Ajker Patrika

চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ কেন আরও ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করলেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের বিরতিকে আরও ৯০ দিন বাড়িয়েছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্ত বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে সম্ভাব্য নতুন সংঘাত আপাতত ঠেকিয়ে দিয়েছে।

সোমবার নিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানান, তিনি ইতিমধ্যে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন এবং নতুন কোনো শর্ত আরোপ করা হচ্ছে না। একই সময়ে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও মার্কিন পণ্যে তাদের শুল্ক স্থগিতাদেশ একই মেয়াদে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাদের পূর্বের চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর বিদ্যমান ৩০ শতাংশ শুল্কের বেশি আরোপ করা থেকে বিরত আছে এবং চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক বাড়ানো এড়িয়ে গেছে। ফলে উভয় দেশই পারস্পরিক বিরোধ মেটানোর বাড়তি ৯০ দিনের সময় পেল। এর মাধ্যমে চলতি বছরের শেষ দিকে ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সম্ভাব্য বৈঠকের পথও খুলতে পারে। মার্কিন ব্যবসায়ী মহলও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে দেশের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিকে অস্থির করে তুলেছেন ট্রাম্প, সেই চীনের প্রতি কেন তিনি এতটা নরম মনোভাব দেখালেন?

বিশ্লেষকদের মতে, চীনের বিরল খনিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং মার্কিন শুল্ক নীতির সীমাবদ্ধতা ট্রাম্প প্রশাসনকে আপাতত ‘নরম’ অবস্থান নিতে বাধ্য করেছে।

মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে বলা হয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র এখনো চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের ভারসাম্যহীনতা ও জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ নিয়ে আলোচনায় আছে। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বিরল খনিজের সরবরাহে চীনের প্রভাব ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য বড় চাপের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব খনিজ এখন গাড়ি থেকে শুরু করে মহাকাশ শিল্প পর্যন্ত অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

এ ছাড়া ট্রাম্পের উচ্চমাত্রায় শুল্ক বাড়ানোর কৌশল চীনকে প্রত্যাশিতভাবে চাপে ফেলতে পারেনি, বরং গত মে মাসে জেনেভায় আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশ পারস্পরিক শুল্ক কমিয়ে অর্থনৈতিক সংকট এড়িয়েছিল।

এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আলি ওয়াইন বলেন—অতিরিক্ত শুল্ক দিয়ে চীনকে ছাড় দিতে বাধ্য করার চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের সীমিত প্রভাবই প্রমাণ করেছে। আর চীন বুঝে গেছে, বিরল খনিজ রপ্তানি সীমিত করার হুমকি দিয়ে তারা আলোচনায় সুবিধা পেতে পারে।

বাণিজ্য যুদ্ধ আরও ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউএস-চায়না বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট শন স্টেইন। তিনি এই সময় বৃদ্ধিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে—এটি উভয় দেশকে আলোচনায় অগ্রসর হতে সহায়তা করবে, মার্কিন ব্যবসায়ীদের জন্য চীনা বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়াবে এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার স্থিতি আনবে।

তবে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা এখনো অনিশ্চিত। যুক্তরাষ্ট্র চীনের মেধাস্বত্ব সুরক্ষার ঘাটতি ও রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি নীতিকে বড় সমস্যা হিসেবে দেখে, যা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় চীনকে বাড়তি সুবিধা দেয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন—সয়াবিন কেনা বাড়ানো, ফেন্টানিল রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ এবং বিরল খনিজ সরবরাহ বজায় রাখার মতো সীমিত চুক্তি সম্ভব হলেও মূল সমস্যাগুলো আগামী বহু বছর অমীমাংসিতই থেকে যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল

জর্ডান-মিসরকে নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করতে চান নেতানিয়াহু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত