখক: জাহাঙ্গীর আলম, জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
বিশ্বজুড়েই ছাত্র ইউনিয়নগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগকারী গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করে। ইতিহাস বলে, এই ছাত্ররাই সরকারকে দায়বদ্ধ করে তোলে এবং তরুণদের অধিকার রক্ষা করে। বাংলাদেশে অনেক ছাত্র নেতা পরবর্তীকালে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে রাজনীতিতে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। কিন্তু এর দুঃখজনক পরিণতি হলো, এই ছাত্ররাজনীতি একপর্যায়ে কার্যত তাদের আদর্শলগ্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এমনকি নির্লজ্জ লেজুড়বৃত্তি এবং ওই রাজনৈতিক দলের স্বার্থ রক্ষায় সহিংসতায় জড়িয়ে গেছে। সেই সঙ্গে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্যেও ছাত্রনেতাদের নাম এসেছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে নতুন ছাত্ররাজনীতির প্রত্যাশা বেগবান হয়েছে। পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে কেউ কেউ আবার ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবিও তুলছে। এই দ্বান্দ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে দেশের প্রধান কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজনীয়তা কতখানি, এই ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতার ভূমিকা ও অবদান কী, পরবর্তীতে তথাকথিত মুরব্বি সংগঠনের লেজুড়বৃত্তিই কি ছাত্ররাজনীতির অনিবার্য পরিণতি?
এসব প্রশ্নের জবাব পেতে আমরা ভারতের অভিজ্ঞতা স্মরণ করতে পারি। ভারতের ছাত্ররাজনীতির ঐতিহাসিক পটভূমি, বর্তমান অবস্থা, প্রেশার গ্রুপ হিসেবে ভূমিকা এবং বিশ্বব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা—বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বুঝতেও সহায়তা করবে।
ভারতে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে তরুণ-যুবকেরা ছিলেন মূল শক্তি। ১৯১৯ সালের রাউলাট অ্যাক্টের বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধীর আন্দোলনে ছাত্ররা ব্যাপকভাবে অংশ নেয়। অসহযোগ আন্দোলনে গান্ধী ছাত্রদের স্কুল-কলেজ বয়কট করার আহ্বান জানান। তাঁরা রাস্তায় নেমে জাতীয় নেতাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ১৯২০ সালে প্রথম অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকেই ১৯৩৬ সালে অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এআইএসএফ)-এর জন্ম হয়। স্বদেশি আন্দোলনে ছাত্ররা ব্রিটিশ পণ্য বয়কট করে ভারতীয় পণ্যের প্রচার করে। ১৯৪২ সালের ভারত ছাড় আন্দোলনে ছাত্ররা গণ-সমাবেশ এবং প্রতিবাদ সংগঠিত করে। অনেক ছাত্রনেতা কারাবন্দী হন অথবা শহীদ হন।
স্বাধীনতার পর, ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় থাকলেও, একটি একক ও চূড়ান্ত লক্ষ্যের অভাব দেখা যায়। ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র ইউনিয়নগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ে। এমনকি বামপন্থী সংগঠনগুলো যেমন এআইএসএফ কট্টর কমিউনিস্ট এবং গান্ধীবাদী সমাজতান্ত্রিক—এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়। ১৯৭০-এর দশকে একটি বড় আদর্শগত পরিবর্তন ঘটে। ১৯৬২,১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের তিনটি যুদ্ধ, অর্থনৈতিক দুর্বলতা এবং কংগ্রেস সরকারের সমাজতান্ত্রিক নীতির কারণে অসন্তোষ বাড়ে। ১৯৭৪ সালে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, দুর্নীতি এবং সরকারি অপশাসনের বিরুদ্ধে বিহার এবং গুজরাটে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় ছাত্ররা। জয়প্রকাশ নারায়ণের ‘টোটাল রেভল্যুশন’ এই আন্দোলনকে শক্তি জোগায়। এই সময়ে আরএসএস-সমর্থিত অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) উত্থান ঘটে। তারা দ্রুতই নিজেদের কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
এই আন্দোলন থেকে উঠে আসা ছাত্র নেতারা যেমন অরুণ জেটলি, লালু প্রসাদ যাদব এবং রাম বিলাস পাসোয়ান পরবর্তীকালে মূলধারার রাজনীতিতে প্রভাবশালী হন। জেটলি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (ডিইউএসইউ)-এর সভাপতি ছিলেন এবং ইন্দিরার জরুরি অবস্থার (ইমার্জেন্সি) সময় কারাবন্দী হন। পরে তিনি বিজেপি সরকারের অর্থ, প্রতিরক্ষা এবং আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
ভারতের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেমন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ), যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররাজনীতির জন্য বিখ্যাত। এখানে কংগ্রেস-সমর্থিত ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া (এনএসইউআই), আরএসএস-সমর্থিত এবিভিপি, বামপন্থী অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আইসা) এবং নতুন গোষ্ঠী যেমন আম আদমি পার্টি-সমর্থিত ছাত্র যুব সংঘর্ষ সমিতি (সিওয়াইএসএস) এবং স্বাধীন ও স্বতন্ত্র ইউনিয়ন যেমন বিরসা আম্বেদকর ফুলে স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (বাপসা) সক্রিয়।
এখন প্রশ্ন হলো: ছাত্ররাজনীতি কি কেবল জাতীয় বা রাজ্য-স্তরের রাজনীতির প্রতিফলন, নাকি সরকারের বিরুদ্ধে সত্যিকারের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে?
সাধারণত দেখা যায়, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র শাখা বেশি অর্থ এবং সংস্থান পায়। এই প্রবণতা বিরোধী ইউনিয়নগুলোকে দুর্বল করে দেয়। যেমন বামফ্রন্টের দুর্বলতার কারণে আইসা এবং স্টুডেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (এসএফআই) কমজোর হয়েছে।
তবে বিজেপির এই সময় এসে ব্যাপারটা অতো সরলও থাকেনি। ভারতে ক্যাম্পাসগুলোতে সরকার-বিরোধী ছাত্র নেতাদের ‘দেশদ্রোহী’ বা ‘অ্যান্টি-ন্যাশনাল’ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। সরকারের এই কূটচাল রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে জাতীয়তাবাদী বনাম বিশ্বাসঘাতকতার ফ্রেমে বন্দী করছে। এই কৌশল কার্যত প্রতিরোধকে দুর্বল করে দেয় এবং মতামতের বৈচিত্র্যকে অস্বীকার করে, সমাজে বিতর্কের পরিবেশ সংকুচিত করে।
পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে অনেকে ছাত্ররাজনীতিকে প্রায়শই হিংসাত্মক এবং নোংরা বলে চিহ্নিত করেন। বিভিন্ন ইস্যুতে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার কারণে বলা হয়, ছাত্ররাজনীতি শিক্ষাকে প্রভাবিত করে। এই রাজনীতি ছাত্রদের কর্মজীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে। যেমন, কোনো কোম্পানি ‘অ্যান্টি-ন্যাশনাল’ হিসেবে চিহ্নিত ছাত্রকে নিয়োগ করতে চাইবে না।
অন্যদিকে, ইউনিয়ন-বিহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে। ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে না পারা একটি বড় দৃষ্টান্ত। তবে ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কিত হিংসা ও সংঘাত এবং নির্বাচনী অশান্তি এড়ানোর জন্য অনেক শিক্ষার্থী ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকাকে স্বাগত জানায়। ফলে, ছাত্ররা ক্রমেই ‘অরাজনৈতিক’ হয়ে ওঠে। এতে জাতীয় রাজনীতির প্রতি পুরো প্রজন্মের সচেতনতা ক্রমেই কমতে থাকে। যেমন বাংলাদেশে রাজনীতি পছন্দ না করা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রায় ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।
ভারতে ২০১৯ সাল ছিল ছাত্র অ্যাকটিভিজমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেএনইউ-এর ছাত্ররা উঠে দাঁড়ায়। পুলিশি নির্যাতনের পর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি আইআইটি এবং আইআইএম-এর মতো অরাজনৈতিক ক্যাম্পাসেও সংহতি দেখা যায়।
বিশ্বজুড়ে ছাত্ররা বারবার বিভিন্ন আন্দোলনের মুখ হয়েছে। সম্প্রতি হংকং-এ প্রো-ডেমোক্রেসি আন্দোলনে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্গে পরিণত করে পুলিশি নির্যাতনের মুখোমুখি হয়। চিলিতে পিনোচেটের পতনের পর থেকে ছাত্ররা অসমতা, বেসরকারিকরণ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদ করে। ছাত্ররা আগ্নেয়াস্ত্র আইন সংশোধন, এলজিবিটিকিউ+ অধিকার, শিক্ষা সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। এতে স্পষ্ট যে রাজনীতি শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্র নয়; তরুণেরাও নীতি-নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
এ ছাড়া ছাত্ররা কিন্তু সবচেয়ে কার্যকর প্রেশার গ্রুপ হয়ে উঠতে পারে। যেমন, ভারতে প্রেশার গ্রুপগুলোর মধ্যে রয়েছে—ব্যবসায়ী গোষ্ঠী (যেমন সিআইআই, ফিক্কি), ট্রেড ইউনিয়ন (যেমন এআইটিইউসি, আইএনটিইউসি), কৃষক গোষ্ঠী (যেমন অল ইন্ডিয়া কিষান সভা), ছাত্র সংগঠন, শিক্ষক সমিতি এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক সংগঠন (যেমন কাস্ট ফেডারেশন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ)। ছাত্র সংগঠনগুলো স্বাধীনতার আগে থেকেই সক্রিয়, যেমন ১৯২৮ সালের অল বেঙ্গল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং ১৯৩৬ সালের এআইএসএফ। স্বাধীনতার পর, এগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়: যেমন—এনএসইউআই জাতীয় কংগ্রেসে, এসএফআই সিপিআই-এ, এবিভিপি বিজেপিতে ভিড়ে যায়। তারা শিক্ষা-সম্পর্কিত ইস্যু ছাড়াও জাতীয় বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করে।
সবদিক বিবেচনায় বলা যেতে পারে, ছাত্র সংগঠনগুলোতে শেষ পর্যন্ত অবধারিতভাবে জাতীয় রাজনীতির প্রতিফলন ঘটলেও প্রতিরোধের সম্ভাবনাও যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। তবে হিংসা, দলীয় নিয়ন্ত্রণ এবং দমনমূলক কৌশল ছাত্রসংগঠনের এই সম্ভাবনাকে নষ্ট করে, সংগঠনগুলোর কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ইউনিয়ন-বিহীন ক্যাম্পাসগুলো ছাত্রদের অধিকারহীন করে ফেলতে পারে। অথচ ছাত্র ইউনিয়ন সক্রিয় আছে এমন ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সচেতনতা বাড়ে।
সুতরাং বলা যেতে পারে, ছাত্ররাজনীতি একটি দেশের গণতান্ত্রিক চর্চার অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ছাত্রসংগঠনগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বলতে গেলে তারা রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছে। পরবর্তীতেও ক্যাম্পাসেরসহ নানা জাতীয় ইস্যুতে তারা সোচ্চার থেকেছে এবং দাবি আদায় করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো জাতীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত থেকেই ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিন ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছে। বলতে গেলে, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের ফলেই ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ বিশ্বব্যাপী ঐকমত্য তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। ফলে সরকারগুলোও এখন বেশ চাপে পড়েছে।
বিশ্বব্যাপী এসব উদাহরণ থেকে শিক্ষা নিয়ে, বাংলাদেশের তরুণদেরও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আরও অংশগ্রহণ ইতিবাচক ফল দিতে পারে। প্রেশার গ্রুপ হিসেবে, ছাত্র সংগঠনগুলো যদি স্বাধীন এবং ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে তারা সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে পারে। অন্যথায়, এটি কেবল মূলধারার রাজনীতির ছায়া হয়ে থাকবে। তরুণেরা জনসংখ্যার একটি বড় অংশ—তাদের কণ্ঠস্বরকে উপেক্ষা করা মানে দেশের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকিতে ফেলা।
লেখক: জাহাঙ্গীর আলম, জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
শেখ হাসিনার পতনের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন ও বাংলাদেশের এক নতুন ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির আশায় হাজারো মানুষ গত সপ্তাহে ঢাকায় জড়ো হয়েছিলেন। বর্ষাস্নাত দিনটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নেতা, অধিকারকর্মীদের উপস্থিতিতে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ‘নয়া বাংলাদেশের’ ঘোষণাপত্র উন্মোচন করেছেন।
২ দিন আগেমিয়ানমারে জান্তা বাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সেই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে গত ২৪ জুলাই মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর...
২ দিন আগে১৫৮ বছর আগে মাত্র ৭২ লাখ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আলাস্কা বিক্রি করে দিয়েছিল রাশিয়া। আর ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানসূত্র খুঁজতে সেখানেই বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প-পুতিন। মার্কিন মুল্লুকের এত সব জৌলুস এলাকা বাদ দিয়ে কেন এই হিমশীতল অঙ্গরাজ্য আলাস্কাকে বেছে নেওয়া হলো? এর পেছনে রহস্য কী?
২ দিন আগেট্রাম্প মনে করছেন, তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রভাব দিয়ে সরাসরি আলোচনায় ক্রেমলিনকে যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে রাজি করানো সম্ভব। ছয় মাসের স্থবিরতার পর ট্রাম্প-পুতিনের মুখোমুখি বৈঠক হয়তো ক্রেমলিনকে যুদ্ধ থামাতে রাজি করাতে পারে, কিন্তু পুতিন সম্প্রতি স্পষ্ট করেছেন, তাঁর কাছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের জনগণ এক এবং যেখানে রুশ
৩ দিন আগে