Ajker Patrika

মেটার বিরুদ্ধে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা, বিক্রি হতে পারে ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ৩৫
২০১৪ সালে হোয়াটসঅ্যাপ কিনতে ১৯ বিলিয়ন ডলার খরচ করে মেটা। ছবি: ডেইলি জাঙ্গ
২০১৪ সালে হোয়াটসঅ্যাপ কিনতে ১৯ বিলিয়ন ডলার খরচ করে মেটা। ছবি: ডেইলি জাঙ্গ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জায়ান্ট মেটার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার বিচার শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার। মামলাটি অভিযোগ হলো—প্রতিযোগিতা এড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে এক দশক আগে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নিয়ে বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি করেছে মেটা। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে মেটাকে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ বিক্রি করে দিতে বাধ্য করা হতে পারে।

এফটিসির আইনজীবী ড্যানিয়েল ম্যাথেসন বলেন, ‘প্রতিযোগিতা করা কঠিন। তাই প্রতিদ্বন্দ্বীদের কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।’

এদিকে, মেটার পক্ষের আইনজীবী মার্ক হ্যানসেন বলেন, ‘এই মামলা বিভ্রান্তিকর। এফটিসি তখনকার নিয়ম মেনেই এই অধিগ্রহণ অনুমোদন করেছিল। মেটার দাবি, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ কিনে তারা সেবাগুলো আরও উন্নত ও বিস্তৃত করেছে।

এফটিসি যদি মামলায় জয় পায়, তাহলে মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গকে কোম্পানিটি বিক্রি করতে বাধ্য করা হতে পারে। অর্থাৎ, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপকে আলাদা কোম্পানি হিসেবে গড়ে তোলা।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১২ সালে ইনস্টাগ্রাম কিনতে ১ বিলিয়ন ডলার এবং ২০১৪ সালে হোয়াটসঅ্যাপ কিনতে ১৯ বিলিয়ন ডলার খরচ করে মেটা। এই অধিগ্রহণ ফেসবুকের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতামূলক হুমকিকে প্রতিরোধ করার কৌশল বলে উল্লেখ করেন ভ্যান্ডারবিল্ট ল স্কুলের অ্যান্টিট্রাস্ট বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রেবেকা হ’অ্যালেনসওয়ার্থ।

তিনি বলেন, ‘মার্ক জাকারবার্গ নিজেই এক ই-মেইলে লিখেছিলেন—প্রতিযোগিতা না করে কিনে নেওয়া ভালো। এটি মামলার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ হতে পারে।’

মেটার দাবি, তারা এখনো টিকটক, এক্স (সাবেক টুইটার), ইউটিউব ও আইমেসেজের মতো নানা প্রতিযোগীর মুখোমুখি হচ্ছে।

মামলায় জাকারবার্গ ও মেটার সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গকে সাক্ষ্য দিতে হতে পারে।

রাজনৈতিক মোড় ও সমালোচনা

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদে দায়ের করা মামলাটি তার দ্বিতীয় মেয়াদে এসে রাজনৈতিক রূপ নিতে পারে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জাকারবার্গ নিজে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে মামলা বন্ধ করতে লবিং করেছিলেন।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে ট্রাম্পের সমর্থকদের হামলার পর মেটার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করায় ট্রাম্প ও মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের সম্পর্ক কিছুটা খারাপ হয়ে পড়ে।

তবে সময়ের সঙ্গে সেই সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হয়েছে।

মেটা সম্প্রতি ট্রাম্পের অভিষেক তহবিলে ১০ লাখ ডলার (প্রায় ৭ লাখ ৬৪ হাজার পাউন্ড) অনুদান দিয়েছে। পাশাপাশি, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত হয়েছেন ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ডিনা পাওয়েল ম্যাককরমিক এবং আল্টিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপের (ইউএফসি) প্রধান ও ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ ডানা হোয়াইট।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে মেটা আরও ঘোষণা দেয়, তারা স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রাম ব্যবহার বন্ধ করছে। একই সঙ্গে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হামলার পর ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট সাময়িক স্থগিতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন এফটিসির দুই ডেমোক্র্যাট কমিশনার রেবেকা স্লটার ও আলভারো বেডোয়াকে বরখাস্ত করে। তারা বলছেন, এই পদক্ষেপ স্বাধীন সংস্থাগুলোকে রাজনৈতিক চাপে ফেলার চেষ্টা।

এফটিসির বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যান্ড্রু ফার্গুসন ট্রাম্পের নিযুক্ত এবং তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলো গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুগলের বিরুদ্ধে অনলাইন সার্চে একচেটিয়াতন্ত্র প্রমাণ করা যেমন সহজ ছিল, মেটার বিরুদ্ধে এটি কঠিন হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লরা ফিলিপস-স্যায়ের মনে করেন, মেটার বিরুদ্ধে এফটিসির মামলাটি প্রমাণ করা সহজ হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, এফটিসির জন্য এটা সত্যিকারের কঠিন এক লড়াই হতে যাচ্ছে। ইনস্টাগ্রাম কিংবা হোয়াটসঅ্যাপকে বিভাজনের (ডিভেস্টমেন্ট) প্রশ্নে তাদের অনেক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।’

তথ্যসূত্র: বিবিসি

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে অনিশ্চয়তা, সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠক

ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ক্রিপ্টো কেলেঙ্কারি, ১৪ বিলিয়ন ডলারের কয়েন জব্দ

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রাখেন নজরুল: পুলিশ

৬ মাসের সংসার, ৭ দিনের চাকরি—মর্গে নিথর স্বামী-স্ত্রীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করছে চ্যাটজিপিটি, শিশুদের নিরাপত্তা কোথায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে এবার প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট রাখার পরিকল্পনা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংস্থা ওপেনএআই। সংস্থার প্রধান স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই আচরণ করতে চান, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে অল্টম্যান জানান, চ্যাটবটের আসন্ন সংস্করণগুলোতে এটিকে আরও মানবীয় আচরণ করার সুযোগ দেওয়া হবে। তবে তা কেবল ব্যবহারকারীরা চাইলে, শুধু ব্যবহারের মাত্রা বাড়ানোর জন্য নয়। ডিসেম্বরে ‘এজ-গেটিং’ (বয়স যাচাই) ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু হওয়ার পর, যাচাইকৃত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ইরোটিকার (যৌনতা সম্পর্কিত কনটেন্ট) মতো বিষয়বস্তুও উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

ইলন মাস্কের এআই সংস্থা এক্সএআই সম্প্রতি গ্রক চ্যাটবটে প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করেছে। এরপরই ওপেনএআই এমন পদক্ষেপ নিল। এই পদক্ষেপ সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে সাহায্য করবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।

তবে এই ঘোষণার পেছনে রয়েছে এক গভীর বিতর্ক। চলতি বছরের শুরুতে, ১৬ বছর বয়সী এক মার্কিন কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা-মা ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ম্যাট এবং মারিয়া রেইন নামে ওই দম্পতি অভিযোগ করেন, চ্যাটজিপিটির প্যারেন্টাল কন্ট্রোল যথেষ্ট কার্যকর নয়। মামলায় কিশোর অ্যাডামের সঙ্গে চ্যাটবটের কথোপকথনের লগ জমা দেওয়া হয়। সেখানে দেখার যায়, আত্মহত্যার ভাবনা নিয়ে সে চ্যাটবটের কথা বলেছিল।

স্যাম অল্টম্যান স্বীকার করেন, মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে তাঁরা আগে চ্যাটজিপিটিকে ‘বেশ সীমাবদ্ধ’ রেখেছিলেন। তবে তিনি এখন দাবি করছেন, সংস্থাটি গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রশমিত করতে পেরেছে এবং নতুন টুলের মাধ্যমে ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরাপদে বিধিনিষেধ শিথিল করা সম্ভব।’

ওপেনএআই-এর এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে। সমালোচকদের মতে, প্ল্যাটফর্মে ইরোটিকা অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে কঠোর আইনের প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে। আইন সংস্থা বোয়েস শিলার ফ্লেক্সনারের অংশীদার জেনি কিম প্রশ্ন তুলেছেন, ‘তারা কীভাবে নিশ্চিত করবে যে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্ধারিত অংশ বা ইরোটিকায় প্রবেশ করতে পারবে না?’ কিম মন্তব্য করেন, ওপেনএআই-ও অন্যান্য বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলো মানুষকে গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করছে।

এদিকে, সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ওপর চাপ বাড়ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম সম্প্রতি একটি বিলে ভেটো দিয়েছেন, যে আইনে শিশুদের জন্য ক্ষতিকারক আচরণে উৎসাহিত করতে পারে এমন এআই চ্যাটবট নিষিদ্ধ করার এখতিয়ার থাকত। তবে তিনি যুক্তি দিয়েছেন, শিশু-কিশোরদের এআই সিস্টেমের সঙ্গে নিরাপদে যোগাযোগ করতে শেখা অপরিহার্য।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) চ্যাটবটগুলো কীভাবে শিশুদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করছে, সেটি তদন্ত শুরু করেছে।

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ওপেনএআই-এর এই পদক্ষেপ বাজারে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করার জন্য একটি প্রচেষ্টামাত্র। ওপেনএআই-এর আয় বাড়ছে, তবে সংস্থাটি এখনো লাভজনক নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্রুত বাজার দখলের লড়াইয়ে কোম্পানিটি এই ধরনের বিতর্কিত পদক্ষেপ নিতে নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে অনিশ্চয়তা, সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠক

ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ক্রিপ্টো কেলেঙ্কারি, ১৪ বিলিয়ন ডলারের কয়েন জব্দ

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রাখেন নজরুল: পুলিশ

৬ মাসের সংসার, ৭ দিনের চাকরি—মর্গে নিথর স্বামী-স্ত্রীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ডেটা সেন্টার ও এআই হাব তৈরিতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে গুগল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে বিশাল এক ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হাব গড়ে তুলতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুগলের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, উপকূলীয় শহর বিশাখাপত্তনমে গুগল ১ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ডেটা সেন্টার ক্যাম্পাস নির্মাণ করবে। সেখানে এআই অবকাঠামো, বৃহৎ পরিসরের জ্বালানি উৎস এবং উন্নত ফাইবার-অপটিক নেটওয়ার্ক একত্রে থাকবে। আজ মঙ্গলবার এই প্রকল্পে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা।

বিশ্বজুড়ে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে এখন তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। এআই পরিষেবার বাড়তি চাহিদা মেটাতে তারা নতুন নতুন ডেটা সেন্টার নির্মাণে ব্যাপক অর্থ বিনিয়োগ করছে।

অন্ধ্রপ্রদেশে গুগলের ১০ বিলিয়ন ডলারের ডেটা সেন্টার নির্মাণে কর-সংক্রান্ত সব বাধা দূর করতে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র একযোগে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি, ইলেকট্রনিকস ও যোগাযোগমন্ত্রী নারা লোকেশ।

অন্ধ্রপ্রদেশের আইটি মন্ত্রী নারা লোকেশ বলেন, ‘যে সময়ে ডেটা নতুন তেলের মতো মূল্যবান, এ ধরনের উদ্যোগ রাজ্যের জন্য কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে।’

মানিকন্ট্রোলকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে লোকেশ বলেন, ‘ডেটা সেন্টার তৈরিতে কোনো প্রকার “রেট্রোস্পেকটিভ ট্যাক্সেশন” বা অতীতের ভিত্তিতে কর আরোপের ঝুঁকি যাতে না থাকে, সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করেছি। যেহেতু এই কেন্দ্রগুলোতে তথ্য প্রক্রিয়াজাত করা হবে, তাই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা কর-সংক্রান্ত স্পষ্টতা পেয়েছি।’

মন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি প্রথমবার গুগল কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের নিয়ে বিশাখাপত্তনমে প্রস্তাবিত সাইটটি পরিদর্শনে যান। লোকেশের ভাষায়, ‘এটি হতে যাচ্ছে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ।’

মানিকন্ট্রোলের প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রস্তাবিত ‘রাইডেন ইনফোটেক’ (গুগলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান) প্রকল্পে মোট বিনিয়োগ হবে ৮৭ হাজার ৫২০ কোটি রুপি বা প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। এতে প্রায় এক-দুই লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ২০২৮–২০৩২ মেয়াদে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্য মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে (জিএডিপি) প্রতিবছর ১০ হাজার ৫১৮ কোটি রুপি যোগ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

মন্ত্রী নারা লোকেশ বলেন, ‘অন্ধ্রপ্রদেশে এখন আমাদের আছে দ্বৈত ইঞ্জিনের “বুলেট ট্রেন”। যা দিয়ে আমরা শুধু সর্বোত্তম প্রণোদনাই দিতে পারছি না, বরং নীতিগত দিক থেকেও সহায়তা দিচ্ছি। কেন্দ্রের যা যা দরকার, সেগুলোতেও আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে অনিশ্চয়তা, সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠক

ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ক্রিপ্টো কেলেঙ্কারি, ১৪ বিলিয়ন ডলারের কয়েন জব্দ

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রাখেন নজরুল: পুলিশ

৬ মাসের সংসার, ৭ দিনের চাকরি—মর্গে নিথর স্বামী-স্ত্রীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশে জুয়ার বিজ্ঞাপনে শীর্ষে ক্রিকইনফো, ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত ফয়েজ আহমদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ২৭
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ফাইল ছবি
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ফাইল ছবি

জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ডটকম এককভাবে বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে সবচেয়ে বেশি জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ না করলে ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশে ব্লক করার বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সোমবার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য জানান।

ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ জানান, অনলাইন জুয়া, এর প্রচার-প্রচারণা বিজ্ঞাপন ইত্যাদি বাংলাদেশের সাইবার সুরক্ষা আইন, ২০২৫-এ নিষিদ্ধ।

ফয়েজ আহমদ উল্লেখ করেন, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডসহ বেশ কিছু দেশের ক্রিকইনফোর বিজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখেছে, সেখানে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন শতভাগ অনুপস্থিত। শুধু বাংলাদেশে জুয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে আইন ভঙ্গ করছে ক্রিকইনফো।

বিশেষ সহকারী আরও লেখেন, অবৈধ বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের ওপর ক্রিকইনফো আইন পাসের আগে বা পরে কোনো অর্থই বাংলাদেশ সরকারকে আয়কর কিংবা ভ্যাট হিসেবে দেয়নি।

অবৈধ জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ) ক্রিকইনফোকে ই-মেইল পাঠিয়েছে এবং পরে ডাকযোগে রেজিস্টার্ড চিঠি পাঠানো হবে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, যদি ক্রিকইনফো জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধ না করে। তবে বাংলাদেশে ক্রিকইনফো ব্লক করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত হবে কি না, এই বিষয়ে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি জনমত সংগ্রহ করবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে অনিশ্চয়তা, সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠক

ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ক্রিপ্টো কেলেঙ্কারি, ১৪ বিলিয়ন ডলারের কয়েন জব্দ

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রাখেন নজরুল: পুলিশ

৬ মাসের সংসার, ৭ দিনের চাকরি—মর্গে নিথর স্বামী-স্ত্রীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মুক্ত জীবনের ডাক

জেন-জি প্রজন্মের ‘ডিলিট ডে’

ফিচার ডেস্ক
জেন-জি প্রজন্মের ‘ডিলিট ডে’

নিউইয়র্কের টম্পকিনস স্কয়ার পার্কে সম্প্রতি এক ভিন্নধর্মী আয়োজন হয়ে গেল। এর শিরোনাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডিলিট ডে’। তরুণ প্রজন্ম; বিশেষ করে জেন-জিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল, নিজেদের জীবনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব থেকে মুক্তি নেওয়া।

তবে আয়োজনটি অনলাইনে প্রচার করা হয়নি। অংশগ্রহণকারীরা বন্ধু কিংবা পরিচিতদের মুখে মুখে খবর পৌঁছে দিয়েছেন। পার্কের প্রবেশপথ সাজানো হয়েছিল চক দিয়ে লেখা বার্তায়। সেখানে লেখা ‘ডিলিট ইউর অ্যাপস অন দ্য গ্রাস’। কেউ নিজের মোবাইল ফোন থেকে ইনস্টাগ্রাম, টিকটক অথবা স্ন্যাপচ্যাট মুছে ফেলেছেন, কেউ আবার অন্যদের উৎসাহ দিয়েছেন একই কাজ করতে।

প্রায় ৮০ জন তরুণ অংশ নেন এই আয়োজনে। আয়োজকেরা বলছেন, এটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমবিরোধী প্রতিবাদ নয়। এর মধ্য দিয়ে মানুষকে ডিজিটাল-নির্ভরতা থেকে সাময়িক বিরতি নিতে উৎসাহ দেওয়াই উদ্দেশ্য।

এই আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী তরুণ নিক প্ল্যান্ট। তিনি বলেন, ‘আমরা স্ক্রিনে আসক্ত হয়ে পড়েছি। এখন এই অবস্থা থেকে সরে এসে সবাই মিলে ভিন্নভাবে সময় কাটাতে চাই।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে, বাস্তব জীবনে ফেরার চেষ্টা

‘ডিলিট ডে’-তে অংশ নেন বিভিন্ন তরুণ সংগঠনের সদস্যরা। তাঁরা মুখে মুখে প্রচার চালিয়েছেন, পোস্টার এবং লিফলেট বিলি করেছেন। কেউ কেউ রাস্তায় টেবিল বসিয়ে মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন।

আয়োজকদের একজন গ্যাব্রিয়েলা নগুয়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের চাওয়া, মানুষ যেন এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে বিরতি নেয়। কারণ, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত অনেক সময় কাটিয়ে দিয়েছি। নিজেরাই দেখেছি, এখানে কীভাবে মনোযোগ ও সময় নষ্ট হয়।’

photo-Buseness-insider-3

‘দ্য অ্যানক্সিয়াস জেনারেশন’বইয়ের প্রভাব

এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে ‘টাইম টু রিফিউজ’ নামের একটি বৈশ্বিক প্রচারণা। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন মনোবিজ্ঞানী ও লেখক জোনাথান হেইডট। তাঁর বই ‘দ্য অ্যানক্সিয়াস জেনারেশন’-এ বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। বইটি প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্রের অনেক স্কুলে স্মার্টফোন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়।

‘ডিলিট ডে’ অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ছবি ও পোস্ট নিয়ে ক্রমাগত চিন্তা করতে করতে তরুণেরা মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। কোনো অনুষ্ঠানে গেলেই ভাবতে হয়, এটা ইনস্টাগ্রামে কেমন দেখাবে। এমন মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে আমাদের এই আয়োজন।

photo-Buseness-insider-4

বিকল্প যোগাযোগ

অংশগ্রহণকারীরা অ্যাপ মুছে ফেলার পর মোবাইল ফোন ব্যাগে রেখে একসঙ্গে সময় কাটান। কেউ নতুন বন্ধু বানান, কেউবা গল্প করেন। টেক প্রতিষ্ঠান লাইট সেখানে অংশগ্রহণকারীদের ‘লাইট ফোন’ উপহার দেয়। সে মোবাইল ফোন দিয়ে শুধু কল করা এবং মেসেজ দেওয়া যায়। তাতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না। সে কারণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমও ব্যবহার করা সম্ভব নয়।

‘ডিলিট ডে’-তে অংশগ্রহণকারী জুডি লিউ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ছাড়ার পর আমি ভাষা শেখা এবং নতুন শখে সময় দিচ্ছি।’ আরেকজন অংশগ্রহণকারী কণিকা মেহরা বলেন, ‘বাস্তব জীবনের আনন্দ যখন কেউ পায়, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না।’

সারা বিশ্বে নিয়মিত ‘ডিলিট ডে’ আয়োজন করার ইচ্ছা আছে আয়োজকদের। এরই মধ্যে ফিলাডেলফিয়া, যুক্তরাজ্য ও কেনিয়ায় পরবর্তী ইভেন্টের প্রস্তুতি চলছে।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে অনিশ্চয়তা, সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠক

ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ক্রিপ্টো কেলেঙ্কারি, ১৪ বিলিয়ন ডলারের কয়েন জব্দ

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রাখেন নজরুল: পুলিশ

৬ মাসের সংসার, ৭ দিনের চাকরি—মর্গে নিথর স্বামী-স্ত্রীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত