Ajker Patrika

আওয়ামী লীগের পতনঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে: মির্জা ফখরুল 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২২, ১৫: ৪৭
আওয়ামী লীগের পতনঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে: মির্জা ফখরুল 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের পতনঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে। এখন বিদ্যুৎ, এরপরে জ্বালানি তেল, এরপর দেখবেন খাজাঞ্চিখানা শূন্য হচ্ছে, রিজার্ভ শেষ হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়ে আকাশচুম্বী হচ্ছে।’ 

আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন আর দফাটফা নাই। এখন এক দফা, এক দাবি—এই মুহূর্তে পদত্যাগ করো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করো। একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এই সংসদ বাতিল করো এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দাও। আর সময় নেই, এখন জেগে উঠতে হবে। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ ও দুর্নীতিবাজ সরকারকে একটা ধাক্কা দিতে হবে। দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান।’ 

সমাবেশে লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে হাতে হ্যারিকেন নিয়ে এসেছিলেন বিএনপির নারী নেত্রী ও কর্মীরা। তাঁদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই হ্যারিকেনটা গণভবনে হাসিনার কাছে পাঠিয়ে দেন। তাঁর হাতে হ্যারিকেন ধরিয়ে দেন। শুধু এই মিটিংয়ের মধ্যে হ্যারিকেন নিয়ে এলে হবে না। যখনই অন্ধকার আসবে, যখনই লোডশেডিং হবে, তখনই হ্যারিকেন আর মোমবাতি নিয়ে বের হবেন। কারণ এই মোমবাতি ও হ্যারিকেন নিয়ে বের না হলে আমরা আলোকিত হব না।’ 

সরকারের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ এনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার বিদ্যুতের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। লুট করে বিদেশে পাঠিয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২২ সালে শুধু বিদ্যুৎ খাতে লোকসান হয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা।’ 

অন্যান্য বছর মিলিয়ে লাখো কোটি টাকা লোকসান ছাড়িয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগেই আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা হাতিরঝিলে আতশবাজি ফুটিয়ে উৎসব করে ঘোষণা দিল, দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে লোডশেডিং-মুক্ত হয়েছে। আর এখন শহরে দুই-তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ যায় আর গ্রামে যেখানে এখন বোরোর মৌসুমে, সব চেয়ে বেশি সেচের দরকার, যার জন্য বিদ্যুৎ দরকার, সেখানে সাত-আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না।’ 

বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই শত শত কোটি টাকা নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সামিট গ্রুপ এক বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ৯ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা নিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে, বিদ্যুৎ না দিয়ে, ক্যাপাসিটি চার্চের টাকা নিয়ে চলে যায়। আরেক দিকে রয়েছে ন্যাশনাল, ৬ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। দ্য পাওয়ার হোল্ডিং ৬ হাজার ৯২০ কোটি টাকা, ইউনাইটেড গ্রুপ ৪ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা, কেপিপিএল নিয়েছে ৩ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এমন ১০টা কোম্পানি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তারাই শত শত কোটি টাকা বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই নিয়ে চলে গেছে।’ 

কুইক রেন্টালের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বিদ্যুৎ আনার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট করেছিল। এই পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো নিয়ে এসেছিল কোনো টেন্ডার না করেই হাজার হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয় করে এবং এটার জন্য কোনো মামলা হবে না—এমন ইনডেমনিটি আইন তৈরি করেছে এই সরকার। একদিকে টানেল নির্মাণ করছে, অন্যদিকে মানুষের খাওয়ার টাকা নাই।’ শতকরা ৪২ ভাগ মানুষ দুই বেলা খাবার পায় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা আইএমএফ থেকে টাকা ধার নেব না। আমরা এখনো খুব শক্তিশালী আছি অর্থনীতির মধ্যে। কিন্তু কালকে আমরা পত্রিকায় দেখলাম ৪৫০ বিলিয়ন ডলার তাঁরা ধার চেয়েছেন আইএমএফের কাছে। আপনারা দেখবেন, এই সরকার অনর্গল মিথ্যা কথা বলে। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে বোকা বানিয়ে রাখে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে তারা শূন্য হয়ে গেছে।’ 

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরাও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্র এবং মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতাসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। 

অন্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক সালাম, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, মহিলা দলের জেরিন খান, বিএনপির মনোনীত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ বক্তৃতা করেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ‘সব মামলা প্রত্যাহার’ প্রসঙ্গে মন্তব্যের যে ব্যাখ্যা দিলেন মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে এক মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যেভাবে মামলা করছে, আমরা সেভাবে মামলা করতে চাই না। যদি মামলা হয়ে থাকেও আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, সব মামলা তুলে নেওয়া হবে। আমরা প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করব না। আমরা প্রতিশোধ নেব না। যত মামলা আছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, আমরা সব মামলা তুলে নেব।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রথম দিন আপনাদের মনে আছে, ৫ আগস্ট যখন আমরা মুক্ত হলাম, তখন আমাদের ম্যাডাম মানে খালেদা জিয়া তিনি একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন, স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন, কথা বলেছিলেন। সে কথাটা ছিল যে আমরা প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করব না। আমরা প্রতিশোধ নেব না। আমরা ভালোবাসা এবং প্রেমের মধ্যে দিয়ে রাজনীতি করতে চাই।’

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের শাপলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ মতবিনিময় সভা হয়। মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে ওই ইউনিয়নবাসীর সঙ্গে এ মতবিনিয়ম করেন মির্জা ফখরুল।

এদিকে ওই বক্তব্যকে ভুলভাবে প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হতে দলের নেতা-কর্মী ও জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ ১১ নভেম্বর ২০২৫, বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলাধীন সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর শাপলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় দেওয়া আমার একটি বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে-যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আমার বক্তব্যে বলেছি যে, আমরা প্রতিশোধের রাজনীতি করতে চাই না। আওয়ামী লীগের মতো হয়রানিমূলক মামলা করতে চাই না। আমি আমার দেওয়া বক্তব্যে আরও বলেছি যে, এই ইউনিয়নে হয়রানিমূলক কোনো মামলা হলে আমরা তুলে নিব। কিন্তু দেশব্যাপী হয়রানিমূলক মামলা দায়ের কিংবা মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আমি কোনো বক্তব্য প্রদান করিনি।’

ফখরুল বলেন, ‘দেশের জনগণ ও দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল বক্তব্যের বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আ.লীগ নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘প্রতিহিংসামূলক’ মামলা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি মির্জা ফখরুলের

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৯
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেলে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের ‘প্রতিহিংসামূলক’ মামলা প্রত্যাহার করা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না এবং কারও ওপর প্রতিশোধ নিতে চায় না।

আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের শাপলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় বিএনপির আয়োজনে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে, ৫ আগস্ট আমাদের ম্যাডাম মানে খালেদা জিয়া একটা বিবৃতি দিয়েছিলেন, যে আমরা প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করব না, আমরা প্রতিশোধ নিব না। আমরা ভালোবাসা এবং প্রেমের মধ্য দিয়ে রাজনীতি করতে চাই। আমি সে কথা আবার আজকে আপনাদের কাছে বলতে চাই যে আমরা কোনো প্রতিশোধের রাজনীতি করতে চাই না।’

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে মামলা করেছে, সেভাবে মামলা করতে চাই না। যদি মামলা হয়ে থাকে আমি আপনাদেরকে কথা দিচ্ছি, সমস্ত মামলা তুলে নেওয়া হবে। যত মামলা আছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, আমরা সমস্ত মামলাগুলো তুলে নিব, ঠিক আছে। আমরা ওই প্রতিহিংসা–প্রতিশোধের রাজনীতি করব না।’

ভারতে আশ্রয় নেওয়া কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আর ওসব পাগলামি করবেন না! ওই অত্যাচার–নির্যাতন করে অতীতে শাসন করতে পারেননি, সামনেও ভয় দেখিয়ে শাসন করতে পারবেন না। বরঞ্চ বাংলাদেশের জনগণের সামনে দুই হাত তুলে মাফ চান— যা করেছি ভুল করেছি, ছেলেগুলোকে গুলি করে মেরে ভুল করেছি, আমাকে আপনারা মাফ করে দিবেন।’

জুলাই–আগস্টের সেই বীভৎসতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কেউ বাদ যায়নি ভাই, এই যে ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চা–নারী–ছেলেরা আমাদের, তাদেরকে পাখির মত গুলি করে মারছে। একটা বাচ্চা মেয়ে সে জানালা ধরে মিছিল দেখতে গেছে, ওকেও গুলি করে মারছে— এই সহিংসতা সে করেছে। তারপরও আমরা বলতে চাই, আমরা সেই প্রতিশোধে রাজনীতি করতে চাই না। আমরা শান্তির রাজনীতি করতে চাই। আমরা শান্তি দেখতে চাই বাংলাদেশে। বাংলাদেশে আর অশান্তি চাই না।’

আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে নৌকা ও শীষে প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতো উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবার নৌকাটা আর নাই। নৌকার যে কান্ডারি, যে মূল মাঝি নৌকা ফেলে দিয়ে পালিয়ে চলে গেছে, ইন্ডিয়া চলে গেছে। এখন আমাদের যাঁরা এখানে নৌকা করতেন সারা বাংলাদেশে, তাঁরা তো একটু অসহায় অবস্থায় আছেন যে, আমাদের মূল লোকটাই পালিয়ে গেছে। আমরা এখন কী করব?

তিনি বলেন, ‘তো সেই জায়গায় আমি আপনাদেরকে এইটুকু আশ্বাস দিতে পারি যে, আপনারা কেউ হতাশ হবেন না। ধানের শীষ আপনাদের পাশে আছে। আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমরা বেঁচে থাকতে আপনাদের গায়ে কেউ ফুলের টোকাও দিতে পারবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির সুযোগ নেই, প্রজ্ঞাপন হতে পারে: সালাহউদ্দিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৫
সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য কোনো আদেশ জারির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, সরকার চাইলে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা স্পেসিফিক কোনো প্রস্তাব দিইনি যে, আদেশ কে জারি করবে। আমরা একটা সাংবিধানিকতার মধ্যে আছি; সাংবিধানিকভাবে এ সরকার শপথ নিয়েছে; সবকিছু আইনানুগভাবে চলছে। এখন কোনো অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা এই সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির। যদি কোনো আদেশ জারি করতে হয়, সেই আদেশের মর্যাদা যদি আইনি হয়, সেই আদেশ জারি করার মতো কোনো সাংবিধানিক অবস্থা এখন বাংলাদেশে নেই। কারণ, প্রেসিডেন্টের অর্ডার জারি করার একটা বিধান একসময় ছিল, যত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়নি, আপনারা সবাই জানেন, সে রকম পিও অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট অর্ডার নিয়ে তখন রাষ্ট্রটা চলত। সংবিধান গৃহীত হয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির আদেশ জারির আর কোনো বিধান রইল না, সেটা বিলুপ্ত হলো। এখন কী রকম আদেশ দেবে? সেই আদেশের মর্যাদা কি আইনি হবে? সেটা এখনো সরকার নির্ধারণ করেনি। একমাত্র অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা ছাড়া রাষ্ট্রপতির অন্য কোনোভাবে আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা এখন নেই। কিন্তু আদেশ জারি করার কোনো বিধান বর্তমান সংবিধানে নেই।

‘কিন্তু যদি এখন কোনো প্রজ্ঞাপনকে আদেশ নামকরণ করতে চায় এবং সেটার আইনি মর্যাদা না থাকে, সেটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার প্রকাশ করতে পারে, গেজেট নোটিফিকেশন, সেটা আইন হবে না। এখন সরকার যদি আলোচনার আহ্বান জানায়, সে ক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ থাকতে পারে, রাজপথে তো নয়।’

এর আগে গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়, জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো রাজনৈতিকের ওপর কোনো দায় বর্তাবে না অর্থাৎ পরিবর্তিত সনদ দলগুলো মানতে বাধ্য থাকবে না।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ঐকমত্য কমিশনে বিএনপির প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫ ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেই সনদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে বিভিন্ন দফায় কিছু নোট অব ডিসেন্ট আছে। সেই নোট অব ডিসেন্টগুলোর ক্ষেত্রে সনদে বলা আছে যে, দলগুলো যদি নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করে জনগণের ম্যান্ডেট পায়, নোট অব ডিসেন্টগুলো তারা সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। এখানে আমরা এক শ ভাগ একমত, এখনো আমরা সেই জায়গায় আছি এবং আমরা স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে নেই। কিন্তু জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে সনদ বাস্তবায়নের উপায়সংক্রান্ত যে সুপারিশ দিয়েছে, তার মধ্যে নোট অব ডিসেন্ডের অংশগুলোর উল্লেখ নেই, একদম নেই। শুধু প্রস্তাবগুলোর ব্যাপারে ৪৮টা দফা দিয়ে তারা একটা তফসিল করেছে। সেই তফসিলে প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে গণভোটের প্রস্তাব করেছে।’

সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘গণভোটের বিষয়ে জাতীয় স্বার্থে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একই দিনে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সম্মতি নেওয়ার জন্য জুলাই জাতীয় সনদের ওপরে আমরা রাজি হয়েছিলাম। সে জায়গায় আমরা আছি। এখন এই স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে গিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য যে অযৌক্তিক ও নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করে যে আন্দোলন করছে, সে ব্যাপারে তারা তাদের বক্তব্য দিতে পারে। কিন্তু সনদে স্বাক্ষরিত যে বিষয়গুলো আছে, তার বাইরে যদি সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যায়, তাহলে কোনো রাজনৈতিক দল, যারা সনদে স্বাক্ষর করেছে, তাদের ওপরে কোনো দায়দায়িত্ব বর্তায় না বা তারা মানতে বাধ্য নয়। এই মেসেজটা দেওয়ার জন্যই আজকে আমাদের এই সংবাদ সম্মেলন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই: জামায়াত আমির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩২
পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা জুলাই বিপ্লব মানবেন না, তাদের জন্য ২৬ সালে কোনো নির্বাচন নাই। ২৬-এ নির্বাচন দেখতে হলে আগে জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি লাগবে। আর জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে হলে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই হবে। এই আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের কথা একটাই, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো ভোট অনুষ্ঠিত হতে হবে। গণভোটের ব্যাপারে সকল দল একমত। তাহলে তারিখ নিয়ে এই বায়নাবাজি কেন?’

পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওই নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে তখন আর কোনো সংশয় সন্দেহ থাকবে না। আমরা চাই আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এইটা নিয়ে কেউ ধূম্রজাল সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চালাবেন না। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে ফেলবেন না।’

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মতামতের ভিত্তিতে একটা চার্টার তৈরি হয়েছে। এটি হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রথা, সংখ্যাগরিষ্ঠ যা বলবে বাকিরা তাই মেনে নেবে। কিন্তু আমরা দেখলাম, কেউ কেউ তা মেনে নিতে রাজি নন। যদি আপনি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখান জাতীয় নির্বাচনে আপনি শ্রদ্ধা দেখাবেন কীভাবে? এই জায়গায় আসতে হবে।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘সকল বায়না ভুলে যান। জুলাই শহীদের রক্তের প্রতি সম্মান দেখান। জুলাইয়ে যারা লড়াই করেছে, এখনো কষ্ট করছে, মেহেরবানি করে তাদের বোঝার চেষ্টা করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত