Ajker Patrika

২০৫০ সাল নাগাদ ইনফ্লুয়েন্সারদের চেহারা কেমন হবে, ধারণা দিলেন গবেষকেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এভার দেহের গড়ন, মুখের গঠন, চোখ-মুখ যেন অসুস্থতার প্রতিচ্ছবি।  ছবি: ক্যাসিনো ডট ওআরজি
এভার দেহের গড়ন, মুখের গঠন, চোখ-মুখ যেন অসুস্থতার প্রতিচ্ছবি। ছবি: ক্যাসিনো ডট ওআরজি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হতে আগ্রহীদের জন্য এসেছে সতর্কবার্তা। গবেষকেরা স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে বলেছেন, চলমান জীবনের অভ্যাসগুলো ঠিক না রাখলে ২০৫০ সালের ইনফ্লুয়েন্সারদের অবস্থা হবে ভয়াবহ। এ বিষয়ে প্রকাশিত হয়েছে একটি চমকপ্রদ চিত্র—নাম দেওয়া হয়েছে ‘এভা’।

চিত্রটি দেখে যেকোনো মানুষ আঁতকে উঠবেন। ‘এভা’র দেহের গড়ন, মুখের গঠন, চোখ-মুখ যেন অসুস্থতার প্রতিচ্ছবি। অস্বাভাবিক মুখমণ্ডল ও দেহভঙ্গি, ত্বকে ছোপ ছোপ দাগ, পাতলা চুল এবং লালচে চোখের নিচে কালো দাগ আর ফোলা ভাব—সব মিলিয়ে অস্বাস্থ্যকর জীবনের বাস্তব চিত্রই ফুটে উঠেছে।

গবেষণা বলছে, দিনের পর দিন স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে ‘টেক্সট নেক সিনড্রোমে’ আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। এতে ঘাড় বাঁকা হয়ে যায়, কাঁধ ঝুলে পড়ে এবং মাথা সামনের দিকে ঝুঁকে থাকে, যা একসময় স্থায়ী রূপ নিতে পারে। ফলে দেখা দেয় ঘাড়ে দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা। ইন্টারডিসিপ্লিনারি নিউরোসার্জারি জার্নালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, স্মার্টফোন দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফলে মেরুদণ্ড ১৫ থেকে ৬০ ডিগ্রি কোণে বাঁকা হয়ে যেতে পারে।

এভার ত্বকে যে ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়, তা ‘কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস’-এর লক্ষণ। নিয়মিত প্রসাধনী ব্যবহার, বারবার স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট বদলানোর ফলে এমনটি হয়।

এভার চোখের নিচে কালো দাগ ও ফোলাভাব এসেছে ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’ বা ডিজিটাল আই স্ট্রেইন (চোখের ক্লান্তি) থেকে। দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা, ভিডিও এডিটিং, লাইভ স্ট্রিমিং—সব মিলিয়ে চোখে দেখা দেয় লালচে ভাব, শুষ্কতা, ঝাপসা দেখা, দাগ এবং ফোলা ভাব।

ঘুমের ঘাটতিও এই সমস্যাগুলো বাড়িয়ে তোলে। ইনফ্লুয়েন্সারদের মাঝেরাত পর্যন্ত জেগে ভিডিও এডিট করা, বিনা মূল্যে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের সুযোগ—এসব কারণে ঘুমের চক্র ব্যাহত হয়। এর ফলে কেবল চোখের নিচে ফোলাভাব নয়, চুল পড়া এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্লান্তিও দেখা দেয়।

এভার চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে ‘ট্র্যাকশন অ্যালোপেশিয়া’ নামের রোগ। দীর্ঘ সময় ধরে চুলে এক্সটেনশন ব্যবহার, শক্ত করে বাঁধা বা হেয়ারস্টাইলের কারণে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে দেখা দেয় টাক পড়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া এবং হেয়ারলাইন সরতে থাকা।

এ ছাড়া ট্রেন্ড অনুসরণ করে যাঁরা বারবার ফেসিয়াল ও লিপ ফিলার ব্যবহার করেন, তাঁদের মুখের স্বাভাবিক গঠন বিকৃত হয়ে যেতে পারে। ভুল জায়গায় বা অতিরিক্ত ফিলার প্রয়োগ করলে মুখ ফুলে যাওয়া, চিবুক সূচালো হয়ে যাওয়া এবং ত্বকের স্বাভাবিক গঠন নষ্ট হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

ইনফ্লুয়েন্সারের এই ভয়াবহ চিত্র তৈরি করেছে ক্যাসিনো ডট ওআরজি (casino. org), যেখানে চিকিৎসাভিত্তিক গবেষণার ভিত্তিতে ‘এভা’ মডেলটি প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র বলেন, ‘ইনফ্লুয়েন্সারদের জীবনযাত্রা অনেক সময় রোমাঞ্চকর বলে মনে হলেও বছরের পর বছর ধরে অ্যালগরিদমের পেছনে দৌড়ানো, সৌন্দর্যের ‘মানদণ্ড’ রক্ষা ও বিরামহীন কনটেন্ট তৈরির চাপ শরীর ও মনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এভা শুধু একটি কল্পনা নয়, সে আসলে দীর্ঘমেয়াদি অভ্যাসের ফল। বার্তাটি খুব পরিষ্কার: লক্ষ্য অর্জনে ভারসাম্য রাখুন, কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করুন এবং মনে রাখুন, স্বাস্থ্য ও সুস্থতাই সবচেয়ে বড় ট্রেন্ড।’

তথ্যসূত্র: নিউজউইক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত