আজকের পত্রিকা ডেস্ক
ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন শিশু। তারা আফগানিস্তানের এক কাঁচা মাটির বাড়িতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক লাইভের মাধ্যমে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টিকটকের ভার্চুয়াল ‘গিফট’ চেয়ে যাচ্ছে তারা, যা পরবর্তীকালে অর্থে রূপান্তর করা যাবে। একবার একটি গিফট পাওয়ার পর তারা খুশি হয়ে হাততালি দেয়। অন্য একটি লাইভ স্ট্রিমে ডিজিটাল গোলাপ পাওয়ার পর এক মেয়ে আনন্দিত হয়ে চিৎকার করে বলছে, ‘ধন্যবাদ, আমরা আপনাকে ভালোবাসি!’ এই গোলাপের মূল্য ছিল মাত্র ১ পেনি। তবে টিকটক থেকে নগদে পরিণত হলে এর মূল্য এক-তৃতীয়াংশের কম হতে পারে।
এদিকে টিকটক দাবি করে, এটি শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি এবং অন্য ধরনের ভিক্ষাবৃত্তির জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং লাইভে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা রয়েছে। তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম অবসার্ভারের তদন্তে দেখা গেছে, এই ধরনের লাইভ স্ট্রিম প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে টিকটক। অর্থাৎ এসব কনটেন্ট থেকে কমিশন এবং ফি কাটছে টিকটক। এসব কমিশন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অলিভিয়ে দে শুটার একে ‘চমকপ্রদ ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ‘মানুষের দুর্দশা থেকে লাভ করার’ জন্য টিকটক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট থেকে মুনাফা নেওয়া ডিজিটাল ডাকাতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি টিকটককে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাদের নিজেদের নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে এবং “কমিশন” (ফি) নেওয়ার যৌক্তিকতা পুনর্বিবেচনা করতে।’
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর ডিজিটাল হানিকর বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডি মারকো বলেছেন, এই ধরনের অভ্যাস গুরুতর অপব্যবহার। এই ধরনের কনটেন্ট থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো যেন আর সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভবান না হয়, এ জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিসর ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এই ধরনের লাইভ ভিক্ষাবৃত্তির ঘটনা দেখা গেছে।
তদন্তে দেখা যায়, একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় প্রতিদিন লাইভ স্ট্রিম হয়, যেখানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন শিশুকে দেখানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে লাইভে এসে ডিজিটাল গিফটের জন্য ভিক্ষা চাইছিল সাতজন তরুণ ছেলে। পরদিন একই স্থানে অন্য ছেলেরা উপস্থিত হয়, তাদের পাশে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বসে ছিলেন। ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবজারভার জানানোর পর টিকটক দুই ঘণ্টার মধ্যে সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ইন-অ্যাপ রিপোর্টিং টুলের মাধ্যমে আগের একটি রিপোর্টের পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে ৫ হাজার ৩০০ ফলোয়ারের অ্যাকাউন্টে লাইভ স্ট্রিমে চেয়ারে বসে থাকা বৃদ্ধ এক পুরুষের সম্প্রচার দেখানো হচ্ছিল। অ্যাকাউন্টটি তৃতীয় পক্ষ পরিচালনা করছিল বলে মনে হচ্ছিল। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই অ্যাকাউন্টের বায়োতে লেখা ছিল ‘গরিব মানুষ’ এবং তার পাশে কান্নার ইমোজি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিছু লাইভ স্ট্রিমে মানুষের নিকৃষ্ট এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক স্টান্ট করতে দেখা গেছে। তারা ভার্চুয়াল গিফটের বিনিময়ে এসব স্টান্ট করে থাকে। যেমন নিজেদের আঘাত করা, দীর্ঘ সময় জেগে থাকা, মাটিতে ঢেকে ফেলা বা ক্যামেরার সামনে ঘুমানো। ইন্দোনেশিয়ার এক লাইভ স্ট্রিমে দেখা গেছে, দুটি ছোট মেয়ে জানালাবিহীন, সাদা দেয়ালবিশিষ্ট স্টুডিওর টাইলযুক্ত মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। এরপর একই অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাইলযুক্ত মেঝেতে ঘুমানো এক পুরুষের লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
পাকিস্তানের আরেকটি সম্প্রচারে দেখা গেছে, তিনজন পুরুষ অন্ধকারে বসে আছেন, তাঁদের মাথায় প্লাস্টিকের বালতি ও পার্টি হ্যাট। তাঁরা ক্যামেরার সামনে ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন একটি গিফট পাচ্ছিলেন, তখনই তাঁরা জেগে উঠেছিলেন এবং নাচ পরিবেশন করছিলেন।
২০২০ সালে আগস্টে টিকটিকে লাইভ ফিচার চালু হয়। এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
টিকটকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ১০০ মিলিয়ন মানুষ লাইভ করে, যা ‘বিলিয়ন’ সংখ্যক ব্যবহারকারী কাছে পৌঁছেছে। দর্শকেরা সরাসরি মন্তব্য বা গিফট পাঠিয়ে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল দাতব্য সংস্থায় কর্মরত এবং ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নোভিতা আংগ্রেইনি বলেন, অনেক নির্মাতা টিকটক লাইভ ব্যবহার করেন, তাঁদের ‘প্রতিভা প্রদর্শন’ বা ‘মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন’ করার জন্য। সাধারণত এটি ব্যবহার করেন, যাঁরা নিজেদের গান গাওয়া, নাচ, ভিডিও গেম খেলা, ছবি আঁকা বা রান্না করার ভিডিও ধারণ করেন। তবে এখন ক্রমবর্ধমানভাবে ভুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। বিশেষ করে তাঁরা, যাঁরা এটিকে ‘অর্থ উপার্জনের সহজ পথ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও যোগ করেন, এই ধরনের ‘ক্ষতিকর’ ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ভিডিও অত্যন্ত দ্রুত বাড়ছে। এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শোষণ।
তিনি আরও বলেন, এসব লাইভ স্ট্রিমের পেছনে মূলত দারিদ্র্য এবং ডিজিটাল শিক্ষা-দক্ষতার অভাব কাজ করছে। এ ছাড়া মানুষগুলোকে এগুলো জোর করে করানো হচ্ছে কি না, তা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের শোষিত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন, ‘এটি একটি সহযোগিতা, যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে শোষণের ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে। যেগুলো আয় প্রবাহের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একাধিক পরিবারকে লাইভ স্ট্রিমের জন্য নিয়ন্ত্রণ করে।
টিকটক জানিয়েছে, তারা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ছিল—অবজারভার কর্তৃক চিহ্নিত অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলা। তারা বলেছে, তাদের নীতিমালায় লাইভ স্ট্রিমে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু বা দুর্বল ব্যক্তিদের শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত। টিকটকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘যেকোনো লাইভ কনটেন্ট, যেখানে শিশুদের গিফটের জন্য ভিক্ষা চায়, তা টিকটক অনুমোদন করে না।’
যেসব ক্ষেত্রে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি বা শিশু শোষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে তারা ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিয়েছে। তারা সেসব লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করেছে এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা জানায়, ‘প্রতিরোধমূলক শনাক্তকরণ এবং নিবেদিত টিম ও প্রযুক্তির মাধ্যমে’ তারা প্রতি মাসে চার মিলিয়ন লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করে ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ রাখতে’ সাহায্য করছে। লাইভ স্ট্রিম হোস্ট করার জন্য এক হাজার ফলোয়ার এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। তবে শিশুরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে উপস্থিত থাকলে লাইভে আসতে পারবে।
টিকটক জানায়, তারা যে কমিশন এবং ফি গ্রহণ করে, তা পরিবর্তনশীল। লাইভ স্ট্রিমাররা গিফটের পূর্ণ মূল্য পায় না, বরং তারা ‘ডায়মন্ড’ নামে পয়েন্ট পায়। এই পয়েন্ট গিফট এবং তাদের স্ট্রিমের জনপ্রিয়তা ও সময়কাল অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। কমিশন এবং ফি পরিশোধের পর, সাধারণত তারা মূল গিফটের অর্ধেক পায়, তবে কখনো কখনো মাত্র ৩০ শতাংশ। টিকটক দাবি করেছে, ৩০ শতাংশ আয় ‘অ্যাপ স্টোর ফি এবং পেমেন্ট প্রোভাইডার খরচে’ চলে যায়। টিকটকে ১০০টির বেশি ডিজিটাল গিফট রয়েছে, যার মধ্যে একটি রোজ (১ পেনি) থেকে শুরু করে, টিকটক ইউনিভার্স (প্রায় ৪৫০ পাউন্ড) রয়েছে।
শোষণমূলক কনটেন্ট থেকে লাভ নেওয়ার জন্য আগে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টিকটক। বিশেষ করে ২০২২ সালে যৌন নির্যাতন লাইভ স্ট্রিমের ঘটনায়।
২০২৩ সালে আল জাজিরা জানায়, ইন্দোনেশিয়ার অনাথ আশ্রমগুলো লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করছে। এসব লাইভ স্ট্রিমে শিশুদের ঘুমাতে দেখা যায়। টিকটক বলেছে, তারা এমন শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করেছে। তবে অনাথ আশ্রমের লাইভ স্ট্রিমটি তাদের নিয়ম ভঙ্গ করেনি।
টিকটক লাইভে ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলেও অনেক দাতব্য সংস্থা বলছে, এটি সংকটে থাকা মানুষকে সাহায্য পেতে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলিপাইনের এক পরিবার তাদের যমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য অনুদান সংগ্রহে সফল হয়েছিল। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট নয় যে এর মাধ্যমে আসলেই কারা উপকৃত হচ্ছে।
অ্যান্টি-স্লেভারি ইন্টারন্যাশনালের ক্যাথরিন টার্নার বলেন, কিছু শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষা করে, তবে অন্যরা তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ‘শারীরিক বা মানসিকভাবে শোষিত’ হয়ে থাকে। এই তৃতীয় পক্ষ আয়প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
লাইভ স্ট্রিমারদের পুরস্কারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার জন্য সরকারি ইস্যুকৃত আইডি চায় টিকটক। তবে দর্শকদের জন্য এটি জানার উপায় নেই যে যারা লাইভে থাকছে, তারা বাস্তবে উপকৃত হচ্ছে কি না। অক্সফোর্ডের ক্রিমিনোলজি কেন্দ্রের গবেষক ‘মায়া লাহাভ’ বলেন, লাইভ স্ট্রিম নিয়ন্ত্রণ করা বা নজরদারিতে রাখার জন্য অনেক তথ্য প্রয়োজন, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব কনটেন্ট সরানো উচিত কি না, তা নিয়ে নৈতিক প্রশ্ন রয়েছে।
তবে তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ এবং শিশু বা অসুস্থদের সম্মতির বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। ‘এখানে মূল প্রশ্ন, কখন এটি শোষণ হয়ে ওঠে! এই সঠিক ভারসাম্যই তাদের মানতে হবে।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন শিশু। তারা আফগানিস্তানের এক কাঁচা মাটির বাড়িতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক লাইভের মাধ্যমে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টিকটকের ভার্চুয়াল ‘গিফট’ চেয়ে যাচ্ছে তারা, যা পরবর্তীকালে অর্থে রূপান্তর করা যাবে। একবার একটি গিফট পাওয়ার পর তারা খুশি হয়ে হাততালি দেয়। অন্য একটি লাইভ স্ট্রিমে ডিজিটাল গোলাপ পাওয়ার পর এক মেয়ে আনন্দিত হয়ে চিৎকার করে বলছে, ‘ধন্যবাদ, আমরা আপনাকে ভালোবাসি!’ এই গোলাপের মূল্য ছিল মাত্র ১ পেনি। তবে টিকটক থেকে নগদে পরিণত হলে এর মূল্য এক-তৃতীয়াংশের কম হতে পারে।
এদিকে টিকটক দাবি করে, এটি শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি এবং অন্য ধরনের ভিক্ষাবৃত্তির জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং লাইভে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা রয়েছে। তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম অবসার্ভারের তদন্তে দেখা গেছে, এই ধরনের লাইভ স্ট্রিম প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে টিকটক। অর্থাৎ এসব কনটেন্ট থেকে কমিশন এবং ফি কাটছে টিকটক। এসব কমিশন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অলিভিয়ে দে শুটার একে ‘চমকপ্রদ ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ‘মানুষের দুর্দশা থেকে লাভ করার’ জন্য টিকটক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট থেকে মুনাফা নেওয়া ডিজিটাল ডাকাতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি টিকটককে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাদের নিজেদের নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে এবং “কমিশন” (ফি) নেওয়ার যৌক্তিকতা পুনর্বিবেচনা করতে।’
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর ডিজিটাল হানিকর বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডি মারকো বলেছেন, এই ধরনের অভ্যাস গুরুতর অপব্যবহার। এই ধরনের কনটেন্ট থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো যেন আর সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভবান না হয়, এ জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিসর ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এই ধরনের লাইভ ভিক্ষাবৃত্তির ঘটনা দেখা গেছে।
তদন্তে দেখা যায়, একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় প্রতিদিন লাইভ স্ট্রিম হয়, যেখানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন শিশুকে দেখানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে লাইভে এসে ডিজিটাল গিফটের জন্য ভিক্ষা চাইছিল সাতজন তরুণ ছেলে। পরদিন একই স্থানে অন্য ছেলেরা উপস্থিত হয়, তাদের পাশে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বসে ছিলেন। ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবজারভার জানানোর পর টিকটক দুই ঘণ্টার মধ্যে সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ইন-অ্যাপ রিপোর্টিং টুলের মাধ্যমে আগের একটি রিপোর্টের পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে ৫ হাজার ৩০০ ফলোয়ারের অ্যাকাউন্টে লাইভ স্ট্রিমে চেয়ারে বসে থাকা বৃদ্ধ এক পুরুষের সম্প্রচার দেখানো হচ্ছিল। অ্যাকাউন্টটি তৃতীয় পক্ষ পরিচালনা করছিল বলে মনে হচ্ছিল। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই অ্যাকাউন্টের বায়োতে লেখা ছিল ‘গরিব মানুষ’ এবং তার পাশে কান্নার ইমোজি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিছু লাইভ স্ট্রিমে মানুষের নিকৃষ্ট এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক স্টান্ট করতে দেখা গেছে। তারা ভার্চুয়াল গিফটের বিনিময়ে এসব স্টান্ট করে থাকে। যেমন নিজেদের আঘাত করা, দীর্ঘ সময় জেগে থাকা, মাটিতে ঢেকে ফেলা বা ক্যামেরার সামনে ঘুমানো। ইন্দোনেশিয়ার এক লাইভ স্ট্রিমে দেখা গেছে, দুটি ছোট মেয়ে জানালাবিহীন, সাদা দেয়ালবিশিষ্ট স্টুডিওর টাইলযুক্ত মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। এরপর একই অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাইলযুক্ত মেঝেতে ঘুমানো এক পুরুষের লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
পাকিস্তানের আরেকটি সম্প্রচারে দেখা গেছে, তিনজন পুরুষ অন্ধকারে বসে আছেন, তাঁদের মাথায় প্লাস্টিকের বালতি ও পার্টি হ্যাট। তাঁরা ক্যামেরার সামনে ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন একটি গিফট পাচ্ছিলেন, তখনই তাঁরা জেগে উঠেছিলেন এবং নাচ পরিবেশন করছিলেন।
২০২০ সালে আগস্টে টিকটিকে লাইভ ফিচার চালু হয়। এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
টিকটকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ১০০ মিলিয়ন মানুষ লাইভ করে, যা ‘বিলিয়ন’ সংখ্যক ব্যবহারকারী কাছে পৌঁছেছে। দর্শকেরা সরাসরি মন্তব্য বা গিফট পাঠিয়ে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল দাতব্য সংস্থায় কর্মরত এবং ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নোভিতা আংগ্রেইনি বলেন, অনেক নির্মাতা টিকটক লাইভ ব্যবহার করেন, তাঁদের ‘প্রতিভা প্রদর্শন’ বা ‘মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন’ করার জন্য। সাধারণত এটি ব্যবহার করেন, যাঁরা নিজেদের গান গাওয়া, নাচ, ভিডিও গেম খেলা, ছবি আঁকা বা রান্না করার ভিডিও ধারণ করেন। তবে এখন ক্রমবর্ধমানভাবে ভুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। বিশেষ করে তাঁরা, যাঁরা এটিকে ‘অর্থ উপার্জনের সহজ পথ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও যোগ করেন, এই ধরনের ‘ক্ষতিকর’ ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ভিডিও অত্যন্ত দ্রুত বাড়ছে। এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শোষণ।
তিনি আরও বলেন, এসব লাইভ স্ট্রিমের পেছনে মূলত দারিদ্র্য এবং ডিজিটাল শিক্ষা-দক্ষতার অভাব কাজ করছে। এ ছাড়া মানুষগুলোকে এগুলো জোর করে করানো হচ্ছে কি না, তা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের শোষিত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন, ‘এটি একটি সহযোগিতা, যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে শোষণের ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে। যেগুলো আয় প্রবাহের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একাধিক পরিবারকে লাইভ স্ট্রিমের জন্য নিয়ন্ত্রণ করে।
টিকটক জানিয়েছে, তারা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ছিল—অবজারভার কর্তৃক চিহ্নিত অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলা। তারা বলেছে, তাদের নীতিমালায় লাইভ স্ট্রিমে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু বা দুর্বল ব্যক্তিদের শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত। টিকটকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘যেকোনো লাইভ কনটেন্ট, যেখানে শিশুদের গিফটের জন্য ভিক্ষা চায়, তা টিকটক অনুমোদন করে না।’
যেসব ক্ষেত্রে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি বা শিশু শোষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে তারা ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিয়েছে। তারা সেসব লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করেছে এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা জানায়, ‘প্রতিরোধমূলক শনাক্তকরণ এবং নিবেদিত টিম ও প্রযুক্তির মাধ্যমে’ তারা প্রতি মাসে চার মিলিয়ন লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করে ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ রাখতে’ সাহায্য করছে। লাইভ স্ট্রিম হোস্ট করার জন্য এক হাজার ফলোয়ার এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। তবে শিশুরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে উপস্থিত থাকলে লাইভে আসতে পারবে।
টিকটক জানায়, তারা যে কমিশন এবং ফি গ্রহণ করে, তা পরিবর্তনশীল। লাইভ স্ট্রিমাররা গিফটের পূর্ণ মূল্য পায় না, বরং তারা ‘ডায়মন্ড’ নামে পয়েন্ট পায়। এই পয়েন্ট গিফট এবং তাদের স্ট্রিমের জনপ্রিয়তা ও সময়কাল অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। কমিশন এবং ফি পরিশোধের পর, সাধারণত তারা মূল গিফটের অর্ধেক পায়, তবে কখনো কখনো মাত্র ৩০ শতাংশ। টিকটক দাবি করেছে, ৩০ শতাংশ আয় ‘অ্যাপ স্টোর ফি এবং পেমেন্ট প্রোভাইডার খরচে’ চলে যায়। টিকটকে ১০০টির বেশি ডিজিটাল গিফট রয়েছে, যার মধ্যে একটি রোজ (১ পেনি) থেকে শুরু করে, টিকটক ইউনিভার্স (প্রায় ৪৫০ পাউন্ড) রয়েছে।
শোষণমূলক কনটেন্ট থেকে লাভ নেওয়ার জন্য আগে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টিকটক। বিশেষ করে ২০২২ সালে যৌন নির্যাতন লাইভ স্ট্রিমের ঘটনায়।
২০২৩ সালে আল জাজিরা জানায়, ইন্দোনেশিয়ার অনাথ আশ্রমগুলো লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করছে। এসব লাইভ স্ট্রিমে শিশুদের ঘুমাতে দেখা যায়। টিকটক বলেছে, তারা এমন শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করেছে। তবে অনাথ আশ্রমের লাইভ স্ট্রিমটি তাদের নিয়ম ভঙ্গ করেনি।
টিকটক লাইভে ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলেও অনেক দাতব্য সংস্থা বলছে, এটি সংকটে থাকা মানুষকে সাহায্য পেতে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলিপাইনের এক পরিবার তাদের যমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য অনুদান সংগ্রহে সফল হয়েছিল। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট নয় যে এর মাধ্যমে আসলেই কারা উপকৃত হচ্ছে।
অ্যান্টি-স্লেভারি ইন্টারন্যাশনালের ক্যাথরিন টার্নার বলেন, কিছু শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষা করে, তবে অন্যরা তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ‘শারীরিক বা মানসিকভাবে শোষিত’ হয়ে থাকে। এই তৃতীয় পক্ষ আয়প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
লাইভ স্ট্রিমারদের পুরস্কারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার জন্য সরকারি ইস্যুকৃত আইডি চায় টিকটক। তবে দর্শকদের জন্য এটি জানার উপায় নেই যে যারা লাইভে থাকছে, তারা বাস্তবে উপকৃত হচ্ছে কি না। অক্সফোর্ডের ক্রিমিনোলজি কেন্দ্রের গবেষক ‘মায়া লাহাভ’ বলেন, লাইভ স্ট্রিম নিয়ন্ত্রণ করা বা নজরদারিতে রাখার জন্য অনেক তথ্য প্রয়োজন, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব কনটেন্ট সরানো উচিত কি না, তা নিয়ে নৈতিক প্রশ্ন রয়েছে।
তবে তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ এবং শিশু বা অসুস্থদের সম্মতির বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। ‘এখানে মূল প্রশ্ন, কখন এটি শোষণ হয়ে ওঠে! এই সঠিক ভারসাম্যই তাদের মানতে হবে।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
আজকের পত্রিকা ডেস্ক
ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন শিশু। তারা আফগানিস্তানের এক কাঁচা মাটির বাড়িতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক লাইভের মাধ্যমে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টিকটকের ভার্চুয়াল ‘গিফট’ চেয়ে যাচ্ছে তারা, যা পরবর্তীকালে অর্থে রূপান্তর করা যাবে। একবার একটি গিফট পাওয়ার পর তারা খুশি হয়ে হাততালি দেয়। অন্য একটি লাইভ স্ট্রিমে ডিজিটাল গোলাপ পাওয়ার পর এক মেয়ে আনন্দিত হয়ে চিৎকার করে বলছে, ‘ধন্যবাদ, আমরা আপনাকে ভালোবাসি!’ এই গোলাপের মূল্য ছিল মাত্র ১ পেনি। তবে টিকটক থেকে নগদে পরিণত হলে এর মূল্য এক-তৃতীয়াংশের কম হতে পারে।
এদিকে টিকটক দাবি করে, এটি শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি এবং অন্য ধরনের ভিক্ষাবৃত্তির জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং লাইভে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা রয়েছে। তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম অবসার্ভারের তদন্তে দেখা গেছে, এই ধরনের লাইভ স্ট্রিম প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে টিকটক। অর্থাৎ এসব কনটেন্ট থেকে কমিশন এবং ফি কাটছে টিকটক। এসব কমিশন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অলিভিয়ে দে শুটার একে ‘চমকপ্রদ ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ‘মানুষের দুর্দশা থেকে লাভ করার’ জন্য টিকটক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট থেকে মুনাফা নেওয়া ডিজিটাল ডাকাতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি টিকটককে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাদের নিজেদের নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে এবং “কমিশন” (ফি) নেওয়ার যৌক্তিকতা পুনর্বিবেচনা করতে।’
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর ডিজিটাল হানিকর বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডি মারকো বলেছেন, এই ধরনের অভ্যাস গুরুতর অপব্যবহার। এই ধরনের কনটেন্ট থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো যেন আর সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভবান না হয়, এ জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিসর ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এই ধরনের লাইভ ভিক্ষাবৃত্তির ঘটনা দেখা গেছে।
তদন্তে দেখা যায়, একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় প্রতিদিন লাইভ স্ট্রিম হয়, যেখানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন শিশুকে দেখানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে লাইভে এসে ডিজিটাল গিফটের জন্য ভিক্ষা চাইছিল সাতজন তরুণ ছেলে। পরদিন একই স্থানে অন্য ছেলেরা উপস্থিত হয়, তাদের পাশে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বসে ছিলেন। ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবজারভার জানানোর পর টিকটক দুই ঘণ্টার মধ্যে সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ইন-অ্যাপ রিপোর্টিং টুলের মাধ্যমে আগের একটি রিপোর্টের পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে ৫ হাজার ৩০০ ফলোয়ারের অ্যাকাউন্টে লাইভ স্ট্রিমে চেয়ারে বসে থাকা বৃদ্ধ এক পুরুষের সম্প্রচার দেখানো হচ্ছিল। অ্যাকাউন্টটি তৃতীয় পক্ষ পরিচালনা করছিল বলে মনে হচ্ছিল। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই অ্যাকাউন্টের বায়োতে লেখা ছিল ‘গরিব মানুষ’ এবং তার পাশে কান্নার ইমোজি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিছু লাইভ স্ট্রিমে মানুষের নিকৃষ্ট এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক স্টান্ট করতে দেখা গেছে। তারা ভার্চুয়াল গিফটের বিনিময়ে এসব স্টান্ট করে থাকে। যেমন নিজেদের আঘাত করা, দীর্ঘ সময় জেগে থাকা, মাটিতে ঢেকে ফেলা বা ক্যামেরার সামনে ঘুমানো। ইন্দোনেশিয়ার এক লাইভ স্ট্রিমে দেখা গেছে, দুটি ছোট মেয়ে জানালাবিহীন, সাদা দেয়ালবিশিষ্ট স্টুডিওর টাইলযুক্ত মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। এরপর একই অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাইলযুক্ত মেঝেতে ঘুমানো এক পুরুষের লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
পাকিস্তানের আরেকটি সম্প্রচারে দেখা গেছে, তিনজন পুরুষ অন্ধকারে বসে আছেন, তাঁদের মাথায় প্লাস্টিকের বালতি ও পার্টি হ্যাট। তাঁরা ক্যামেরার সামনে ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন একটি গিফট পাচ্ছিলেন, তখনই তাঁরা জেগে উঠেছিলেন এবং নাচ পরিবেশন করছিলেন।
২০২০ সালে আগস্টে টিকটিকে লাইভ ফিচার চালু হয়। এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
টিকটকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ১০০ মিলিয়ন মানুষ লাইভ করে, যা ‘বিলিয়ন’ সংখ্যক ব্যবহারকারী কাছে পৌঁছেছে। দর্শকেরা সরাসরি মন্তব্য বা গিফট পাঠিয়ে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল দাতব্য সংস্থায় কর্মরত এবং ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নোভিতা আংগ্রেইনি বলেন, অনেক নির্মাতা টিকটক লাইভ ব্যবহার করেন, তাঁদের ‘প্রতিভা প্রদর্শন’ বা ‘মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন’ করার জন্য। সাধারণত এটি ব্যবহার করেন, যাঁরা নিজেদের গান গাওয়া, নাচ, ভিডিও গেম খেলা, ছবি আঁকা বা রান্না করার ভিডিও ধারণ করেন। তবে এখন ক্রমবর্ধমানভাবে ভুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। বিশেষ করে তাঁরা, যাঁরা এটিকে ‘অর্থ উপার্জনের সহজ পথ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও যোগ করেন, এই ধরনের ‘ক্ষতিকর’ ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ভিডিও অত্যন্ত দ্রুত বাড়ছে। এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শোষণ।
তিনি আরও বলেন, এসব লাইভ স্ট্রিমের পেছনে মূলত দারিদ্র্য এবং ডিজিটাল শিক্ষা-দক্ষতার অভাব কাজ করছে। এ ছাড়া মানুষগুলোকে এগুলো জোর করে করানো হচ্ছে কি না, তা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের শোষিত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন, ‘এটি একটি সহযোগিতা, যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে শোষণের ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে। যেগুলো আয় প্রবাহের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একাধিক পরিবারকে লাইভ স্ট্রিমের জন্য নিয়ন্ত্রণ করে।
টিকটক জানিয়েছে, তারা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ছিল—অবজারভার কর্তৃক চিহ্নিত অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলা। তারা বলেছে, তাদের নীতিমালায় লাইভ স্ট্রিমে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু বা দুর্বল ব্যক্তিদের শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত। টিকটকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘যেকোনো লাইভ কনটেন্ট, যেখানে শিশুদের গিফটের জন্য ভিক্ষা চায়, তা টিকটক অনুমোদন করে না।’
যেসব ক্ষেত্রে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি বা শিশু শোষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে তারা ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিয়েছে। তারা সেসব লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করেছে এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা জানায়, ‘প্রতিরোধমূলক শনাক্তকরণ এবং নিবেদিত টিম ও প্রযুক্তির মাধ্যমে’ তারা প্রতি মাসে চার মিলিয়ন লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করে ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ রাখতে’ সাহায্য করছে। লাইভ স্ট্রিম হোস্ট করার জন্য এক হাজার ফলোয়ার এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। তবে শিশুরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে উপস্থিত থাকলে লাইভে আসতে পারবে।
টিকটক জানায়, তারা যে কমিশন এবং ফি গ্রহণ করে, তা পরিবর্তনশীল। লাইভ স্ট্রিমাররা গিফটের পূর্ণ মূল্য পায় না, বরং তারা ‘ডায়মন্ড’ নামে পয়েন্ট পায়। এই পয়েন্ট গিফট এবং তাদের স্ট্রিমের জনপ্রিয়তা ও সময়কাল অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। কমিশন এবং ফি পরিশোধের পর, সাধারণত তারা মূল গিফটের অর্ধেক পায়, তবে কখনো কখনো মাত্র ৩০ শতাংশ। টিকটক দাবি করেছে, ৩০ শতাংশ আয় ‘অ্যাপ স্টোর ফি এবং পেমেন্ট প্রোভাইডার খরচে’ চলে যায়। টিকটকে ১০০টির বেশি ডিজিটাল গিফট রয়েছে, যার মধ্যে একটি রোজ (১ পেনি) থেকে শুরু করে, টিকটক ইউনিভার্স (প্রায় ৪৫০ পাউন্ড) রয়েছে।
শোষণমূলক কনটেন্ট থেকে লাভ নেওয়ার জন্য আগে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টিকটক। বিশেষ করে ২০২২ সালে যৌন নির্যাতন লাইভ স্ট্রিমের ঘটনায়।
২০২৩ সালে আল জাজিরা জানায়, ইন্দোনেশিয়ার অনাথ আশ্রমগুলো লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করছে। এসব লাইভ স্ট্রিমে শিশুদের ঘুমাতে দেখা যায়। টিকটক বলেছে, তারা এমন শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করেছে। তবে অনাথ আশ্রমের লাইভ স্ট্রিমটি তাদের নিয়ম ভঙ্গ করেনি।
টিকটক লাইভে ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলেও অনেক দাতব্য সংস্থা বলছে, এটি সংকটে থাকা মানুষকে সাহায্য পেতে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলিপাইনের এক পরিবার তাদের যমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য অনুদান সংগ্রহে সফল হয়েছিল। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট নয় যে এর মাধ্যমে আসলেই কারা উপকৃত হচ্ছে।
অ্যান্টি-স্লেভারি ইন্টারন্যাশনালের ক্যাথরিন টার্নার বলেন, কিছু শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষা করে, তবে অন্যরা তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ‘শারীরিক বা মানসিকভাবে শোষিত’ হয়ে থাকে। এই তৃতীয় পক্ষ আয়প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
লাইভ স্ট্রিমারদের পুরস্কারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার জন্য সরকারি ইস্যুকৃত আইডি চায় টিকটক। তবে দর্শকদের জন্য এটি জানার উপায় নেই যে যারা লাইভে থাকছে, তারা বাস্তবে উপকৃত হচ্ছে কি না। অক্সফোর্ডের ক্রিমিনোলজি কেন্দ্রের গবেষক ‘মায়া লাহাভ’ বলেন, লাইভ স্ট্রিম নিয়ন্ত্রণ করা বা নজরদারিতে রাখার জন্য অনেক তথ্য প্রয়োজন, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব কনটেন্ট সরানো উচিত কি না, তা নিয়ে নৈতিক প্রশ্ন রয়েছে।
তবে তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ এবং শিশু বা অসুস্থদের সম্মতির বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। ‘এখানে মূল প্রশ্ন, কখন এটি শোষণ হয়ে ওঠে! এই সঠিক ভারসাম্যই তাদের মানতে হবে।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন শিশু। তারা আফগানিস্তানের এক কাঁচা মাটির বাড়িতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক লাইভের মাধ্যমে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টিকটকের ভার্চুয়াল ‘গিফট’ চেয়ে যাচ্ছে তারা, যা পরবর্তীকালে অর্থে রূপান্তর করা যাবে। একবার একটি গিফট পাওয়ার পর তারা খুশি হয়ে হাততালি দেয়। অন্য একটি লাইভ স্ট্রিমে ডিজিটাল গোলাপ পাওয়ার পর এক মেয়ে আনন্দিত হয়ে চিৎকার করে বলছে, ‘ধন্যবাদ, আমরা আপনাকে ভালোবাসি!’ এই গোলাপের মূল্য ছিল মাত্র ১ পেনি। তবে টিকটক থেকে নগদে পরিণত হলে এর মূল্য এক-তৃতীয়াংশের কম হতে পারে।
এদিকে টিকটক দাবি করে, এটি শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি এবং অন্য ধরনের ভিক্ষাবৃত্তির জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং লাইভে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা রয়েছে। তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম অবসার্ভারের তদন্তে দেখা গেছে, এই ধরনের লাইভ স্ট্রিম প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে টিকটক। অর্থাৎ এসব কনটেন্ট থেকে কমিশন এবং ফি কাটছে টিকটক। এসব কমিশন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অলিভিয়ে দে শুটার একে ‘চমকপ্রদ ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ‘মানুষের দুর্দশা থেকে লাভ করার’ জন্য টিকটক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট থেকে মুনাফা নেওয়া ডিজিটাল ডাকাতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি টিকটককে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাদের নিজেদের নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে এবং “কমিশন” (ফি) নেওয়ার যৌক্তিকতা পুনর্বিবেচনা করতে।’
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর ডিজিটাল হানিকর বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডি মারকো বলেছেন, এই ধরনের অভ্যাস গুরুতর অপব্যবহার। এই ধরনের কনটেন্ট থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো যেন আর সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভবান না হয়, এ জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিসর ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এই ধরনের লাইভ ভিক্ষাবৃত্তির ঘটনা দেখা গেছে।
তদন্তে দেখা যায়, একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় প্রতিদিন লাইভ স্ট্রিম হয়, যেখানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন শিশুকে দেখানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে লাইভে এসে ডিজিটাল গিফটের জন্য ভিক্ষা চাইছিল সাতজন তরুণ ছেলে। পরদিন একই স্থানে অন্য ছেলেরা উপস্থিত হয়, তাদের পাশে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বসে ছিলেন। ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবজারভার জানানোর পর টিকটক দুই ঘণ্টার মধ্যে সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ইন-অ্যাপ রিপোর্টিং টুলের মাধ্যমে আগের একটি রিপোর্টের পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে ৫ হাজার ৩০০ ফলোয়ারের অ্যাকাউন্টে লাইভ স্ট্রিমে চেয়ারে বসে থাকা বৃদ্ধ এক পুরুষের সম্প্রচার দেখানো হচ্ছিল। অ্যাকাউন্টটি তৃতীয় পক্ষ পরিচালনা করছিল বলে মনে হচ্ছিল। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই অ্যাকাউন্টের বায়োতে লেখা ছিল ‘গরিব মানুষ’ এবং তার পাশে কান্নার ইমোজি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিছু লাইভ স্ট্রিমে মানুষের নিকৃষ্ট এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক স্টান্ট করতে দেখা গেছে। তারা ভার্চুয়াল গিফটের বিনিময়ে এসব স্টান্ট করে থাকে। যেমন নিজেদের আঘাত করা, দীর্ঘ সময় জেগে থাকা, মাটিতে ঢেকে ফেলা বা ক্যামেরার সামনে ঘুমানো। ইন্দোনেশিয়ার এক লাইভ স্ট্রিমে দেখা গেছে, দুটি ছোট মেয়ে জানালাবিহীন, সাদা দেয়ালবিশিষ্ট স্টুডিওর টাইলযুক্ত মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। এরপর একই অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাইলযুক্ত মেঝেতে ঘুমানো এক পুরুষের লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
পাকিস্তানের আরেকটি সম্প্রচারে দেখা গেছে, তিনজন পুরুষ অন্ধকারে বসে আছেন, তাঁদের মাথায় প্লাস্টিকের বালতি ও পার্টি হ্যাট। তাঁরা ক্যামেরার সামনে ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন একটি গিফট পাচ্ছিলেন, তখনই তাঁরা জেগে উঠেছিলেন এবং নাচ পরিবেশন করছিলেন।
২০২০ সালে আগস্টে টিকটিকে লাইভ ফিচার চালু হয়। এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
টিকটকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ১০০ মিলিয়ন মানুষ লাইভ করে, যা ‘বিলিয়ন’ সংখ্যক ব্যবহারকারী কাছে পৌঁছেছে। দর্শকেরা সরাসরি মন্তব্য বা গিফট পাঠিয়ে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল দাতব্য সংস্থায় কর্মরত এবং ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নোভিতা আংগ্রেইনি বলেন, অনেক নির্মাতা টিকটক লাইভ ব্যবহার করেন, তাঁদের ‘প্রতিভা প্রদর্শন’ বা ‘মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন’ করার জন্য। সাধারণত এটি ব্যবহার করেন, যাঁরা নিজেদের গান গাওয়া, নাচ, ভিডিও গেম খেলা, ছবি আঁকা বা রান্না করার ভিডিও ধারণ করেন। তবে এখন ক্রমবর্ধমানভাবে ভুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। বিশেষ করে তাঁরা, যাঁরা এটিকে ‘অর্থ উপার্জনের সহজ পথ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও যোগ করেন, এই ধরনের ‘ক্ষতিকর’ ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ভিডিও অত্যন্ত দ্রুত বাড়ছে। এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শোষণ।
তিনি আরও বলেন, এসব লাইভ স্ট্রিমের পেছনে মূলত দারিদ্র্য এবং ডিজিটাল শিক্ষা-দক্ষতার অভাব কাজ করছে। এ ছাড়া মানুষগুলোকে এগুলো জোর করে করানো হচ্ছে কি না, তা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের শোষিত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন, ‘এটি একটি সহযোগিতা, যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে শোষণের ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে। যেগুলো আয় প্রবাহের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একাধিক পরিবারকে লাইভ স্ট্রিমের জন্য নিয়ন্ত্রণ করে।
টিকটক জানিয়েছে, তারা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ছিল—অবজারভার কর্তৃক চিহ্নিত অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলা। তারা বলেছে, তাদের নীতিমালায় লাইভ স্ট্রিমে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু বা দুর্বল ব্যক্তিদের শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত। টিকটকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘যেকোনো লাইভ কনটেন্ট, যেখানে শিশুদের গিফটের জন্য ভিক্ষা চায়, তা টিকটক অনুমোদন করে না।’
যেসব ক্ষেত্রে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি বা শিশু শোষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে তারা ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিয়েছে। তারা সেসব লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করেছে এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা জানায়, ‘প্রতিরোধমূলক শনাক্তকরণ এবং নিবেদিত টিম ও প্রযুক্তির মাধ্যমে’ তারা প্রতি মাসে চার মিলিয়ন লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করে ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ রাখতে’ সাহায্য করছে। লাইভ স্ট্রিম হোস্ট করার জন্য এক হাজার ফলোয়ার এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। তবে শিশুরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে উপস্থিত থাকলে লাইভে আসতে পারবে।
টিকটক জানায়, তারা যে কমিশন এবং ফি গ্রহণ করে, তা পরিবর্তনশীল। লাইভ স্ট্রিমাররা গিফটের পূর্ণ মূল্য পায় না, বরং তারা ‘ডায়মন্ড’ নামে পয়েন্ট পায়। এই পয়েন্ট গিফট এবং তাদের স্ট্রিমের জনপ্রিয়তা ও সময়কাল অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। কমিশন এবং ফি পরিশোধের পর, সাধারণত তারা মূল গিফটের অর্ধেক পায়, তবে কখনো কখনো মাত্র ৩০ শতাংশ। টিকটক দাবি করেছে, ৩০ শতাংশ আয় ‘অ্যাপ স্টোর ফি এবং পেমেন্ট প্রোভাইডার খরচে’ চলে যায়। টিকটকে ১০০টির বেশি ডিজিটাল গিফট রয়েছে, যার মধ্যে একটি রোজ (১ পেনি) থেকে শুরু করে, টিকটক ইউনিভার্স (প্রায় ৪৫০ পাউন্ড) রয়েছে।
শোষণমূলক কনটেন্ট থেকে লাভ নেওয়ার জন্য আগে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টিকটক। বিশেষ করে ২০২২ সালে যৌন নির্যাতন লাইভ স্ট্রিমের ঘটনায়।
২০২৩ সালে আল জাজিরা জানায়, ইন্দোনেশিয়ার অনাথ আশ্রমগুলো লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করছে। এসব লাইভ স্ট্রিমে শিশুদের ঘুমাতে দেখা যায়। টিকটক বলেছে, তারা এমন শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করেছে। তবে অনাথ আশ্রমের লাইভ স্ট্রিমটি তাদের নিয়ম ভঙ্গ করেনি।
টিকটক লাইভে ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলেও অনেক দাতব্য সংস্থা বলছে, এটি সংকটে থাকা মানুষকে সাহায্য পেতে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলিপাইনের এক পরিবার তাদের যমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য অনুদান সংগ্রহে সফল হয়েছিল। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট নয় যে এর মাধ্যমে আসলেই কারা উপকৃত হচ্ছে।
অ্যান্টি-স্লেভারি ইন্টারন্যাশনালের ক্যাথরিন টার্নার বলেন, কিছু শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষা করে, তবে অন্যরা তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ‘শারীরিক বা মানসিকভাবে শোষিত’ হয়ে থাকে। এই তৃতীয় পক্ষ আয়প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
লাইভ স্ট্রিমারদের পুরস্কারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার জন্য সরকারি ইস্যুকৃত আইডি চায় টিকটক। তবে দর্শকদের জন্য এটি জানার উপায় নেই যে যারা লাইভে থাকছে, তারা বাস্তবে উপকৃত হচ্ছে কি না। অক্সফোর্ডের ক্রিমিনোলজি কেন্দ্রের গবেষক ‘মায়া লাহাভ’ বলেন, লাইভ স্ট্রিম নিয়ন্ত্রণ করা বা নজরদারিতে রাখার জন্য অনেক তথ্য প্রয়োজন, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব কনটেন্ট সরানো উচিত কি না, তা নিয়ে নৈতিক প্রশ্ন রয়েছে।
তবে তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ এবং শিশু বা অসুস্থদের সম্মতির বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। ‘এখানে মূল প্রশ্ন, কখন এটি শোষণ হয়ে ওঠে! এই সঠিক ভারসাম্যই তাদের মানতে হবে।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে এবার প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট রাখার পরিকল্পনা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংস্থা ওপেনএআই। সংস্থার প্রধান স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই আচরণ করতে চান, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগেভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে বিশাল এক ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হাব গড়ে তুলতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুগলের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। রয়টার্সের এক প্রতিব
২ দিন আগেজনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ডটকম এককভাবে বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে সবচেয়ে বেশি জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন
২ দিন আগেনিউইয়র্কের টম্পকিনস স্কয়ার পার্কে সম্প্রতি এক ভিন্নধর্মী আয়োজন হয়ে গেল। এর শিরোনাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডিলিট ডে’। তরুণ প্রজন্ম; বিশেষ করে জেন-জিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল, নিজেদের জীবনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব থেকে মুক্তি নেওয়া।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে এবার প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট রাখার পরিকল্পনা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংস্থা ওপেনএআই। সংস্থার প্রধান স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই আচরণ করতে চান, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে অল্টম্যান জানান, চ্যাটবটের আসন্ন সংস্করণগুলোতে এটিকে আরও মানবীয় আচরণ করার সুযোগ দেওয়া হবে। তবে তা কেবল ব্যবহারকারীরা চাইলে, শুধু ব্যবহারের মাত্রা বাড়ানোর জন্য নয়। ডিসেম্বরে ‘এজ-গেটিং’ (বয়স যাচাই) ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু হওয়ার পর, যাচাইকৃত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ইরোটিকার (যৌনতা সম্পর্কিত কনটেন্ট) মতো বিষয়বস্তুও উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
ইলন মাস্কের এআই সংস্থা এক্সএআই সম্প্রতি গ্রক চ্যাটবটে প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করেছে। এরপরই ওপেনএআই এমন পদক্ষেপ নিল। এই পদক্ষেপ সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে সাহায্য করবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।
তবে এই ঘোষণার পেছনে রয়েছে এক গভীর বিতর্ক। চলতি বছরের শুরুতে, ১৬ বছর বয়সী এক মার্কিন কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা-মা ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ম্যাট এবং মারিয়া রেইন নামে ওই দম্পতি অভিযোগ করেন, চ্যাটজিপিটির প্যারেন্টাল কন্ট্রোল যথেষ্ট কার্যকর নয়। মামলায় কিশোর অ্যাডামের সঙ্গে চ্যাটবটের কথোপকথনের লগ জমা দেওয়া হয়। সেখানে দেখার যায়, আত্মহত্যার ভাবনা নিয়ে সে চ্যাটবটের কথা বলেছিল।
স্যাম অল্টম্যান স্বীকার করেন, মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে তাঁরা আগে চ্যাটজিপিটিকে ‘বেশ সীমাবদ্ধ’ রেখেছিলেন। তবে তিনি এখন দাবি করছেন, সংস্থাটি গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রশমিত করতে পেরেছে এবং নতুন টুলের মাধ্যমে ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরাপদে বিধিনিষেধ শিথিল করা সম্ভব।’
ওপেনএআই-এর এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে। সমালোচকদের মতে, প্ল্যাটফর্মে ইরোটিকা অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে কঠোর আইনের প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে। আইন সংস্থা বোয়েস শিলার ফ্লেক্সনারের অংশীদার জেনি কিম প্রশ্ন তুলেছেন, ‘তারা কীভাবে নিশ্চিত করবে যে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্ধারিত অংশ বা ইরোটিকায় প্রবেশ করতে পারবে না?’ কিম মন্তব্য করেন, ওপেনএআই-ও অন্যান্য বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলো মানুষকে গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করছে।
এদিকে, সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ওপর চাপ বাড়ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম সম্প্রতি একটি বিলে ভেটো দিয়েছেন, যে আইনে শিশুদের জন্য ক্ষতিকারক আচরণে উৎসাহিত করতে পারে এমন এআই চ্যাটবট নিষিদ্ধ করার এখতিয়ার থাকত। তবে তিনি যুক্তি দিয়েছেন, শিশু-কিশোরদের এআই সিস্টেমের সঙ্গে নিরাপদে যোগাযোগ করতে শেখা অপরিহার্য।
মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) চ্যাটবটগুলো কীভাবে শিশুদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করছে, সেটি তদন্ত শুরু করেছে।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ওপেনএআই-এর এই পদক্ষেপ বাজারে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করার জন্য একটি প্রচেষ্টামাত্র। ওপেনএআই-এর আয় বাড়ছে, তবে সংস্থাটি এখনো লাভজনক নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্রুত বাজার দখলের লড়াইয়ে কোম্পানিটি এই ধরনের বিতর্কিত পদক্ষেপ নিতে নিচ্ছে।
এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে এবার প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট রাখার পরিকল্পনা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংস্থা ওপেনএআই। সংস্থার প্রধান স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই আচরণ করতে চান, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে অল্টম্যান জানান, চ্যাটবটের আসন্ন সংস্করণগুলোতে এটিকে আরও মানবীয় আচরণ করার সুযোগ দেওয়া হবে। তবে তা কেবল ব্যবহারকারীরা চাইলে, শুধু ব্যবহারের মাত্রা বাড়ানোর জন্য নয়। ডিসেম্বরে ‘এজ-গেটিং’ (বয়স যাচাই) ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু হওয়ার পর, যাচাইকৃত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ইরোটিকার (যৌনতা সম্পর্কিত কনটেন্ট) মতো বিষয়বস্তুও উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
ইলন মাস্কের এআই সংস্থা এক্সএআই সম্প্রতি গ্রক চ্যাটবটে প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করেছে। এরপরই ওপেনএআই এমন পদক্ষেপ নিল। এই পদক্ষেপ সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে সাহায্য করবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।
তবে এই ঘোষণার পেছনে রয়েছে এক গভীর বিতর্ক। চলতি বছরের শুরুতে, ১৬ বছর বয়সী এক মার্কিন কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা-মা ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ম্যাট এবং মারিয়া রেইন নামে ওই দম্পতি অভিযোগ করেন, চ্যাটজিপিটির প্যারেন্টাল কন্ট্রোল যথেষ্ট কার্যকর নয়। মামলায় কিশোর অ্যাডামের সঙ্গে চ্যাটবটের কথোপকথনের লগ জমা দেওয়া হয়। সেখানে দেখার যায়, আত্মহত্যার ভাবনা নিয়ে সে চ্যাটবটের কথা বলেছিল।
স্যাম অল্টম্যান স্বীকার করেন, মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে তাঁরা আগে চ্যাটজিপিটিকে ‘বেশ সীমাবদ্ধ’ রেখেছিলেন। তবে তিনি এখন দাবি করছেন, সংস্থাটি গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রশমিত করতে পেরেছে এবং নতুন টুলের মাধ্যমে ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরাপদে বিধিনিষেধ শিথিল করা সম্ভব।’
ওপেনএআই-এর এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে। সমালোচকদের মতে, প্ল্যাটফর্মে ইরোটিকা অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে কঠোর আইনের প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে। আইন সংস্থা বোয়েস শিলার ফ্লেক্সনারের অংশীদার জেনি কিম প্রশ্ন তুলেছেন, ‘তারা কীভাবে নিশ্চিত করবে যে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্ধারিত অংশ বা ইরোটিকায় প্রবেশ করতে পারবে না?’ কিম মন্তব্য করেন, ওপেনএআই-ও অন্যান্য বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলো মানুষকে গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করছে।
এদিকে, সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ওপর চাপ বাড়ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম সম্প্রতি একটি বিলে ভেটো দিয়েছেন, যে আইনে শিশুদের জন্য ক্ষতিকারক আচরণে উৎসাহিত করতে পারে এমন এআই চ্যাটবট নিষিদ্ধ করার এখতিয়ার থাকত। তবে তিনি যুক্তি দিয়েছেন, শিশু-কিশোরদের এআই সিস্টেমের সঙ্গে নিরাপদে যোগাযোগ করতে শেখা অপরিহার্য।
মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) চ্যাটবটগুলো কীভাবে শিশুদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করছে, সেটি তদন্ত শুরু করেছে।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ওপেনএআই-এর এই পদক্ষেপ বাজারে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করার জন্য একটি প্রচেষ্টামাত্র। ওপেনএআই-এর আয় বাড়ছে, তবে সংস্থাটি এখনো লাভজনক নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্রুত বাজার দখলের লড়াইয়ে কোম্পানিটি এই ধরনের বিতর্কিত পদক্ষেপ নিতে নিচ্ছে।
ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন ছোট্ট শিশু। তারা আফগানিস্তানের একটি কাঁচা মাটির বাড়িতে বসে রয়েছে। তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক...
০৭ এপ্রিল ২০২৫ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে বিশাল এক ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হাব গড়ে তুলতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুগলের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। রয়টার্সের এক প্রতিব
২ দিন আগেজনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ডটকম এককভাবে বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে সবচেয়ে বেশি জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন
২ দিন আগেনিউইয়র্কের টম্পকিনস স্কয়ার পার্কে সম্প্রতি এক ভিন্নধর্মী আয়োজন হয়ে গেল। এর শিরোনাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডিলিট ডে’। তরুণ প্রজন্ম; বিশেষ করে জেন-জিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল, নিজেদের জীবনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব থেকে মুক্তি নেওয়া।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে বিশাল এক ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হাব গড়ে তুলতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুগলের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, উপকূলীয় শহর বিশাখাপত্তনমে গুগল ১ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ডেটা সেন্টার ক্যাম্পাস নির্মাণ করবে। সেখানে এআই অবকাঠামো, বৃহৎ পরিসরের জ্বালানি উৎস এবং উন্নত ফাইবার-অপটিক নেটওয়ার্ক একত্রে থাকবে। আজ মঙ্গলবার এই প্রকল্পে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা।
বিশ্বজুড়ে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে এখন তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। এআই পরিষেবার বাড়তি চাহিদা মেটাতে তারা নতুন নতুন ডেটা সেন্টার নির্মাণে ব্যাপক অর্থ বিনিয়োগ করছে।
অন্ধ্রপ্রদেশে গুগলের ১০ বিলিয়ন ডলারের ডেটা সেন্টার নির্মাণে কর-সংক্রান্ত সব বাধা দূর করতে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র একযোগে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি, ইলেকট্রনিকস ও যোগাযোগমন্ত্রী নারা লোকেশ।
অন্ধ্রপ্রদেশের আইটি মন্ত্রী নারা লোকেশ বলেন, ‘যে সময়ে ডেটা নতুন তেলের মতো মূল্যবান, এ ধরনের উদ্যোগ রাজ্যের জন্য কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে।’
মানিকন্ট্রোলকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে লোকেশ বলেন, ‘ডেটা সেন্টার তৈরিতে কোনো প্রকার “রেট্রোস্পেকটিভ ট্যাক্সেশন” বা অতীতের ভিত্তিতে কর আরোপের ঝুঁকি যাতে না থাকে, সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করেছি। যেহেতু এই কেন্দ্রগুলোতে তথ্য প্রক্রিয়াজাত করা হবে, তাই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা কর-সংক্রান্ত স্পষ্টতা পেয়েছি।’
মন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি প্রথমবার গুগল কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের নিয়ে বিশাখাপত্তনমে প্রস্তাবিত সাইটটি পরিদর্শনে যান। লোকেশের ভাষায়, ‘এটি হতে যাচ্ছে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ।’
মানিকন্ট্রোলের প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রস্তাবিত ‘রাইডেন ইনফোটেক’ (গুগলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান) প্রকল্পে মোট বিনিয়োগ হবে ৮৭ হাজার ৫২০ কোটি রুপি বা প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। এতে প্রায় এক-দুই লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ২০২৮–২০৩২ মেয়াদে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্য মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে (জিএডিপি) প্রতিবছর ১০ হাজার ৫১৮ কোটি রুপি যোগ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
মন্ত্রী নারা লোকেশ বলেন, ‘অন্ধ্রপ্রদেশে এখন আমাদের আছে দ্বৈত ইঞ্জিনের “বুলেট ট্রেন”। যা দিয়ে আমরা শুধু সর্বোত্তম প্রণোদনাই দিতে পারছি না, বরং নীতিগত দিক থেকেও সহায়তা দিচ্ছি। কেন্দ্রের যা যা দরকার, সেগুলোতেও আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছি।’
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে বিশাল এক ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হাব গড়ে তুলতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুগলের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, উপকূলীয় শহর বিশাখাপত্তনমে গুগল ১ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ডেটা সেন্টার ক্যাম্পাস নির্মাণ করবে। সেখানে এআই অবকাঠামো, বৃহৎ পরিসরের জ্বালানি উৎস এবং উন্নত ফাইবার-অপটিক নেটওয়ার্ক একত্রে থাকবে। আজ মঙ্গলবার এই প্রকল্পে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা।
বিশ্বজুড়ে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে এখন তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। এআই পরিষেবার বাড়তি চাহিদা মেটাতে তারা নতুন নতুন ডেটা সেন্টার নির্মাণে ব্যাপক অর্থ বিনিয়োগ করছে।
অন্ধ্রপ্রদেশে গুগলের ১০ বিলিয়ন ডলারের ডেটা সেন্টার নির্মাণে কর-সংক্রান্ত সব বাধা দূর করতে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র একযোগে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি, ইলেকট্রনিকস ও যোগাযোগমন্ত্রী নারা লোকেশ।
অন্ধ্রপ্রদেশের আইটি মন্ত্রী নারা লোকেশ বলেন, ‘যে সময়ে ডেটা নতুন তেলের মতো মূল্যবান, এ ধরনের উদ্যোগ রাজ্যের জন্য কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে।’
মানিকন্ট্রোলকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে লোকেশ বলেন, ‘ডেটা সেন্টার তৈরিতে কোনো প্রকার “রেট্রোস্পেকটিভ ট্যাক্সেশন” বা অতীতের ভিত্তিতে কর আরোপের ঝুঁকি যাতে না থাকে, সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করেছি। যেহেতু এই কেন্দ্রগুলোতে তথ্য প্রক্রিয়াজাত করা হবে, তাই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা কর-সংক্রান্ত স্পষ্টতা পেয়েছি।’
মন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি প্রথমবার গুগল কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের নিয়ে বিশাখাপত্তনমে প্রস্তাবিত সাইটটি পরিদর্শনে যান। লোকেশের ভাষায়, ‘এটি হতে যাচ্ছে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ।’
মানিকন্ট্রোলের প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রস্তাবিত ‘রাইডেন ইনফোটেক’ (গুগলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান) প্রকল্পে মোট বিনিয়োগ হবে ৮৭ হাজার ৫২০ কোটি রুপি বা প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। এতে প্রায় এক-দুই লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ২০২৮–২০৩২ মেয়াদে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্য মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে (জিএডিপি) প্রতিবছর ১০ হাজার ৫১৮ কোটি রুপি যোগ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
মন্ত্রী নারা লোকেশ বলেন, ‘অন্ধ্রপ্রদেশে এখন আমাদের আছে দ্বৈত ইঞ্জিনের “বুলেট ট্রেন”। যা দিয়ে আমরা শুধু সর্বোত্তম প্রণোদনাই দিতে পারছি না, বরং নীতিগত দিক থেকেও সহায়তা দিচ্ছি। কেন্দ্রের যা যা দরকার, সেগুলোতেও আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছি।’
ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন ছোট্ট শিশু। তারা আফগানিস্তানের একটি কাঁচা মাটির বাড়িতে বসে রয়েছে। তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক...
০৭ এপ্রিল ২০২৫এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে এবার প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট রাখার পরিকল্পনা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংস্থা ওপেনএআই। সংস্থার প্রধান স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই আচরণ করতে চান, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগেজনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ডটকম এককভাবে বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে সবচেয়ে বেশি জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন
২ দিন আগেনিউইয়র্কের টম্পকিনস স্কয়ার পার্কে সম্প্রতি এক ভিন্নধর্মী আয়োজন হয়ে গেল। এর শিরোনাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডিলিট ডে’। তরুণ প্রজন্ম; বিশেষ করে জেন-জিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল, নিজেদের জীবনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব থেকে মুক্তি নেওয়া।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ডটকম এককভাবে বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে সবচেয়ে বেশি জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ না করলে ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশে ব্লক করার বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সোমবার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য জানান।
ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ জানান, অনলাইন জুয়া, এর প্রচার-প্রচারণা বিজ্ঞাপন ইত্যাদি বাংলাদেশের সাইবার সুরক্ষা আইন, ২০২৫-এ নিষিদ্ধ।
ফয়েজ আহমদ উল্লেখ করেন, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডসহ বেশ কিছু দেশের ক্রিকইনফোর বিজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখেছে, সেখানে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন শতভাগ অনুপস্থিত। শুধু বাংলাদেশে জুয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে আইন ভঙ্গ করছে ক্রিকইনফো।
বিশেষ সহকারী আরও লেখেন, অবৈধ বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের ওপর ক্রিকইনফো আইন পাসের আগে বা পরে কোনো অর্থই বাংলাদেশ সরকারকে আয়কর কিংবা ভ্যাট হিসেবে দেয়নি।
অবৈধ জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ) ক্রিকইনফোকে ই-মেইল পাঠিয়েছে এবং পরে ডাকযোগে রেজিস্টার্ড চিঠি পাঠানো হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, যদি ক্রিকইনফো জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধ না করে। তবে বাংলাদেশে ক্রিকইনফো ব্লক করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত হবে কি না, এই বিষয়ে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি জনমত সংগ্রহ করবে।
আরও খবর পড়ুন:
জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ডটকম এককভাবে বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে সবচেয়ে বেশি জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ না করলে ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশে ব্লক করার বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সোমবার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য জানান।
ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ জানান, অনলাইন জুয়া, এর প্রচার-প্রচারণা বিজ্ঞাপন ইত্যাদি বাংলাদেশের সাইবার সুরক্ষা আইন, ২০২৫-এ নিষিদ্ধ।
ফয়েজ আহমদ উল্লেখ করেন, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডসহ বেশ কিছু দেশের ক্রিকইনফোর বিজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখেছে, সেখানে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন শতভাগ অনুপস্থিত। শুধু বাংলাদেশে জুয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে আইন ভঙ্গ করছে ক্রিকইনফো।
বিশেষ সহকারী আরও লেখেন, অবৈধ বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের ওপর ক্রিকইনফো আইন পাসের আগে বা পরে কোনো অর্থই বাংলাদেশ সরকারকে আয়কর কিংবা ভ্যাট হিসেবে দেয়নি।
অবৈধ জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ) ক্রিকইনফোকে ই-মেইল পাঠিয়েছে এবং পরে ডাকযোগে রেজিস্টার্ড চিঠি পাঠানো হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, যদি ক্রিকইনফো জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধ না করে। তবে বাংলাদেশে ক্রিকইনফো ব্লক করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত হবে কি না, এই বিষয়ে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি জনমত সংগ্রহ করবে।
আরও খবর পড়ুন:
ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন ছোট্ট শিশু। তারা আফগানিস্তানের একটি কাঁচা মাটির বাড়িতে বসে রয়েছে। তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক...
০৭ এপ্রিল ২০২৫এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে এবার প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট রাখার পরিকল্পনা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংস্থা ওপেনএআই। সংস্থার প্রধান স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই আচরণ করতে চান, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগেভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে বিশাল এক ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হাব গড়ে তুলতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুগলের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। রয়টার্সের এক প্রতিব
২ দিন আগেনিউইয়র্কের টম্পকিনস স্কয়ার পার্কে সম্প্রতি এক ভিন্নধর্মী আয়োজন হয়ে গেল। এর শিরোনাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডিলিট ডে’। তরুণ প্রজন্ম; বিশেষ করে জেন-জিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল, নিজেদের জীবনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব থেকে মুক্তি নেওয়া।
২ দিন আগেসামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মুক্ত জীবনের ডাক
ফিচার ডেস্ক
নিউইয়র্কের টম্পকিনস স্কয়ার পার্কে সম্প্রতি এক ভিন্নধর্মী আয়োজন হয়ে গেল। এর শিরোনাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডিলিট ডে’। তরুণ প্রজন্ম; বিশেষ করে জেন-জিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল, নিজেদের জীবনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব থেকে মুক্তি নেওয়া।
তবে আয়োজনটি অনলাইনে প্রচার করা হয়নি। অংশগ্রহণকারীরা বন্ধু কিংবা পরিচিতদের মুখে মুখে খবর পৌঁছে দিয়েছেন। পার্কের প্রবেশপথ সাজানো হয়েছিল চক দিয়ে লেখা বার্তায়। সেখানে লেখা ‘ডিলিট ইউর অ্যাপস অন দ্য গ্রাস’। কেউ নিজের মোবাইল ফোন থেকে ইনস্টাগ্রাম, টিকটক অথবা স্ন্যাপচ্যাট মুছে ফেলেছেন, কেউ আবার অন্যদের উৎসাহ দিয়েছেন একই কাজ করতে।
প্রায় ৮০ জন তরুণ অংশ নেন এই আয়োজনে। আয়োজকেরা বলছেন, এটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমবিরোধী প্রতিবাদ নয়। এর মধ্য দিয়ে মানুষকে ডিজিটাল-নির্ভরতা থেকে সাময়িক বিরতি নিতে উৎসাহ দেওয়াই উদ্দেশ্য।
এই আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী তরুণ নিক প্ল্যান্ট। তিনি বলেন, ‘আমরা স্ক্রিনে আসক্ত হয়ে পড়েছি। এখন এই অবস্থা থেকে সরে এসে সবাই মিলে ভিন্নভাবে সময় কাটাতে চাই।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে, বাস্তব জীবনে ফেরার চেষ্টা
‘ডিলিট ডে’-তে অংশ নেন বিভিন্ন তরুণ সংগঠনের সদস্যরা। তাঁরা মুখে মুখে প্রচার চালিয়েছেন, পোস্টার এবং লিফলেট বিলি করেছেন। কেউ কেউ রাস্তায় টেবিল বসিয়ে মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন।
আয়োজকদের একজন গ্যাব্রিয়েলা নগুয়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের চাওয়া, মানুষ যেন এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে বিরতি নেয়। কারণ, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত অনেক সময় কাটিয়ে দিয়েছি। নিজেরাই দেখেছি, এখানে কীভাবে মনোযোগ ও সময় নষ্ট হয়।’
‘দ্য অ্যানক্সিয়াস জেনারেশন’বইয়ের প্রভাব
এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে ‘টাইম টু রিফিউজ’ নামের একটি বৈশ্বিক প্রচারণা। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন মনোবিজ্ঞানী ও লেখক জোনাথান হেইডট। তাঁর বই ‘দ্য অ্যানক্সিয়াস জেনারেশন’-এ বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। বইটি প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্রের অনেক স্কুলে স্মার্টফোন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়।
‘ডিলিট ডে’ অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ছবি ও পোস্ট নিয়ে ক্রমাগত চিন্তা করতে করতে তরুণেরা মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। কোনো অনুষ্ঠানে গেলেই ভাবতে হয়, এটা ইনস্টাগ্রামে কেমন দেখাবে। এমন মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে আমাদের এই আয়োজন।
বিকল্প যোগাযোগ
অংশগ্রহণকারীরা অ্যাপ মুছে ফেলার পর মোবাইল ফোন ব্যাগে রেখে একসঙ্গে সময় কাটান। কেউ নতুন বন্ধু বানান, কেউবা গল্প করেন। টেক প্রতিষ্ঠান লাইট সেখানে অংশগ্রহণকারীদের ‘লাইট ফোন’ উপহার দেয়। সে মোবাইল ফোন দিয়ে শুধু কল করা এবং মেসেজ দেওয়া যায়। তাতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না। সে কারণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমও ব্যবহার করা সম্ভব নয়।
‘ডিলিট ডে’-তে অংশগ্রহণকারী জুডি লিউ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ছাড়ার পর আমি ভাষা শেখা এবং নতুন শখে সময় দিচ্ছি।’ আরেকজন অংশগ্রহণকারী কণিকা মেহরা বলেন, ‘বাস্তব জীবনের আনন্দ যখন কেউ পায়, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না।’
সারা বিশ্বে নিয়মিত ‘ডিলিট ডে’ আয়োজন করার ইচ্ছা আছে আয়োজকদের। এরই মধ্যে ফিলাডেলফিয়া, যুক্তরাজ্য ও কেনিয়ায় পরবর্তী ইভেন্টের প্রস্তুতি চলছে।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার
নিউইয়র্কের টম্পকিনস স্কয়ার পার্কে সম্প্রতি এক ভিন্নধর্মী আয়োজন হয়ে গেল। এর শিরোনাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডিলিট ডে’। তরুণ প্রজন্ম; বিশেষ করে জেন-জিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল, নিজেদের জীবনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব থেকে মুক্তি নেওয়া।
তবে আয়োজনটি অনলাইনে প্রচার করা হয়নি। অংশগ্রহণকারীরা বন্ধু কিংবা পরিচিতদের মুখে মুখে খবর পৌঁছে দিয়েছেন। পার্কের প্রবেশপথ সাজানো হয়েছিল চক দিয়ে লেখা বার্তায়। সেখানে লেখা ‘ডিলিট ইউর অ্যাপস অন দ্য গ্রাস’। কেউ নিজের মোবাইল ফোন থেকে ইনস্টাগ্রাম, টিকটক অথবা স্ন্যাপচ্যাট মুছে ফেলেছেন, কেউ আবার অন্যদের উৎসাহ দিয়েছেন একই কাজ করতে।
প্রায় ৮০ জন তরুণ অংশ নেন এই আয়োজনে। আয়োজকেরা বলছেন, এটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমবিরোধী প্রতিবাদ নয়। এর মধ্য দিয়ে মানুষকে ডিজিটাল-নির্ভরতা থেকে সাময়িক বিরতি নিতে উৎসাহ দেওয়াই উদ্দেশ্য।
এই আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী তরুণ নিক প্ল্যান্ট। তিনি বলেন, ‘আমরা স্ক্রিনে আসক্ত হয়ে পড়েছি। এখন এই অবস্থা থেকে সরে এসে সবাই মিলে ভিন্নভাবে সময় কাটাতে চাই।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে, বাস্তব জীবনে ফেরার চেষ্টা
‘ডিলিট ডে’-তে অংশ নেন বিভিন্ন তরুণ সংগঠনের সদস্যরা। তাঁরা মুখে মুখে প্রচার চালিয়েছেন, পোস্টার এবং লিফলেট বিলি করেছেন। কেউ কেউ রাস্তায় টেবিল বসিয়ে মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন।
আয়োজকদের একজন গ্যাব্রিয়েলা নগুয়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের চাওয়া, মানুষ যেন এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে বিরতি নেয়। কারণ, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত অনেক সময় কাটিয়ে দিয়েছি। নিজেরাই দেখেছি, এখানে কীভাবে মনোযোগ ও সময় নষ্ট হয়।’
‘দ্য অ্যানক্সিয়াস জেনারেশন’বইয়ের প্রভাব
এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে ‘টাইম টু রিফিউজ’ নামের একটি বৈশ্বিক প্রচারণা। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন মনোবিজ্ঞানী ও লেখক জোনাথান হেইডট। তাঁর বই ‘দ্য অ্যানক্সিয়াস জেনারেশন’-এ বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। বইটি প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্রের অনেক স্কুলে স্মার্টফোন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়।
‘ডিলিট ডে’ অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ছবি ও পোস্ট নিয়ে ক্রমাগত চিন্তা করতে করতে তরুণেরা মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। কোনো অনুষ্ঠানে গেলেই ভাবতে হয়, এটা ইনস্টাগ্রামে কেমন দেখাবে। এমন মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে আমাদের এই আয়োজন।
বিকল্প যোগাযোগ
অংশগ্রহণকারীরা অ্যাপ মুছে ফেলার পর মোবাইল ফোন ব্যাগে রেখে একসঙ্গে সময় কাটান। কেউ নতুন বন্ধু বানান, কেউবা গল্প করেন। টেক প্রতিষ্ঠান লাইট সেখানে অংশগ্রহণকারীদের ‘লাইট ফোন’ উপহার দেয়। সে মোবাইল ফোন দিয়ে শুধু কল করা এবং মেসেজ দেওয়া যায়। তাতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না। সে কারণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমও ব্যবহার করা সম্ভব নয়।
‘ডিলিট ডে’-তে অংশগ্রহণকারী জুডি লিউ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ছাড়ার পর আমি ভাষা শেখা এবং নতুন শখে সময় দিচ্ছি।’ আরেকজন অংশগ্রহণকারী কণিকা মেহরা বলেন, ‘বাস্তব জীবনের আনন্দ যখন কেউ পায়, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না।’
সারা বিশ্বে নিয়মিত ‘ডিলিট ডে’ আয়োজন করার ইচ্ছা আছে আয়োজকদের। এরই মধ্যে ফিলাডেলফিয়া, যুক্তরাজ্য ও কেনিয়ায় পরবর্তী ইভেন্টের প্রস্তুতি চলছে।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার
ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন ছোট্ট শিশু। তারা আফগানিস্তানের একটি কাঁচা মাটির বাড়িতে বসে রয়েছে। তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক...
০৭ এপ্রিল ২০২৫এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে এবার প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট রাখার পরিকল্পনা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংস্থা ওপেনএআই। সংস্থার প্রধান স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই আচরণ করতে চান, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগেভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে বিশাল এক ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হাব গড়ে তুলতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুগলের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। রয়টার্সের এক প্রতিব
২ দিন আগেজনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ডটকম এককভাবে বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে সবচেয়ে বেশি জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন
২ দিন আগে