পেঁয়াজ

পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় ক্ষান্ত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে তিন দিন পর পাইকারিতে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। গতকাল সোমবার এক দিনেই কমেছে কেজিতে ৮০ টাকা পর্যন্ত। তবে অতিমুনাফার সুযোগ হাতছাড়া করছেন না খুচরা ব্যবসায়ীরা।

সাতক্ষীরার ভোমরায় ভারতীয় পেঁয়াজ মজুত করায় চার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিককে পেঁয়াজ মজুত না করতে সতর্ক করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে ভোমরা স্থলবন্দরে কয়েকটি পেঁয়াজের আড়তে অভিযান চালানো হয়।

ফরিদপুরে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এবং ভোক্তা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে দাম কমেছে; যা এক দিনের ব্যবধানে মণপ্রতি কমেছে প্রায় ৮০০ টাকা এবং কেজিপ্রতি কমেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। 

নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পেঁয়াজের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় কমতে শুরু করেছে। আজ সমবার সকালে খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা দরে। 

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৩১ মার্চ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে—গত ৮ ডিসেম্বর এ খবর পাওয়ার পর মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সঙ্গে সঙ্গে প্রভাব পড়তে শুরু করে বাজারে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়তে থাকে মসলাজাতীয় পণ্যটির দাম। একদিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে বিক

পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই নিত্যপ্রয়োজনীয় আরেক পণ্য আটা–ময়দায় কেজি প্রতি ১০ টাকা করে বেড়েছে। চট্টগ্রামের বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ময়দা কেজি প্রতি ৬৫ টাকা থেকে ৭৫ টাকায় এবং আটা ৫৫ টাকা থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

ছাগলনাইয়া পৌর শহরের জমদ্দার বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখেই ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নামিয়ে আনেন। তবে আদালত চলে যাওয়ার পর আবার আগে দামে পেঁয়াজ বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পেঁয়াজ মসলা নাকি সবজি—এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে ব্যবহারের ভিত্তিতে এটি সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। সে যা-ই হোক, দেশের বাজারে পেঁয়াজ এখন কেজিতে ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই নিত্যপণ্যের দাম কখনো এত হয়নি।

ইদানীং এ চিত্র অবশ্য খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। মাঝেমধ্যেই একটি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হুট করে বেড়ে যায়, কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই। যথেষ্ট মজুত আছে বলে কর্তৃপক্ষ গলা ফাটানোর পরও রাতারাতি কীভাবে বাজারে কোনো নিত্যপণ্যের সংকট তৈরি হয়, সে এক রহস্য!

রাজশাহী জেলায় চাহিদার ১৩ গুণ বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। তারপরও বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম ডাবল সেঞ্চুরি। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের মনিটরিংয়ের পরেও বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছে না।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বাজারগুলোতে দেখা দিয়েছে পেঁয়াজের সংকট। পাইকারি বাজারগুলোতে পেঁয়াজ নেই বললেই চলে। আর খুচরা বাজারের কিছু সংখ্যক দোকানে খুব কমসংখ্যক পেঁয়াজ থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।