আজকের পত্রিকা ডেস্ক
চীন চলতি মাসের শুরুতে বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে জয়ের ৮০ তম বার্ষিকী উদ্যাপনে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করে। সেখানে বেইজিং জাহাজ বিধ্বংসী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শনী করেছে। এর মাধ্যমে চীন পরোক্ষভাবে এই হুমকিই দিয়েছে যে, ভবিষ্যতে যদি কখনো কোনো সংঘাত তৈরি হয়, তাহলে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ বিলিয়ন ডলারের বিমানবাহী রণতরীর ঠাঁই হতে পারে সাগরের তলদেশে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রতিপক্ষ হিসেবে কেবলই চীনই এমন অস্ত্রের পেছনে বিনিয়োগ করছে বিষয়টি এমন নয়। আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়াও একই খাতে ব্যাপক উন্নতি করেছে। হাইপারসনিক গতি আর কৌশলগত দিক পরিবর্তনের সক্ষমতার কারণে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উচ্চমূল্যের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে কার্যকর অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত।
মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে খুব একটা পিছিয়ে নেই। তবে বাস্তবতা হলো—যুক্তরাষ্ট্র আসলেই এই খাতে পিছিয়ে আছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো টম কারাকো বলেন, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) যখন সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে ব্যস্ত, তখন চীন এই বিষয়ে পুরো মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছে। তবে, তারা স্পষ্টভাবে এগিয়ে থাকলেও, আমরা তাদের ধরতে পারব বলেই আশাবাদী।’
সাধারণত হাইপারসনিক অস্ত্র শব্দের গতির চেয়ে অন্যূন পাঁচগুণ বেশ গতিতে চলতে পারে। এ কারণে, এ ধরনের অস্ত্রের সামরিক সুবিধা থাকলেও এর নকশা তৈরি বেশ জটিল, বিশেষ করে তীব্র তাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে। বিশ্বজুড়ে বর্তমানে দুই ধরণের হাইপারসনিক অস্ত্রের ওপর গবেষণা হচ্ছে—ক্রুজ মিসাইল, এগুলো রকেটচালিত। অপর ধরনটি হলো—হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল, যা রকেটের সাহায্যে বায়ুমণ্ডলে ওঠে তারপর নিচের দিকে পতনের সময় গতি সঞ্চার করে।
বর্তমানে যে ক্ষেপণাস্ত্রভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আছে, তা দিয়ে এই দুই ধরনের অস্ত্রই ঠেকানো কঠিন। কারণ, এই দুই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ও তাদের দিক পরিবর্তনের সক্ষমতা। আদর্শিকভাবে বিচার করলে, এই ধরনের অস্ত্র দিয়ে যেসব স্থানে হামলা চালানো হতে পারে সেগুলো ব্যাপকভাবে সুরক্ষিত। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, যেখানে হামলা করা জরুরি, কিন্তু সময় কম এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিমানবাহী রণতরী কিংবা কোনো শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার ওপর হামলার ক্ষেত্রে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে।
আপাতদৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে, চীন ও রাশিয়া হাইপারসনিক অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধকরণের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি করেছে। কিন্তু এই বিষয়ে তারা বাস্তবে যতটা দাবি করে, প্রকৃত বিবেচনায় সেই দাবি কতটা সত্য না আসলে পরখ করে দেখা কঠিন। কারণ, তাদের অস্ত্রভান্ডার খতিয়ে দেখার সুযোগ কারো নেই—অন্তত বৈধভাবে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর চীন বিপুল পরিমাণ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শনী করে। এর মধ্যে এমন নকশার ক্ষেপণাস্ত্রও আছে যেগুলো দিয়ে ভবিষ্যতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতের সময় মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলো ডুবিয়ে দিতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে ওয়াইজে–১৭, ওয়াইজে–১৯ এবং ওয়াইজে–২৯ অন্যতম। তবে সম্ভবত অনেকগুলো মডেলই এখনো পরীক্ষামূলক স্তরটি অতিক্রম করতে পারেনি বলেই অনুমান করা যায়। কিন্তু এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, হাইপারসনিক অস্ত্রের আরেকটি ধরন—হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল—চীন অনেক আগেই, ২০২০ সাল থেকেই তাদের সশস্ত্রবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এরমধ্যে, ডিএফ–জেডএফ হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল অন্যতম।
এই খাতে নিজেদের সিরিয়াসনেস বোঝাতে, চীন হাইপারসনিক পরীক্ষায়ও বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢালছে। এই বিষয়ে, ২০১৮ সালেই যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা মাইকেল গ্রিফিন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র গত এক দশকে যত হাইপারসনিক পরীক্ষা চালিয়েছে, চীন তার চেয়ে অন্তত ২০ গুণ বেশি পরীক্ষা চালিয়েছে।
রাশিয়ার হাইপারসনিক অস্ত্রের যত কর্মসূচি আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—গ্লাইড ভেহিকল আভাঁগার্দ এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র জিরকন। এ ছাড়া, পুরোনো প্রযুক্তিনির্ভর কিনঝালকেও হাইপারসনিক বলে প্রচার করছে মস্কো। এরই মধ্যে এই অস্ত্র ইউক্রেনে বেশ কয়েকবার ব্যবহারও করা হয়েছে। রাশিয়ার দাবি, তিনটি অস্ত্রই উন্নয়ন ধাপ পেরিয়ে আনুষ্ঠানিক উৎপাদনে গেছে।
তবে বাস্তবতার সঙ্গে রাশিয়ার দাবির কোনো মিল নেই। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০১৮ সালে কিনঝালকে ‘অপরাজেয়’ বললেও, ইউক্রেন দাবি করেছে—২০২২ সালের পর থেকে তারা অন্তত ৪০টি কিনঝাল ভূপাতিত করেছে। জিরকনও ইউক্রেন ভূপাতিত করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে, পশ্চিমা বিশ্বের এই দাবিও সমর্থিত সূত্রে প্রমাণ করা যায়নি।
অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করলে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র যেখানে শুরুই করতে পারেনি সেখানে রাশিয়া অন্তত প্রদর্শনী দেখিয়েছে, এমনকি মাঠেও হাইপারসনিক অস্ত্রের প্রয়োগ দেখিয়েছে। মার্কিন আর্মির হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বহুবার পিছিয়ে গেছে। অবশ্য, তারা দাবি করেছে—চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা ‘ডার্ক ইগল’ নামে এক ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে।
মার্কিন বিমানবাহিনীর হাইপারসনিক অস্ত্র কর্মসূচিও বেশ কয়েক দফা পিছিয়েছে। তাদের দুই ধরনের প্রকল্প আছে। সেগুলো হলো—গাইডেড ভেহিকল এয়ার লঞ্চড র্যাপিড রেসপন্স ওয়েপন (এআরআরডব্লিউ) এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হাইপারসনিক অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল (এইচএসিএম)। দুটোতেই নকশাগত সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে বাজেট নথি অনুযায়ী এয়ার ফোর্স ২০২৬ সালে এআরআরডব্লিউ উৎপাদন শুরু করতে চায়, আর সরকারি হিসাবরক্ষক দপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী এইচএসিএম উৎপাদন শুরু হতে পারে ২০২৭ সালে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ধীরগতিকে অতটা নেতিবাচকভাবে দেখা ঠিক হবে না—বলে মত দেন ওয়াশিংটনভিত্তিক আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো টড হ্যারিসন। তাঁর মতে, চীনের হাতে তেমন সংখ্যক উচ্চমূল্যের কৌশলগত লক্ষ্য নেই, যেগুলো ধ্বংস করতে হাইপারসনিক প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, চীনের বিমানবাহী রণতরীর সংখ্যা মাত্র তিনটি, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আছে ১১ টি। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্টেলথ বিমানবহর আছে, যা চীনের ক্ষমতার বাইরে। হ্যারিসনের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হাইপারসনিক অস্ত্র ‘মূলত একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের সক্ষমতা।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন কাগজে-কলমে অন্তত হাইপারসনিক উন্নয়নে আগ্রহ দেখিয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিনেট শুনানিতে উপ-প্রতিরক্ষা সচিব স্টিফেন ফেইনবার্গ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত হাইপারসনিক অস্ত্রে যথেষ্ট বিনিয়োগ করেনি, অথচ এগুলো ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।’
তবে যুক্তরাষ্ট্র কত দ্রুত ব্যবধান কমাতে পারবে, তা অনিশ্চিত। সিএসআইএসের কারাকো বলেন, বাজেটে খুব বেশি অর্থ বরাদ্দ হওয়ার ইঙ্গিত তিনি এখনো দেখেননি। তিনি বলেন, ‘কিছুটা, সামান্য ঝলক দেখা যাচ্ছে মীমাংসা বিল আর সর্বশেষ বাজেটে, তবে এখনো পর্যাপ্ত নয়।’
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
চীন চলতি মাসের শুরুতে বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে জয়ের ৮০ তম বার্ষিকী উদ্যাপনে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করে। সেখানে বেইজিং জাহাজ বিধ্বংসী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শনী করেছে। এর মাধ্যমে চীন পরোক্ষভাবে এই হুমকিই দিয়েছে যে, ভবিষ্যতে যদি কখনো কোনো সংঘাত তৈরি হয়, তাহলে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ বিলিয়ন ডলারের বিমানবাহী রণতরীর ঠাঁই হতে পারে সাগরের তলদেশে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রতিপক্ষ হিসেবে কেবলই চীনই এমন অস্ত্রের পেছনে বিনিয়োগ করছে বিষয়টি এমন নয়। আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়াও একই খাতে ব্যাপক উন্নতি করেছে। হাইপারসনিক গতি আর কৌশলগত দিক পরিবর্তনের সক্ষমতার কারণে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উচ্চমূল্যের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে কার্যকর অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত।
মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে খুব একটা পিছিয়ে নেই। তবে বাস্তবতা হলো—যুক্তরাষ্ট্র আসলেই এই খাতে পিছিয়ে আছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো টম কারাকো বলেন, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) যখন সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে ব্যস্ত, তখন চীন এই বিষয়ে পুরো মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছে। তবে, তারা স্পষ্টভাবে এগিয়ে থাকলেও, আমরা তাদের ধরতে পারব বলেই আশাবাদী।’
সাধারণত হাইপারসনিক অস্ত্র শব্দের গতির চেয়ে অন্যূন পাঁচগুণ বেশ গতিতে চলতে পারে। এ কারণে, এ ধরনের অস্ত্রের সামরিক সুবিধা থাকলেও এর নকশা তৈরি বেশ জটিল, বিশেষ করে তীব্র তাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে। বিশ্বজুড়ে বর্তমানে দুই ধরণের হাইপারসনিক অস্ত্রের ওপর গবেষণা হচ্ছে—ক্রুজ মিসাইল, এগুলো রকেটচালিত। অপর ধরনটি হলো—হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল, যা রকেটের সাহায্যে বায়ুমণ্ডলে ওঠে তারপর নিচের দিকে পতনের সময় গতি সঞ্চার করে।
বর্তমানে যে ক্ষেপণাস্ত্রভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আছে, তা দিয়ে এই দুই ধরনের অস্ত্রই ঠেকানো কঠিন। কারণ, এই দুই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ও তাদের দিক পরিবর্তনের সক্ষমতা। আদর্শিকভাবে বিচার করলে, এই ধরনের অস্ত্র দিয়ে যেসব স্থানে হামলা চালানো হতে পারে সেগুলো ব্যাপকভাবে সুরক্ষিত। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, যেখানে হামলা করা জরুরি, কিন্তু সময় কম এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিমানবাহী রণতরী কিংবা কোনো শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার ওপর হামলার ক্ষেত্রে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে।
আপাতদৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে, চীন ও রাশিয়া হাইপারসনিক অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধকরণের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি করেছে। কিন্তু এই বিষয়ে তারা বাস্তবে যতটা দাবি করে, প্রকৃত বিবেচনায় সেই দাবি কতটা সত্য না আসলে পরখ করে দেখা কঠিন। কারণ, তাদের অস্ত্রভান্ডার খতিয়ে দেখার সুযোগ কারো নেই—অন্তত বৈধভাবে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর চীন বিপুল পরিমাণ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শনী করে। এর মধ্যে এমন নকশার ক্ষেপণাস্ত্রও আছে যেগুলো দিয়ে ভবিষ্যতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতের সময় মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলো ডুবিয়ে দিতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে ওয়াইজে–১৭, ওয়াইজে–১৯ এবং ওয়াইজে–২৯ অন্যতম। তবে সম্ভবত অনেকগুলো মডেলই এখনো পরীক্ষামূলক স্তরটি অতিক্রম করতে পারেনি বলেই অনুমান করা যায়। কিন্তু এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, হাইপারসনিক অস্ত্রের আরেকটি ধরন—হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল—চীন অনেক আগেই, ২০২০ সাল থেকেই তাদের সশস্ত্রবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এরমধ্যে, ডিএফ–জেডএফ হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল অন্যতম।
এই খাতে নিজেদের সিরিয়াসনেস বোঝাতে, চীন হাইপারসনিক পরীক্ষায়ও বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢালছে। এই বিষয়ে, ২০১৮ সালেই যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা মাইকেল গ্রিফিন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র গত এক দশকে যত হাইপারসনিক পরীক্ষা চালিয়েছে, চীন তার চেয়ে অন্তত ২০ গুণ বেশি পরীক্ষা চালিয়েছে।
রাশিয়ার হাইপারসনিক অস্ত্রের যত কর্মসূচি আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—গ্লাইড ভেহিকল আভাঁগার্দ এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র জিরকন। এ ছাড়া, পুরোনো প্রযুক্তিনির্ভর কিনঝালকেও হাইপারসনিক বলে প্রচার করছে মস্কো। এরই মধ্যে এই অস্ত্র ইউক্রেনে বেশ কয়েকবার ব্যবহারও করা হয়েছে। রাশিয়ার দাবি, তিনটি অস্ত্রই উন্নয়ন ধাপ পেরিয়ে আনুষ্ঠানিক উৎপাদনে গেছে।
তবে বাস্তবতার সঙ্গে রাশিয়ার দাবির কোনো মিল নেই। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০১৮ সালে কিনঝালকে ‘অপরাজেয়’ বললেও, ইউক্রেন দাবি করেছে—২০২২ সালের পর থেকে তারা অন্তত ৪০টি কিনঝাল ভূপাতিত করেছে। জিরকনও ইউক্রেন ভূপাতিত করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে, পশ্চিমা বিশ্বের এই দাবিও সমর্থিত সূত্রে প্রমাণ করা যায়নি।
অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করলে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র যেখানে শুরুই করতে পারেনি সেখানে রাশিয়া অন্তত প্রদর্শনী দেখিয়েছে, এমনকি মাঠেও হাইপারসনিক অস্ত্রের প্রয়োগ দেখিয়েছে। মার্কিন আর্মির হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বহুবার পিছিয়ে গেছে। অবশ্য, তারা দাবি করেছে—চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা ‘ডার্ক ইগল’ নামে এক ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে।
মার্কিন বিমানবাহিনীর হাইপারসনিক অস্ত্র কর্মসূচিও বেশ কয়েক দফা পিছিয়েছে। তাদের দুই ধরনের প্রকল্প আছে। সেগুলো হলো—গাইডেড ভেহিকল এয়ার লঞ্চড র্যাপিড রেসপন্স ওয়েপন (এআরআরডব্লিউ) এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হাইপারসনিক অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল (এইচএসিএম)। দুটোতেই নকশাগত সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে বাজেট নথি অনুযায়ী এয়ার ফোর্স ২০২৬ সালে এআরআরডব্লিউ উৎপাদন শুরু করতে চায়, আর সরকারি হিসাবরক্ষক দপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী এইচএসিএম উৎপাদন শুরু হতে পারে ২০২৭ সালে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ধীরগতিকে অতটা নেতিবাচকভাবে দেখা ঠিক হবে না—বলে মত দেন ওয়াশিংটনভিত্তিক আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো টড হ্যারিসন। তাঁর মতে, চীনের হাতে তেমন সংখ্যক উচ্চমূল্যের কৌশলগত লক্ষ্য নেই, যেগুলো ধ্বংস করতে হাইপারসনিক প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, চীনের বিমানবাহী রণতরীর সংখ্যা মাত্র তিনটি, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আছে ১১ টি। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্টেলথ বিমানবহর আছে, যা চীনের ক্ষমতার বাইরে। হ্যারিসনের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হাইপারসনিক অস্ত্র ‘মূলত একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের সক্ষমতা।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন কাগজে-কলমে অন্তত হাইপারসনিক উন্নয়নে আগ্রহ দেখিয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিনেট শুনানিতে উপ-প্রতিরক্ষা সচিব স্টিফেন ফেইনবার্গ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত হাইপারসনিক অস্ত্রে যথেষ্ট বিনিয়োগ করেনি, অথচ এগুলো ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।’
তবে যুক্তরাষ্ট্র কত দ্রুত ব্যবধান কমাতে পারবে, তা অনিশ্চিত। সিএসআইএসের কারাকো বলেন, বাজেটে খুব বেশি অর্থ বরাদ্দ হওয়ার ইঙ্গিত তিনি এখনো দেখেননি। তিনি বলেন, ‘কিছুটা, সামান্য ঝলক দেখা যাচ্ছে মীমাংসা বিল আর সর্বশেষ বাজেটে, তবে এখনো পর্যাপ্ত নয়।’
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
নেপালে তরুণ বেকারত্বের হার অত্যন্ত বেশি ও মাথাপিছু জিডিপি কম। ফলে বিপুলসংখ্যক তরুণ কাজের খোঁজে বিদেশে চলে যাচ্ছেন। এতে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। তবে মনে হচ্ছে, এই বিক্ষোভে বাইরের লোকজন ঢুকে পড়ে সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
১ দিন আগেভারত সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, এই চুক্তি দুই দেশের ‘অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার ও বিনিয়োগ পরিবেশকে আরও দৃঢ় ও সহনশীল করে তোলার যৌথ প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন’। সহজভাবে বললে, এটি এমন চুক্তি, যা দীর্ঘ মেয়াদে ভারত ও ইসরায়েলের অর্থনীতিকে যুক্ত করে রাখবে।
২ দিন আগেআওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনকালে দমন ও হয়রানির শিকার জামায়াতে ইসলামী এখন পুনরায় আত্মপ্রকাশ ও প্রভাব শক্তিশালী করার জন্য উর্বর ভূমি পাচ্ছে। ঢাকার মতো ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল রাজনীতির জমিনে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্রসংগঠনের এ জয় দলটির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রমাণ।
৪ দিন আগেরক্ষণশীল ইনফ্লুয়েন্সার ও টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএর প্রতিষ্ঠাতা চার্লি কার্ককে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনা ঘিরে অনলাইনে একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ দিন আগে